![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবনকে যদি দাও নীল বিষাক্ত ছোপ থাকবেনা থাকবেনা, থাকবেনা ক্ষোভ। আমার মৃত দেহে ঝুলবে নোটিশবোর্ড কতৃপক্ষ দায়ী না।
আমি প্রথম যে মেয়েটার প্রেমে পড়ি সে প্রাইমারী তে আমার সহপাঠিনী ছিল। আমরা শৈশবে একসাথেই বেড়ে উঠেছি। এরপর ওর পরিবার অন্য জায়গায় চলে যায়। তবে নিতুর সাথে নিয়মিতই যোগাযোগ ছিল আমার। ক্লাস এইটে উঠার পর বুঝতে পারলাম যে আমি ওর প্রেমে পড়ে গেছি। আমি কোনদিন ওকে বলিনি কিন্তু নিজে নিজে স্বপ্ন দেখতাম আমরা একসাথে কলেজে যাচ্ছি, ভার্সিটি ক্যাম্পাসে খুনসুটি করছি তারপর একসাথে চাকরী। এরপর... এরপর না হয় হবে কিছু একটা।
আমরা তখন ক্লাস নাইনে উঠেছি। একদিন ছুটিতে বাড়ী গেছি। মা ভাত বেড়ে দিতে দিতে বলল "শুনছিস নিতুর তো বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে"। আমার গোটা দুনিয়াটা যেন স্তব্ধ হয়ে গেল। বুকটা ভীষণ রকম ফাঁকা হয়ে গেল। মাকে অবাক করে দিয়ে উঠে গিয়েছিলাম টেবিল থেকে। আমার মনে তখন ক্ষোভ, অসহায়ত্ব, হতাশা একসাথে জুড়ে বসেছে। সেদিন ই প্রথম অবাক হয়েছিলাম যে মেয়েদের এত তাড়াতাড়ি বিয়ে হয় কেন?
তখন আসলেই বুঝতাম না গ্রামে স্বচ্ছল সব পরিবারের মেয়েদের ও এত তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দেয় ক্যান! যেন মেয়ে পার করতে পারলেই বাঁচে!
আপনি হয়তো আমার মূর্খতা দেখে হাঁসছেন বাল্যবিবাহের সামাজিক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এত বিরূপ প্রভাব বাদ দিয়ে আমি কিনা একটা বিরহী প্রেমিক হিসেবে একে অপছন্দ করছি!
থাক নিজের কথা আসেন এখন এ বিষয়ে একটা গল্প বলি। একটা শুভ সমাপ্তির গল্প।অবশ্য এটা ঠিক গল্প না আমার নিজের পর্যবেক্ষন করা একটা ঘটনা। আমার গ্রামের বাড়ীর পাশের একটা মেয়ে। এবার মাত্র এস.এস.সি পরীক্ষা দিয়েছে। ছাত্রী হিসেবে বেশ মেধাবী । আর মেয়ে শুনলেই আগে যে ব্যাপারটা মাথায় আসে যে দেখতে কেমন! সেইদিক থেকেও তাকে বেশ সুন্দরীই বলতে পারেন। তো যেহেতু সুন্দরী খুব স্বাভাবিক ভাবেই ক্লাস এইট নাইনে উঠার পর এলাকার সব মেয়ের বাড়ীর সামনে ডিউটি দেয়া রোমিওরা ওর পিছনেও ঘুরা শুরু করল। স্কুল থেকে বাড়ী কোন জায়গায় রেহাই নাই। যত দিন যেতে লাগল উত্তক্ত করার মাত্রা ও বাড়তে লাগল। মধ্যবিত্ত বাবা মার কপালে ভাঁজ কি করা যায়! এসময় সবচেয়ে নিরাপদ উপায় নিয়ে আসল মেয়ের এক চাচা। বিয়ের প্রস্তাব। ছেলের পড়াশোনা মাত্র মেট্রিক পাশ হলেও ব্যাবসা বাণিজ্য ভালই আছে। বলল এখন বাগদান হয়ে যাবে এসএসসির পর বিয়ে। মেয়ের বাবা মা সব কিছুর সমাধানের এই অসাধারণ প্রস্তাব পেয়ে ততক্ষনাৎ রাজী। আর এতে ম্যাজিকের মত কাজও হল। যেসব ছেলেপেলে এতদিন তাকে বিরক্ত করত তারাই তাকে ভাবী বলে ডাকা শুরু করল। সবাইও হাঁপ ছেড়ে বাঁচল।
এবার বাড়ী এসে শুনলাম ওর বিয়ে হয়ে গেছে। তো এক বন্ধুকে জিজ্ঞেস করলাম মেয়েটা না পড়াশোনায় আগ্রহী ছিল! আর পড়াবে? বন্ধু যে ব্যাখ্যা দিল তা মোটামুটি এরকমঃ "দেখ মেয়েটাকে যদি এখন কলেজে পড়ায় সে দুনিয়ার সাথে আরো ভালভাবে পরিচিত হবে। আরো অনেক স্মার্ট ছেলেপেলের সাথে ঘুরবে এবং খুব স্বাভাবিক ভাবেই একটা পর্যায়ে মেয়েটার মনে হবে তার স্বামী আসলে তার উপযুক্ত না। মানে খুব বেশী সম্ভাবনা যে এর ফলে সে ছেলেটার হাত ফস্কে বেরিয়ে যাবে। এর চেয়ে ভাল সে সুখে শান্তিতে ঘরকন্না করবে বছর ঘুরতেই বাচ্চাকাচ্চা আসবে এবং এটাই হয়ে যাবে ওর জীবন" মানে অবশেষে তারা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগল। যাকে বলে "হ্যাপী এন্ডিং"।
কিন্তু এমন হ্যাপী এন্ডিং এর খপ্পরে পড়ে শেষ হয়ে যায় অধিকাংশ মেয়েদের আশৈশব লালিত স্বপ্ন। তাদের ক্লাসের শেষ বেঞ্চের পড়াশোনায় অনাগ্রহী ছেলেটাও যখন কলেজে যায় তখন তারা ঢুকে রান্নাঘরে।
০৭ ই মে, ২০১৬ সকাল ১০:৪০
মুনেম আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ ।গ্রামে এসে এসব দেখে খুব খারাপ লাগল। কিন্তু কি করার আছে বুঝতে পারলাম না!
২| ০৭ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৮
আব্দুল্যাহ বলেছেন: এখানে দোষঃ সমাজের না, আমাদের। আপনি-আমি ছাড়া কি সমাজ হয়? মেয়েকে তনু বানানোর চেয়ে বিয়ে দেয়াই উত্তম ভাবছেন পিতারা
০৭ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:৪৮
মুনেম আহমেদ বলেছেন: হু আমরাই দোষী। প্রতিকার ও আমাদের ই করা উচিৎ। কিন্তু কিভাবে? আজকাল তো ছেলেপেলে একটু আধটু দুষ্টামি করবে! মেয়েদের পিছনে ঘুরবে এটাকে স্বাভাবিক ই ধরে নেয়া হয়। অথচ এটাই সব কিছুর মূলে
৩| ০৭ ই মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৭
জাগরিত নিদ্রা বলেছেন: আরো অনেক স্মার্ট ছেলেপেলের সাথে ঘুরবে এবং খুব স্বাভাবিক ভাবেই একটা পর্যায়ে মেয়েটার মনে হবে তার স্বামী আসলে তার উপযুক্ত না। মানে খুব বেশী সম্ভাবনা যে এর ফলে সে ছেলেটার হাত ফস্কে বেরিয়ে যাবে।----- কথা গুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সঠিক
০৭ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:৫১
মুনেম আহমেদ বলেছেন: আসলেই সঠিক। তাত্ত্বিকভাবে আমরা যতই বলি স্ত্রী কে কেন পড়ায় না! পড়ানো উচিৎ ইত্যাদি। কিন্তু বাস্তবে এটাই ঘটে
৪| ০৮ ই মে, ২০১৬ রাত ১:০৯
আমিই মিসির আলী বলেছেন: দেখ মেয়েটাকে যদি এখন কলেজে পড়ায় সে দুনিয়ার সাথে আরো ভালভাবে পরিচিত হবে। আরো অনেক স্মার্ট ছেলেপেলের সাথে ঘুরবে এবং খুব স্বাভাবিক ভাবেই একটা পর্যায়ে মেয়েটার মনে হবে তার স্বামী আসলে তার উপযুক্ত না। মানে খুব বেশী সম্ভাবনা যে এর ফলে সে ছেলেটার হাত ফস্কে বেরিয়ে যাবে। এইটাকে ভালোবাসাও বলা যায়।
সমাজ চিত্র খুব ভালো ভাবেই তুলে ধরেছেন।
০৮ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৪:০২
মুনেম আহমেদ বলেছেন: " এইটাকে ভালবাসাও বলা যায়"
হয়ত।
ভালবাসা কখনো কখনো বড্ড স্বার্থপর।
৫| ০৮ ই মে, ২০১৬ রাত ১:১৭
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: ভালো ছেলে পেলে পাত্রস্থ করাই উচিত। পড়ালেখার চেয়ে একটা সুখী জীবন অনেক দরকারী। সব মেয়েদের পড়ালেখা বেশী দরকার নেই। দেশে এমনিতেই অনেক শিক্ষিত বেকার।
০৮ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৩:৫২
মুনেম আহমেদ বলেছেন: অনেক শিক্ষিত বেকার বলে পড়াশোনা ছেড়ে দেব!! আর চাকরী ছাড়া শিক্ষার আর কোন উপযোগীতা নাই!
৬| ০৮ ই মে, ২০১৬ রাত ১:৪৪
রাফা বলেছেন: নিজের পরিবার যতদিন মেয়েদের পাশে না দাড়াবে ততদিন এর কোন সুষ্ঠ সমাধান হবেনা।আমি আমার আশেপাশের কিছু মানুষকে সচেতন হয়তো প্রয়োজনে বাধা দিয়ে হলেও আটকাতে পারবো।কিন্তু যে পরিবার নিজেরাই লুকিয়ে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেয় তাদের আটকানো সম্ভব কি? মনে হয় নিরাপত্তার কথা ভেবেও অনেক মা/বাবা অনিচ্ছা সত্বেও বয়সের আগে বিয়ে দিয়ে দেয়।আমরা সামগ্রিকভাবে একটি সামাজিক ব্যাধিতে আক্রান্ত জাতি।খুন হোতে দেখলেও আমরা এখন এগিয়ে যাইনা নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে।বখাটে,খুনি,সন্ত্রসীরা একতাবদ্ধ আর আমরা সাধারন মানুষ বহুধা বিভক্ত ।শুধু এই কারনেই নিরবে সব অন্যায় মেনে নেই আমরা।এই মানসিকতার পরিবর্তন খুব বেশি জরুরী এখন সবার আগে।সেটা যখন হবে তখন সব কিছু এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে।১/২জন করে আমাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে যত বিপদই আসুক।
ধন্যবাদ,বাস্তবতা উপলব্দি করে পোষ্ট করার জন্য।
০৮ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৭
মুনেম আহমেদ বলেছেন: বাস্তবিকই পরিবার এগিয়ে না আসলে এর সমাধান অসম্ভবই বলা চলে। গ্রামে অনেক কে দেখছি শুধুমাত্র মেয়ের পড়াশোনার জন্য আর এ সমস্যা গুলো এড়ানোর জন্য অন্য জায়গায় চলে গেছে বা মেয়েরে পাঠাইছে। মানে স্বাভাবিক ভাবে সমাধান না করতে পেরেও মেয়ের পড়াশুনাকে গুরুত্ব দিছে। আর অনেকের সামর্থ্য থাকার পরও তার ইচ্ছা, পড়াশুনার প্রতি গুরুত্ব না দিয়ে বিয়ে করে "টেনশন" দূর করছে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই মে, ২০১৬ সকাল ১০:৩১
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন !