নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

শেখ হাসিনার সর্বজনীনতা

১৪ ই মে, ২০১৪ সকাল ৯:৩১



বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের ঘটনায় মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ হন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাফিলতি পেয়ে শাস্তি প্রদানের নির্দেশ দেন। তাঁর প্রত্যাশা অনুসারে ত্বরিৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনগণের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন করে প্রশাসন। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে-পরের সহিংসতা বন্ধ করে একইভাবে আপামর দেশবাসীকে স্বস্তি দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তিনিই সেই ব্যক্তি যিনি রানা প্লাজার নিহত-আহত শ্রমিক পরিবারের পাশে থেকে এখনো সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। কয়েকদিন আগে তিনি বলেছেন, ‘আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই। তবে কেউ যদি আমাদের সার্বভৌমত্বে আঘাত করে, অবশ্যই প্রতিঘাত করার মতো সক্ষমতা থাকতে হবে। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সেই সামর্থ্য অর্জন করা একান্তভাবে প্রয়োজন। আর আমরা সে ব্যাপারে সচেতন।’ তাঁর কথার সূত্র ধরেই আমরা জানতে পেরেছি বর্তমান সরকার সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে এমন সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলা। সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে, সে লক্ষ্যে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করার জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। শেখ হাসিনার সদিচ্ছা এবং আন্তরিকতা তাঁর নেতৃত্বকে বিশ্বজনীন করে তুলেছে। কারণ জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা তাঁর সরকারের দায়িত্ব হিসেবে গণ্য হয়েছে। জাতির কাক্সিক্ষত উন্নয়ন ও লক্ষ্য অর্জনে তার সরকার ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও ১০ বছর মেয়াদি পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। শেখ হাসিনার লক্ষ্য, দেশের সীমিত সম্পদ কাজে লাগিয়ে আত্মনির্ভরশীল হওয়া। কারণ মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলের (এমডিজি) ছয়টি ধাপেই বাংলাদেশের সাফল্য বা অর্জন সবচেয়ে বেশি। জনগণের মৌলিক অধিকার পূরণের মাধ্যমে ২০২১ সাল নাগাদ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার। আর এসবই সম্ভব হয়েছিল এদেশে তিনি ফিরে এসেছিলেন বলেই।

অন্য দিকে পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সঙ্গে শেখ হাসিনা সরকারের সম্প্রীতি রক্ষার দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে। তিনি নিজের দেশে প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায়কে নিজ নিজ ধর্ম পালনে উৎসাহী করেছেন। নিজের ব্যস্ততার মধ্যেও নিয়মিত নামাজ-রোজা এবাদত বন্দেগিতে সময় ব্যয় করেন তিনি। বাঙালির উৎসবগুলোকে তিনি সার্বজনীন সম্মিলনে পরিণত করেছেন। ঈদ, পূজা, বড়দিন, বৌদ্ধ পূর্ণিমা এখন সকলের উৎসব। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করার জন্য তাঁর আন্তরিক প্রচেষ্টা অভিনন্দনযোগ্য। অর্থাৎ শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে সরকার পরিচালনা করছেন। এজন্যই নতুন প্রজন্ম তাঁর হাতকে শক্তিশালী করতে বর্তমান সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছে। তবু অপপ্রচার ও প্ররোচণায় কেউ বিভ্রান্ত করতে পারে বলে ইতোমধ্যে তিনি সকলকে সতর্ক করে দিয়েছেন। জেল হত্যার বিচার, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আইভী রহমানসহ আরও অনেকের মৃত্যুর বিচার, সাবেক অর্থ মন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া ও সংসদ সদস্য আহসানউল্লাহ মাস্টারসহ সকল হত্যাকা-ের বিচার প্রক্রিয়া চলছে। অর্থনৈতিক উন্নতি গতিশীল রাখার চেষ্টা অব্যাহত আছে; রিজার্ভ যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। মূল্যস্ফীতি কমে এসেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমেছে। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বিশ্বসভায় বাংলাদেশকে আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ভিশন ২০২১ ঘোষণা বাস্তবায়নে তরুণ সমাজকে যথার্থ শিক্ষা গ্রহণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভালো পরিবেশ বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সকল কর্মকা-ই মানুষের মঙ্গলের জন্য নিবেদিত।

১. ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন। এটি ছিল তাঁর পুনর্জন্ম। তাঁর পুনর্জন্মের পরে বাংলাদেশ পুনরায় বাংলাদেশ হয়ে উঠেছিল। তেত্রিশ বছর পূর্বের সেই দিনটি এখনকার মতো ছিল না। সেদিনকার বাতাস ছিল কান্নার বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক ঝড়ের এক অপরাহ্ণ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ৩ নভেম্বরে জাতীয় চার নেতার নির্মম হত্যাকা- বাংলাদেশকে পাকিস্তানের আদর্শে রূপান্তরিত করেছিল। শেখ হাসিনার পদস্পর্শে সেই জল্লাদের দেশ পুনরায় সোনার বাংলা হয়ে ওঠার প্রত্যাশায় মুখরিত হয়েছিল। আজ তার প্রমাণ আমরা পাচ্ছি। তাঁর প্রত্যাবর্তন ছিল অতি সাধারণ, কারণ সেভাবেই তিনি দেশের জনগণের সামনে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। তিনি এক বৃহৎ শূন্যতার মধ্যে এসে দাঁড়ালেন। এখানে ঘরের আপনজন কেউ নেই। তাই সারা দেশের মানুষ আপনার আপন হয়ে উঠল। তিনি এখানে আসার আগে প্রায় পাঁচ বছর মানুষকে স্বৈরশাসকরা বোঝাতে চেয়েছিল তারাই জনগণের মুক্তিদাতা। কিন্তু সাধারণ মানুষ ক্ষণে ক্ষণে জেগে উঠছিল, বিচার দাবি করছিল জাতির পিতার হত্যাকা-ের। এমনকি বিভিন্ন বাহিনীর অন্তঃকোন্দলও মাথা চাড়া দিয়ে উঠছিল। তারই এক অনিবার্য পরিণতি আমরা দেখলাম জিয়াউর রহমানের মৃত্যুতে। জিয়ারই উত্তরসূরি আরেক সেনাপ্রধানের হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত হলে জনগণের দাবি নিয়ে রাজনীতির মাঠে রাতদিনের এক অক্লান্ত কর্মী হয়ে উঠলেন তিনি। তিনি নেত্রী কিন্তু তারও বেশি তিনি কর্মী। কারণ দলকে ঐক্যবদ্ধ করা, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর শাসনকাল সম্পর্কে অপপ্রচারের সমুচিত জবাব দেওয়া, পাকিস্তান ও অন্যান্য দেশের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা তাঁর প্রাত্যহিক কর্মে পরিণত হলো। দেশে ফেরার প্রতিক্রিয়ায় আবেগসিক্ত কথন আছে তাঁর নিজের লেখা গ্রন্থগুলোতে। তুলে ধরছি একটি উদ্ধৃতি : ‘আমার দুর্ভাগ্য, সব হারিয়ে আমি বাংলাদেশে ফিরেছিলাম। লক্ষ মানুষের ¯েœহ-আশীর্বাদে আমি সিক্ত হই প্রতিনিয়ত। কিন্তু যাঁদের রেখে গিয়েছিলাম দেশ ছাড়ার সময়, আমার সেই অতি পরিচিত মুখগুলো আর দেখতে পাই না। হারানোর এক অসহ্য বেদনার ভার নিয়ে আমাকে দেশে ফিরতে হয়েছিল।…’ ( বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, পৃঃ ৭৪)

২. এদেশে শেখ হাসিনার পুনর্জন্মের দিন থেকেই রাজনীতির মঞ্চে দ্রুত দৃশ্যপট পরিবর্তন হতে থাকে। বঙ্গবন্ধু ও জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ ছিল। সেদিন সেই স্লোগান প্রকম্পিত হয়ে উঠল আকাশে-বাতাসে; রাজপথ জনগণের দখলে চলে গেল। স্বৈরশাসক জিয়া এতদিন তাঁর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের বিরুদ্ধে ছিলেন। কিন্তু প্রত্যাবর্তনের পূর্বে সেই বছরই তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং জিয়ার অভিসন্ধি ভেস্তে যায়। সেদিনের ঢাকায় লক্ষ মানুষের বাঁধ ভাঙা স্রোত তাঁকে কেন্দ্র করে সমবেত হয়েছিল। তাদের কণ্ঠে ছিল বিচিত্র স্লে­াগান। ‘শেখ হাসিনা তোমায় কথা দিলাম, মুজিব হত্যার বদলা নেব, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনার আগমন শুভেচ্ছা স্বাগতম।’ আরো ছিলÑ ‘শেখ হাসিনা আসছে, জিয়ার গদি কাঁপছে, গদি ধরে দিব টান জিয়া হবে খান খান।’ অনেক অশ্রুসিক্ত বৃদ্ধের কণ্ঠে ছিল- ‘মাগো তোমায় কথা দিলাম, মুজিব হত্যার বদলা নেব।’ সেদিনের প্রত্যয় তিনি ও তাঁর সরকারই সত্য করে তুলেছেন। জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যায় অংশগ্রহণকারী কয়েকজন খুনির ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে। বাকিদেরও দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় শিগগিরই কার্যকর করা হবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।

৩. দুঃখী রাজকন্যার মতো হৃত রাজ্য, হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারের জন্য শেখ হাসিনার জন্ম ও পুনর্জন্মের খুব বেশি প্রয়োজন ছিল দেশ ও জনতার। পূর্বেই বলেছি তাঁর পুনর্জন্মের আগে নৈরাজ্যের যাঁতাকলে পিষ্ঠ হচ্ছিল মানুষ।

পাকিস্তানি শাসক, দালাল-রাজাকার ও আন্তর্জাতিকভাবে কয়েকটি দেশের বাধা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এবং আপামর জনগণের অংশগ্রহণে ৯ মাসের মুক্তিসংগ্রামে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর গণতন্ত্র-সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা ও রক্ষা করার প্রচেষ্টা সফল হতে দেয়নি খুনিরা। ফলে ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট পরবর্তী সামরিক শাসকদের অভ্যুত্থান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে। দেশ অন্ধকারে নিক্ষিপ্ত হয়। দেশের প্রতিকূল এক সময়ে তাঁকে আমরা রাজনীতির মঞ্চে পেলাম। তিনি দায়িত্ব নিলেন এবং লাখো জনতার সমাবেশে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললেন-‘আজকের জনসভায় লাখো লাখো চেনামুখ আমি দেখছি। শুধু নেই আমার প্রিয় পিতা বঙ্গবন্ধু, মা আর ভাইয়েরা এবং আরো অনেক প্রিয়জন। ভাই রাসেল আর কোনো দিন ফিরে আসবে না, আপা বলে ডাকবে না। সব হারিয়ে আজ আপনারাই আমার আপনজন। …বাংলার মানুষের পাশে থেকে মুক্তি সংগ্রামে অংশ নেওয়ার জন্য আমি এসেছি। আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে আমি আপনাদের পাশে থাকতে চাই।’ গত তিন দশকের বেশি সময় দেশি-বিদেশি চক্রান্ত ও বিচিত্র প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে তিনি জনগণের পাশেই আছেন। ১৯৮৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০০৭ সালের সামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল পর্যন্ত একাধিক বার বন্দি অবস্থায় নিঃসঙ্গ মুহূর্ত কাটাতে হয়েছে তাঁকে। তিনি লিখেছেন : ‘দেশ ও জনগণের জন্য কিছু মানুষকে আত্মত্যাগ করতেই হয়, এ শিক্ষাদীক্ষা তো আমার রক্তে প্রবাহিত। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এর পর প্রবাসে থাকা অবস্থায় আমার জীবনের অনিশ্চয়তা ভরা সময়গুলোয় আমি তো দেশের কথা ভুলে থাকতে পারিনি? ঘাতকদের ভাষণ, সহযোগীদের কুকীর্তি সবই তো জানা যেত।’ (নূর হোসেন, ওরা টোকাই কেন, পৃঃ ৫৩)

৪. ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশ ও জনগণের কাছে প্রত্যাবর্তনের (জন্মান্তরের) মতো তাঁর দ্বিতীয় প্রত্যাবর্তনও (তৃতীয় জন্ম) ছিল আমাদের জন্য মঙ্গলকর। ২০০৭ সালে ১১ জানুয়ারির পর তাঁর দেশে ফেরার ওপর বিধিনিষেধ জারি করে সামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তাঁকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার সেই চক্রান্ত ব্যর্থ হয়। তিনি দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। কিন্তু ১৬ জুলাই যৌথবাহিনী তাঁকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে ৩৩১ দিন কারাগারে বন্দি করে রাখে। সেসময় গণমানুষ নেত্রীকে গভীরভাবে উপলব্ধি করেছে। তাঁর কারা-ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের উদ্বেগ, গ্রেপ্তারের সংবাদ শুনে দেশের বিভিন্ন স্থানে চারজনের মৃত্যুবরণ, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের উৎকণ্ঠা তাঁকেও উদ্বেলিত করেছিল। কারণ সে সময় আদালতের উঠোনে তিনি ছিলেন সাহসী ও দৃঢ়চেতা; দেশ ও মানুষের জন্য উৎকণ্ঠিত; বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে সত্যকথা উচ্চারণে বড় বেশি সপ্রতিভ। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার সন্ত্রাস, দুর্নীতি, ধর্ষণ ও লুটপাটের মাধ্যমে এদেশকে দোজখে পরিণত করেছিল। নেত্রীকে গ্রেনেড, বুলেট, বোমায় শেষ করতে চেয়েছিল; কিন্তু তিনি ছিলেন নির্ভীক। ২০০১ সালের নির্বাচনোত্তর জোট সরকারের অত্যাচার-নির্যাতন-ধর্ষণ তাঁকে কতটা ব্যথিত করেছিল, তা এখনও বিভিন্ন সভা-সমাবেশের বক্তৃতায় শুনে থাকি আমরা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করে নতুন প্রজন্মকে যথার্থ ইতিহাসের পথ দেখিয়েছেন তিনি নিজেই।

৫. বঙ্গবন্ধু কন্যা, লোকায়ত মানুষের কণ্ঠে উচ্চারিত ‘শেখের বেটি’ শেখ হাসিনা আমাদের প্রজন্মের কাছে কিংবদন্তির নেত্রী। সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা, নদী বিধৌত ঊষর নরম মাটির প্রিয় মুখ গণতন্ত্রের মানসকন্যা এই নেত্রী নিজের সুখ-শান্তি ও জীবনের মায়া ছেড়ে মানুষের মায়ায় আবদ্ধ হয়েছেন। কেবল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন তিনি; তাঁর রয়েছে একাধিক প্রকাশিত গ্রন্থ; লেখক হিসেবেও তিনি খ্যাতিমান। ১৯৯৬-এ যেমন, তেমনি ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে তিনি জনগণের কল্যাণে সমস্ত মেধা ও শ্রম নিয়োজিত করেছেন। অর্থাৎ শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের নির্বাচনি ওয়াদা পূরণ ও ভিশন-২০৪১ অর্জনের লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন। লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে একটি বৈষম্যহীন সমৃদ্ধ উন্নত ডিজিটাল দেশ গড়ে তোলা। অপর দিকে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও ’৭৫-এর ঘাতকেরা ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের উন্নয়নের প্রচেষ্টা ব্যাহত করতে নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে। তাদের লক্ষ্যÑ মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করে জনগণকে বিভ্রান্ত করা। গুম, হত্যা ও নাশকতামূলক কর্মকা-ের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করা; যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করা; বিগত ২০০১-২০০৬-এর জোট সরকারের পাঁচ বছরের লুটপাটের প্রক্রিয়া বজায় রাখা; হাওয়া ভবনের কর্ণধার তারেক জিয়াকে দেশে এনে রাজনীতি করা।

এ পরিস্থিতিতে আমাদের প্রজন্ম শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্মরণ করেছি। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময় আমরা যারা রাজনীতি সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠি তারা তাঁকে গণ-আন্দোলনের নেত্রী হিসেবে দেখেছি, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখেছি, মানুষের দুঃখ-বেদনায় কাতর হতেও দেখেছি। মুক্তিযুদ্ধকালীন কিংবা তার আগের বছরে যাদের জন্ম এদেরই মতো আমিও একজন যখন কেবল এভাবে দেখে এবং গ্রন্থ পাঠ করে ও রাজনৈতিক খবর শুনে আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠি তখন আমাদের প্রজন্মের অন্যেরাও যে তাঁকে সদর্থক মূল্যায়ন করবে এটাই স্বাভাবিক। এজন্য তাঁর নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। কারণ বর্তমান প্রজন্ম থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বঙ্গবন্ধু ও তাঁর আদর্শ অনুসরণ করে যাবে; সৃষ্টি হবে বিশ্বসভার যোগ্য বাংলাদেশ। তাঁর সাফল্য দিনে দিনে আরও বৃদ্ধি পাবে। তিনি সেই ব্যক্তি যিনি ঢাকার নিমতলির আগুনের মধ্যে থেকে উঠে আসা অসহায় মানুষের নিরাপদ আশ্রয় হয়ে উঠেছেন। কতিপয় কুখ্যাত বিডিআর সদস্য কর্তৃক সেনা অফিসার হত্যাযজ্ঞ পরবর্তী পরিস্থিতি সামলেছেন। মা রমিজার কন্যা হয়ে ছুটে গিয়েছেন অজ পাড়াগাঁয়ে। তাঁর অবদান এই ছোট পরিসরে বলে শেষ করা যাবে না। তিনি এদেশে সুন্দর ভবিষ্যৎ নিয়ে জন্মেছিলেন। কিন্তু দুখী রাজকন্যার মতো প্রত্যাবর্তন করেছিলেন বলেই (সেরকম ফিরে আসা আমাদের প্রত্যাশিত ছিল না) আজ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শিক্ষানীতি, নারীনীতি, ফতোয়া প্রদানে বিধিবিধান দিয়েছেন। সর্বোপরি ১৯৭৫ পরবর্তী যারা সংবিধানকে কলুষিত করেছিল তাদের চপেটাঘাত দিয়েছেন ১৯৭২ সালের সংবিধানে ফিরে গিয়ে এবং ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করে। তিনি তাঁর নিজের কর্মের গুণে বিশ্বজনীন নেত্রীর আসন অলঙ্কৃত করেছেন। শেখ হাসিনার আগামী দিনগুলো শুভ হোক; স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে এই প্রত্যাশা আমাদের।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মে, ২০১৪ দুপুর ২:৩০

শামিম ফেরদৌস রাজিব বলেছেন: তড়িত ব্যবস্থা (!) গ্রহনের নির্দেশ দেয়ার পরেও মন্ত্রী মায়ার জামাতা RAB কর্মকর্তাসহ অন্য ঘাতকদের গ্রেফতারে এতো টালবাহানা কেন? নূর হোসেন ভারত ভ্রমনে যাওয়ার পরে, অর্থাত ঘটনার "মাত্র" চারদিন পর সীমান্তে রেড এলার্ট দেয়া হলো কেন? ত্বকি, সাগর রুনির ঘাতকদের মতো এরাও যে "একদম ছাড় পাবেনা" বোঝাই যাচ্ছে। এটাও হাসিনার সার্বজনীন রূপ।

২| ১৪ ই মে, ২০১৪ দুপুর ২:৪৪

নাহিদ২৯ বলেছেন:
আপনি আওয়ামী লীগের অনেক বড় ........................


৩| ১৪ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৪:০৬

ভুয়া প্রেমিক বলেছেন: কাজ কর্ম কিছু করেন? নাকি ব্লগীং করে আওয়ামী ভাতা দিয়ে পেট চালান?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.