নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সঠিক দেশপ্রেম

simple living, high thinking

এম দাস

মত প্রকাশের স্বাধীনতা

এম দাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানব মস্তিষ্কে পরিবর্তন আনে পড়া

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:১৩

যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার ইমোরি ইউনিভার্সিটির গবেষকরা প্রমাণ পেয়েছেন, উপন্যাস পড়ার পর মানুষের মস্তিষ্কে সত্যিকারের পরিবর্তন আসে। তারা দেখতে পান মস্তিষ্কের এ পরিবর্তন কয়েকদিন স্থায়ী হয়। তাদের এ গবেষণার ফল ‘ব্রেন কানেক্টিভিটি’ নামের একটি আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, উপন্যাস পড়ার পর মস্তিষ্কের যে অঞ্চলটি ‘বিশ্রামে’ থাকতে অভ্যস্ত, সে অঞ্চলটিও প্রভাবিত হয়।

গবেষণায় নেতৃত্ব দেন ইমোরি ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর নিউরোপলিসির ডিরেক্টর নিউরোসায়েন্টিস্ট গ্রিগেরি বার্নস। তিনি বলেন, ‘গল্প আমাদের জীবনধারা প্রভাবিত করে। শুধু তা-ই নয়, কিছু ক্ষেত্রে গল্পই মানুষের চরিত্র স্থির করে দেয়। আমরা জানার চেষ্টা করেছি, গল্প কিভাবে মানব-মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে এবং এ প্রভাবের ফল কী।’

নিউরোবায়োলজিক্যাল এ গবেষণায় গবেষকরা ফাংশনাল ম্যাগনেটিক রেসোনেন্স ইমেজিং (এফএমআরআই) পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে শনাক্ত করার চেষ্টা চালান গল্প বা উপন্যাস পড়ার সঙ্গে মস্তিষ্কের কোন কোন নেটওয়ার্ক সম্পৃক্ত থাকে। এর আগের অধিকাংশ গবেষণায় গল্পের প্রভাবকে মানুষের স্বজ্ঞাজাত চেতনার অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে।

এ গবেষণার ফোকাস ছিল ‘বর্ণনামূলক পাঠের স্নায়বিক প্রভাব মস্তিষ্কে কতক্ষণ স্থায়ী হয়, তা নির্ণয় করা।’ ইমোরি ইউনিভার্সিটির ২১ শিক্ষার্থী এ গবেষণায় ভলান্টিয়ার হিসেবে টানা ১৯ দিন অংশ নেন।

প্রতিটি পরীক্ষায় ভলান্টিয়ারদের একই বই পড়তে দেয়া হয়। এটি হচ্ছে ২০০৩ সালে রবার্ট হ্যারিসের বেস্ট সেলার উপন্যাস ‘পম্পেই’। প্রাচীন ইতালির মাউন্ট ভিসুভিয়াসে যে অগ্ন্যুত্পাত হয়েছিল, তার একটি হূদয়ছোঁয়া

বর্ণনা রয়েছে এ উপন্যাসে।

গ্রিগেরি বার্নস বলেন, ‘এ গল্পের একজন নায়ক ছিলেন পম্পেই নগরীর বাইরে। তিনি আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুত্পাত ও আশপাশে কী ঘটছে, তা লক্ষ্য করছেন। পম্পেই নগরীর যে নারীকে তিনি ভালোবাসতেন, তাকে বাঁচানোর চেষ্টাও করেন। কিন্তু অগ্ন্যুত্পাত এতটাই বেড়ে যায় যে, উদ্ধারকর্মীরা বুঝতেই পারছে না, কী ঘটতে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘একটি বাস্তব ঘটনার নাটকীয় বর্ণনা রয়েছে বলেই গবেষকরা এ উপন্যাসটি বেছে নেন।’

প্রথম পাঁচদিন সকালে ভলান্টিয়ারদের মস্তিষ্কের এফএমআরআই স্ক্যান করা হয়। পরের নয়দিন তাদের দৈনিক গড়পড়তা ত্রিশ পৃষ্ঠা হারে একটি করে অনুচ্ছেদ পড়তে দেয়া হয়। তাদের এসব অনুচ্ছেদ সন্ধ্যায় পড়তে বলা হয় এবং সকালে গবেষকদের সামনে হাজির হতে বলা হয়। তারা নির্ধারিত অনুচ্ছেদ পড়েছে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য কয়েকটি কুইজ টাইপের প্রশ্ন করা হয়। এরপর তাদের মস্তিষ্কের এফএমআরআই স্ক্যান করা হয়। নয়দিনে নয় অনুচ্ছেদ পড়া শেষ করার পরের পাঁচদিন সকালেও তাদের মস্তিষ্কের স্ক্যান করা হয়।

এফএমআরআই স্ক্যান পর্যালোচনার পর দেখা গেছে, সন্ধ্যায় পাঠের পর সকালবেলা মস্তিষ্কের বাঁপাশে কানেক্টিভিটির রেশ ঠিকই ফুটে ওঠে সকাল বেলার স্ক্যানিংয়ে। মস্তিষ্কের এ অঞ্চলটি ভাষা গ্রহণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত। শুধু ভলান্টিয়াররা উপন্যাস না পড়ার পরও স্ক্যান করে দেখা গেছে, মস্তিষ্কের বাঁঅংশের কানেক্টিভিটি ঠিকই দৃশ্যমান। এটাকে ‘ছায়া কানেক্টিভিটি’ বলছেন গবেষকরা।

পড়ার পর এ কানেক্টিভিটি মস্তিষ্কের কেন্দ্রীয় সালকাস অঞ্চলেও ফুটে ওঠে। এখানেই রয়েছে মস্তিষ্কের সেন্সরি মোটর অঞ্চল। এ অঞ্চলের নিউরনগুলো দেহের উদ্দীপনার সঙ্গে সম্পর্কিত।

গ্রিগেরি বার্নস বলেন, ‘এখানে একটি মৌলিক প্রশ্ন তুলতে পারেন, পড়ার পর মস্তিষ্কের নিউরালে যে পরিবর্তন দেখা যায়, তা কতদিন স্থায়ী হয়। আমরা বিচ্ছিন্নভাবে পরীক্ষা চালিয়ে দেখতে পেয়েছি, তা কয়েকদিন স্থায়ী হয়। কিন্তু এ পরীক্ষার মাধ্যমে এটা বোঝা যাচ্ছে, মানুষকে তার প্রিয় উপন্যাস মনোযোগ দিয়ে পড়তে দিলে তার প্রভাব মস্তিষ্কের বায়োলজিতে অনেকদিন থেকে যেতে পারে।’ -

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.