![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষের বিবেক বিবেচনা যা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে একচ্ছত্র থাকার একমাত্র স্বকীয়তা সেইসব বৈশিষ্ট্য গুলো যেন কোথায় ক্রমেই বিলীন হয়ে পড়ছে...
যোগাযোগের মাধ্যম বৃদ্ধি পাচ্ছে আমাদের স্বাধীন মতামত প্রকাশের ক্ষেত্র বাড়ছে আমরা এখন প্রতিনিয়ত সরাসরি সম্প্রচার দেখতে পাই আরেকটু রসালো করে বলতে চাইলে বলা যায় আমরা তামাশা দেখি!!! তাই বলে আমি অতি অবশ্যই সরাসরি সম্প্রচারের বিরোধী নই,
আমার শুধু একটাই জিজ্ঞাসা আমাদের অনুভুতির তীব্রতা টুকু কি ক্রমশ ভোঁতা হয়ে আসছে না???
লঞ্চ ডুবির পর লাশ খুঁজতে আসা স্বজনের অশ্রুসিক্ত নয়ন আমাদের এখন আর অপরিচিত নয় বাংলাদেশ খুব সম্ভবত পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে সেই দুর্ঘটনা কবলিত দুর্ভাগা মানুষটির স্বজন প্রথমেই ভাবে লাশ টা পাবো তো!
আমার এখন স্পষ্ট মনে পড়ছে রানা প্লাজার নির্মম ধ্বংস স্তূপের পাশে এক অশিতিপর বৃদ্ধের নিস্পলক অশ্রুসিক্ত চাহুনি দেখেছিলাম, আমার সমস্ত আত্মা শিউরে উঠেছিল, আমি যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন পর্যন্ত আমার মনে হয় না আমি তাঁর সেই অসহায়ত্বের নির্বাক নিস্পলক চাহুনি ভুলে যেতে পারবো কিন্তু কই এখন তো এমন মনে হয় না তবে কি আমার মানবিকতা নামক অনুভুতির মৃত্যু ঘটছে!
কার ও আপন স্বজন হারানোর উৎসব দেখানো টা কি খুব উচ্চ মানসম্পন্ন সম্প্রচারের রেকর্ড! একজন মানুষের স্বজন হারানোর কি নির্মম বেদনা, তাঁর স্বজনের লাশ সচক্ষে দেখার পর অনুভূতিটি কেমন ছিল, সেটা কি পরিমান কষ্টের সেটা একমাত্র সেই বোঝে যে সেই পরিস্থিতির স্বীকার। আমার মনে হয় এটা সম্প্রচার করাটা রীতিমত একটা অপরাধ, কৌতূহল ভাল কিন্তু কৌতূহলের অত্যাচার কি সহনীয়? মোটেও নয় যেমন কবিগুরু বলেছিলেন ভালবাসার অত্যাচার সহ্য করাটা রীতিমত অসহ্য একটি ব্যাপার!
সম্প্রতি বিজ্ঞাপনের বদৌলতে আমাদের সমাজ সংস্কারের কিঞ্চিৎ প্রচেষ্টা চলছে যা সত্যি ই প্রশংসনীয় তারপরও একটা খটকা কিন্তু থেকেই যায়
যেমন ধরুন “ সৌন্দর্য গায়ের রঙে নয়, একটু ফ্রেশ চিন্তা করুন ” আপনার কি মনে হয় তারপর ও কালো মেয়েদের স্বীয় সমাজ শান্তিতে থাকতে দেবে??? তাদের বাঁকা কথা কিছু কম শুনতে হবে?
“ আমি ঘুরি সারা বাংলাদেশ” সত্যিই কি আমরা বুঝি যে আমরা কত সুন্দর একটা দেশে থাকি যদি সত্যিই বুঝতাম তবে একটু ছুটির ফাঁকে সবাই মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত কিংবা সুন্দরবন অথবা কক্সবাজার ঘুরতে না গিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের দার্জিলিং কিংবা কাশ্মীর অথবা আগ্রার তাজমহল দেখতে যেতে এত অস্থির কেন?
আমরা যেখানে পৃথিবীর সর্বত্র সবাইকে সর্বোচ্চ মানের কাপড় সরবরাহ করি কেন আমাদের দেশের কোন নাগরিক বিদেশি নিম্নমানের ঝকমকে কাপড় পরতে না পারার দুঃখে দুঃখিত হয়ে আত্মহনন করবে!
নাটক, চলচ্চিত্রের বদৌলতে আমরা প্রতিদিন দেখছি প্রতিনিয়ত বুঝতে পারছি বৃদ্ধা-শ্রম ঠিক নয়, আমরা অনুধাবন করছি আমাদের এক্কান্নবর্তী পরিবারে ভাঙ্গনের ঘুণপোকা বাসা বেঁধেছে, আমাদের বড়দের প্রতি আমাদের সম্মান বোধের পুরু দেয়ালে বেশ বড় একটা চিড় ধরেছে কিন্তু আমরা সংশোধিত হচ্ছি কই???
সবরকম পরিবর্তন খারাপ নয় আমাদের পরিবার গুলোতে ছোটদের সাথে বড়দের বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক বাড়ছে, রক্ষণশীলতার পাশাপাশি সৌহার্দ্য এক অদ্ভুত মিশেলে আমাদের বড়দের প্রতি মিথ্যা ভয়ের দেয়ালকে ভেঙে দিচ্ছে তা সত্যিই সাধুবাদ পাবার যোগ্য।
আমি জানি আমার এই জিজ্ঞাসু পিপাসার ইতি এখানেই কিন্তু আমি প্রশ্ন করেই যাব যতদিন পারি... যতদিন পারবো।
পুনশ্চঃ ( জনৈক আঁতেল পাবলিক যে হুদাই প্যাঁচাল পাড়ে)
২| ২২ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৪০
জাফরুল মবীন বলেছেন: এটা সত্যি কথা আমাদের অনুভুতির তীব্রতা ক্রমশ ভোঁতা হয়ে যাচ্ছে।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:১২
সুফিয়া বলেছেন: এতে সন্দেহের বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই যে আমাদের অনুভূতি ক্রমশঃ নয়, একেবারে ভোঁতা হয়ে গিয়েছে। বাসে জ্বলন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারতে দেখে আমরা নির্বিকার থাকতে পারে। অব্যব্যস্থাপনার কারণে হাজার হাজার মানুষ নিয়ে লঞ্চ ডুবছে, স্বজনের আহাজারী দেখছি আমরা নিষ্পলক চোখে। অথচ প্রতিরোধ বা প্রতিকারের কোন জোড়ালো উদ্যোগ নেই। তাতেও আমরা নির্বিকার, যতক্ষণ না নিজের উপর চেপে বসছে এ ধরনের দুর্ঘটনা।