![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আকাশের অসীম প্রান্তরে তাকিয়ে থাকো। কখনো নিরাশ হয়ে যেও না। হয়তো একটা বাজপাখিও উড়ে আসতে পারে......
১৯৭১....
অক্টোবর মাসের শেষের দিকে....
.
১ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ৩৫ জনের একটি প্লাটুন নিয়ে সিলেটের শ্রীমঙ্গলের রেল স্টেশনের পাকি ক্যাম্পে রেইড করার সিদ্ধান্ত নেয় ক্যাপ্টেন হাফিজ।
.
ক্যাম্পের এলাকাটির চারদিকেই চা বাগান। এজন্য আক্রমণ করাও সুবিধা। কিন্তু চা বাগানে পথ খুজে পাওয়া খুব কষ্টকর। এজন্য দরকার একজন ভাল গাইড, যে চাবাগানের সবকিছু জানে।
.
গাইডের কাজ খুবই ঝুকিপূর্ণ। কিছুদিন আগে গুতনাবের নামক এক চা বাগানের কুলি গাইডের কাজ করকে গিয়ে গুলি খেয়ে মরেছে।
.
এবার গাইড হওয়ার জন্য পাত্রখোলা চা বাগানের কুলি "হরি" নিজেই এগিয়ে আসে। জীবনের বিপদের কথা জেনেও গাইড হয়ে যায়।
.
হরির আপন বলতে ছিল তার স্ত্রী। হরির স্ত্রী অনাগত সন্তানের জন্য ভারতের শরনার্থী শিবিরে দিনযাপন করছিলো।
.
বিকেলবেলা আক্রমণের জন্য যাত্রা শুরু হবে। দলের টিকিৎসার জন্য সাথে আছে এক মেডিকেলপড়ুয়া ছাত্র।
.
সীমান্ত অতিক্রম করার আগেই খবর এল হরির স্ত্রীর শরীর খারাপ! মেডিকেল পড়ুয়া সেই ডাক্তারকে হরির সঙ্গে শিবিরে পাঠিয়ে দেওয়া হল।
.
এক ঘন্টা পরে ডাক্তার ফিরে এসে দলকে জানালো হরির স্ত্রী মৃত সন্তান প্রসব করে মারা গেছে। হরি শিবিরেই আছে।
.
অপারেশন আর করা সম্ভব না। কারণ গাইড ছাড়া শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পে যাওয়া যাবে না। আর স্ত্রীর মরার সময় অবশ্যই তাকে গাইড হিসেবে নেওয়া যাবে না। অপারেশন হবে না!!!!
.
আধাঘন্টা পর হরি ফিরে এলো। শীর্ণদেহ, কোকড়ানো চুলচুল, বোকাসোকা হরির ঠোটের কোণে সবসময় হাসি লেগে থাকতো। হরি আজ অঝোরে কাঁদছে।
.
কেউ সান্ত্বনা দিতে পারলো না। হঠাৎ হরি বলে উঠলো, "স্যার, বউ মরছে তো কিতা অইছে। চিন্তা কইরেন না। আমিই লইয়া যামু আপনেগো শ্রীমঙ্গল।"
.
সেদিন হরির গাইডেই সফল অপারেশন হইছিলো।
.
সেদিন সবাই এই অশিক্ষিত শ্রমিক হরির দৃঢ় দেশপ্রেম দেখে অবাক হয়েছিলো।
.
হরিকে আর দেখা যায় নি। হরি হারিয়ে গিয়েছিলো....
.
যাস্ট ইমাজিন, নিজের একমাত্র আপন মানুষ, নিজের স্ত্রী, নিজের অনাগত সন্তানের মৃত দেহ, নিজের স্ত্রীর মৃতদেহ রেখে সে কিসের জন্য সেদিন গাইড করেছিল???
.
আজ আমরা শিক্ষিত, তাই অশিক্ষিত হরির মত বুঝি না।
আজ আমরা শিক্ষিত, তাই খেলার সাথে রাজনীতি মেশাই না।
আজ আমরা শিক্ষিত, তাই খেলার সাথে রাজনীতি না মেশালেও ধর্ম মেশাতে পারি।
আজ আমরা শিক্ষিত, তাই আমরা চুষি পাক দেশের ডান্ডু।
আজ আমরা শিক্ষিত, তাই আমাদের বোনেরা আফ্রিদীর খোমা দেখে অগার্জম করে।
আজ সকল দেশপ্রেম ভারত আসিলে উঁপচে পড়ে, চাঁদ তাঁরা আঁকিয়ে মাঠে আসিলেও সে সামান্য বিদ্রুপের স্বীকার হয় না!
.
আমরা শিক্ষিত তাই হতে পারি না একাত্তরের অশিক্ষিত হরি
তথ্য কৃতজ্ঞতা: [জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা- মেজর কামরুল হাসান ভূইয়া]
২| ২০ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৫
মিতক্ষরা বলেছেন: লেখাটি সাবলীল। কিন্তু এতে বিদ্বেষ পুষে রাখার সবক দেয়া হয়েছে। একজন মুসলমান তা কখনও করতে পারে না। হামযা (রা) এর হত্যাকারী যখন ইসলাম কবুল করলেন, তখন আল্লাহর রাসুল (সা) তাকে অনুরোধ করেছিলেন, "তুমি আমার সামনে আর এসোনা।" কিন্তু কোন ঘৃনা বিদ্বেষ পুষে রাখা ইসলাম অনুমতি দেয় না।
এবার খেলার প্রসংগে আসি। ভারতীয় খেলোয়ারদের সাথে ঠিক কি অনুচিত আচরন করা হয়েছে? সফরকারী সব দলই রাষ্ট্রীয় অতিথির মর্যাদা পায়। ভারতীয়রাও তো এ নিয়ে কোন অভিযোগ করে নি। উপরের পোস্টে "আজ সকল দেশপ্রেম ভারত আসিলে উঁপচে পড়ে, চাঁদ তাঁরা আঁকিয়ে মাঠে আসিলেও সে সামান্য বিদ্রুপের স্বীকার হয় না!" কথাটি সম্পূর্ন অনর্থক। বাংলাদেশে পাকিস্তান সব খেলায় হেরেছে। সেজন্য সাধারন মানুষ হয়ত কিছুটা সংযত থাকতেও পারে। কিন্তু খেলার প্রশ্নে বাংলাদেশীরা ভারত কিংবা পাকিস্তান কাউকে ছাড় দেয় না।
২১ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:২১
নেফার সেটি বলেছেন: আমরা ছাড় দিচ্ছি না এই এক বছর। এক বছর আগেও পাকিস্তানের সমর্থকদের সংখ্যা দেখে মনে হত এটা এখনো পাকিস্তান রয়ে গেছে। আর অবশ্যই আমি বিদ্বেষ পুষে রাখবো। পৃথিবীর পাকিস্তান নামক দেশটার নাম উচ্চারণ করার সময় প্রতিবারই থুতু ফেলবো।
৩| ২২ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:১৩
হাসান মাহবুব বলেছেন: অসাধারণ ত্যাগ এবং দেশপ্রেমের কাহিনী। স্যালুট!
৪| ২২ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:২৮
যোগী বলেছেন:
শেষের কথাগুলো কী যে অসাধারন লিখেছেন তা বলে বোঝানো যাবে না। হরি নামের সেই মহান ব্যাক্তি কে স্যালুট!
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৯
স্বপ্নস্বাধীন বলেছেন: একটি শক্তিশালী লেখা।