নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্দ জিনিস দেখবো না , মন্দ কথা বলবো না মন্দ কিছু শুনবো না।

মুন্ন৮৮

আমি গুছিয়ে কিছুই লিখতে পারি না কিন্তু মনে অনেক গল্প জমা আছে, সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা তিনি যেন একদিনের জন্য হলেও আমাকে লেখার ক্ষমতা দান করেন।

মুন্ন৮৮ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সহি পরীক্ষানামা!!!

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৫৬

অনার্স জীবনে আমার বন্ধু ছিল একজন হ্যাঁ ঠিকই দেখছেন মাত্র একজন, আর পুরা ক্লাশের মধ্যে কথা বলতাম দুইটা মানুষের সাথে যার একজন ছিল আমার ঐ ফ্রেন্ডের বেষ্ট ফ্রেন্ড তবে অবশ্য এখন আর নাই তাই এখন আর কথা বলতে হয় না! আর আমার পরীক্ষামেটও ছিল দুইজন একজন সামনে আর একজন পিছনে সামনের জন ছেলে আর পিছনের জন মেয়ে। এরা দুজন দুই প্রজাতির হলেও এদের একটা কমন বৈশিস্ট ছিল এরা মোটামুটি নিজের নাম রোল নাম্বার আর রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ছাড়া বাকি সবই আমার খাতার হুবহু কপি করতো। এর মধ্যে আমার সামনের জনের কিছু বৈশিষ্ট পুরাই ইউনিক, আমার জীবনের প্রথম যেদিন অনার্স পরীক্ষা দিতে যাই সেদিন সাগর কে দেখে ভাবছিলাম পোলাটারে দেখতে তো মাসুম মাসুম লাগে আবার চশমাও পরে নির্ঘাত একটা আইনিস্টাইন টাইপের পোলা যাক সামনে পইড়া ভালই হইলো। মানুষ চিনতে আমি যে কতটা অপারগ সেদিনই প্রমান হইয়া গেলো খাতা দেয়ার পর পরই তার প্রথম প্রশ্ন ছিলো দোস্ত আজকের পরীক্ষার সাবজেক্ট কোনটা!! আমি তো মোটামুটি শিউর হইয়া গেলাম যে আমার কপালে দুঃখ ছিল আছে এবং থাকবে!! পরীক্ষার হলের ভাগ্য কোন কালেই আমার ভালো ছিল না এই ধারনা আমার ইন্টারমিডিয়েট লাইফেই হইয়া গেছে আমার পাশের মাইয়ার কান্দন দেখার পর( এই কাহিনী শুনতে চাইলে পরবর্তীতে আরেক দিন শুনামু)। তো যা বলতেছিলাম সেই পরীক্ষা কোনমতে দেয়ার পর বের হইয়া তারে বললাম ভাই তুমি পইড়া আসোনাই ক্যান?? সে আমারে উত্তর দিলো তার কাছে রুটিন নাই তাই সে জানেনা কোন সাবজেক্ট পরীক্ষা!! বিরাট ইন্টেলেকচুয়াল উত্তর!! আমি তখন দু ধরনের পরীক্ষা সামলানোর মানসিক প্রস্তুতি নিতেছি পরক্ষনেই সে কইলো সামনের দিন থেকে সে পইড়া আসবে আমি তো হাফ ছাইড়া বাচলাম আগ্রহ কইরা আমার ফোন নাম্বার নিলো কইলো পরে ফোন দিবে। তার আগ্রহ উদ্দীপনা দেইখা তারে বিশ্বাস করলাম তার সাথে চ্যাপ্টার ভাগাভাগি করলাম (৭০:৩০) সেও পইড়া আসলো তা কফিডেন্ট দেইখা আমি উৎফুল্ল!! প্রশ্ন দিলো সে লেখা শুরু করলো একটা প্রশ্নের নাম্বার ১২ মোটামুটি ৪-৫ পৃষ্ঠা, আর সাব্জেক্টের নাম যেহেতু রসায়ন সেহেতু এই ৪-৫ পৃষ্ঠার অর্ধেকটাই নানান সাইজের ইকুয়েশন। ঠিক যখন অর্ধেক লিখা হইলো সে দেখি ঝিম মাইরা গেলো আমি কইলাম কিরে কি হইছে? সে কইলো দোস্ত ভুইলা গেছি!! আমি ভাবলাম যাক একটা প্রশ্ন ভুলছে তো কি হইছে আরো তো আছে কিন্তু সে যখন পর পর তিনটা প্রশ্নের বেলায় একই কাজ করলো তখন আমার মাথার মধ্যে পাগলা ঘন্টা বাজতাছে কবি যে ক্যান বলেছেন মানুষ চেনা দায় সেটা আমি বুইঝা ফালাইছি!!! এদিকে সময় পায় অর্ধেক শেষ!! কোন মতে বাকি দুই ঘন্টা লেইখা পার করালাম এর মধ্যে আবার ঘটনা হইলো সে দেইখা দেইখা লিখে আর কতক্ষন পর পর কয় দোস্ত এইটা ক্যামনে হইলো একটু বুঝাইয়া কও তো!! আমি কইলাম ভাইরে আমারে মাফ করেন আমি পরীক্ষা দিতে আইছি ক্লাশ নিতে না!! এই কাহিনী কইরা আমার পরীক্ষা দিতে দিতে এমন অবস্থা হইছে যেই আমি পরীক্ষা দিতে মোটামুটি ভয় পাইতাম না সেই আমি তীব্র আতঙ্ক নিয়া পরীক্ষার হলে ঢুকতাম আর অপেক্ষা করতাম কখন শেষ হয় তারপরো অরে কিছু কইতে পারলাম না!! কিন্তু থার্ড ইয়ারে আইসা আর ধৈর্য রাখতে পারলাম না নিজের পরীক্ষা চরম খারাপ হইতাছে তার উপর আমার চেয়ে খারাপ ছাত্ররাও সামনে পিছনে ভাগাভাগি কইরা ভালো পরীক্ষা দিতেছে আর আমি আছি ফান্দে এমন ফান্দে আছি যে বগার মত কান্তেও পারতেছিনা!!! শেষমেশ একদিন গেলো মাথাডা নস্ট হইয়া ভরা ক্লাশ্রুমে দিলাম ঝাড়ি মেডাম আর স্যাররাও ঝড়ি শুইনা তব্দা খাইয়া রইলো, পরে আমার আর ওর খাতা নিয়া গেলো এরপর থেইকা আর ও আমারে ঘাটায় না। সেই থেইকা আমার পরিক্ষাগুলা মোটামুটি আগের চেয়ে ভালো হয়!! মাস্টার্সে ভর্তির সময় যখন শুনলাম সাগর এই কলেজে ভর্তি হবে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম আর তিতুমীরে ভর্তি হবনা পরে আমার একমাত্র বন্ধু আমারে বুঝাইয়া কইলো যে সে আমার ভর্তির সব কাজ করবে আমার কলেজে যাইতে হবেনা তাই সাগর জানতেও পারবেনা আমি কবে ভর্তি হই বা না হই, ভালো কথা সব কাজ বন্ধু রেজাউল করলো এমনকি সকল কাগজ পত্রের আমার সিগনেচার গুলাও সে করলো মনে খুবই শান্তি নিয়া দিন কাটাইতেছিলাম, বিপত্তি ঘটলো আজকে পরীক্ষা দিতে গিয়া, কারন হলে ঢুইকা দেখি আমার সিটের পিছনেই সাগরের সিট!! সাগর শুকানোর জন্য মাক অভাগার তাকানো লাগে তার চখের এতই পাওয়ার!! আর আমি অভাগার ও অভাগা এত কাহিনী কইরাও এই সাগররে কিছুই করতে পারলাম না!! :( বন্ধুর দিকে তাকাইলাম ইচ্ছা করতাছিলা তার সাথে সংসদীয় ভাষায় কথা কই!!! কিন্তু পারলাম না তার হতাশা মাখা মুখ দেইখা!! কি আর করা জীবনের শেষ পরীক্ষায়ও আমার ভাগ্য জয়ী হইলো। সাগরের ভাষ্যমতে মুন্না তোর কপাল খারাপ তাই আমি এবার তোর পিছনে, আমি শীতল গলায় কইলাম দোস্ত এইবার যদি আমারে সামান্যতম ডিস্টার্ব করছ খোদার কসম তোমার কপালের দশা আমিও খারাপ কইরা দিমু!! সে ভড়কাইয়া গেলো। আজকে পরীক্ষার মাঝখানে দুইবার খোচা দিছিলো আমার শীতল চাউনি দেইখা আর কথা বাড়ায় নাই!! সবাই আমার জন্য দোয়া কইরেন!!!



বিঃ দ্রঃ অনার্স ১ম বর্ষ পরীক্ষার পর থেইকাই আমার চুল পড়া শুরু হইছে এইটার কারন কি সাগর নাকি রসায়ন এইটা এখনো জানিনা!!

বিঃ বিঃ দ্রঃ আজকেও সাগরের প্রথম প্রশ্ন ছিল দোস্ত আজকে কোন সাবজেক্ট পরীক্ষা!!! হে আল্লাহ আমি সাগরের কাছ হইতে মুক্তি চাই!!! এই জনমে আর জাতীয় ভার্সিটিতে পড়ুম না!!!



মুল লেখা

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ২:২৫

মাক্স বলেছেন: আপনের কষ্টে চৌক্ষের পানি ধৈরা রাক্তে পার্লাম্না, কান্তেই আছি কান্তেই আছি :( :(

০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ২:৫৩

মুন্ন৮৮ বলেছেন: আসেন গলা ধইরা কান্দি!! :'(

২| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ২:৪৯

বাগসবানি বলেছেন: এমনে পড়ালেখা কইরে কাম নাই । হাড়ি ঠেলেন গিয়ে ।

০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ২:৫৫

মুন্ন৮৮ বলেছেন: কার হাড়ি?? কিসের হাড়ি???

৩| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০২

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: ইন্টারের কাহিনীডা কন.......


আর মজাই পাইলাম ।

০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ২:৫৬

মুন্ন৮৮ বলেছেন: ধইন্নবাদ! :) কমুনে আরেকদিন!!! :)

৪| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৩৪

উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: ভাই যথেষ্ট মজা পেলুম। ++++

০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ২:৫৭

মুন্ন৮৮ বলেছেন: মজা পাওয়ার জন্য ধন্যবাদ!!! :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.