নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাফি আব্দুল্লাহ

সাফি আব্দুল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা এবং খুলনা-১ঃ

১৮ ই মে, ২০১৫ দুপুর ২:৩৬

[img|http://s3.amazonaws.com/somewherein/pictures/muntrade56/muntrade56-1431938705-d4fb4b9_xlarge.jpg

“এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়” এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে ১৯৭১ সালের মার্চ থেকেই দেশের যুব সমাজের অগ্রগামী অংশ পাকিস্তানি হানাদর বাহিনী বিরুদ্ধে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েছিল। এদের না ছিল যুদ্ধ করার অভিজ্ঞতা, না ছিল অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ। আর অস্ত্রতো ছিলই না। পাকিস্তানি সামরিক জান্তাদের হাতে ছিল ভয়াবহ মারণাস্ত্র। এরপরও এদেশের যুবক মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের জীবনকে তুচ্ছ করে “যার যা কিছু আছে” তাই নিয়ে নিরিহ মানুষ হত্যাকারী পাকিস্তানি আর্মির বিরুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল। ২৫ মার্চ এদেশের জনগণের উপর পাকিস্তানি হায়েনারা ঝাপিয়ে পড়লে শুরু হয় অসংগঠিত মুক্তিযুদ্ধ। এরপর আস্তে আস্তে শুরু হয় সংগঠিত মুক্তিযুদ্ধাদের আক্রমন। সারা দেশের আনাচে কানচে শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বপূর্ণ প্রতি আক্রমন। এর সব বীরত্বগাথা মুক্তিযুদ্ধের ইতহাসে হয়ত লিপিবদ্ধ হবে না। কিন্তু তা করা যেত, করলে জাতি উপকৃত হতো। ভবিষৎ প্রজন্ম অনুপ্রনিত হতো। এরকম কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার কথা জানাতে ইচ্ছা হলো তাই এ লেখা।

১) মুক্তিযোদ্ধার জোতিষ কুমার মন্ডল ছিলেন খুলনা পলিটেকনিক ইন্সিটিটিউটের ছাত্র।
২) মুক্তিযোদ্ধা তপন কুমার বিশ্বাস, ছিলেন ছাত্র।
৩) মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ মোল্লা ছিলেন খুলনা সিটি কলজের ছাত্র।

২৫ মার্চ এর অনেক আগে থেকেই খুলনা সার্কিট হাউজ পাকিস্তান বাহিনীর দখলে নেয়। ঐ রাত থেকে তারা শুরু করে ট্রাক এবং জীপে করে টহল। শুরু করে গনহত্যা। প্রধান প্রধান সড়কে যাকে যেভাবে পেয়েছে তারা গুলি করে হত্যা করতে থাকে। এরই মধ্যে জোতিষ এবং তপন পরিকল্পনা করেন পাকিস্তানি সামরিক বহরের উপর হাতবোমা মারার। সার্কিট হাউজের পাশে কোর্ট ও জেলা প্রশাসকের বিল্ডিং এবং এর পাশে এসপির অফিস। ২৭ মার্চ এই অফিসের সামনে এই দুই সাহসী মুক্তিযোদ্ধা পাকিস্তানি সামরিক যানের উপর হাতবোমা ছোড়েন এবং পালিয়ে যান। যেহেতু হাতে তৈরী বোমা তাই পাকিস্তানিদের ক্ষয়ক্ষতি তেমন একটা হয় নি। তবে প্রতিরোধটা জানান দিতে পেরেছিলেন। এই দুই মুক্তিযোদ্ধা এরপর অস্ত্রপাতি জোগাড় করতে নিজস্ব উদ্দ্যোগে ভারতে চলে যান। সেখানে তারা প্রথমে ভারতের সিপিএম এর এক এমপির সাথে যোগাযোগ করে অস্ত্র পেতে ব্যার্থ হয়ে তার চলে যান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ওখানে ছাত্র নেতা এবং শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করলে অল্প কিছু অস্ত্র এবং ঔষধ যোগাড় করে দেশে ফিরে আসেন। এরপর ভারতে ট্রেনিং প্রাপ্ত হয়ে যুদ্ধ করতে থাকেন।

মুক্তিযুদ্ধের এক পর্যায়ে ২৯ নভেম্বর, ১৯৭১, কামান্ডার বিনয় সরকারের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ, বাটয়াঘাটার বার আড়িয়া রাজাকার ক্যাম্প দেখলের জন্য আক্রমন করলে, সে গ্রুপে জোতিষ কুমার মন্ডল এবং আব্দুল আজিজ মোল্লা অংশ নেন। রাজাকাররা ওখানে ওয়াপদা বিল্ডিং এর দোতালায় অবস্থান করছিল। আর মুক্তিযোদ্ধারা ওয়াপদার রাস্তার উপর অবস্থান নেয়। যার ফলে রাজকারা বিল্ডিং এর উপর থেকে টার্গেট করে জোতিষ এবং আজিজ মোল্লাকে গুলি করলে এই দুই মুক্তিযোদ্ধা গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। এরপর খুলনার ডুমুরিয়া থেকে আরো মুক্তিযোদ্ধা যোগ দিলে রাজাকারা ক্যাম্প ছেড়ে পলিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে চলে যায় ক্যাম্পটি।
এভাবেই আনেক মুক্তিযোদ্ধার মত জোতিষ কুমার মন্ডল এবং আব্দুল আজিজ মোল্লা দেশ মাতৃকার স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করেন। এবং তপন কুমার বিশ্বাস অনেক পরে ক্যান্সাররে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
------- তথ্য এবং ছবি। জনাব আবু জাফর, খুলনা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.