সোনামনিদের নানা কথা

২৮ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:০৪

আমাদের এক ভাগনি ঈদের দিনে বাবার সঙ্গে এসেছে। তাকে ঈদি দিতে গেলে, তার স্বরে না, না করে উঠল। বলল, আমি ঈদি নিবো না। আমি ঈদি নেবো না। আমার ব্যাগ ভরে গেছে। টাকা রাখার জায়গা নেই।
ত্রিকোণা খুদে একটা ব্যাগ ছিল মামনিটির হাতে। দু'টো নোট রাখার পর সেখানে আর খালি জায়গা নেই।
সে চলতি বছর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্কলারশিপ পেয়েছে। ঢাকার একটি ইংরেজি দৈনিকের দুঁদে সাংবাদিক সে মামনি এখন সাংবাদিকতায় মাস্টার্স করতে যাওয়ার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত।
***
আমার বড় ছেলের বয়স তখন তিন বা চার। তাকে নিয়ে বাইরে হাঁটছি। এ সময় মেঘের ডাক শোনা গেল। ও জানতে চাইলে, -বাবা 'ওতা' কিসের 'ছব্দ'?
-মেঘ ডাকছে। বললাম।
-ও। মেঘ 'বিস্তিকে' ডাকছে! সাথে সাথে দ্বিধাহীন ভাবে নিজ পাণ্ডিত্যপূর্ণ মতামত জানাল সে।
***
আমাদের এক সহকর্মী জানালেন, তার তিন বা চার বছরেরে কন্যটি তেহরান থেকে দেশে ফিরে সাপ দেখে বলল, -দ্যাখো দ্যাখো। একটা 'দড়ি' গড়িয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে।
***
আমাদের আরেক সহকর্মীর মেয়ের বয়স যখন তিন বা চার তখন তার এক ছেলে হয়। ভাইকে 'শিশ' করতে দেখে একদিন মেয়েটি অবাক হয়ে জানতে চাইলো, -বাবা ও 'আঙ্গুল' দিয়ে শিশ করছে কেনও!
***


টাকা পয়সার টানাটানিতে জেরবার। গিন্নি এবং আমি হিসাব কষছি। সে সময়ে ছোট ছেলে বুদ্ধি যোগাল। বলল: -বাবা। আমরা একটা 'প্রিন্তার' কিনে 'তাকা' ছাপিয়ে নেই না কেনও! তখন ওর বয়স বড় জোর চার।
***
আমাদের এক সহকর্মীর তিন বা চার বছরের ছেলে একটা কাজ অনেক বার চেষ্টা করেও করতে পারল না। শেষপর্যন্ত সে বলল, -বাবা আমি 'পারতে' পারলাম না।
***
আমার বড় ছেলেকে 'বা! বা! ব্ল্যাকশিপ' ছড়াটি মুখস্ত করানোর কসরত করছি। আমি যতবারই বলছি, -'বা! বা! ব্ল্যাকশিপ।
বালকটা বলছে- 'বাবা! বাবা! ব্ল্যাকশিপ!' কয়েক বার শুধবার চেষ্টা করলাম। সে চেষ্টা ব্যর্থ হলো। এ ভাবে নিজ আত্মপরিচয় প্রকাশিত হতে দেখে শেষ পর্যন্ত আমি ভড়কে যাই। হালই ছেড়ে দেই। শেষপর্যন্ত মুখস্ত করানো হলো না ছড়াটা।

২ টি +০/-০