| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নাহিদ শামস্ ইমু
ভীষণ কল্পনাপ্রবণ একজন মানুষ আমি। কল্পলোকের ক্যানভাসে ছবি এঁকে, মনোজগতের সুবিশাল হাইপার স্পেসে নিজের এক মহাবিশ্ব সৃষ্টি করে আমি হয়েছি ঈশ্বর। যখন প্রচন্ড কষ্টে কাঁদতে ইচ্ছে করে, তখন নিজের সৃজিত মহাবিশ্বের অসীম গ্যালাক্সিপুঞ্জ দেখে গর্বিত অনুভব করি। অতঃপর স্বপ্নীল জগতের দিকে তাকিয়ে উচ্চারণ করি দৈব বাণী- "নিশ্চই তোমাদের সৃষ্টিকর্তা মহান। দুঃখ কিংবা কষ্ট তাকে স্পর্শ করে না।"
রফিক সাহেব অফিস যাবার জন্য গাড়ি বের করেছিলেন। ড্রাইভ করছিলেন তিনি নিজেই। হঠাৎ কোত্থেকে যেনো 'মুরগি পার্টি'র একদল লোক হকিস্টিক, লাঠি-সোটা নিয়ে ছুটে এলো। তারপর প্রচন্ড আঘাতে ভেঙ্গে ফেলবো গাড়ির সবগুলো কাঁচ। রফিক সাহেব কোনমতে বেরিয়ে পড়লেন। উন্মত্ত ক্যাডাররা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিলো... বেশ কিছুদিন পর রফিক সাহেব গেলেন থানায়। তিনি ‘মুরগি পার্টি’র বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিলেন। আইন অনুযায়ী চাইলেন ক্ষতিপূরণ। পুলিশ আইনত ব্যবস্থা নিলো। মুরগি পার্টির উর্ধ্বতন নেতা-কর্মীদের কাছে চলে গেলো নোটিশ। অবশেষে মুরগি পার্টি নিজেদের ডিফেন্ড করতে ব্যর্থ হল। রফিক সাহেব ক্ষতিপূরণ হিসেবে পেয়ে গেলেন কয়েক লক্ষ টাকা।
নাহ, উপরের গল্পটি পুরোপুরি কাল্পনিক। এর কোন বাস্তব ভিত্তি নেই... কোনদিন হবেও না। কারণ, এ দেশে আইনের শাসন নেই। একটি দলের ক্যাডাররা এসে আমার গাড়ি কিংবা বাইকে আগুন ধরিয়ে দেবে, আমার কিচ্ছু করার থাকবে না। আমি দলটির বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিতে পারি না। আমি কখনো এর ক্ষতিপূরণ পাবো না। এ ব্যাপারে দেশে কোন আইন নেই! কোন সরকার এই আইন বলবৎ করার চেষ্টাও করবেন না। ভয় হয়, তাদেরও তো একদিন বিরোধী দলে যেতে হবে... তখন যদি গাড়ি পোড়াতে না পারে? আবার আইন থাকলেও তার প্রয়োগ কখনো হবে না! কে যাবে এত কষ্ট করে মামলা করতে... ক্ষতিপূরণ চাইতে... মুরগি পার্টি হয়তো বলবে, গাড়িটা তারা পোড়ায় নি। সরকার পক্ষ পুড়িয়েছে... ইত্যাদি। সবমিলিয়ে বলতে হয়, হরতালে সবই বৈধ... সবই আইনসিদ্ধ।
যুদ্ধে যেমন প্রতিপক্ষের নারী ধর্ষণ ‘জায়েজ’ (!), তেমনি হরতালেও সম্পদ ধ্বংস এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতি জায়েজ!
Everything is fair in Hartal and War…
©somewhere in net ltd.