![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভীষণ কল্পনাপ্রবণ একজন মানুষ আমি। কল্পলোকের ক্যানভাসে ছবি এঁকে, মনোজগতের সুবিশাল হাইপার স্পেসে নিজের এক মহাবিশ্ব সৃষ্টি করে আমি হয়েছি ঈশ্বর। যখন প্রচন্ড কষ্টে কাঁদতে ইচ্ছে করে, তখন নিজের সৃজিত মহাবিশ্বের অসীম গ্যালাক্সিপুঞ্জ দেখে গর্বিত অনুভব করি। অতঃপর স্বপ্নীল জগতের দিকে তাকিয়ে উচ্চারণ করি দৈব বাণী- "নিশ্চই তোমাদের সৃষ্টিকর্তা মহান। দুঃখ কিংবা কষ্ট তাকে স্পর্শ করে না।"
‘ইয়াম্মি! চিকেনটা সেইরকম।‘- এক গাল হেসে জানালো মারুফ।
‘তুই তো আছিস ক্রিসপি নিয়া। চিলি চিকেনটা তো খেয়ে দেখিস নাই? অসাম সালা!’- বলল আবিদ।
‘ধুর! তন্দুর রুটিটা শক্ত হয়ে গেছে। আরেকটু নরম করে আনতে পারলি না?’ মুখ বাঁকা করে মন্তব্য করে কাশফিয়া।
শুভ্র হাসতে হাসতে জবাব দেয়- ‘আমি তো ফ্রাইড রাইস আনাতে চাইছিলাম। তোরাই তো এই জিনিস......’
‘ব্যাপার না। প্রন চিলিটা এত্তগুলা জোসস। তোরা যারা চিকেন নিয়া মাততেছিস, বিলিভ মি গাইজ... ইউ মিসড ইট। চিংড়ি ইজ দ্যা রিয়েল ফুড!’
‘আমার বার্গারটা কি বানের জলে ভেসে আসছে? তিনি লেয়ার বিশিষ্ট চিকেন ব্রেস্ট! ইভেন বেটার দ্যান দি জিঞ্জার বার্গার অফ কে এফ সি......’ বড় করে আরেক কামড় বসানোয় বাকি কথাগুলো আটকা পড়ে গেলো মিনহাজের।
শুভ্র বলল- ‘এতগুলা আইটেম আনলাম, কোনটা ছেড়ে যে কোনটা খাবো বুঝতেসি না... ‘
‘সবগুলাই খাইস, শুধু আমার চিলিতে হাত দিস না।‘ আবিদ জবাব দেয়।
অনেকক্ষণ ধরেই চুপ করে বসে আছে আইরিন। ব্যাপারটা লক্ষ্য করে জিজ্ঞেস করল মিনহাজ- ‘ওই তুই খাস না ক্যান? অনেকক্ষন ধরে তো কথাও বলতেছিস না। ব্যাপার কি?’
হঠাৎ মুখ বিকৃত করে ফেলে আইরিন। ‘হুহু... হুহু... হুহু (আহ্লাদি ভঙ্গিতে কান্নার শব্দ), আমি শর্মা খাইতে চাইছিলাম। তোমরা কেউ শর্মা আনো নাই ক্যান? শুভ্র, তুই একটা কুত্তা। তুই জাহান্নামে যাবি। হুহু...হুহু... হুহু (আবারও ঢঙ্গিলা কান্নার শব্দ)
ড্রাই রোস্টেড বিফের প্যাকটা এগিয়ে দিয়ে আইরিনকে সান্তনা দেয় রবিন। ‘কান্দিস না দোস্ত। এইটা খাইয়া দ্যাখ। শর্মার দুঃখ ভুইলা যাবি। মাইরি বলতেছি।‘ ওর কথা শুনে হেসে ফেলে বাকিরা।
বন্ধুদের ছোট্ট দলটি গোল হয়ে বসে ইফতার করছে। খানিকটা দূরে দাঁড়িয়েই নীরবে এই দৃশ্যটি অবলোকন করছে তিনটে প্রাণী। প্রাণী তিনটির চোখেমুখে আগ্রহ, উত্তেজনা, আকাঙ্ক্ষা, লালসা। আছে অপেক্ষা, কখন ওই মানুষগুলোর খাওয়া শেষ হবে। নিশ্চই কিছু না কিছু উচ্ছিষ্ট রেখে যাবে। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে গিয়ে মহানন্দে সেসব সাবাড় করে দেবে ওরা। চেবানো হাড্ডি, হাড্ডির সঙ্গে অলক্ষ্যে লেগে থাকা খানিকটা মাংস, চেটেপুটে খাওয়ার পর অবশিষ্ট ঝোল, সসের দাগ, বার্গার থেকে অসাবধানে পড়ে যাওয়া এক টুকরো শসা কিংবা টমেটো! আহ, চমৎকার একটা ভোজন হবে আজ। ওরা তাই ঘাপটি মেরে বসে আছে অদূরে। ওরা একে অপরের বন্ধু নয়, আত্মীয় নয়। বুদ্ধিমত্তা, চিন্তার পরিধি এবং শারীরিক গঠনের হিসেবে আকাশ-পাতাল তফাত ওদের। অথচ, আজ... আজ ওদের মধ্যে আর কোন পার্থক্য নেই! ওরা, তিনটে প্রাণী- একটি হল শহুরে নোংরা কাক, আরেকটি হল কুকুর, আর অন্যটি একজন শিশু। পথশিশু!
আগামীকাল পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। আমরা যারা স্বচ্ছল, তাদের কাছেই এই ঈদ মানে 'আনন্দ', সত্যিকারের আনন্দ। হাজার টাকার দামি পাঞ্জাবি পরে আমরা ঈদের নামাযে শরিক হব, পোলাউ-রোস্ট-বিরিয়ানি কিংবা চাইনিজ-বুফে প্রভৃতি খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলবো, ফ্যান্টাসি কিংডম কিংবা ওয়াটার পার্কের চমৎকার সব রাইডে চড়ে ভয়-আনন্দ-উত্তেজনা মেশানো 'আআআআআআআআ...' চিৎকারে মুখরিত করে তুলবো। কিন্তু ওই পথশিশুগুলো? ওরা ঈদ কিভাবে কাটাবে? ওরা কি নতুন পোশাক পেয়েছে? ভালো খাবার পাবে ওরা? বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগে পথশিশু ও দুস্থদের মধ্যে নতুন জামা ও খাবার বিতরণ করা হয়ে থাকে। তারপরও সারা দেশে দুস্থ ও পথশিশুদের এক বিরাট অংশ ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত থাকে। আমরা কি এমন একটা সমাজের স্বপ্ন দেখতে পারি না, যে সমাজে কোন পথশিশু থাকবে না। একজন মানুষও রাস্তায় শুয়ে থাকবে না, উচ্ছিষ্ঠ খেয়ে বেঁচে থাকবে না। পারি না এমন একটা সমাজ বানাতে?
সে যাই হোক, সবাইকে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের অনেক অনেক শুভেচ্ছা। ঈদ কাটুক ঈদের মতই।
২৯ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৬
নাহিদ শামস্ ইমু বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। স্যরি বলার কিছু নেই। আপনি উত্তম কথাই বলেছেন। যে কথাগুলো বলেছেন তার সবগুলোই সত্যি।
তবে কি জানেন ভাই? এ দেশের মানুষ ঘুষ খায়, দূর্নীতি করে, সন্ত্রাস করে, গরীবের সম্পদ লুট করে... হর্তাকর্তারা দেশের ভাল চায় না... সবাই নিজের আখের গোছাতে ব্যর্থ- এসব কথা আমরা সেই ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছি এখনও শুনছি। আমরা হাত-পা গুটিয়ে বসে থেকে অন্যদের সমালোচনটা করে যাচ্ছি, এটাও সত্যি। এই হর্তাকর্তারা যেমন কাজের কাজ করছে না, তেমনি আমরাও কিন্তু কাজের কাজ করছি না। একটা গল্প বলব শুনবেন?
"পাঁচজনের একটা দল একবার গভীর জঙ্গলে ঘুরতে বেরিয়েছিলো। প্রতিরক্ষার খাতিরে সবার হাতেই ছিলো একটি করে রাইফেল। হঠাৎ তারা দেখতে পেলো অনেকখানি দূর থেকে একটা বাঘ ধেয়ে আসছে। পাঁচজনই তখন হতভম্ব। এদের মধ্যে একজন হঠাৎ মন্তব্য করল- 'আপনারা কেউ কাজের কাজ করেন না। কারোরই বুকে সাহস নেই। রাইফেল হাতে থাকতেও গুলিটা করছেন না কেন?" দ্বিতিয়জনই একইরকম মন্তব্য করল- "আরে ভাই গুলিটা আপনিও তো করছেন না। আপনি এত কথা বলেন কেন?" তখন তৃতীয় লোকটির মন্তব্য- "আরে ভাই আপনারা দু'জনের কেউই তো কাজের না। গুলিটা এবার করে ফেলুন। নাহলে এখানেই মারা পড়ব।" চতুর্থ এবং পঞ্চম দু'জনই একইভাবে অন্যদের ঘাড়েই দোষটা চাপালেন। শেষমেশ যেটা হল ৫ জনই বাঘের পেটে চলে গেলেন। আমাদের ব্যাপারটা হল ঠিক তেমন। আমরা একটা পক্ষ ঘুষ-দূর্নীতি করে টাকার পাহাড় গড়ছি, আর অন্য পক্ষটি প্রথম পক্ষে সমালোচনায় ব্যস্ত আছি (যেমন ধরুন আপনি)। আবার আরেকটা পক্ষ এই দুই পক্ষেরই সমালোচনায় ব্যস্ত আছি (যেমন আমি)। এভাবে তো হবে না ভাই। এভাবে কোনদিন পরিবর্তন আসবে না।
২| ২৯ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:২১
সাইফুল ইসলাম নিপু বলেছেন: পথশিশু আসে কোথা থেকে?
কিভাবে জন্ম হয়? জন্ম দেয়ার আগে একবার তাদের বাসস্থান আর খাবার এর ব্যাপারটা ভাবা হয়?
-----
এদের সাহায্য করলেও বিপদ, না করলেও বিপদ------ সাহায্য করলে এরা ভিক্ষাকেই পেশা হিসেবে ভাববে।
জিনিসটা একটু জটিল। সরকারি ভাবে পার্মানেন্ট ব্যবস্থা দরকার এদের জন্য।
২৯ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৫
নাহিদ শামস্ ইমু বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আমরা সবাই জানি যে পথশিশুরা সমাজের সবচেয়ে নিম্নস্তরের অংশটি থেকে উঠে আসে যারা নিজেদের মৌলিক চাহিদাগুলো মেটাতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। পথশিশুদের জন্ম দেবার আগে এদের মা-বাবা কখনই খাবারের ব্যাপারটা ভাবে না, এর কারণ তারা অশিক্ষিত। জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি কিংবা পরিবার পরিকল্পনার ব্যাপারগুলো তাদের জানা নেই।
প্রথমতঃ আমি কিন্তু আমার পোস্টে দান-খয়রাতের কথা বলি নি। একটা দেশের কথা বলেছি, যে দেশে কোন পথশশিশু থাকবে না। সেই কাজটা জটিল, সন্দেহ নেই। আমাদেরকে অনেকগুলো ব্যাপার খুব ধীরে ধীরে নিশ্চিত করে তুলতে হবে। প্রথমতঃ শিক্ষিত জনগোষ্ঠির সংখ্যাটা বাড়াতে হবে। আপনাকে আমি খুব ছোট্ট একটা প্রশ্ন করি। আচ্ছা, আমাদের দেশে তো প্রাথমিক শিক্ষা অবৈতনিক, তাই না? যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে ঢাকা শহরে এত এত বাচ্চা ছেলে-মেয়ে রাস্তা-ঘাটে পড়ে আছে, এদের শিক্ষার কথা কেউ ভাবছে না? কেউ এদেরকে স্কুলে ভর্তি করছে না কেন? কোন সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা কি কখনো এদেরকে বলেছে যে 'আয়, তোদের পড়াশোনা শেখাবো?' একটা ব্যাপার ভাবুন- এই পথশিশুরা যদি শিক্ষিত না হয় তাহলে কি হবে জানেন? এরা বড় হয়ে বিয়ে-শাদি করে পথশিশু জন্ম দেবে! কিন্তু আমরা যদি এদেরকে মোটামুটি শিক্ষা-দীক্ষা দিতে পারি তাহলে এরা আর পথশিশু জন্ম দেবে না! আমরা কি পথশিশু জন্ম হবার এই চেইনটা আটকাতে পারি না? জানি, আপনি হয়তো ভাবছেন- যে বাচ্চাগুলো খেতেই পায় না, তাদের আবার শিক্ষা! তাহলে খেতেও দেয়া হোক। ঢাকা-চট্টগ্রাম শহরগুলোতে বেশ কয়েকটা আবাসিক স্কুল করা হোক যেগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাচ্চাকে খাওয়া-দাওয়া এবং পড়াশোনা করানো হবে। আর বস্তিতে যারা বাস করছে সেসব নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোকে তালিকাভুক্ত করতে হবে। তাদেরকেও গণস্বাক্ষর কর্মসূচির আওতায় আনা যায়, পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক টিপস দেয়া যায়! তাহলে এরা আর অধিক হারে পথশশু জন্ম দেবে না। এই অভিশপ্ত চেইনটাকে আমরা আটকে দিতে পারবো। পাশাপাশি পুরো একটি পথশিশু প্রজন্মকে মোটামুটিভাবে শিক্ষিত করে তুলতে পারলে তারাও আর বড় হয়ে পথশিশুদের জন্ম দেবে না। আমি জানি, আমি যেভাবে বলছি ব্যাপারটা মোটেও ততটা সহজ নয়। হয়তো এর মধ্যে অনেকগুলো 'কিন্তু' খুঁজে বের করা যাবে, 'এটা করলে হ্যান হবে, ওটা করলে ত্যান হবে' প্রভৃতি বলা যাবে। But something has to be done! আমরা সবাই যদি 'জিনিসটা জটিল' বলে চুপচাপ বসে থাকি- তাহলে ভাই এই সমস্যার সমাধান কোনদিন হবে না!
শুভকামনা রইলো।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:০৯
গোবর গণেশ বলেছেন: ভাই,,, কিছু মনে কইরেন না। আগেই সরি---------
মঞ্চে উঠে মাইকের সামনে কাউকে বড় বড় ভাষণ দিতে দেখলে মন চায় ধইরা থাপড়াইতে।
বলতে চাই, আসলেই কি এমন কেউ আছে যারা সত্যিই নিঃস্বার্থভাবে পরোপকারী।
দেখুন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন প্রতিবাদ সমাবেশ, মানব বন্ধন ইত্যাদি বিভিন্ন আয়োজন চলতেই থাকে। প্রশ্ন হলো যারা এসব প্রতিবাদ সমাবেশ বা মানব বন্ধনে অংশ নিয়ে বড় বড় দাবী তুলে সমাজ তথা জাতির বন্ধু সাজার অভিনয় করেন তারা কি আসলে মন থেকে সেটা চান? আমি বিশ্বাস করিনা।
একটু ভাবুন তো সাগর-রুনী, রানা প্লাজা, হলমার্ক, ডেসটিনি............ ইত্যাদি বিষয়গুলোর কি কোন সমাধান হয়েছে? হবেনা। আসলে আমরা কেউই তা চাইনা। মুখে মুখে শুধু বলার জন্য বলি। যারা ঘুষ খায় বা দূর্নীতি করে, সন্ত্রাস করে, দেশের বা গরীবের সম্পদ লুট করে তারা কি এ-জাতীয় কর্মকান্ডের বিপক্ষীয় আন্দোলনে যোগ দেয়না? হ্যাঁ তারাই দেখবেন সবার সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে বা মঞ্চে চড়ে মাইক ফাটিয়ে এসবের বিরুদ্ধে ভাষণ/বক্তৃতা দিচ্ছে।
কিছু মনে করবেন না। আবারো সরি।