![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৯৩ সালে আওয়ামী লীগের সাথে ধর্মব্যবসায়ী জামাত একাত্ব হয়ে সরকার তথা বিএনপির বিরুদ্ধে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছিল। সেই নির্বাচনের পর তাদের সে জোট হারিয়ে গেছে। অতঃপর ধর্মব্যবসায়ী জামাত জোট বাধে বিএনপির সাথে। ১/১১ সময় পার করে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বলে, তারা ক্ষমতায় এলে যুদ্ধাপরাধীর বিচার করবে। আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে ধর্মব্যবসায়ী জামাতের একাধিক নেতাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জেলে ঢুকিয়েছে। অনেকে আবার অভিযুক্তও হয়েছে।
সরকার ধর্মব্যবসায়ী জামাতের সাথে সমঝোতা করে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে একঘরে করার চেষ্টা করছে। এ দলটিকে বাইরে রেখে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব আছে এমন অন্য সব দলকে সঙ্গে নিয়ে নিজেদের সরকারের অধীনে নির্বাচনের ছক করেছে আওয়ামী লীগ, অভিযোগ বিএনপি'র।
ছক অনুযায়ী বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের প্রধান শরিক ধর্মব্যবসায়ী জামাতকে একতরফা নির্বাচনে জোটের বাইরে পৃথকভাবে অংশগ্রহণ করানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। এ প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়েছে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে।
চূড়ান্ত সমঝোতা হয়ে গেলে যে কোনো মুহূর্তে ধর্মব্যবসায়ী জামাতের দীর্ঘ দুই বছর ধরে বন্ধ থাকা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দরজা খুলে যাবে। শুরু হবে দেশব্যাপী ধর্মব্যবসায়ী জামাত-শিবিরের স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মতৎপরতা। নির্বাচনেও অংশ নেবে তারা। তবে তা ১৮ দলীয় জোটের অধীনে নয়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছক অনুযায়ী, আলাদাভাবে। বিনিময়ে সারা দেশে সরকারের জুলুম-নির্যাতন ও হামলা-মামলার খড়গ থেকে রেহাই পাবে ধর্মব্যবসায়ী জামাত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা। এমনকি যুদ্ধাপরাধের দায়ে কারান্তরীণ নেতাদের বিচার প্রক্রিয়ার উপরও ইতিবাচক একটা প্রভাব পড়তে পারে এই সমঝোতার পর।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ধর্মব্যবসায়ী জামাত নেতা আবদুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসির দন্ড- দেয়ার প্রতিবাদে ধর্মব্যবসায়ী জামাতের হরতাল চলাকালেই বাংলাদেশ নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত রবার্ট গিবসনের সাথে এক গোপন বৈঠক করেছে ধর্মব্যবসায়ী জামাতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুর রাজ্জাক।
সূত্র জানায়, হরতাল চলাকালেই বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত রাষ্ট্রদূতের বাসায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ধর্মব্যবসায়ী জামাত নেতা সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের কথা অস্বীকার না করে বলে, এখনো এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের সংগঠনের দুঃসময়ে সহযোগিতার পরিবর্তে অবজ্ঞা প্রদর্শনের অভিযোগ করে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে সে।
এ ছাড়াও ১৮-দলীয় জোটের আরও কয়েকটি শরিক দলের নেতাদের সঙ্গেও মহাজোটের দেনদরবার চলছে বলে জানা গেছে। তারাও যে কোনো মুহূর্তে বিএনপি জোট ছেড়ে চলে আসতে পারে বলে আশা করছে ক্ষমতাসীন দল। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে শেষ পর্যন্ত বিএনপির ভেতর থেকেও একটি অংশ এসে আওয়ামী লীগের দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যোগ দিতে পারে বলেও সরকারের পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে। তাছাড়া জাতীয় পার্টি ও এরশাদ তো মহাজোটেই আছে। তবে বিএনপির সিনিয়র নেতারা মনে করেন, ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য আওয়ামী লীগ এ ধরনের চেষ্টা করতেই পারে। কিন্তু‘ শেষ বেলায় এসে আর কোনো ওষুধেই কাজ হবে না বলে মনে করে তারা। সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো এসব তথ্য জানিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলে, 'সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করছে ধর্মব্যবসায়ী জামাতকে ১৮-দলীয় জোট থেকে বের করে নিতে। নানা রকম প্রলোভনও দেখাচ্ছে। কিন্তু‘ ধর্মব্যবসায়ী জামাত শেষ পর্যন্ত যাবে কিনা সেটা তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। তবে এ ব্যাপারে নিজের দলের নেতা-কর্মীদের সজাগ থাকারও আহ্বান জানায় সে ত।
দলের স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য মির্জা আব্বাসও সম্প্রতি প্রকাশ্য এক সভায় দলের ভেতরে ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয় রয়েছে বলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনে। সে বলে, বিগত ওয়ান-ইলেভেনের সময়ের মতো আবারও দল ভাঙার ষড়যন্ত্রে কতিপয় নেতা সচেষ্ট। সে বলে, এদের কাছ থেকে সতর্ক থাকতে হবে সবাইকে।
বিএনপির সিনিয়র আরেক নীতিনির্ধারক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলে, সরকার যত চেষ্টাই করুক না কেন, আর ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। সে বলে, সীমাহীন দুর্নীতি আর অপকর্মের কারণে সরকার এমনভাবে জন বিছিন্ন হয়ে পড়েছে, এখন চারদিকে অন্ধকার দেখছে। কাজেই সরকার হয় জনদাবি মেনে নেবে, না হয় পতনের সম্মুখীন হবে।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এম মোরশেদ খান বলে, 'জামায়াতে ইসলামী কি করবে-না করবে জানি না। তবে এতে আর সরকারের কোনো লাভ হবে না। কারণ, গত পৌনে পাঁচ বছরের বিলবোর্ড মার্কা উন্নয়ন আর সীমাহীন লোভ-লালসার তোড়ে এই সরকারকে জনগণ তাদের মন থেকে একেবারেই একঘরে করে দিয়েছে। সাম্প্রতিক পাঁচটি সিটি নির্বাচনে সরকারি দলের প্রতি পাবলিকের হলুদ কার্ড প্রদর্শনই তার জল-জ্যান্ত প্রমাণ। জনগণ এখন সর্বশেষ লাল কার্ড দেখানোর অপেক্ষায় রয়েছে।
জাতীয় নির্বাচনে জনগণ ভোটদানের সুযোগ পেলেই 'ফিল্ড-আউট' হয়ে যাবে মহাজোট সরকার। এ প্রসঙ্গে সে আরও বলে, গত পৌনে পাঁচ বছর ধরে যে ছাত্র ও যুবলীগের তান্ডবে সারা দেশ প্রকম্পিত ছিল, তারাও এখন চুপসে যাচে্ছ। পত্র-পত্রিকায় দেখলাম খোদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন আর কমিটি করার জন্য নেতা খুঁজে পাচ্ছে না ছাত্রলীগ।'
এখানে দেখুন
©somewhere in net ltd.