নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তিতুমীর

”সব রাজাকারদের বিচার চাই”

কিলার অফ রাজাকার

আমি একা

কিলার অফ রাজাকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিষ্যের মতই ফিৎনাবাজ ও অলীক স্বপবাজ ব্যাক্তির আগমনের আবারও পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি। তবে জানিনা এরপর কি হবে বা কি আছে নসীবে?

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩১





জনৈক দরবেশ এবং তার অল্প বয়স্ক শিষ্য শহর থেকে দূরে এক জঙ্গলে থাকতো। দরবেশ সব সময় আল্লাহ পাক উনার স্মরণে মগ্ন থাকতো আর শিষ্য দরবেশের খেদমতের আনজাম দিত। খাবারের দরকার হলে শিষ্য আশেপাশের এলাকায় যেয়ে চেয়েচিন্তে যা পেত তাই দরবেশকে নিয়ে খেত।

এই দেরবেশের হৃদয় ছিল বড় কোমল এবং মানবপ্রেমে পরিপূর্ণ । সকাল সন্ধায় দরবেশ গভীর আবেগে আল্লাহ পাক উনার কাছে মুনাজাত করতো, ইয়া আমার পরওয়ার দিগার। আমি একজন নিরুপায় আশ্রয়হীন মানুষ। তাই আপনার বান্দাদের থেদমত করতে পারি না। কিন্তু আপনি যদি আমাকে বাদশাহ বানিয়ে দেন, তাহলে আমি জীবনভর গরীব দ:খী মানুষের খেদমত করবো। ইয়াতিম, মিসকীন, দু:স্থ, ও সহায়-সম্বলহীন মানুষকে সাহায্য করবো। অভাবগ্রস্থ মানুষের জন্য লঙ্গরখানা খুলে দিব এবং মানুষের মাঝে ন্যায় ও সুবিচার প্রতিষ্ঠা করবো। মজলুমের সহায়তা করবো আর অত্যাচারী ও ব্যাভিচারী লোকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করবো। আমি সমাজ খেকে সুদ,ঘুষ,মদ.জুয়া এবং সব ধরনের পাপকাজ ও বেহায়াপনা উচ্ছেদ করবো। ভাল কাজে আমি মানুষকে উৎসাহিত করবো, সকল কল্যানকর কাজে তাদের সাহায্য ও সহযোগিতা করবো। আমি সারা দেশে মসজিদ মাদ্রাসা পতিষ্ঠা করবো।

তরুন শিষ্য গভীর নিষ্টা ও আগ্রহ নিয়ে দরবেশের এ মুনাজাতে শরীক হত। সে ভাবতো একদিন অবশ্যই মুর্শিদের দুয়া কবুল হবে এবং তাদের খেদমতের ভাগ্য সুপসন্ন হবে। কিন্তু সময় গড়িয়ে যেতে লাগলো। কিশোর থেকে শিষ্য যৌবনে পৌছেছে। মহাপ্রান দরবেশের চেহেরায় বার্ধক্যের চিহ্ন দেখা দিল কিন্তু তাদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হলো না।

দেখতে দেখতে শিষ্যের বিশ্বাসের চিড় ধরলো। দরবেমের মুনাজাতের আর আগ্রহ থাকলো না। আস্তে আস্তে তার মধ্যে ভাবান্তর এলো এবং সে দরবেশের উল্টো দুয়া করবে বলে ঠিক করলো।

একদিন শিষ্য দরবেশের থেকে দূরে যেয়ে দুয়া শুরু করলো। আয় পরওয়ার দিগার, আপনি আমার দরবেশের দুয়া কবুল করেননি। আমার মনে হয় কোন মহৎ হ্রদয় ব্যাক্তিকে বাদশাহ বানানো আপনার পছন্দ নয়। তাই যদি হয় তাহলে খোদা আমার দুয়া কবুল করুন। দরবেশের পরিবর্তে আমাকে বাদশাহ বানিয়ে দিন। আমি আপনার কাছে শপথ করছি, আমার প্রতিটি কাজ আমার মুর্শিদের বিপরীত হবে।

আমি অসহায়দেরকে আরো অসহায়,নিরাশ্রয়দের আরো নিরাশ্রয় এবং মজলুমদেরকে আরো মজলুম বানাবার জন্য আমি সর্বদা সচেষ্ট থাকবো। আমি চোর ডাকাতকে আরো প্রশ্রয় দিব। নিরাপরাধ লোকদের আমি অপদস্থ করবো। এরকম হাজারো মিনতি।

এই দুয়া শিষ্য নিয়মিত করতো দরবেশের মত। একদিন দরবেশ বুঝতে পেরে ধমকও দেন। কিন্তু শিষ্য নিজের কাজের উপর অটল থাকে।

ইতিমধ্যে সে দেশে ক্ষমতার পালাবদল ঘটে যায়। বাদশাহ মারা যায়। ফলে বাদশাহ হওয়ার জন্য অনেকে মারামারি করতে লাগলো। এই দৃশ্যে বিচক্ষণ উজীরে আযম দেশকে গৃহযুদ্বের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রস্তাব দেয়: শহরের সমস্ত ফটক বন্ধ করে দেয়া হোক। কাল সকালে যে ব্যাক্তি সর্বপ্রথম পূবদিকের প্রবেশ দ্বারে করাঘাত করবে তাকেই আমরা দেশের বাদশাহ হিসেবে গ্রহন করবো।

এ প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হল। ঘটনাক্রমে সে শিষ্য খাবার চাওয়ার জন্য সেদিন ছোটখাট জনপদের দিকে না যেয়ে রাজধানীর দিকে রওয়ানা দিল। মুরগডাকা ভোরে সে গিয়ে একেবারে শহরের পূর্ব দরজায় করাঘাত করলো। দরজা খোলে আগত মেহমানকে উমরাগন অভিবাদন জানিয়ে শাহী মহলে নিয়ে গেল। সিদ্বান্ত অনুযায়ী রাজমুকুট পরিয়ে দেয়া হল। এরমেধ্যেই দরবেশ পাশের দেশে চলে যায়।



ক্ষমতা গ্রহন করেই ওয়াদা অনুযায়ী সমস্ত অপকর্মমুলক কাজ শুরু করে দিল শিষ্য। কষ্ট ও দুর্গতিতে ভরে গেল দেশটা। টিকতে পারছিল না কেউ। সবক্ষেত্রে জুলুম আর জুলুম। ফলে উজীরে আযম গোপনীয়তার সাথে সেই শিষ্যের বংশ পরিচয় জানার চেষ্টা করে দরবেশের খোজ মিললো। বারবার কাকুতি মিনুতিতে দরবেশকে রাজি করালো তার শিষ্যকে বলার জন্য। দরবেশ আসলো একদিন্।

দরবেশকে দেখে শিষ্য খুশি হয়ে বললো, আপনার কি খেদমত করতে পারি আমি? জবাবে দরবেশ বললেন, আমি আমার জন্য তোমার কাছে কিছু চাই না। আমি শুধু চাই তুমি অতীতকে স্মরণ করে প্রজাদের সাথে ভাল ব্যবহার করো। নির্যাতনের স্টিমরোলার আর চালাও না। তুমি এখন ক্ষমতা পেয়েছো আগে তো ফকির ছিলা।

উত্তরে শিষ্য বললো, দেখুন হুযুর আপনি আমার সহ্যশক্তি পরীক্ষা নিতে চেষ্টা করবেন না। আপনার সৌভাগ্য যে আপনি আমার মুর্শিদ বলে আজ আমি আপনার উপর হাত তুলতে ইতস্তত: করছি। আর আপনি এ লোকদের সাথে কোন ভাল ব্যবহার করতে বলবেন না।

আপনি জানেন যে আমরা দুজনেই দুরকম দুয়া করেছি। আর সে অনুপাতে আমি বাদশাহ হয়েছি। এরা যদি ভাল ব্যবহার পাওয়ার উপযুক্ত হত তাহলে এখানে আমি না থেকে আপনি থাকতেন কিন্তু এরা নির্যাতন পাবার যথেষ্ট উপযুক্ত বিধায় আল্লাহ পাক আমাকেই কবুল করেছেন। তাই এই কাজ করতে আল্লাহ পাক উনার কাছে আমি ওয়াদাবদ্ব। আমি তাদের সাধে এতটুকু জুলুম কমাতে পারবো না। তবে তারা যদি তওবা করে ভাল হয় তাহলে আমিও ভাল হয়তো হবো, নচেৎ আল্লাহ পাক ভাল কাউকে তাদের জন্য নিযুক্ত করবেন।

দরবেশ এই কথা শুনে বললেন, বৎস তুমি ঠেকই করছো। তোমার ওয়াদা তুমি পূরণ করো। তুমিই আল্লাহ পাক উনাকে ঠিকমতো মানছো।



মুসলিমবিশ্বে ঠিক শিষ্যের মতই ব্যাক্তি হয়তো দরকার। আর সেরকম চোগোলখোর, মিথ্যুক, জুলুমবাজ, অলস, স্বার্থপর, অত্যাচারী, অন্যের কাজ নিজের বলে চালনাকারী, ফিৎনাবাজ, ধর্মব্যবসায়ী, মানবতাব্যবসায়ী ও অলীক স্বপবাজ ব্যাক্তিদের আগমনের আবারও পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি।

কর্মঠ, ন্যায়,মিশুক,সত্যবাদি,পরোপকার,সংগঠক ব্যাক্তি পাওয়ার উপযুক্ত মুসলিমবিশ্ব নয়। তবে জানিনা এরপর কি হবে বা কি আছে নসীবে ?

মূলত গোটাবিশ্বেই মুসলমানদের বদ আমলের কারনে আজ এই শিষ্যের মতই সরকার পেয়েছে মুসলমানরা। তাই সবার তওবা করে ফিরে আসা খুবই জরুরী।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৮

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: নসীম হেজাজির একটা বইয়ে পড়ছিলাম কাহিনীটা

২| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৮

সকাল>সন্ধা বলেছেন: খুব সুন্দর উদাহরন! আসলেই আমাদের যে কি হবে তা ভেবে আমি শংকিত!

৩| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৭

মনসুররবি বলেছেন: খুব সুন্দর একটা গল্প ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.