নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান মনের জানালা খুলে দায় এবং সেই খোলা জানালা দিয়ে না জানা বিষয় গুলো দেখি যা বাংলাদেশের সীমা ছাড়িয়ে সারা পৃথিবী দেখতে সাহায্য করে ।

এইচ এন নার্গিস

আমি একজন লেখক, সমাজ কর্মি , মা এবং মুক্তিযোদ্ধা

এইচ এন নার্গিস › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরবাসী সাবিনা

১০ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ২:৪৯

পরবাসী সাবিনার ডায়েরি
প্রবাসে গিয়ে যে জীবন যুদ্ধ করতে পারবে না তার যাওয়া উচিৎ নয় । পড়ে গেলে উঠে দাঁড়াতে হবে, ক্রমাগত চ্যালেঞ্জ ফেস করতে জানতে হবে।
সাঁতার শিখতে গেলে একটা বাচ্চাকে পানিতে ছুঁড়ে ফেলতে হয়। পানিতে পড়ে নাকে মুখে পানি ঢুকে হাত পা ছুড়তে হয় পাড়ে আসার জন্য তবে সেই হাবুডুবু খাওয়া বাচ্চা টাই সাঁতার শিখে , আর এ ভাবেই শিখে ।

ঠিক সে রকম একজন প্রবাসী তাকে একলা একলা জীবন চলা শিখতে হবে যেখানে হাত বাড়িয়ে দেয়ার কেউ নাই। মাথার ব্রেন তখন লেগে পড়ে কি ভাবে সারভাইব করতে হয়।
থাকা খাওয়ার ব্যাবস্থা করতে প্রথমেই 'এক লাফে গাছে উঠা যায়না'এই চিন্তা বাদ দিয়ে যা পাওয়া যায় তাই করে অন্ন সংস্থান করতে শিখতে হবে।

এই ভাবে যে চলতে হয় তার মানুষিক প্রস্তুতি নিয়ে একজন কে প্রবাসে আসা উচিৎ ।

"নাসেসিটি নজ নো লজ" ( Nasesiti knows no laws) প্রয়োজন কোন আইন মানে না ।

সাবিনাকেও তাই করতে হয়েছে । একটা জিনিস মনে রাখতে হবে প্রত্যেকটি মানুষ এমন কি এই সাদা জাতি প্রথম অবস্থায় এই ভাবেই জীবন আরম্ভ করে । কাজ করাতে কোন লজ্জা নাই। হাত পাতা বা কেউ দিয়ে দিবে এই মানসিকতা থেকে বের হওয়া প্রবাস জীবন।

অনেক রকম কাজ করে জীবনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে সাবিনা।
তবে মনে রেখেছে তার জীবনের লক্ষ্য । তাই সময় আর সুযোগের সৎব্যাবহার সে করেছে।

এটাই জীবনের শিক্ষা ।
দেশে থাকতে জীবনে চলতে চলতে যাদের সাহায্য সব চেয়ে দরকার ছিল সে তা পাইনি। কেন?
কারন সে মেয়ে। মেয়ের গুরুত্ব পুরানো চিন্তাধারার মায়ের কাছে নাই। সাবিনা তার শিকার ।
মায়ের কাছে ছেলের গুরুত্ব বেশি । তাদের কে মানুষ করার জন্য পরিবারে যেমন আয়োজন, মেয়েদের জন্য তেমন নয়। কারন সে নিজেও সেই ভাবে মানুষ হয়েছে।

কিন্তু সাবিনা হিউম্যান রাইটস এর ছাত্রী। এটা যে কতখানি ক্ষতিকারক একটা মানুষ কে বড় হওয়ার পথে তা সাবিনা জীবনে দেখেছে।

হোস্টেল জীবনে খাওয়ার কষ্ট । ফুড চার্জ দিত না । তাদের গোলা ভরা ধান, লাখ লাখ টাকা ব্যাঙ্কে, বিরাট বিরাট দুটো বাড়ি কিন্তু সাবিনার পেছনে যতো কৃপণতা।

প্রথমেই পর পর চারটা মেয়ে হয়ে গেছে ছেলে ছেলে করতে । তার পরে জন্ম হয় অনেক গুলো ছেলে। বাবার খুশি দেখে কে! এক বারও ভাবে না এগুলো মানুষ করে যেতে পারবে কি না।
পুত্র দের ভাগ্যে যাতে সম্পত্তি বেশি করে পড়ে সেটাই ছিল তাদের লক্ষ্য ।
আর সেই সম্পত্তি বেশি করে যেন পায় তাই মেয়ে গুলোকে বঞ্চিত করা।
কত যে অন্যায় চার দিকে!

সাবিনার ভালো রেজাল্ট তাদের গ্রাহ্য হয় না। সাবিনার বোন প্রমোশন পেয়ে বিরাট পোস্ট পায় কিন্তু বাড়িতে তার কোন গুরুত্ব নাই। কারন একটাই সে মেয়ে আর না হয় প্রশংসা করা এই পরিবারের রেওয়াজ নাই। ছেলে হলে ঠিক করতো ।

তাদের লক্ষ্য ফাঁক তালে পড়াশুনা কণ্টীনিউ করো । টাকা যোগাড় করে রাখা পুত্র ধনদের জন্য।
কারন পুত্র হল প্রধান আর কন্যা সেকেন্ডারি । ছেলে
চেয়েছিল কিন্তু দুর্ভাগ্য বশত মেয়ে হয়ে গেছে তাও আবার চারটি পর পর ।
ছোট বেলায় এই পুত্র দের কে পালতে হয়েছে বোন দের ঘন ঘন সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মা হাড্ডি সার।দায়িত্ব নিতে এগিয়ে আসতে হয় বোনদের । কিন্তু ?
কিন্তু কি?

কিন্তু এই বংশ উদ্ধার করা সেই পুত্র ধন রাই মুখ বাঁকিয়ে রাখে যখন তাদের বোন গুলো আসে মার বাড়ি ।

কারন তারাই "বংশ ধর" , সোজা কথা ? তাদের সিংহ হিস্যা সম্পত্তি তে । তারাই প্রধান আর মেয়েরা সেকেন্ডারি ।
এই অন্যায় আর অবিচার কত দিন চলবে সমাজে পরিবারে?
যুক্তি দিয়ে কবে চলতে শিখবে?
জেন্ডার ইকুইলিটি আইন দিয়ে কবে রক্ষা করা হবে?
কেন এই ভেদাভেদ ? তারপর ? তারপর ভগ্ন মনোরথ নিয়ে সাবিনাকে ফিরে আসতে হয় প্রবাসে ।
যেখানে অন্তত এই নারী পুরুষে " ভেদাভেদ" ব্যাপার টা নাই।




মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:০৫

নকল কাক বলেছেন: ছোটগল্প "এ্যমবুশ" এর ২য় পর্ব "এ্যমবুশ ২" পড়ার জন্য আমন্ত্রণ রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.