![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উপরের 'বস্তু'টি দ্য ভিঞ্চি কোড নয় কিন্তু - এটা ব্লুপ্রিন্ট - এক নজরে 'বিষণ্ণতা' নিয়ে ধারাবাহিক লেখাটির নীলনকশা। (যুম-ইন করতে ব্লগপোস্টের নিচে সংরক্ষিত ছবিগুলোতে ক্লিক করতে হবে।) মেগা ধারাবাহিক লেখার প্রস্তুতি নিচ্ছি যেহেতু, শেষমেশ তালগোল যেন না পাকিয়ে যায়, তাই এই নীলনকশা'র আঁকিবুঁকি। আমার ব্লগপোস্ট যাঁরা এই প্রথমবারের মত পড়ছেন, তাঁদের সুবিধার জন্য এই পর্বের ঠিক আগের পর্বের লিঙ্ক যোগ করে দিলাম এখানে।
(ডিপ্রেশন) বিষণ্ণতা ১০১ :: অন্দরমহল পর্ব http://tinyurl.com/pwldklz
আগের পর্বের রি-ক্যাপ::
* প্রতি পাঁচজনে একজন জীবনের কোন না কোন সময়ে বিষণ্ণতা রোগে আক্রান্ত হয়। এই রোগের তীব্রতা এবং সময়কাল রোগীর প্রতিরোধ ক্ষমতা ভেদে বদলায়।
* প্রতি বিশজনে একজন (ক্রনিক) 'ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার'-এর স্বীকার হয়।
* বিষণ্ণতা রোগের জেনেটিক ফ্যাক্টর আছে। জেনেটিক সূত্রে কেউ কেউ বিষণ্ণতাপ্রবণ হয়ে থাকেন।
* শরীরে হরমোনাল ইমব্যালেন্সের কারণে বিষণ্ণতা রোগ দেখা দিতে পারে।
* সঠিক চিকিৎসায় বিষণ্ণতা রোগ থেকে পূর্ণ নিরাময় সম্ভব।
* জীবনে নানা প্রতিকূলতায় মনে বেদনা, সংশয়, যাতনা দানা বাঁধতেই পারে। 'বিষণ্ণতা রোগ' আর 'বিষণ্ণতা'; এক এবং অভিন্ন নয়। চিকিৎসা শাস্ত্রে এটাকে তখনই *রোগ* হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যখন এর স্থায়িত্বকাল হয় মিনিমাম একটানা দু'সপ্তাহ। দু'সপ্তাহ যাবৎ একনাগাড়ে বিষন্ন থাকলে - কোন কাজে আনন্দ, উদ্দীপনা না থাকলে; দৈনন্দিন কাজকর্ম করাটাও কষ্টকর মনে হলে; যে সব কাজ শখের বশে করা, সেগুলোও বিরক্তিকর মনে হলে, চিকিৎসা শাস্ত্র মতে তবেই কেউ 'বিষণ্ণতা রোগে' আক্রান্ত বলে বিবেচিত হবেন।
==
এখন প্রশ্ন হল, এইসব ছাইপাশ তথ্য জেনে কী হবে? উত্তরটা খুবই সহজ - শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। মেরুদন্ড খানখান হয়ে গেলে মশা মারতে কামান দাগানোর স্টাইলে উড়োজাহাজ লাপাত্তা হয়ে গেলে বাটি চালান দেওয়া হবে। কাজেই বুদ্ধিমান হোন, ঠিক সময়ে ঠিক কাজটি করুন!
নিচের ছবিটিতে নজর বুলানো যাক।
ছোটখাট গ্রাফের সাথে আমদের প্রাইমারী স্কুল থেকেই পরিচয়, তাই ব্যাখ্যায় যাচ্ছি না। তারপরো, সুপ্রিয় পাঠক, ব্যাখ্যার দরকার হলে আওয়াজ দেবেন। আপাতত খুব সংক্ষেপে বলি, ওয়াই-অ্যাক্সিসে চিহ্নিত করা হয়েছে বিষণ্ণতা'র মাত্রাভেদকে। মানে হল, রেখা যত উপরে উঠছে, বিষণ্ণতার তীব্রতা তত বাড়ছে। এক্স-অ্যাক্সিসে দেখছি আমাদের 'আবেগিক ফিটনেস' এর রূপরেখা। এক্স-কোঅর্ডিনেটের ভ্যালিউ যত বাড়ছে, আমাদের 'আবেগিক ফিটনেস' তত কমছে। মানে হল, গ্রাফের সর্ববামে যাঁরা আছেন, তাঁরা সুস্থ - আমাদের সকলেরই কারণে-অকারণে কম-বেশী মন ভারী হয়। সমস্যাটা হয় তখনই যখন মনের মেঘ বর্ডারলাইন ক্রস করে যায় (সর্বডানে)। আমাদের লক্ষ্য থাকবে এই মেঘকে টেনে-হিঁচড়ে লক্ষ্মণরেখার ভেতরে আনতে। এতেই কেল্লা ফতে - আমরা নিরাপদ!
'আবেগিক সুস্থতা' নিয়ে আগড়ম-বাগড়ম::
আবেগিক সুস্থতা বলতে ইমোশন্যল স্টেবেলিটিকে (stability) বুঝাচ্ছি। আমাদের আবেগিক সুস্থতার সাথে কী কী প্রত্যক্ষভাবে জড়িত?
-- প্রিয়জনদের সাথে সম্পর্ক
-- চাকরি, পড়াশোনা, অন্যান্য কর্মকাণ্ড করবার কর্মক্ষমতা
-- শারীরিক সুস্থতা
-- মননশীলতা এবং আত্মিক সুস্থতা
-- অর্থনৈতিক স্টেবেলিটি
আমরা সবাই জানি, বিষণ্ণতা আর আবেগিক সুস্থতা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিষণ্ণতা আমাদের মোটিভেশন, আত্মবিশ্বাস, এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে আত্মসম্মানবোধের উপরও অনভিপ্রেত আঘাত হানে।
এই গ্রহে আমরা কতজন বাসিন্দা? সাতশ' কোটি? কেবল অস্ট্রেলিয়াতেই প্রতি বছর দশ লক্ষ মানুষের ডায়াগনোসিসে ধরা পড়ে 'বিষণ্ণতা রোগ'। এতো গেল ক্লিনিক্যল ডায়াগনোসিসের উপাত্ত। (আমার তথ্য-উপাত্ত সবই অস্ট্রেলিয়া-নির্ভর, আমার নীড় ওখানে।) অনেকেই ক্লিনিকের দ্বারস্থঃ হোন না; কাজেই, বিষণ্ণতা রোগে আক্রান্তদের সঠিক সংখ্যাটা যে আরও বড় অঙ্কের হবে, তা সহজেই অনুমেয়।
কিশোরী বয়সের কথা মনে আছে। আব্বুকে বললাম যে আমার সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে যাওয়া প্রয়োজন। তিনি চোখ কপালে তুলে বল্লেন, "সাইকিয়াট্রস্টের কাছে তো পাগলরা যায়!! মা, তুই তো পুরোপুরি সুস্থ!" এই হল আমাদের দেশের চিত্র। বিষণ্ণতাকে রোগের মধ্যেই গণ্য করা হয় না। তাছাড়া, সাইকিয়াট্রিস্টের দ্বারস্থ হবার খবর দেওয়ালের কানে পৌঁছানো মাত্র ট্যাগ যোগ হয়ে যাবে নামের সাথে চিরতরে। স্কুলে লেখাপড়া নিয়ে যেহেতু কখনও কোন সমস্যায় পড়তে হয়নি আমাকে, তাই আমাকে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাবার জাস্টিফিকেশন খুঁজে পাননি আমার অভিভাবক। মনে রাখা প্রয়োজন,
* বিষণ্ণতা অসুখের প্রথম এপিসোড শুরু হয় ছোটবেলায়।
বিষণ্ণতার 'অ্যাক্সিস অফ ইভল' নিয়ে পরের পর্বে আলোচনা হবে। আজকের মত এখানেই অধিবেশনের সমাপ্তি। উল্লেখ্য, এই মেগা ধারাবাহিক চলবে কচ্ছপের গতিতে। ধারাবাহিকের রচয়িত্রী স্বয়ং যেখানে বিষণ্ণতা রোগে আক্রান্ত, সেখানে কচ্ছপের গতিই সই! ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন! আমার হাতে দূর্বা না গজালে আবারো দেখা হবে, ইনশাল্লাহ!
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১৭
নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে!
২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:২২
জাফরুল মবীন বলেছেন: অসাধারণ উপস্থাপন!
বিষন্নতার উপর এ ধরণের বিশ্লেষণধর্মী উপস্থাপনা এর আগে সামুতে চোখে পড়েনি।
এ বিষয়ে আগ্রহ বেশী থাকায় বোধ করি আমার কাছে এর গুরুত্বও অনেক বেশী।
অভিনন্দন ও অসংখ্য ধন্যবাদ বোন নাঈফা চৌধুরী।
অাপনার পরবর্তী পর্ব থেকে আরও জ্ঞান আহোরণের আশায় রইলাম।
ভাল থাকবেন।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫০
নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: সহৃদয় মন্তব্যের জন্য অগণন ধন্যবাদ, প্রিয় জাফরুল ভাই! আপনার আন্তরিক মন্তব্য মন ছুঁয়ে যায় বরাবর। বোনটিকে আপনার প্রার্থনায় রেখেন! নিরন্তর শুভকামনা রইলো আপনাকে এবং আপনার প্রিয়জনদের জন্য!
৩| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:২৯
নবাব চৌধুরী বলেছেন: আমাদের কর্তাব্যাক্তিরা সচেতন নয় এতো,ফলশ্রুতিতে এই বিষন্নতার দরুন অনেক যুবক যুবতি আত্ববিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৬
নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ! পুরো বিশ্বেই মনোরোগের বীজ হিসেবে ফিযিওলজিক্যল ফ্যাক্টরগুলোর অনুসন্ধানজনিত গবেষণা অপেক্ষাকৃত নতুন, ২৫ বছরের বেশী নয়। শুভকামনা।।
৪| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০০
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর +
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৪৮
নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: থ্যাঙ্কিউ!
৫| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:৪৮
এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
অসাধারন একটি পোষ্ট । এমন উপকারি পোষ্ট আজকাল বিরল সামুতে ।
আপাতত প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম পরে সময় করে পড়ে মন্তব্য করবো।
লেখিকার প্রতি সুভেচ্ছা রহিল ।
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১৬
নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: মন্তব্যের জন্য অনিঃশেষ কৃতজ্ঞতা! শুভকামনা নিরন্তর!
৬| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:১৮
মনিরা সুলতানা বলেছেন: হুম ...
+++++++
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০৬
নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: ধন্যবাদ, আপুমণি!
৭| ১১ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:১৭
হাঁচি মোস্তান বলেছেন: একবার আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে বললাম আমি ডিপ্রেশনে ভুগি ।দীর্ঘ দিনের ফলে রাতে ঘুমাতে পারি না। আমি কি ক্রতে পারি। আমার কথা শুনে মহিলা ডাক্তার হেসে ফেলে, তার সাথের পুরুষ ডাক্তারটি আমাকে বাবার আর্থিক অবস্থা ভালো থাকলে বিয়ে করে ফেলার পরামর্শ দেন ।আমি তখন মাত্র বিশ্ব বিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম । আর সরকারি হাসপাতাল গুলোতে গেলে সূট কোট পড়া ভদ্র লোকগুলো (ঔষধ কোম্পানীর রিপ্রেজেনটে্টিভ) রোগীর প্রেসক্রিপশন নিয়ে টানাটানি শুরু করে দেয় তার কোম্পানীর নামটা লিখা হয়েছে কিনা দেখার জন্য।
আবার সাইক্রিয়াটিস্ট দেড় মিনিটে যে ঔষধগুলো রোগীকে লিখে দেয় তার সবগুলো দোকানে খোজে পেতে অনেক বেগ পেতে হয়। এগুলো হল আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের সাইকোলজিক্যাল চিকিৎসা সেবা পাওয়ার চিত্র। ধন্যবাদ আপনাকে ।পোষ্টটা অনেক কাজে দিবে।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩২
নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, মন্তব্যের জন্য আর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য!
চলুন সকলে মিলে যুথবদ্ধ অভিজ্ঞতায় ডিপ্রেশানের বিরুদ্ধে লড়ি।
৮| ১৫ ই মে, ২০১৫ রাত ২:১২
ভ্রমরের ডানা বলেছেন: এমন একটি সচেতনতামূলক পোস্ট আপনার কাছ থেকে পেয়ে ভীষণ উপকৃত হলাম। অনুসরনে নিলাম। আপনার শুভকামনা করছি।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৩
নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: সাথে থাকবার জন্য অনুপ্রাণিত হলাম, ভ্রমরের ডানা! আপনার জন্যও শুভকামনা!
৯| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২৪
মুদ্দাকির বলেছেন: ব্যাপারটা হাস্যকর যে ডাক্তাররা পর্যন্ত মানষিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন না!!! কচ্ছপ মনে হয় অনেক আস্তে আস্তেই আগাচ্ছে!!!!
১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৫
নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: কচ্ছপ আসলেই কচ্ছপের গতির কাছেও হার মেনেছে!
মনে করিয়ে দেবার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ আর শুভকামনা।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৪২
প্রামানিক বলেছেন: কিশোরী বয়সের কথা মনে আছে। আব্বুকে বললাম যে আমার সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে যাওয়া প্রয়োজন। তিনি চোখ কপালে তুলে বল্লেন, "সাইকিয়াট্রস্টের কাছে তো পাগলরা যায়!! মা, তুই তো পুরোপুরি সুস্থ!" এই হল আমাদের দেশের চিত্র। বিষণ্ণতাকে রোগের মধ্যেই গণ্য করা হয় না।
কথা সত্য। ধন্যবাদ