নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেডলি ট্রাভেল লাভিং ওয়ান।

মোরতাজা

আমি সাধারণের একজন। বেড়াতে, বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।

মোরতাজা › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবন থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা সবাইকে দয়া করো প্রভু

০৩ রা জুন, ২০১৪ রাত ৮:২৬

সব সময় একটা কথা বলতাম, এখনো বলি- সবাইকে বলি। বাঁচো, নতুন আশায়। তোমার সামনে অনাগত ভবিষ্যত। হতাশা আসে ক্যামনে। এগিয়ে যাও। দু'চোখ মেলে চাও উদার আকাশ। দেখো অনন্ত জোছনায় ভিজে যাচ্ছে বঙ্গপোসাগার। বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে পাহাড়-নগর-নদী। ভাটি বাংলার রূপ মাধুর্য দেখেই একটা দীর্ঘ জীবন পার করে দেয়া যায়।

মাদক, বিচ্ছেদ, জীবন থেকে পালিয়ে বেড়ানো কিম্বা নিজেকে হত্যার কোনো কিছুই এখানে আসতে পারে না। এমন দেশে যার জন্ম যেখানে জোছনায় ভিজে, গুটগুটে অন্ধকারে ছুটে চলা রিকশার নিচের বাতির মোহনীয় আলো কিম্বা কাদামাটি মেখে গাঁয়ের মেঠোপথ ধরে হেঁটে এলে মনে হয়- মানুষের জীবন এত ছোট কেনো? সে দেশে জন্মে কেনো আত্মহত্যা!

পর্যটন কর্মী হিসাবে গত ১৪ টি বছর এ একটি কথা বার বার বলছি। পর্যটন সংগঠন ডিইউটিএস'র কর্মীদের বলতাম, বন্ধুদের বলেছি, এখনো বলি, যেখানে যাই, যার সাথেই বসি এ কথাটি বলি। নিজেকে ভালোবাসো।

ট্যুরিস্ট সোসাইটি আমার দ্বিতীয় প্রেম। সে প্রেমময় পরিবারের সদস্যদের সাথে সম্পর্ক আমার রক্তের নয়, কিন্তু তারচেয়েও বেশি। আমাকে যারা পছন্দ করতো, বা করতো না- আমি তাদের সবাইকে ভালোবাসি। তাদের সুখ-মঙ্গল এবং হাসিমাখা মুখটা মনে করে আমি জীবনের নতুন ব্যাঞ্জনা খুঁজে পাই।

বন্ধু স্বজন, যারাই হতাশ, তাদের সবাইকে বলছি- নিজেকে খুন করোনা। সে অধিকার তোমার নেই। উপভোগ করো, বাঁচো।
তবুও কখনো কখনো খারাপ খবর আসে। কানটা ফেটে যায়। বুকটা ভেঙ্গে যায়। জীবন কি এতই তুচ্ছ? স্রষ্টার দানটা কী এতই ক্ষুদ্র? কেনো উপভোগ করো না জীবন!

আশাহত মানুষ নই আমি। হতে চাইনি কোনো দিন। এত ঝড়, এত ঝঞ্ঝা, এত শঙ্কা তবুও আশায় বুক বাঁধি।

কিন্তু জীবনকে দু'পায়ে ঠেলে যারা ব্যক্তিগত ভাবে নিজের জীবনকে হত্যা করে তাদের বিপক্ষে আমি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আমার খুবই ঘনিষ্ঠ দু'জন মানুষ নিজেদের হত্যা করেছে। একজন আমার হলের, পাশের রুমে থাকতো। ছোট ভাই। সব সময় এসে আড্ডা দিত, আমার রুমে। হল ছেড়ে আসার পর শুনি ছেলেটা আত্মহত্যা করেছে।

মেনে নিতে পারিনি। তবুও মানতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হলে বেড়ে ওঠা ছেলেটার বুকে কিসের এত হতাশা ছিল, জানি না। জীবনকে খুন করার মত এমন হতাশা কেনো জন্মায়। জানতে চাইনি কখনো, চাইবো না। কেবল মিনতি করি, নিজেকে হত্যা করো না।

জীবনের উৎসবের জন্য। আনন্দের জন্য। কৃতজ্ঞতার জন্য। পর্যটন কর্মীর বর্ণিল জীবনে আসা মাহবুব কেনো আত্মহত্যা করবে? প্রশ্নটা মাথার ভেতর বারবার এলেও উত্তর পেলাম না।

ট্যুরিস্ট সোসাইটি থেকে ২০০৬ সালে দায়িত্ব ছাড়ার আগেই মাহবুব মেম্বার হিসাবে আসে। দায়িত্ব ছাড়ার পরও বেশ কয়েকবার আমার কাছে হলে-অফিসে এসেছিল। ক্যাম্পাসে দেখা হলে অন্য দশজনের মতই এগিয়ে আসতো- সালাম দিয়ে খবর নিতো। আমিও নিতাম। ওর সাথে শেষ দেখাটা হাকিম চত্বরে হয়েছিল, আমার নিজের ও তাদের ভাবি-সন্তানদের খবর নিচ্ছিলো। বলেছিলাম- বাসায় এসো! আসবে বলেছিল।

কিন্তু বহমান সময়, চলমান ব্যস্ততার ভেতর হয়ত সবাইকে ফোন করে খবর নেয়া হতো না আমার। আজ মঙ্গলবার জানলাম মাহবুব নাই। ওর বন্ধুদের সাথে কথা বল্লাম। স্বজনদের কাছে জানতে চাইলাম। ফেসবুকে ওর লেখাগুলো পড়লাম।
ওর বন্ধুরা বললো হতাশা। ফেসবুক থেকেও একই ম্যাসেজ। আত্মহত্যা কি তার কোনো সমাধান হতে পারে! জীবন থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা কি কোনো সমাধান!

দুঃখ কষ্ট ভয় আর সীমাহীন অনিশ্চয়তার ভেতর দিয়েও বাঁচতে শেখা জাতি আমরা। সে জাতির সন্তানরা এভাবে জীবন দিবে, এটা মেনে নিতে পারি না।

তৃতীয় আরেকটি খবর আমি শুনতে চাই না। ক্ষমা করো প্রভু। তোমার করুণা ধারায় ভরে দাও সবার অন্তর। জীবন থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা সবাইকে দয়া করো। দয়া করো। দয়া করো প্রভু।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুন, ২০১৪ রাত ৯:১৩

হতাস৮৮ বলেছেন: ভাল লাগল আপনার লেখাটা পড়ে...আশান্বিত হলাম...

০৩ রা জুন, ২০১৪ রাত ৯:৫৫

মোরতাজা বলেছেন: জীবনকে ভালোবাসুন। ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.