নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হায়দারাবাদের ডায়েরী….
কোলকাতা থেকে হায়দারাবাদ (১২/০৮/২০১৪)
হোটেল রিজেন্সি। সকাল বেলাতেই ঘুম ভেঙ্গে গেল। কোলকাতায় পৌছেছি এই খবরটি এখনও কাউকে জানাতে পারিনি। তাই ঘুম থেকে উঠেই দৌড়ালাম মোবাইল ফোনের সিম কার্ড কেনার জন্য। সকাল ৮ টার মতো বাজে। হোটেল থেকে বাইরে বেরিয়ে দেখি সব দোকান বন্ধ। রাস্তার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেল ৯ট-১০টার আগে কোন দোকান খুলবে না। আপাতত অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোন কাজ নেই। রাতে ঠিকমতো খাওয়া হয়নি। ভাবলাম এই ফাকে নাস্তা সেরে নেওয়া যাক। নাস্তার হোটেল খোঁজা শুরু করলাম। অনেক খুঁজে নাস্তার জন্য দুটি হোটেল পাওয়া গেল। দুটি হোটেলেই এখনও নাস্তা তৈরি হয়নি। নবাবজাদা হোটেলগুলোর নাস্তা তৈরি হতে আরও এক-দের ঘন্টা লাগবে। কোলকাতার মানুষ দেখছি আমার দেশের মানুষের থেকেও অলস…. বিশ্বাস হচ্ছিল না…
অনেক খুঁজে একটা দোকান পাওয়া গেল। দোকান থেকে একটি কেক ও এক বোতল পানি কিনলাম। কেক ও পানি খেয়ে পেটের পুজো আপাতত সারলাম। কিন্তু মোবাইলের সিম কার্ড কেনার দোকানতো আর খুলে না। অপেক্ষা করতে করতে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। অবশেষে সকাল ৯:৩০টার দিকে একটি দিদির দোকান পাওয়া গেল।দিদিকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে বেশি রুপি দিয়ে অবশেষে একটি মোবাইল সিম কার্ড মিলল। আব্বাকে ফোন দিলাম, হাস্নাকে ফোন দিলাম….
ভ্রাম্যমান হোটেল থেকে লুচি ও আলুর দম দিয়ে নাস্তা সেরে তারাতারি দৌড়ালাম হোটেল রিজেন্সির দিকে। ব্যাগ গুছিয়ে, হোটেলের ফরমালিটিজ সেরে বেরিয়ে পরলাম কোলকাতা এয়ার পোর্টের উদ্দেশ্যে। লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেল, উল্টাদিকের মেইন রাস্তায় দাড়ালেই ভলবো এসি বাস পাওয়া যাবে। আমি বাসের জন্য অপেক্ষা করছি… আধা ঘন্টা পরে যখন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি ট্যাক্সি নেব ঠিক সেই মুহুর্তে এসি বাসের দেখা মিলল। বাসে উঠে পরলাম। দশ মিনিটের মধ্যেই এয়ারপোর্টে পৌছে গেলাম। এয়ারপোর্টে পৌছে গেলাম বোর্ডিং পাসের জন্য। এয়ার ইন্ডিয়ার ডমেস্টিক ফ্লাইটের কর্মকর্তা জানালো, আমার লাগেজের ওজন ৫ কেজি বেশি আছে…। অগত্যা ৫কেজি ওজন কমানোর জন্য বই পত্র বের করে আলাদা একটা হ্যান্ড ব্যাগ তৈরি করতে হলো। লাগেজ পাস করে অপেক্ষা করছি…
১:৩৫ এ এয়ার ইন্ডিয়ার ডমেস্টিক ফ্লাইট ছেড়ে দিল। প্লেনে যাত্রী কম। অনেক সিট ফাকা পরে আছে। আমার সিট নম্বর ছিল ১৭ এর এ। জানালার পাশের সিট। আমার সিটে বসে পরলাম। হিন্দি ও ইংরেজীতে বিভিন্ন ঘোষনা হচ্ছিল। একসময় এয়ার ইন্ডিয়ার প্লেনটি রানওয়ে ছেড়ে আকাশে উড়তে শুরু করল…
চমতকার রোদ্রউজ্জ্বল আকাশ। সাদা পেজা তুলোর মতো মেঘ ভেসে আছে আকাশে। সেই সাদা পেজা তুলোর মধ্যে দিয়ে ছুটে চলেছে বিমানটি…দূরে নীল আকাশের ক্যানভাস। নীচে তাকালে ঘর-বাড়ি, নদী, কখনো টিলার মতো পাহার, কখনো ক্ষেতের ফসল, কখনো অরন্যর সারি-সারি গাছ ওপর থেকে দেখলে যেমন দেখায়, সেমনটি দেখাচ্ছিল। সবচেয়ে ভালো লাগছিল সাদা তুলোর মতো ভেসে থাকা মেঘ গুলোকে… মনে হচ্ছিল রুপকথার কোন এক শহরের মধ্যে দিয়ে আমি কোন এক বিশাল পাখির ওপর চড়ে উড়ে চলেছি। ঘন কালো মেঘের ছটা এস লাগল একবার। যে জানালা দিয়ে তাকিয়ে ছিলাম। সেই জানালার গ্লাসটি বৃষ্টির ফোটায় ভিজে গেল…
এয়ার ইন্ডয়ার এয়ার হোস্টেসরা দুপুরের লাঞ্চ করাল। ক্ষুদা পেটে ভালই লাগল। ভাত-সবজি-সালাদ-দই । সামনে থাকা টাইমস অফ ইন্ডিয়া, আরও কিছু পত্রিকা উল্টে-পাল্টে দেখছিলাম… ঘোষনা এল আমরা হায়দারাবাদ পৌছে গিয়েছি। অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই ল্যান্ড করবে…
হায়দারাবাদ নেমে সব ফরমালেটিজ সেরে এয়ারপোর্টের বাইরে বেরিয়ে এলাম। বেরিয়ে দেখি আমার নামের একটি প্লাকার্ড নিয়ে একজন লোক দাড়িয়ে আছে। লোকটিকে আমার পরিচয় দিলাম। লোকটি সালাম দিল। লাগেজ নিয়ে গাড়িতে উঠালো। লোকটির নাম জাহাঙ্গীর। তেলঙ্গনা এস্টেটের অধিবাসী। অনেকদিন যাবত হায়দারাবাদ বসবাস করছে। জাহাঙ্গীর ইন্ডিয়া গভর্ণমেন্টের গাড়িতে চড়িয়ে নিয়ে চলতে শুরু করল। ইন্ডিয়া আসলেই এগিয়ে যাচ্ছে। কেমন সুন্দর গোছানো পরিস্কার পরিছন্ন চওড়া রাস্তা। চারদিকে তাকিয়ে ভাল লাগছিল। ঢাকা শহরের মতো অগোছাল নয়। সব কিছুই গড়ে উঠেছে পরিকল্পনা মাফিক।
আধা ঘন্টার মধ্যেই এনআইআরডি ক্যাম্পাসে পৌছে গেলাম। ক্যাম্পাসে পৌছে পরিচয় হলো মি:রাজু, মি:মাধব, ডা:মি:দেবপ্রিয়া আরও কয়েকজনের সাথে। মি: রাজু আমাকে আমার জন্য বরাদ্দ কোয়ার্টারে পৌছে দিয়ে গেল। কোয়ার্র্টারে ঢুকলাম।একটি ড্রয়িং রুম, একটি কিচেন, ড্রয়িং কাম ডায়নিং রুম, এটাচ বাথ সবকিছু মিলিয়ে একা থাকার জন্য অসাধারন কোয়ার্টার। আমার পছন্দ হয়েছে….
২| ২১ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:৪২
ইমরান আশফাক বলেছেন: ভাল লাগছে, অপেক্ষায় থাকলাম আরও কিছু পড়ার জননে।
৩| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ২:৩৫
আরমিন বলেছেন: হায়দ্রাবাদ নিয়ে কিছু দেখলেই আমি নস্টালজিক হয়ে যাই! আমার প্রথম দিকের লেখাগুলিও হায়দ্রাবাদ নিয়েই কিনা।
৪| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:৪১
নিয়ামুলবাসার বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ মন্তব্য করে অনুপ্রেরনা যোগানোর জন্য...
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:৫৫
লিখেছেন বলেছেন: balo