নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কর্নাটকায় ৪৫ দিন…..
০১/০৩/২০১৫
হায়দারাবাদে আসার পরে পরিকল্পনা করেছিলাম, প্রতিদিন ন্যূনতম একপাতা ডায়েরী লিখব। ৩৬৫ দিনে ন্যূনতম ৩৬৫ পাতা ডায়েরী লেখা হবে… ।
৩০ বছর পরে, যখন বৃদ্ধ বয়স, অফুরন্ত সময়, যখন কিছুই করার নেই। তখন এক মেঘলা দিনে এই ডায়েরী খুলে বসব, আর স্মৃতি রোমন্থন করব….। পরিচিত বন্ধুবান্ধব, আত্নীয়-পরিজন ছাড়া নতুন পরিবেশে কেমন কেটেছিল একটা বছর…
পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি। ব্যাপার না…। বেস কিছু পাতাতো লেখা হয়েছে।এই বা কম কিসে…?
ফেসবুক ও ব্লগের কল্যানে সে ডায়েরীর পাতাগুলো আমি ছড়িয়ে দিয়েছি বিশ্বময়….যে সময়ের সাক্ষী ছিলাম আমি, আমার হয়ে আমার সে অভিঙ্গতা না হয় জানুক দু’একজন…। দু’একজন বন্ধু-বান্ধব সে লেখা ডায়েরী পড়েছেও। কেউ-কেউ দু’এক ছত্র মন্তব্যও করেছে…
যা হোক, দীর্ঘ বিরতি শেষে আবার হায়দারাবাদের ডায়েরী লিখতে বসেছি…। তবে অন্য শিরনামে। ৪৫ দিন আমাকে হায়দারাবাদের বাইরে থাকতে হবে।
আমার এক পরিচিত জন আমাকে জানিয়েছে তার নাকি হায়দারাবাদের ডায়েরী পরতে ভাল লাগছে।আজকের ডায়েরীর পাতা তার উদ্দেশ্য উৎসর্গকৃত….
দেখতে-দেখতে শীতকাল শেষ হয়ে গেল…। বাংলাদেশ থেকে কষ্ট করে বয়ে আনা নকসীকাথার প্রয়োজনও ফুড়িয়ে গেল।রাতের বেলা ফ্যান ছেড়ে ঘুমাতে হয়।
দিনের বেলা প্রচন্ড রোদ উঠে। বাতাসে আদ্রতা কম থাকার কারনে সে রোদের তাপ বেস প্রখর। মনে হয় সূর্যের তীর্যক রশ্সি শরীরের ভেতরে ঢুকে যাবে…।
এসি রুমে বসে সকাল সন্ধা ক্লাস করি বলে আবহাওয়ার এতো বিপুল পরিবর্তন টের পাই নাই।আজকেই প্রথম টের পেলাম। ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের কোয়ার্টার থেকে হেটে আমাদের ক্লাসে যেতে প্রায় মিনিট সাতেকের মতো লাগে। এই সাত মিনিটেই রোদ্রের প্রখরতা টের পেয়ে গেলাম। যেমনটি পেয়েছিলাম মহারাষ্ট্রের নাগপুরে যেয়ে…
হায়দারাবাদের একটা স্থানীয় পত্রিকায় ছবি দেখলাম, রোদের কারনে দুপুর সময়ে রাস্তা প্রায়ই লোকশূন্য পড়ছে।স্থানীয় লোকের ভাষ্য মতে আবহাওয়া খুব বেশি মাত্রায় পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। গতবছর এইসময়ে হায়দারাবাদের তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রির নিচে…
যা হোক, সেকেন্ড ট্রায়ামস্টারের পরীক্ষা শেষ করলাম। গত এক সপ্তাহ ভয়াবহ ব্যস্ততায় কেটেছে। প্রতিদিন দুটি করে পরীক্ষা। এছাড়া বিভিন্ন এসাইনমেন্টের চাপতো ছিলই। সব শেষ করে আজ ফ্রি হয়েছি…।
আগামীকাল ৪৫ দিনের জন্য যেতে হবে অন্য স্টেটে। আমাদের ৫০ জনকে বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করে বিভিন্ন প্রদেশে পাঠাচ্ছে। কেই যাচ্ছে রাজস্থান, কেউ সিমলা, কেউ দিল্লি, কেউ আসাম…. আমি যাচ্ছি কর্নাটকা প্রদেশের চিত্রাদূর্গা জেলায়।সেখানে মাইরাডা নামকিএকটি এনজিওর বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করে একটি এনটার্নসিপ পেপার জমা দিতে হবে।হায়দারাবাদে ফিরে গিয়ে এনটারনসিপ পেপারের ওপর প্রেজেনটেসনও দিতে হবে। পাশাপাশি দুটো কেস স্ট্যাডিও জমা দিতে হবে। তাই এই ৪৫ দিন শুধু ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ কম। অনেক কাজও করতে হবে।
আমার সাথে আছে আসামের ছেলে দিপান্তর। দেখতে হিন্দি সিনেমার নায়কের মতো।তারপর ফটোগ্রাফিতে বেস হাত আছে। আমাদের ব্যাচের বেশির ভাগ মেয়েই দিপান্তর বলতে পাগল…
কর্নাটকা হায়দারাবাদের পাশের স্টেট। অনলাইনে দিপান্তর টিকিট কেটে রেখেছিল। একটা ক্যাব নিয়ে বিকাল ৫:৩০টার দিকে চলে এলাম আরামগর নামক জায়গায়। ৬:৩০ দিকে বাসে চড়ে বসলাম। বাস চলছে….
সন্ধা হয়ে গিয়েছে। আকাশে অর্ধেক চাঁদ। সেই অর্ধেক চাঁদের আলোতে দেখা যায়… রাস্তার দুইধারে পাথরের পাহাড়… পাহাড়ের ঢাল নেমে গেছে… সেই নিচু জমিতে নারিকেল ও সুপারির বাগান। হালকা চাঁদের আলোতে সেই নারিকেল ও সুপারি গাছের মাথা নাড়ানো চোখে পড়ে…
বাসে তেলেগু সিনেমা চলছে। ধুম-ধারাক্কা ফাইটিং অ্যাকসন সিনেমা। আমার সিটের ওপরে সাউন্ডবক্স। বিরক্ত লাগছে। কিন্তু কিছু করার নেই।সিট ফেলে ঘুমনোর চেষ্টা করলাম। ঘুম আসছে না….। মাঝে আধা ঘন্টার বিরতি দিল। ক্ষুদা লেগেছিল। অর্ধসেদ্ধ মুরগির মাংস দিয়ে দুটি রুটি খেলাম। বিল হলো ২২০ রুপি। আবার বাসে এসে উঠলাম।
বাস চলছে…. হঠাৎ বাইরে তাকিয়ে দেখি অঝরে বৃষ্টি হচ্ছে….ঝুম বৃষ্টি…. বছরের প্রথম বৃষ্টি…. বৃষ্টি পড়া দেখতে খুব ভালো লাগছিল…. আর দেশের কথা, দশের কথা খুব মনে পড়ছিল……
জানালা দিয়ে চেয়ে দেখি দূরে নতুন দিনের আয়োজনে ব্যস্ত সূর্যমামা….
(চলবে...)
০৬ ই মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৫
নিয়ামুলবাসার বলেছেন: না ভাই এখনও কর্নাটকার ফোসকা খাওয়া হয় নাই....তবে হায়দারাবাদের ফোসকা খাওয়া হয়েছে.... ঢাকার মতো একসাথে এক প্লেটে দেয় না ....একটা প্লেট দেয়...তারপর টক দিয়ে একটা একটা করে সার্ফ করে....ধন্যবাদ আপনাকে.....
২| ০৬ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:৫৩
মোহাম্মদ মজিবর রহমান বলেছেন: এই ফোসকা আলাদা,হলদেটে ভাত একটু চাটনি সাথে পরিবেশন করে।
০৭ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৫২
নিয়ামুলবাসার বলেছেন: আপনার বর্ণনা শুনে মনে হচ্ছে অবশ্যই টেস্ট করতে হবে...ধন্যবাদ আপনাকে...
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:২০
মোহাম্মদ মজিবর রহমান বলেছেন: ভাই ফোসকা কেমন লাগছে?