![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
*** এসব করে কি লাভ? ***
.
মিনা ও রাজু তাদের ২ মাসের কন্যা
শিশুটি রিমিকে নিয়ে সরকারি শিশু
হাসপাতালে এসেছে। দু একদিন ধরে
রিমি খুব অসুস্থ। জ্বর কাশি হয়েছে।
.
> ডাক্তার সাব দেখেন না আমার
মেয়েটা দু দিন ধরে খুব জ্বরে ভুগছে।
= চিন্তা করিয়েন না। আমি দেখছি।
আপনি আপনার মেয়েকে বেডে শুয়ে
দিন।
.
মিনা তার মেয়েকে বেডে শুয়ে
দিল। তারপর ডাক্তার চেক করে বলল
= আপনার মেয়ের তো খুব ঠান্ডা
লেগেছে। রাতে কি খেয়াল রাখেন
না?
> রাখি তো। তবুও কিভাবে হল বুঝতে
পারছি না।
= দেখুন অবস্থা খুব সিরিয়াস। বুকে
ঠান্ডা লেগেছে। কিছু পরীক্ষা করা
লাগবে। তাই হাসপাতালে ভর্তি করা
লাগবে।
.
হাসপাতালে ভর্তি করার কথা শুনে
মিনা কেদে উঠল। মিনার স্বামী
সান্তনা দিয়ে বলল, "চিন্তা কর না। সব
ঠিক হয়ে যাবে।"
.
= দেখুন চিন্তার কোনো কারণ নেই। দু
একদিন হাসপাতালে থাকলেই ঠিক
হয়ে যাবে। তো ভর্তি করাবেন?
- জ্বি ডাক্তার সাহেব।
= আপনি আমার সাথে আসুন। কিছু
ফরমালিটি পূরণ করতে হবে।
.
মিনার স্বামী যেয়ে সবকিছু করল।
তারপর ভর্তি করাল। দুদিন পর রিমি সুস্থ
হল। অতঃপর তারা বাসায় ফিরে এল। এই
দুদিনে মিনা ভালমত খাওয়া দাওয়া
করেনি। সারাক্ষণ চিন্তায় বিভোর
ছিল। মা বলে কথা।
.
কিছুদিন যাওয়ার পর রিমি আবার অসুস্থ
হল। রাজু ঘরে না থাকায় মিনা
রিমিকে নিয়ে কাছের ক্লিনিকে
গেল।
.
ক্লিনিকের ডাক্তার রফিক সাহেব
দেখে বলল, "ভয়ের কোনো কারণ নেই।
তেমন কিছু হয়নি। শুধু বুকে কফ (কাশি)
জমেছে। কিছু ঔষুধ লিখে দিচ্ছি।
নিয়মিত সেবন করাবেন। আর পানি
থেকে দূরে রাখবেন এবং নিজেও দূরে
থাকবেন।"
.
> গতবার শিশু হাসপাতালে নিয়ে
গিয়েছিলাম। ওনারা তো
বলেছিলেন কফ জমা খুব খারাপ।
-- হ্যা। তবে আপনার মেয়ের সেই রকম
কিছু হয়নি। আচ্ছা আপনি আমাকে
হাসপাতালের রিপোর্ট গুলো দিন।
> কিসের রিপোর্ট!!!
-- আপনি যে আপনার মেয়েকে ওখানে
ভর্তি করিয়েছিলেন তার কাগজপত্র ও
রিপোর্ট গুলো।
> তারা তো এমন কিছু দেয়নি।
.
ডাক্তার সাহেব কিছুক্ষণ চুপ করে রইল
তারপর বলল
-- আপনি এই ঔষুধ গুলো নিয়মিত সেবন
করান। তাতেই হবে।
> আমার মেয়ে ভাল হয়ে যাবে তো?
-- হ্যা। চিন্তা করবেন না।
.
মিনা রিমিকে নিয়ে চলে গেল।
রফিক সাহেব মনে ঘৃণা জেগে উঠল। কি
দুনিয়া! সামান্য কিছু টাকার জন্য
ডাক্তারি পেশাটাকে ব্যবসায়িক
পেশা বানিয়ে ফেলেছে কিছু নিকৃষ্ট
মানুষ।
.
আসলে রিমির তেমন গুরুতর কিছুই হয়নি।
কিন্তু শিশু হাসপাতালের ডাক্তার
মিথ্যা কথা বলে এবং ভয় দেখিয়ে
অবৈধভাবে কিছু টাকা কেড়ে
নিয়েছিলেন। এই ভয় অন্যরকম ভয়। যা
বাবা-মায়ের মনের মধ্যে থাকে
সন্তানকে নিয়ে।
.
আজকাল এসব জিনিষ অহরহ ভাবে দেখা
যাচ্ছে। ডাক্তারের অসচেতনতা-
অবহেলার ফলে রোগীর মৃত্যু, ভুয়া
চিকিৎসার নাম দিয়ে টাকা আত্মসাৎ
করা, ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু ইত্যাদি আরো
অনেক কথা আমরা নানান সময় নানান
চ্যানেলে এবং পত্রপত্রিকায় দেখতে
পাই।
.
এমন পরিস্থিতি থেকে বাচার জন্য কি
করা উচিত তা আমার জানা নেই। শুধু
এইটুকুই জানি পরকালের ভয় জেগে
উঠলে মানুষ এসব অসামাজিক-অমানবিক
কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকবে।
.
ডাক্তারি একটা সম্মানজনক পেশা।
তারা সুচিকিৎসার মাধ্যমে মানুষের
জীবন বাচিয়ে থাকেন। সুতরাং সমাজ
এবং মানবতার জন্য তাদের পেশা
কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা ভাষায় প্রকাশ করা
যাবে না। সুতরাং এই মহান গুরুত্বপূর্ণ ও
সম্মানজনক পেশাকে ব্যবসা বানাবেন
না।
.
নিশি চৌধুরী
©somewhere in net ltd.