![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কমিউনিস্ট সত্তা, ফাসিস্ত সত্তা, হিন্দু সত্তা, খ্রিস্টিয়ান সত্তা বলে কোনও সত্তার অস্তিত্ব আছে বলে আমি বিশ্বাস করি না। ধর্মীয় গোঁড়ামির কোনও একটা শাসনে সসাগরা পৃথিবী সর্বকালে শাসিত হবে, এ অবাস্তব কল্পনা। হিন্দু পারেনি, বৌদ্ধ পারেনি, খ্রিস্টিয়ান পারেনি, মুসলমান পারেনি, ফাসিস্ত পারেনি, নাৎসি পারেনি। কমিউনিস্টই বুঝি এর ব্যতিক্রম হবে?
সজীব ভাই বারবার বলতেছিলো সৈকত, তুমি এতোগুলা অভিজানে ছিলা, তোমার কিছু অভিজ্ঞতা ওদের বলো।
সৈকত ভাই খুব ফেইন্টেড মেমোরি থেকে একটা দুইটা ঘটনা বললো। পরিমার্জিত ও সংক্ষেপিত।
ঘটনাগুলা আমার আগেই শোনা, বিশদ বর্ণনায়। কিছু জায়গায় আমি নিজেই ছিলাম মনে হচ্ছিলো।
আমি সৈকত ভাইকে বললাম, ভাই আপনি ছবি তোলেন না, কোন অভিজান নিয়া কিছু লেখেনও নাই কখনো। কেন?
ভাই সহজ ভাষায় বলে দিলো, আমি এইসব পারিনা। ওদের থেকে শুনো তোমরা।
পাহাড়ে জঙ্গলে এমন অনেক নিভৃতচারী আছে। যারা কখনো লেখবেনা, গল্প বলবেনা, ছবিও দেখাবেনা।
আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে তখন, এরা আসলে কেন যায়? অভিজানের নেশায়? নিজের সাথে বোঝাপড়ায় আসতে? কি বুঝতে
পাহাড়ের পাথর, পানির শব্দ, চিরহরিৎ বনের ভেতরের পচা পাতার সাথে বাতাসের গন্ধ, সবই এদের সাথে কথা বলে। এবং তারা তা নিঃশব্দে শুনতে থাকে।
প্রতি বর্ষায় তাদের পদচিহ্ন মুছে যায় বৃষ্টিতে, কিন্তু পাহাড় জানে সে কারো ভিতরে ঢুকে গিয়েছিলো।
তারা ফিরেও আসে চুপচাপ। কারো ফেসবুক পোস্টে, কারো ইউটিউব থাম্বনেই এদের মুখ দেখা যায় না। কিন্তু যারা একবার তাদের সাথে গিয়েছে, তারা জানে আসল গল্পদাতা তারাই। তারাই আসল উপন্যাস।
তাদের কাছে যাওয়া মানে বইয়ের বাইরে একটা বই পড়া। একটাই সমস্যা, তারা কখনো দ্বিতীয়বার পড়ে শোনাবে না।
আমাকে যেতে হবে, শুনতে হবে, বুঝে ফেলতে হবে, একবারেই!
সত্যিকারের অভিজাত্রীদের একধরনের কুয়াশা থাকে চেহারায় তারা ঠিক বলেনা, ঠিক বলেনও না।
তাদের অভিজ্ঞতা কোনো ছবিতে ওঠে না, ওঠে কারো নোটবুকে, কবিতায়, কারো হঠাৎ করে গলার কাঁপুনিতে, কারো চুপচাপ স্থির ভিক্ষুর মতো।
তাদের ভাষা পাহাড়ের মতই, নিভৃত, দৃঢ়, আর প্রজ্ঞাময়।
তাদের জানতে হয় না, তারা জানে।
তাদের খুঁজে পেলে ভাগ্যবান হইয়ো, কারণ তারা কাউকে কিছু শেখায় না, শুধু একসাথে হাঁটে।
আর যখন একদিন আমিও হাঁটতে হাঁটতে নিঃশব্দ হয়ে যাবে, তখন বুঝবে, তাদের গল্পগুলো, আসলে আমার ভেতরেই লেখা হচ্ছিল এতদিন ধরে।
(ছবিতে সৈকত ভাই আর আমি। শেষ ভ্রমনের সময়)
©somewhere in net ltd.