নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

পর্বতারোহী এবং অভিযাত্রী স্যার এডমান্ড হিলারির ৯৬তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা

২০ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:৪৫


এভারেস্ট বিজয়ী নিউজিল্যান্ডের পর্বতারোহী এবং অভিযাত্রী স্যার এডমান্ড পারসিভাল হিলারি। যিনি এডমান্ড হিলারি নামে সমাধিক পরিচিত। প্রথম এভারেস্ট বিজয়ী হিসেবে যার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে ইতিহাসের পাতায়। প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ অসাধ্য সাধনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আসছে। তাই মানুষ ছুটে চলেছে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। এমনি এক চ্যালেঞ্জের নাম মাউন্ট এভারেস্ট। ১৯৫৩ সালের ২৯শে মে এডমান্ড হিলারি ও তেনজিং নরগে প্রথম মানুষ হিসেবে এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণ করেন। ১৯১৯ সালের আজকের দিনে নিউজিল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন স্যার এডমান্ড পারসিভাল হিলারি। আজ তাঁর ৯৬তম জন্মবার্ষিকী। পর্বতারোহী স্যার এডমান্ড হিলারির জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।

(শিশু এডমান্ড হিলারি)
এডমান্ড পারসিভাল হিলারি নিউজিল্যান্ডের একজন পর্বতারোহী এবং অভিযাত্রী। তিনি ১৯১৯ সালের ২০ জুলাই নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। প্রথম এভারেস্ট অভিযান শুরু হয় ১৯২১ সালে। এটি ছিল মূলত অনুসন্ধানমূলক অভিযান এবং এর নেতৃত্বে ছিলেন জর্জ ম্যালোরি। তিনি চূড়ায় ওঠার জন্য অনেক পরীক্ষা করে একটি রুট আবিষ্কার করেন। ম্যালোরি তার আবিষ্কৃত রুটে প্রায় ৭০০৭ মিটার আরোহণ করেন। তিনি চূড়া অভিযানের চেষ্টা করলেও তার সঙ্গীসাথীরা এই অভিযানের ব্যাপারে সম্মত ছিলেন না। তাই তাকে ফিরে যেতে হয়। প্রথম অভিযানের ঠিক দু বছর পর পরবর্তী অভিযানে যান জর্জ ফিনচ । তিনি অনেক চিন্তাভাবনা করে এবার সাথে নেন অক্সিজেন সিলিন্ডার। তিনি প্রায় ৮৩২০ মিটার উচ্চতায় উঠতে সক্ষম হন। এটি ছিল সে সময়ের রেকর্ড উচ্চতায় মানুষের আরোহণ। এর পর নর্টন এবং সমারভিল নামে দুই অভিযাত্রী অভিযান চালিয়ে প্রায় ৮৫৫৮ মিটার পর্যন্ত উঠতে পেরেছিলেন। ইতিমধ্যে জর্জ ম্যালোরি আবার পুরো দমে এভারেস্ট অভিযান শুরু করেন। তিনি ১৯২৪ সালের ৮ জুন জর্জ ম্যালোরি এন্ড্রু আর্ভিংকে সাথে নিয়ে এভারেস্ট জয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন। কিন্তু তার এ অভিযান সফল হয়নি। ১৯৯৯ সালে ম্যালোরির মৃতদেহ আবিষ্কারের আগে পর্যন্ত তিনি নিখোঁজ ছিলেন। ৩২ বছরের চেষ্টার পর ভূপৃষ্ঠের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্টের চূড়ায় প্রথমবারের মতো মানুষের পা পড়ল ১৯৫৩ সালের ২৯ মে। নিউজিল্যান্ডের এডমুন্ড হিলারি ও নেপালের তেনজিং নোরগে- দুই মহাদেশের দুই মানুষ একসঙ্গে জয় করলেন এভারেস্টকে। বরফঢাকা ২৯ হাজার ৩৫ ফুট উচ্চতা পেরিয়ে এভারেস্টে পা রাখেন তারা ২৯ মার্চ সকাল সাড়ে ১১টায়। তবে তাদের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ জয়ের খবর মানুষ জেনেছিল ২ জুন। নেপাল ও তিব্বত জুড়ে বিস্তৃত হিমালয় পর্বতমালার সর্বোচ্চ চূড়াই হলো এভারেস্ট। স্যার জর্জ এভারেস্ট নামে ১৯ শতকের এক বৃটিশ ভূমি জরিপকারীর নামে এই পর্বতচূড়ার নাম।

(এভারেস্ট বিজয়ী এডমান্ড হিলারি এবং তেনজিং নরগে)
বৃদ্ধ বয়সে বা প্রতিবন্ধী হয়েও এই পর্বতে আরোহণ করে অনেকে রেকর্ড বইয়ে নাম লিখিয়েছেন। এদের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ১৬ মে প্রথম নারী হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন জাপানের জুনকো তাবেই। ১৯৯৮ সালে প্রথম প্রতিবন্ধী হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন যুক্তরাষ্ট্রের টম হুইটেকার। এই জয়যাত্রায় বাংলাদেশীরাও পিছিয়ে নেই। এপর্যন্ত ৫ জন বাংলাদেশী এভারেস্ট জয় করেছেন। বাংলাদেশের পতাকাও আজ পৌঁছে গেছে এভারেস্টের চূড়ায়। ২০১০ সালের ২৩ মে বাংলাদেশের তরুণ মুসা ইব্রাহীম এভারেস্ট জয় করেন! তবে মুসা ইব্রাহীমের এভারেস্ট জয় নিয়ে বিতর্ক আছে। এর এক বছর পর ২০১১ খ্রিস্টাব্দের ২১ মে এম. এ মুহিত দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন। এর পর ২০১২ সালের ১৯ মে বাংলাদেশের প্রথম নারী হিসেবে এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করেছেন নিশাত মজুমদার। এছাড়াও ২০১২ খ্রিস্টাব্দের ২৬ মে সর্বকনিষ্ঠ বাংলাদেশী এবং দ্বিতীয় বাংলাদেশী নারী হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টের চুড়ায় আরোহণ করেন ওয়াসফিয়া নাজরীন । তবে একই বছর ২০ মে সকালে বাংলাদেশের পর্বতারোহী ও চলচ্চিত্রকার মোহাম্মদ খালেদ হোসেন (সজল খালেদ) পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট জয় করে ফেরার পথে মৃত্যুবরণ করেন। এ পর্যন্ত ২১০ জন পর্বতারোহী প্রাণ হারিয়েছেন, এর মধ্যে ৮ জন ১৯৯৬ সালে পর্বতের অত্যন্ত উঁচুতে ঝড়ের কবলে পড়ে প্রাণ হারান। বিশেষত ডেথ জোন এ আবহাওয়া এতোটাই প্রতিকূল যে বেশিরভাগ সময় হতভাগ্য পর্বতারোহীর মৃতদেহ সেখান থেকে উদ্ধার করা সম্ভবপর হয় না।

মাউন্ট এভারেষ্ট হিমালয় পর্বতমালায় অবস্থিত সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে শীর্ষবিন্দুর উচ্চতার হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে এর উচ্চতা ৮,৮৪৮ মিটার (২৯,০২৯ ফুট) । এটি হিমালয় পর্বতমালার একটি অংশ, এশিয়ার নেপাল এবং চীনের সীমানার মধ্যে এর অবস্থান। ১৮৫৬ সালে ভারতের বৃহৎ ত্রিকোণমিতিক জরিপ (Great Trigonometric Survey) প্রকল্প সর্বপ্রথম এভারেস্টের উচ্চতা পরিমাপ করে ২৯,০০২ ফুট (৮,৮৪০ মি)। এভারেস্ট আবিষ্কারের আগে মনে করা হত কাঞ্চনজঙ্ঘা পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ। ১৮৬৫ সালে রয়েল জিওগ্রাফিক সোসাইটি এভারেস্টকে পৃথিবীর সর্বচ্চোচূড়া হিসেবে ঘোষণা করেন। এভারেস্ট এর উচ্চতার সঠিক পরিমাপ করেন বাঙালি গণিতবিদ ও জরিপকারী রাধানাথ শিকদার।

এভারেস্ট বিজয়ী স্যার এডমান্ড হিলারি ২০০৮ সালের ১১ জানুয়ারি নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডের একটি হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন। আজ তার ৯৬তম জন্মবার্ষিকী। পর্বতারোহী স্যার এডমান্ড হিলারির জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.