![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১। যখন আসমানী কিতাবের মাধ্যমে বিচার ফয়সালা করা যায় না ঃ
সূরা মায়েদাহ আয়াত নং- ৪৮
فَاحْكُم بَيْنَهُم بِمَا أَنزَلَ اللّهُ وَلاَ تَتَّبِعْ أَهْوَاءهُمْ
“আপনি তাদের মধ্যে আসমানী কিতাব দ্বারা রায় প্রদান করুন, তাদের খেয়াল খুশির অনুকরণ করবেন না।
এ আয়াতগুলির মধ্যে আল্লাহ তায়ালা আদেশ সূচক শব্দ ব্যবহার করেছেন। যা দ্বারা ফরয প্রমাণিত হয়। অর্থাৎ আসমানী কিতাবের বিধি মোতাবেক বিচার ফয়সালা করা ফরয এবং এটা এবাদাতের একটি রোকন কাজেই কোন রাষ্ট্রীয় সীমানায় যদি খিলাফাত প্রতিষ্ঠিত না থাকে তবে সেখানে আসমানী কিতাব দ্বারা বিচার ফয়সালা করা যায় না।
২। চুরির বিচার করা যায় না অথচ চুরির বিচার করা ফরয ঃ
মায়িদা আয়াত নং- ৩৮,
وَالسَّارِقُ وَالسَّارِقَةُ فَاقْطَعُواْ أَيْدِيَهُمَا
“অর্থাৎ চোর পুরুষ হোক কিংবা নারী হোক তাদের হাত কেটে দাও, এটা আদেশ সূচক বাক্য তাই হাত কাটা ফরয। কিন্তু খিালাফাত প্রতিষ্ঠিত না থাকার কারণে চোরের বিচার করা সম্ভব হচ্ছে না।
৩। ডাকাতির বিচার করা যায় না ঃ
সূরা মায়িদা আয়াত নং- ৩৩
اَوْ تُقَطَّعَ اَیْدِیْھِمْ وَاَرْجُلُھُمْ مِّنْ خِلَافٍ اَوْ یُنْفَوْا مِنَ الْاَرْضِﺚ
উল্টোভাবে ডান হাত এবং বাম পা কেটে দেয়া। উল্টোভাবে হাত পা কেটে দেয়ার নির্দেশ হচ্ছে ঐ সকল ডাকাতদের জন্য যারা ডাকাতি করে শুধু মালামাল নিয়ে যায় মানুষ হত্যা করে না।
৪। শুলে বিদ্ধ করে ডাকাত হত্যা করার নির্দেশ পালন করা যায় না ঃ
সূরা মায়েদা আয়াত নং- ৩৩
اِنَّمَا جَزٰ۬ؤُا الَّذِیْنَ یُحَارِبُوْنَ اللہَ وَرَسُوْلَھ۫ وَیَسْعَوْنَ فِی الْاَرْضِ فَسَادًا اَنْ یُّقَتَّلُوْٓا اَوْ یُصَلَّبُوْٓا
যারা আল্লাহ এবং তার রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কার্য করিয়া বেড়ায়, ইহাই তাহাদের শাস্তি যে, তাহাদিগকে হত্যা করা হবে অথবা ক্রুশবিদ্ধ করা হবে।
এ আয়াতের তাফসীরে বলা হয়েছে যে, যে ডাকাতরা ডাকাতি করে এবং মানুষও মার্ডার করে তাদের দলের সকলেকে শুলবিদ্ধ করে পেট চিরে হত্যা করতে হবে। কিন্তু খিলাফাত প্রতিষ্ঠিত না থাকলে এ বিধান বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।
৫। অবিবাহিতদের যেনার বিচার করা যায় না
সূরা নুরের আয়াত নং- ২
اَلزَّانِیَةُ وَالزَّانِیْ فَاجْلِدُوْا کُلَّ وَاحِدٍ مِّنْھُمَا مِائَةَ جَلْدَةٍﺕ
যেনাকারিনী ও যেনাকার উভয়কে একশত বেত্রাঘাত কর। খেলাফাত প্রতিষ্ঠিত না থাকলে, ইবাদাতের এ রোকনটি পালন করা সম্ভব হয়না।
৬। বিবাহিত যেনাকারিনী ও বিবাহিত জেনাকারের বিচার করা সম্ভব হয় না
আয়াতটি তেলাওয়াত মানসুখ হুকুম বাকী। অর্থাৎ বিবাহিত নারী পুরুষগণ যেনা করলে তাদেরকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে গেড়ে পাথর মেরে হত্যা কর। কারণ এদেরকে বাঁচিয়ে রাখলে, সমাজে এইডস রোগ ছড়াবে, তখন লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাবে। বর্তমানে পৃথিবীতে ২০ কোটি লোক এইডস রোগে আক্রান্ত। কাজেই দুজন ব্যভিচারীকে মেরে ফেললে সমাজের লক্ষ লক্ষ মানুষ রক্ষা পাবে। অতএব খিলাফাত প্রতিষ্ঠিত না থাকার কারণে এবং আসমানী কিতাবের শাসনের অবর্তমানে পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ মরণব্যধি এইডস-এ আক্রান্ত।
৭। যেনার অপবাদ দানকারীর বিচার করা সম্ভব হয় না ঃ
কেহ যদি কারো উপর যেনার অভিযোগ উত্থাপন করে তবে চারজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী দ্বারা তা প্রমাণ করতে হবে। অভিযোগকারী তা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হলে সে অপবাদ দানকারীর অন্তর্ভুক্ত হবে এবং তার শাস্তি হবে আশিটি বেত্রাঘাত। কাজেই খিলাফাত প্রতিষ্ঠিত না থাকার কারণে ইবাদাতের এ রোকনটিও পালন করা সম্ভব হচ্ছে না।
৮। মাদকাসক্ত বা নেশাখোরের বিচার করা সম্ভব হচ্ছে না ঃ
নেশাখোরের বিচার হচ্ছে আশিটি বেত্রাঘাত। সুতরাং খিলাফাত প্রতিষ্ঠিত না থাকার কারণে ইবাদাতের এ রোকনটিও পালন করা সম্ভব হচ্ছে না।
৯। সুদবিহীন লেন-দেন করা সম্ভব হচ্ছে না ঃ
অথচ সুদের মধ্যে জড়িতদের সম্পর্কে কুরআন মাজিদে বলা হয়েছে যে, তারা যেন আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকে। বাকারা আয়াত নং- ২৭৯।
খেলাফাত প্রতিষ্ঠিত না থাকার জন্য সারাবিশ্বের গরীব মানুষগুলি ক্ষতিকর এক অর্থনীতির যন্ত্রণা সহ্য করছে।
১০। পর্দার বিধান পালন করা সম্ভব হয়না ঃ
নারী-পুরুষ সকলের জন্য পর্দা করা ফরয অথচ কারও পক্ষেই এ ফরয পালন করা সম্ভব হয় না। কোন পুরুষ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাবে, পোষ্ট অফিসে যাবে, ব্যাংকে যাবে, মহিলাদের সাথে কথা-বার্তা লেন-দেন করা ছাড়া কোন উপায় থাকে না। কাজেই আল্লাহর খিলাফাত কায়েম না থাকার জন্য এ গুরুত্বপূর্ণ ফরযটি নারী-পুরুষ কারও পক্ষে পালন করা সম্ভব হয় না। সূরা নূর আয়াত নং- ২৭-৩১ পর্যন্ত ও সূরা আহযাব আয়াত নং- ৫৯ দ্রষ্টব্য।
১১। ফসলের উশর বা দশ ভাগের একভাগ আদায় করা সম্ভব হয় না ঃ
যে সকল ফসল বর্ষার পানির সাহায্যে অথবা নদীর পানির সাহায্যে উৎপন্ন হয় আর যে সকল গাছ শিকর দ্বারা মাটির রস চুষে খেয়ে ফল দান করে ঐ সকল ফল বা ফসলের পরিমান যদি শোয়া ছাব্বিশ মন হয় তাহলে উশর বা যাকাত আদায় করা ফরয। সূরা আনয়াম আয়াত নং- ১৪১ বলা হয়েছে,
کُلُوْا مِنْ ثَمَرِھ۪ٓ اِذَآ اَثْمَرَ وَاٰتُوْا حَقَّھ۫ یَوْمَ حَصَادِھ۪ﺘ
“ফসল কাটার দিনেই যাকাতের অংশটি দিয়ে দাও।”
১২। “নিসফে উশর” বা যাকাত আদায় সম্ভব হয় নাঃ
উল্লেখিত ফসলগুলি ফলাতে যদি সেচ, সার, ঔষধ বা সার্বক্ষণিক পরিচর্যাকারী নিয়োগ করতে হয় তা হলে যাকাত আদায় করতে হবে। কিন্তু খেলাফত প্রতিষ্ঠিত না থাকার কারণে মানুষেরা এ ফরযগুলির কথা ভুলে যেতে শুরু করেছে।
১৩। রোবো’ ওশর আদায় করা সম্ভব হচ্ছেনা ঃ
ব্যবসার টাকা, নগদ টাকা, সোনা-রূপার রোবো’ ওশর বা ৪০ ভাগের এক ভাগ যাকাত আদায় করা ফরজ। যা খিলাফত প্রতিষ্ঠিত না থাকলে আদায় করা য়ায় না।
১৪। যাকাত খাতওয়ারী ব্যয় করা সম্ভব হচ্ছেন না ঃ
যাকাত আদায় করার পর যে আটটি খাতে তা ব্যয় করতে বলা হয়েছে ঐ খাতগুলিতে যাকাত ব্যয় করা ফরয। কিন্তু যাকাতও আদায় হচ্ছে না এবং খাতওয়ারী ব্যয়ও হচ্ছে না, সব কিছুর মুলেই রয়েছে খেলাফত প্রতিষ্ঠিত না থাকা (সূরা তাওবা আয়াত নং- ৬০)।
১৫। খুনের বিচার কেসাস বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় ঃ
হত্যার দায়ে হত্যাকারীকেও হত্যা করা এর নাম হচ্ছে কেসাস। নিহত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীগণ সকলেই যদি হত্যার বিনিময় হত্যার বিচার দাবী করে তবে ইসলামী আদালত হত্যাকারীকে কতলের আদেশ দিবেন। জল্লাদ তার শিরোচ্ছেদ করবে। এ বিচারকে কেসাস বলা হয়। সূরা বাকারাহ ১৭৮ আয়াতে আল্লাহ বলেন- তোমাদের উপর হত্যার বিচার ফরয করা হয়েছে। কিন্তুু খিলাফাত প্রতিষ্ঠিত না থাকার কারণে এ বিচার থেকে সমাজ বঞ্চিত।
১৬। হত্যার বিনিময় হত্যার পরিবর্তে রক্তের মূল্য পরিশোধ করার বিধান কার্যকরী করা যাচ্ছেনা ঃ
অথচ এটা একটি বিরাট কল্যাণকর ব্যবস্থাপনা যার মাধ্যমে হত্যাকারীও প্রাণে বেঁচে যায় আবার নিহত ব্যক্তির ওয়ারিশগণও লাভবান হয়। নিহত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীগণ সর্ব সম্মতিক্রমে অথবা আংশিক ভাবে হত্যার বিনিময় হত্যা এই বিচারের পরিবর্তে যদি রক্তের মূল্য দাবী করে তবে হত্যাকারীকে ইসলামী আদালতের কাজী কতলের নির্দেশ দিবেন না। কারণ ওয়ারিশদের মধ্য হতে একজনেও যদি হত্যার পরিবর্তে রক্তের মূল্য দাবী করে তবে হত্যাকারীর উপর থেকে হত্যার আদেশ রহিত হবে। তার পরিবর্তে তার উপর রক্তের মুল্য পরিশোধ করার আদেশজারী করা হবে। আর রক্তের মুল্য হচ্ছে একশত উট, অথবা একশত গরু অথবা দুই হাজার বক্রী। যেখানে যেটা পাওয়া যায় সেখানে সেটার মাধ্যমে রক্তের মুল্য পরিশোধের আদেশ দেয়া হবে। আমাদের দেশে রক্তের মূল্য ধার্য্য হবে একশত গরু, মাঝারি ধরণের গরু, উৎকৃষ্টও নয় নিকৃষ্টও নয়। চল্লিশটি দুধের গরু, আর ষাটটা হালের গরু। আর উটের ব্যাপারে রাসুল (স.) বলেছেন দু’বছর বয়সের উটনী ২০টি।
দু বছর বয়সের উট - ২০টা।
তিন বছর বয়সের উটনী - ২০টা।
চার বছর বয়সের উট - ২০ টা।
দু বছর বয়সের উট -২০টা।
আল্লাহর জমিনে আল্লাহর খিলাফাত প্রতিষ্ঠিত না থাকার কারণে পৃথিবীর মাজলুম মানুষেরা এই সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত। সারকথা ইবাদাতের মধ্যে ফরয পর্যায়ের কাজগুলিকে রোকন বলা হয় আর উল্লেখিত বিষয়গুলি যে ফরয পর্যায়ের ইবাদাত তাতে কোন সন্দেহ নেই, এছাড়া আরও ইবাদাত আছে যা খেলাফাত প্রতিষ্ঠিত না থাকার জন্য কারো পক্ষে আদায় করা সম্ভব নয়। এজন্যই আল্লাহ তায়ালা আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করার পূর্বেই খিলাফাতের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন
আল কুরআনে বলা হয়েছে,
হে ঈমানদারগন! তোমাদের প্রতি নিহতদের ব্যাপারে কেসাস গ্রহণ করা বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। স্বাধীন ব্যক্তি স্বাধীন ব্যক্তির বদলায়, দাস দাসের বদলায় এবং নারী নারীর বদলায়। অতঃপর তার ভাইয়ের তরফ থেকে যদি কাউকে কিছুটা মাফ করে দেয়া হয়, তবে প্রচলিত নিয়মের অনুসরণ করবে এবং ভালভাবে তাকে তা প্রদান করতে হবে। এটা তোমাদের পালনকর্তার তরফ থেকে সহজ এবং বিশেষ অনুগ্রহ। এরপরও যে ব্যাক্তি বাড়াবাড়ি করে, তার জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩২
হানিফঢাকা বলেছেন: চুরির শাস্তি হাত কাটা আর জেনাকারের শাস্তি পাথর মেরে হত্যা করা এই সব ধারনা নিয়া খিলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চান? আগে জানেন তারপর লিখেন। আর আরেকটা প্রশ্ন খিলাফত কি জিনিষ আপনি জানেন কি?