নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খোঁজে আছি।

নিরীক্ষক৩২৭

আমরা সবাই পাপী, আপন বাপের বাটখারা দিয়ে অন্যের পাপ মাপি

নিরীক্ষক৩২৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

চোখের বিবর্তন

২২ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:২৯


অন্যান্য অঙ্গের তুলনায় চোখ কিন্তু একেবারেই অন্যরকম।

একরকমের জেলি ভরা বলের মত যা আলোর তরঙ্গতে সংবেদনশীল হয়ে কিভাবে কিভাবে যেন ছবি বানিয়ে ফেলে। চোখই মানব দেহের একমাত্র অঙ্গ যা সরাসরি ব্রেনের সাথে যুক্ত।

৬০০ মিলিয়ন বছর আগে যখন পৃথিবীতে লাইফ ফর্ম বলতে পানিতে শুধুমাত্র এককোষী ব্যাকটেরিয়াই ছিল তখন তাদের মধ্য থেকেই চোখের বিবর্তন শুরু হয়।ধারনা করা হয়, র‍্যানডোম মিউটেশনের ফলে কিছু ব্যাকটেরিয়ায় আলোক সংবেদী কোষ তৈরি হয়। ব্যাকটেরিয়াগুলি তখন অনুভব করতে পারত সূর্যালোকের কত কাছে তারা অবস্থান করছে। ফলে সূর্যালোকের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে ব্যাকটেরিয়াগুলি পানির গভীরে চলে যেত ,এতে করে সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি যেমন আলট্রা আলট্রা ভায়োলেট রে থেকে নিজেরদের রক্ষা করতে পারত।

আরো কিছু র‍্যানডোম মিউটেশনের পরে চোখ তার সর্ব প্রথম প্রাথমিক উপনীত হয়। তখন এই প্রাথমিক চোখ আসলে ছিল কিছু ফোটোরিসেপ্টরের গুচ্ছ। ফোটোরিসেপ্টরস হল এক ধরনের বিশেষায়িত নিউরন যা রেটিনাতে অবস্থিত এবং যা ফোটোট্র্যান্সডাকশানে সক্ষম আর ফোটোট্র্যান্সডাকশান হল লাইট পার্টিকেলকে ইলেকট্রিক সিগনালে পরিনত করার প্রক্রিয়া।

ফোটোরিসেপ্টরের উপরের অংশে থাকে অপসিন নামক প্রোটিন যা আলোর ফোটনের স্পর্শে আসলে বিক্রিয়া করে। কয়েকটি বিক্রিয়া সম্পন্ন করে তা ব্রেনে ইলেক্ট্রিক্যাল সিগনাল পাঠায়। এই ফোটোরিসেপ্টরের অস্তিত্ব জেলিফিশ থেকে শুরু করে মানুষ প্রায় সবার মধ্যেই পাওয়া যায়।

National Review of Neuroscience জার্নালে একটি স্টাডি এ ব্যাপারে সমর্থন দেয় যে sea-squirts এবং vertebrateদের কমন অ্যানসেসটর ছিল যা চোখের লাইট সিগনালিং এর একদম মৌলিক ভিত্তি।

৫৪৩ মিলিয়ন বছর আগের সামুদ্রিক আরথ্রোপড ট্রাইলোবাইটসে অনেকটা পুরনাঙ্গ চোখের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এদের চোখ ছিল অনেকটা ফুলের মত।চোখের লেন্সের নিচে সংবেদনশীল কোষগুলি ফোটোরিসেপ্টরকে ঘিরে ছিল। এদের চোখগুলি এতই কর্মক্ষম ছিল যে ট্রাইলোবাইটসদের কাজিন হর্স-শু ক্র্যাবে চোখ গুলি এখনো বিদ্যমান।


মেরুদণ্ড ও করোটির বিবর্তনের সাথে চোখের কমপ্লেক্সিটিও বৃদ্ধি পায়।মানুষের চোখের গঠন লাম্প্রে মাছের মত মেরুদণ্ডী প্রানিদের অস্তিত্ব পর্যন্ত ট্রেস করা যায় যারা কিনা ৫০০ মিলিয়ন বছর আগে পানিতে সাতরে বেড়াত।
এদের চোখের সাথে আমাদের চোখের প্রচুর মিল পাওয়া যায়। এদের চোখে এপিথেলিয়াল কোষ দ্বারা তৈরি লেন্স ছিল যা বহির্মুখী ইনফেকশন রোধ করতো, এছাড়া ছিল রেটিনা ও অকুলার মাসল যা কিনা তাদের চোখকে নাড়াতে কাজে দিত। এদের চোখ বিভিন্ন
দৈর্ঘ্যের তরঙ্গে সংবেদনশীল হয়ে সরল ছবি তৈরি করতে পারত।

৪৩০ মিলিয়ন বছর আগে যখন আমাদের পূর্বপুরুষ ডাঙ্গায় উঠে আসে তখন চোখ উপবৃত্তাকার আকার ধারন করে পানির নিচে আবছা আলোতে দেখার ভারসাম্য বজায় রাখতে।এমন কি বিবর্তনই ঠিক করে দেয় চোখের অবস্থান কোথায় হবে। যেমন, হরিনের দুই পাশের চোখ প্রায় ৩৬০ ডিগ্রি অঞ্চল জুড়ে দেখতে সাহায্য করে শিকারির হাত থেকে বাচতে অন্যদিকে শিকারি যেমন বাঘের চোখ দুটি থাকে সামনের দিকে তাকে ডেপথ পারসেপশনে সাহায্য করতে।আমাদের চোখ পারফেক্ট নয়, বিবর্তনও কোন পারফেক্ট প্রক্রিয়া নয়।

যেমনটি চার্লস ডারউইন বলেছিলেন,"from so simple a beginning endless forms most beautiful and most wonderful have been, and are being, evolved."

প্রাথমিক তথ্যসূত্রঃ
http://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC3143066/
http://jgi.doe.gov/news_12_12_02/

মন্তব্য ০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.