![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সুপার হিরোদের র্যাঙ্কিং করা হলে নিঃসন্দেহে ব্যাটম্যান ঠিকই উপরের দিকের জায়গাটা নিজের করে নিবে, সেটা ডিসি ফ্যান অথবা মারভেল ফ্যান যাকেই করতে দেন না কেন। অ্যাকচুয়াল সুপারপাওয়ার ছাড়া হিরোদের লিস্ট বানালে ব্যাটম্যানের সবচেয়ে কাছাকাছি পৌছায় আয়রনম্যান।যদিও এদের মধ্যে কে এগিয়ে থাকবে তা নিয়ে বিতর্ক হয়ত খুব সামান্যই।
ছোট্ট ব্রুস ওয়েইনের ব্যাটম্যান হয়ে ওঠার শর্ট স্টোরিতো আমরা সবাই-ই জানি, কিন্তু বেশির ভাগই জানিনা তার ব্যাটম্যান হয়ে ওঠার রাস্তাটি। ব্যাটম্যান হতে তাকে বছরের পর বছর প্র্যাকটিস করে মাস্টার করতে হয়েছে অসংখ্য স্কিল ।শুধু কাড়ি কাড়ি সম্পদ নয় , তার ব্যাটম্যান হওয়ার পিছনে ছিল বাবা-মার মৃত্যুর ট্র্যাজেডি,ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা সাথে দৃঢ় সংকল্প। ২০১১ সালে রিলিজ হওয়া দি ব্যাটম্যান ফাইলসে ব্যাটম্যানের ডেইলি ওয়ার্ক-আউট রুটিন প্রকাশ করা হয়। মোটামুটি সব এক্সপার্টরা একমত যে সাধারণ মানুষ এটি চেষ্টা করলে মারা পড়বে। আমরা এমন একজনের কথা বলছি যে কিনা বেঞ্চ প্রেসে ৪৫০ কেজি এবং লেগ প্রেসে ১১০০ কেজি ব্যবহার করে, রেঞ্জের দিক থেকে দুটিই ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। এরপরেও ব্যাটম্যানের স্পীড ও এন্ডুর্যান্স পৃথিবীর সেরা অ্যাথলেটদের সমান।
তবে ব্যাটম্যান হয়ে ওঠার চেষ্টা কিন্তু একেবারে পাগলের প্রলাপ নয়। 'Becoming Batman' বইতে লেখক দেখিয়েছেন স্ট্রিক্ট ওয়ার্ক-আউট রুটিন, মাথা পাগল করা স্লিপ সাইকেল আর প্রতিদিন ৪০০০ ক্যালরি খাবার গ্রহন করে কেউ শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ ব্যাটম্যান না হতে পারলেও প্রায় সেই পর্যায়ে পৌঁছাবে। উল্লেখ্য যে সাধারণ একজন পুরুষের প্রতিদিন গড়ে প্রয়োজন ২৭০০ ক্যালরি।
ব্যাটম্যানের শর্ট স্টোরিতো সবার জানা , বিলিওনিয়ার ব্রুস ওয়েইন তার চোখের সামনে নিজের বাবা-মাকে হারিয়ে সকল অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতিজ্ঞা নেয়। কিন্তু ব্যাটম্যানের ব্যাটম্যান হয়ে ওঠার মাঝের বছরগুলোতে কি হয়েছিল সেটার জন্যই আজকের পোস্টটি লেখা।
ব্রুস ওয়েইনের তার নিজের সামনেই বাবা-মাকে হারানোর কারনে তার মধ্যে সিরিয়াস উইল পাওয়ারের উত্থান হয় যার ফলে সে তখন থেকেই নিজে ওয়ান ম্যান ওয়ার ঘোষণা করে সকল ক্রাইমের বিরুদ্ধে।
যেকোনো দক্ষ লড়াকু যোদ্ধাও ১০ ভারসাস ১ এ সুবিধা করতে পারে না সেটা ব্যাটম্যান কিভাবে ম্যানেজ করে ? ওয়েল, ব্রুস ওয়েইন ইজ এ বিলিওনিয়ার বাই বোর্ণ। শুরু থেকেই সে সম্পদ বাবহারে কোন কার্পণ্য করেনি।
বয়স ৮ থেকে ১৪ এর ভিতরে সে নট টাইয়িং, অভিনয়, অ্যাক্রোব্যাটিক,মার্শাল আর্ট ,ম্যাথ-সায়েন্স ও অন্যান্য ভাষা যেটুকু সম্ভব তা শিখে নিয়েছিল। ব্যাপারটি শুনতে অসম্ভব লাগলেও আসলে অসাধ্য নয়।ধারনা করা হয়, ব্রুস ওয়েইনের আইকিউ ১৯২,এছাড়াও সে ছিল মাল্টি-টাস্কিংয়ে দক্ষ।তাই প্রয়োজনীয় ডেডিকেশন ও স্ট্রিক্ট রুটিন ফলো করে তার অসাধ্য সাধন করা অসম্ভব মনে হয়না,এর সাথে যদি যোগ করা হয় তার মাইন্ড ট্রেনিং তাহলে পুরো ব্যাপারটাই 'doable' মনে হয়। এগুলোর সাথে সে শিখেছিল স্পীড রিডিং ও লিপ রিডিংও। এমনকি যত বেশি শেখা যায় যত দ্রুত যত সহজে শেখা যায় তা নিশ্চিত করতে ব্রুস ওয়েইন শেখার পদ্ধতিগুলি শিখে নিয়েছিল।
ব্রুস ওয়েইনের আম্বিডেক্সটারিটি,স্মরণশক্তি,শেখার দক্ষতা থেকে ধারনা করা হয় তার সিনেস্থেসিয়া থাকতে পারে। সিনেস্থেসিয়া হল "the production of a sense impression relating to one sense or part of the body by stimulation of another sense or part of the body."। যেমন একেক অক্ষর একেক রঙ্গে দেখা অথবা জটিল কোন সমীকরণে প্যাটার্ন দেখতে পারা অথবা এধরনের কোন দক্ষতা থাকা।স্টাডি থেকে জানা যায় সকলের মধ্যেই এই দক্ষতাটি সামান্য পরিমানে থাকে জেনেটিক্সের কারনে কিন্তু ট্রেনিং এর মাধ্যমে তা বহুগুণে বাড়ানো সম্ভব।
আমাদের ব্রুস ওয়েইন এই তার অ্যাবিলিটি ব্যবহার করতো দ্রুত পড়ার জন্য, জটিল সমীকরণ মাথার ভিতরেই সল্ভ করতে এবং ১৪ বছর বয়সে স্কুল থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করতে।
এরপর সে তার সম্পদ ব্যবহার করেছে বেস্ট ইউনিভার্সিটিগুলোতে ভর্তি হতে।ইয়েস, সে নাম করা একাধিক ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছে যা যা শিখতে চেয়েছে তা শেখার জন্য।সে ক্লাস করছে কেমব্রিজ,সরবন, বার্লিন স্কুল অফ সায়েন্স এবং এক আধ ডজন ইউনিভার্সিটিতে। কিন্তু ব্রুস ওয়েইন কখনই এক জাগায় বেশিদিন থাকতো না। যে কোর্স তার কাছে প্রয়োজনীয় মনে হত সেটি ২-৩ সেমিস্টার পড়ে সে অন্য কিছু শিখতে অন্য ইউনিভার্সিটিতে পাড়ি জমাত।ব্রুস শুধুমাত্র সেই কোর্স গুলিই করতো যেগুলো তাকে ক্রাইম ফাইটে সাহায্য করবে।এজন্য সে অপ্রয়োজনীয় কোর্স যেমন পলিটিক্স,সাহিত্য ইত্যাদি এড়িয়ে চলত।
সে তার অবসর সময়ে ডিটেকটিভ হারভি হারিস ও ড্যান মালরি নামের দুই গোয়েন্দার সাথে ক্রাইম সল্ভ করতো। এছাড়াও ওই সময়ের হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন টেড গ্রান্টের কাছ থেকে পারসোনাল লেসন নিতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছিল। বয়স ২০ হতেই সে এফ.বি.আই যোগ দেয়। ট্রেনিং-এ গান হ্যান্ডেলিং ছাড়া অন্য সব টেস্টে পারফেক্ট স্কোর ছিল তার।অফিসিয়ালি এফ.বি.আই এজেন্ট হওয়ার ৬ সপ্তাহ পরেই সে রিসাইন করে। এতকিছুর পর মনে হতেই পারে ক্রাইম ফাইটের জন্য হয়ত সে তৈরি ছিল,কিন্তু সে তখনও তার ফিল্ডের 'বেস্ট' হয়ে উঠেনি।
এজন্য বিলিয়নিয়ার ব্রুস পূর্বে পাড়ি জমান। সেখানে তার প্রথম গন্তব্য ছিল কোরিয়া। ৪০ হাজার ডলার ঘুষ ও ৬ সপ্তাহের মাউনটেন রাইডিং-এর পর মার্শাল আর্ট কিংবদন্তি কিরা কি-এর কাছে প্রায় ১ বছর ছিলেন। এসময় তিনি ধৈর্য, শান্তি, মনোবল সম্পর্কে দীক্ষা নেন। এই এক বছর সময়ে তিনি প্রায় সকল প্রকার কোরিয়ান ফাইটিং স্টাইল শিখে নেন। এরপর ব্রুস যান হেনরি ডুকার্ট নামের এক ভাড়াটে যোদ্ধা ও গোয়েন্দার সাথে কাজ করতে। হেনরি দুকার্ট তখন পৃথিবীখ্যাত ছিল তার কোন কিছু ট্র্যাক করতে পারার দক্ষতার জন্য। এগুলো তার ডিটেকটিভ স্কিলে সাহায্য করলেও ব্রুস তার সঙ্গ ছাড়েন ডুকার্টের অপ্রয়োজনীয় ভায়লেন্সের কারণে। এরপর মাস্টার শিহান মাটসুসা তাক শেখান তুম মো মেডিটেশন।এই টেকনিক ব্যবহার করে সে দেহে অক্সিজেনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, দেহে শক্তি সংরক্ষণের জন্য কোমা স্লিপে যেতে পারে,নিজের দেহের তাপমাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এমনকি দেহের মেটাবলিসম রেট ৬৪% কমিয়ে আনতে পারে।উল্লেখ্য, আমরা যখন ঘুমাই আমাদের দেহের মেটাবলিসম ১০%-১৫% কমে।
শুনতে অনেকটা অতিরঞ্জিত মনে হলেও এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। গুগলে একটু ঘাটলেই পেয়ে যাবেন।
আরেক মার্শাল আর্ট এক্সপার্ট ব্রুসকে কিছু exotic ফাইটিং স্টাইল শেখান যা সে জানত না। এরপর ব্রুস যাত্রা করেন রাশিয়ার উদ্দেশে। সেখানে ব্রুস তার ইঞ্জিনিয়ারিং স্কিল বৃদ্ধি করতে সারগেই নামের এক ম্যাড জিনিয়াসের কাছে। সারগেই নিজে না জান সব তাকএ শেখান বিল্ডিং, wiring, ক্রিটিকাল থিঙ্কিং নিয়ে।
ব্যাপারটিতে ক্লাইম্যাক্স আসে তখনই যখন সারগেই ব্রুসকে প্রাচীন মিশরের এক গুহায় সাধারণ কিছু গ্যাজেট ও লিমিটেড অক্সিজেন সাপ্লাই দিয়ে পাঠায়।তারপর গুহার মুখ বন্ধ করে দিয়ে বলে "build your way out or die"।বলা বাহুল্য, আমাদের ব্রুস সে যাত্রায় বেচে গেছিলো।
ব্রুস ওয়েইন তার ব্যাটম্যান হয়ে ওঠার পথে অনেকের কাছ থেকে ট্রেনিং নিয়েছেন।যেমন মার্শাল আর্ট এক্সপার্ট,কারাতে এক্সপার্ট,এস্কেপ আর্টিস্ট,অ্যাসাসিনস,মিলিটারি লিডার।এমনকি ইনার পিস ও ক্রোধকে শক্তিতে চ্যানেল করতে টাওইসমের আলো এবং অন্ধকার দিক নিয়েও সে স্টাডি করেছে।
সবচেয়ে বড় ব্যাপারটি হল সে এসবের কিছুই করতে পারত না যদি না সে উবারম্যান স্লিপ সাইকেলে অভ্যস্ত না হত।উবারম্যান স্লিপ সাইকেল হল এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে দিনে ২-৩ ঘণ্টা ঘুমই দেহের জন্য যথেষ্ট হয়।সে এসবের অর্ধেকও করতে পারত না উবারম্যান স্লিপ সাইকেল ছাড়া কারণ এসব ট্রেনিং সে শেষ করেছিল মাত্র ৫ বছর সময়ের মধ্যে।
তো হিসাব করে দেখেন, বিলিয়নিয়ার হলে আপনিও কি হতে পারতেন ব্যাটম্যান। *wink*
২৪ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:৪৩
নিরীক্ষক৩২৭ বলেছেন: আমি ডিসি ফ্যান
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:৩৮
আব্দুল্লাহ্ আল আসিফ বলেছেন: আয়রন ম্যান আমাকে বেশি টানে।