![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শারদীয় দূর্গাপূজার শুভেচ্ছা 'নিক্ষেপ' করে শুরু করছি আজকের লেখা ।
বারো মাসে তেরো পূজা নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই । ওয়াজ মাহফিল, আশুরা-মর্সিয়া নিয়েও কোনো বিপত্তি বাঁধাবার ইচ্ছে নেই । প্রার্থনা উপাসনা বড়দিন ইয়োম কিপুর নিয়েও আমার কনো উক্তি নিষ্পত্তির প্রয়োজন নেই । এগুলো ধর্মীয় ব্যাপার- ধর্ম যার, উৎসবও তার- সে তার ধর্মীয় উৎসব একা পালন করে, নাকি হৈচৈ করে সকলকে জানান দিয়ে করবে, এ ক্ষেত্রে তার ধর্ম যা বলবে সেটাই সে করবে । যেমন আমরা বাংলাদেশি, আমাদের প্রতিদিনের কাজকারবার হবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বিধান সংবিধান মেনে । ভারত নেপালের সংবিধান মেনে চলবে তাদের নাগরিকেরা । সেটা তাদের রাষ্ট্র যেভাবে বলে, সেভাবে পালন করবে । হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব তাদের ধর্ম যেভাবে বলে, সেভাবে পালন করবে, মুসলমানদের এখানে কিছু বলা শোভনীয় না । তা হলে লেখার শুরুতেই আমি যে 'শুভেচ্ছা' নিক্ষেপ করলাম!
আসেন, 'পত্রের' শুরুতে একটা পুরোনা গল্প শুনাই ।
এক লোক সোজা হয়ে হাঁটতে জানে না । হাঁটে সাপের মতো এঁকেবেঁকে ঘোড়ার মতো লাফিয়ে । একদিন এভাবে হাঁটতে গিয়ে সে টয়লেটের টাংকিতে পড়ে গেল । যে ব্যক্তি হাঁটতে গিয়েও লাফায়, গুয়ের টাংকিতে পড়ে সে চুপচাপ বসে থাকবে না নিশ্চিত । রাস্তা দিয়ে যতো মানুষ হেঁটে যায়, সে সবাইকে লক্ষ্য করে ময়লা (গু) ছুঁড়তে লাগল । ঘটনাক্রমে এক লোকের জুতার তলায় সে গু লেগে গেল । গলা সমান গুয়ের টাংকিতে ডুবে থাকা লোকটা চেঁচিয়ে উঠল- 'উঁহ, তোর জুতাত্তে গুর গন্ধ আয়ে!'
এটাকেই কৌতুক করে উপস্থিত একজন বলে উঠলেন, 'নিজের গায়ে আধমন সোয়া কেজি, আরেকজনের বিন্দু দেখে নাক সিটকায় ।'
আমাদের দেশে পরস্পরে ধর্মীয় বিধানে, রাজনৈতিক ব্যাপারে, সামাজিক তৎপরতায় কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি এই গু ছোঁড়ার পর্যায় নেমে গেছে ।
হিন্দু ধর্মের শারদীয় দুর্গোৎসব গেছে । দুচারদিন পরে বৌদ্ধদের প্রবারণা । (প্রবারণাকে বৌদ্ধেরা বলে 'বড় ছাদাং' । এর অর্থ বড় উপোস দিবস ।) কদিন আগে মুসলমানদের কুরবানি গেল । প্রতি বছর সারা শীতজুড়ে চলে ওয়াজ মাহফিল । রাতভর মাইক বাজে সেই
মাহফিলগুলোতে । তখন আমিও একে শব্দদূষণ বলেছি । শব্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য সাড়া জগিয়েছি আমরা । ব্যাপক সমালোচনা করেছি ।
মুসলমানদের ওয়াজ মাহফিল হচ্ছে- সারারাত ধরে এর শব্দদূষণে অন্য ধর্মের মানুষদের কষ্ট পোহাতে হবে কেন?
এবার শার্দীয় দুর্গার পুরো সময়টা আমি বিভিন্ন জেলায় সফরে ছিলাম । কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ঢাকা, ময়মনসিংহ, নেত্রোকোনা- সব জায়গায় উৎসবটি ব্যাপকহারে পালন হতে দেখেছি । দুবছর আগের এ সময়ে চট্টগ্রাম, বান্দরবান, রাঙ্গামাটিতে বৌদ্ধদের পূজা প্রবারণা খুব কাছ থেকে (একেবারে প্যাগোডার আঙ্গিনায় ঢুকে ) দেখেছি । উচ্চ সাউন্ডে তাদের সে কী ধর্মীয় উপাসনা! (পড়ুন 'উন্মাদনা'।)
আচ্ছা, উপাসনার সংজ্ঞা কী?
নেত্রকোনায় কয়েকটি পূজার মণ্ডপ ঘুরে যা দেখলাম, আমার মনে হয়েছে এগুলো কোনো ব্যান্ডপার্টির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ।
গভীর রাত । একটার পরে । মানুষ এই সময়ে ঘুমে থাকে । তখনো চলছে উপাসনা । ঢোল তবলা আর হর্ষ হুল্লোড়ে চিৎকার চেঁচামেচি
করে উদযাপন হচ্ছে পূজার উপাসনা । ব্যান্ডপার্টি বাজাচ্ছে আর মাঝখানে ছোট ছোট শিশুরা তালে তালে নাচছে । কিশোর কিশোরী যুবক তরুণীরা নাচছে । ধর্ষণের চূড়ান্ত পর্যায়ের আগের যাকিছু- অপেনলি করছে । টিভি স্ক্রিনে ভারতীয় চ্যানেল "colors tv"-তে সম্প্রচারিত হিন্দু ধর্মের রূপকথা আর প্রাগৈতিহাসিক দৃশ্যগুলো দেখাচ্ছে । কীভাবে মানুষ হনুমান হল, নাগিনী হল, বানর, সাপ, মৌমাছি হল । (শুধু ডারউইন সাহেব না, হিন্দুধর্মের প্রবর্তকদেরও যে মাথা খারাপ, এবং এটা একটা হাস্যকর দর্শন- অল্পবুদ্ধির মানুষও বুঝে ফেলার কথা ।) স্বর্গীয় দূত তার যৌন লিপ্সার জন্য প্রতিপক্ষকে খুন করল । ইত্যাদি ইত্যাদি । বাচ্চারা, যুবক ও তরুণীরা সেসব দেখছে । হাততালি দিচ্ছে । আচ্ছা, এগুলো কি যৌন উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড নয়? যে উপাসনা যৌনতা শেখায়, যৌনতার জন্য প্রতিপক্ষকে হত্যা করার দৃশ্য শিশুদেরকে দেখানো হচ্ছে, এরা জঙ্গি হবে না তো কারা হবে! এরা ধর্ষণ করবে না তো কারা করবে!
২.
আমার কথাগুলো ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক কিংবা ধর্মকে অপমান করে উস্কানিমূলক বক্তব্য হিসেবে সাব্যস্ত হতে পারে । কিন্তু আমার আনীত অভিযোগ ও মন্তব্যগুলোর বরাবর পিঠে আমাদের দেশের সো কোল্ড সুশীল কেলা বিগ্যানিদের গ্যান খাড়া করান । তারা কী বলেছে?!
ক. মুসলমানদের কুরবানি বীভৎস । এখানে প্রকাশ্যে পশু জবাই করে উল্লাস করা হয় ।
খ. প্রকাশ্যে পশু জবাইর কারণে শিশুদের মনে জঙ্গিবাদের বীজ সহজেই বুনে যায় ।
গ. পশু জবাই করে উল্লাস মানুষকে নৃশংসতা শেখায় ।
(কিন্তু আমি দেখলাম কি! হিন্দু্রা প্রকাশ্যে পাঠাবলি দেয় এবং একে ঘিরে উৎসব করে । বিহারসহ কিছু এলাকায় মহিষ বলি দেয় এবং
উৎসব করে । এটা কেন বীভৎস হল না! মনে রাখবেন- মুসলমানরা করে সংযম, সেটাকে উল্লাস বলে বিদ্রূপ করাটা ছোটখাট বিষয় না ।)
ঘ. ওয়াজ মাহফিলে মাইকের ব্যবহারে শব্দদূষণ হয়, ঠিকমতো ঘুমোনোও সম্ভব হয় না ।
(কিন্তু আমি দেখলাম কি! হিন্দু্রা উপসনার নামে মধ্যরাতের পরেও ব্যান্ডপার্টির তালে তালে উন্মাদনা করে বেড়াচ্ছে । এই ভয়ংকর
চেঁচামেচির ভেতর ঘুম তো দূরের কথা, একটু বসে বিশ্রাম করাও সম্ভব নয় । অসুস্থ মানুষদের কী দশা হয়, ভেবে শিওরে ওঠি ।
আমাদের গ্রামের বাড়ি থেকে অনেক দূরে হিন্দু বাড়ি । ছোটবেলায় যখন বাড়িতে ছিলাম, রাত গভীরে নামার পর এই পূজাকালীন সময়ে মাইকে গানের বিকট শব্দে ঘুমোতে কষ্ট হত । মাঝেমধ্যে কিছুক্ষণ মাইক বন্ধ থেকে আবার ধুমধাম শুরু হত । ঠুসঠাস বাজি আর পটকা ফুটত । ভয়ে ধড়ফড়িয়ে লাফিয়ে উঠে বসতাম । সেখানে অনেক দূরের শব্দেও এমন হত, এখানে একটু পর পর মণ্ডপ হওয়ায় নাকের ডগায় হিন্দি গানের এই বিকট শব্দযন্ত্রণা মানুষকে কেমন ভোগায়, সবার বোঝা উচিত ।)
ঙ. আল্লাহ রাসুল, কুরবানির বিধান এইসব প্রাগৈতিহসিক ধারণা । রূপকথার গল্প কখনো ধর্ম হতে পারে না । মুসলমাননামক জঙ্গি
সম্প্রদায় আল্লাহ রাসুল কুরআন হাদিসকে অবলম্বন করে একটা মিথ চালু করেছে- মানুষকে জঙ্গি বানানোর মিথ ।
(কিন্তু হিন্দুধর্মের রূপকথা আর প্রাগৈতিহাসিক কিচ্ছাকাহিনি পড়ে দেখলে বুঝবেন, এটা কত হাস্যকর মিথ । এই মিথ মানুষকে শুধু জঙ্গিই বানায় না, ধর্ষক, উৎপীড়ক এবং পশু বানিয়ে ছাড়ে । নইলে যাকে নিজ হাতে বানায়, তাকে পূজা দিয়ে আবার ভেঙ্গেচুরে নদীতে ডুবানোর কোনো মানে হয়! কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ এসব হাস্যকর কাজ করতে পারে! যারা নিজের উপাসক বা প্রতিমার সঙ্গে এমন জঙ্গি আচরণ করে, এরা জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে মানুষ মারবে না তো মুসলমানরা মারবে?)
চ. রাসুল শিশু আয়েশাকে (রযি.) বিয়ে করেছেন, এতে ইসলাম বাল্যবিবাহ নামে শিশু ধর্ষণ শিক্ষা দেয় ।
(ইসলাম শিশুধর্ষণ শিক্ষা দেয়- রাসুল আর আয়েশার বিয়ের ঘটনা থেকে আপনি এ শিক্ষা পেলেন? খাদিজা আর রাসুলের বিয়ে দেখেন
না! রাসুল আর আয়েশা বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে বৈধ হয়েছেন, হিন্দুধর্ম কি বৈধ হওয়া শেখায়? নাকি কৃষ্ণ করলেই সেটা লীলা হয়! সুতরাং স্বাভাবিক লজিকও বলে পুরোহিতরা ডেরায় নিয়ে মেয়েদের সঙ্গে নষ্টামি করলে সেটা ধর্ষণ হবে না, লীলা হবে । ঠাকুরলীলা । হাদেই কি আর হিন্দু পুরোহিতরা বৈরাগ্যের লেবাস পরে!)
.
ঐ যে শুরুতে গুয়ের টাংকিতে পড়া ঘোড়াম্যানের কথা বলেছি, আমাদের সুশীল কেলা বিগ্যানিরা ঠিক সেই ঘোড়াম্যান । 'নিজের গায়ে আধমন সোয়া কেজি, আরেকজনের বিন্দু দেখে নাক সিটকায় ।'
মুসলমানদের ধর্মীয় ব্যাপার এলেই কিবোর্ডযুদ্ধে কেলা গ্যান ঝাড়া শুরু করে, হিন্দুদের এইসব উৎপাতের সময় তারা চুপ কেন? "ধর্ম যার যার উৎসব সবার", কুরবানি, আশুরা, রমজানে এই গ্যান কই থাকে?
নাস্তিক মানে যিনি অবিশ্বাসী । ঈশ্বরে অবিশ্বাস, ধর্মে অবিশ্বাস, ঐশীতে অবিশ্বাস, অদৃশ্যে এবং অদৃষ্টে অবিশ্বাস, পরকালে অবিশ্বাস- মোদ্দা কথা ধর্ম ও ধর্মীয় সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে সংশয় এবং অবিশ্বাস থেকে একজন বিদ্বান ব্যক্তি গ্রহণযোগ্য যুক্তি উপস্থান করে নাস্তিক হবেন । কিন্তু আমাদের দেশের সুশীল কেলা বিগ্যানিরা এ কেমন নাস্তিক! হিন্দুদের ধর্ম এবং আজগুবি বিধানগুলো শুধু সমর্থনই করে না, পক্ষে বিবৃতিও দেয় । তারপর আবার অংশগ্রহণও করে । গায়ে রং মাখে । ঢলাঢলি লাফালাফি করে । প্রসাদ গ্রহণ করে । প্রতিমাকে প্রণাম করে । এ কেমন নাস্তিক! আর কত বিনোদোন উৎপাদন করবেন আপনারা! আপনাদের বিনোদন প্রদর্শনের চোটে আগামীতে আমাদের চলচ্চিত্র বন্ধ হয়ে যায় কি না, ভয় পাচ্ছি ।
।
হাস্যকর ধর্মের মূর্খ সাপোর্টার
ওমর আলী আশরাফ
©somewhere in net ltd.