নবী মুহম্মদের বাল্যবিবাহ ও কেলা বিগ্যানি

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৯

বঙ্গদেশের কেলা বিগ্যানিকুলের কিছু লিগেল প্রশ্ন আছে, মুসলিম অথচ ইসলাম সম্বন্ধে জানাশোনা খুবই অল্প, এমন মানুষদের বাঁটে পেলে সেসব প্রশ্ন ঠেসে তাদেরকে টেঁসে দেয়ার চেষ্টা করে।
অনলাইনে এইরকম কিছু পাতি নাস্তিক- যদেরকে তাদের 'গরু'রা যা শিখিয়েছে, এর বাইরে বোমা ফাটলেও কিছু বলতে পারে না- তাদের কয়েকজন আমাকে সেই প্রাশ্নগুলোর কিছু হুবহু স্টাইলে করেছে এবং যথেষ্ট পরিমাণে পেঁদানি খেয়ে ভেগেছে।
ওই অশিক্ষিত বিগ্যানিদের একটা প্রশ্ন- নবী মুহম্মদ আয়েশাকে বাল্যববিবাহ করেছে। অথচ এটা অন্যায়। নিষিদ্ধ কর্ম। একজন পৌঢ় বয়সী পুরুষ তার নাতনীর বয়সী কিশোরীকে বিয়ে করে...

আখাম্বা মূর্খগুলার কটূক্তি বলি, অত্যুক্তি বলি কিংবা প্রশ্ন বলি- মুফাসসির, মুহাদ্দিস, ডাক্তার, দার্শনিকরা তাদের শাস্ত্রের আশ্রয়ে এর অনেক জবাব দিবেন, আমি তাৎক্ষণিক ক্ষুদ্র জ্ঞানে তাদেরকে উত্তর দিয়েছিলাম-
১.
ক. কিশোরী বিবাহ নিষিদ্ধ, এটা বাংলাদেশের আইন। যে দেশের নাম শুনলেই শ্রদ্ধায় গদগদ হয়ে যান আপনারা, বিবিসি তথ্য দিচ্ছে- সেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যেই ১৮ বছরের নিচে বিবাহ বৈধ। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে- খোদ নিউ ইয়র্কেই ১৪ বছর বয়সী কিশোর বা কিশোরীর বিয়ের বৈধতা রয়েছে। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যসহ যেসব দেশে অথবা রাজ্যে বিয়ের নূনতম বয়স ১৮ বছরের আইন নেই, তাদের কিশোর বয়সের বিবাহ আপনার দৃষ্টিতে অপরাধ হলে কি তার কোনো গুরুত্ব রাখে?
খ. বাংলাদেশে ছেলে ও মেয়ের বিয়ের বয়স সুনির্দিষ্ট করে দিয়ে প্রথম আইন প্রণীত হয়েছে ১৯২৯ সালে। আইনের নাম ছিল 'বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন'। এই আইনে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৪ বছর এবং ছেলেদের ১৮ বছর।
তারপর ১৯৮৪ সালে এই আইনে পরিবর্তন এনে বিয়ের ন্যূনতম বয়স নির্ধারণ করা হয়েছিল মেয়েদের জন্য ১৮ বছর এবং ছেলেদের জন্য ২১ বছর।
এই ১৯৮৪ সালের আগে যে আপনার বাপ দাদা পাড়াপড়শির অনেকেই (১৪ বছর বয়সে হওয়ায়) বাল্যবিবাহ করেছে, সেটা কেন অপরাধ নয়, ১৫শ বছর আগে ইন্দ্রিয়ের বাইরে সুপার ন্যাচারের ঊর্ধে কেউ ৯ বছরের কিশোরী বিয়ে করলে অপরাধ হয়ে যায়? তিনি ইসলামের নবী বলে?
গ. বিজ্ঞানী, দার্শনিক, পণ্ডিত, ধর্মাবতার- যারা কেউই মুসলিম নয়- অনেকেই (এখনকার হিসেবে) বাল্যবিবাহ করেছেন, এগুলো কেন অপরাধ নয়; নবী মুহম্মদেরটা অপরাধ! ওদিকে কেন আপনাদের চোখ অন্ধ?
ঘ. বাংলাদেশে ১৯৮৪ সালে আইন হয়েছিল বিয়ের জন্য মেয়ের বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বছর হতে হবে। কিন্তু গত ২০১৬ সালে বিশেষ কারণে মেয়ের ১৬ বছর এবং ছেলের ১৮ বছর বয়সে বিয়ে হতে পারবে বলে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৬’ প্রণীত হয়েছে। তা হলে ১৬/১৭ বছর বয়সে (আগের আইন অনুযায়ী অথবা আপনাদের মতবাদ মতে) যাদের বিয়ে হচ্ছে, সবগুলো অবৈধ হচ্ছে না? মনে রাখবেন, এটা মানব-তৈরি সংবিধান, ঐশী-প্রাপ্ত বিধান নয়! সুতরাং ফাজলামি করার জন্য অন্য জায়গা খোঁজেন, এখানে মরতে এসে জনদুর্ভোগ বাড়াবেন না।
২.
ক. চিকিৎসা শাস্ত্র বলে, ছেলেরা প্রাপ্ত বয়স্ক (বালেগ) হয় সর্বনিম্ন ১২ বছরে, মেয়ে ৯ বছরে। রাসুল আয়েশাকে ৬ বছর বয়সে বিয়ে করেছেন, কিন্তু তুলে নেননি। নিয়েছেন যখন আয়েশা রাযি.র বয়স ৯ হয়েছে এবং যথাসম্ভব তখন তিনি প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে গেছেন। সুতরাং ডাক্তারিবিদ্যা মতেও এখানে কোনো সমস্যা থাকার কথা না। কিন্তু আপনারা সমস্যা সমস্যা বলে চেঁচান কি শুধুই কেলা বিগ্যানি লকবটা নেয়ার জন্যে?
খ. বলছেন বয়স শুধু প্রাপ্ত হলেই হয় না, পোক্তও হতে হয়, তা হলে দুজনের মিলনে কল্যাণ থাকে।
খুবই উন্নতমানের কথা! আপনি কি মনে করেছেন আরবেরা আপনার মতো পান্তাভাতে মরিচ মেখে খায় যে, তাদের বীর্য আপনার পানির মতো হবে! (আমরা কিতাবে পড়েছি) তাদেরটা খুব গাঢ় চাকা চাকা হয়, টোকা দিলে উড়ে যায়। বাঙালি সবচেয়ে ক্ষমতাসম্পন্ন পুরুষেরও এমনটা আছে বলে কোনো তথ্য আপনাদের কাছে আছে? দেখাতে পারবেন?
সুতরাং বাঙালি মেয়ে যেখানে ১৮ বছরে সাড়ম্বর হয়, আরবের মেয়ে সেখানে ৯ বছরে হয়ে গেলে আপনাদের সমস্যা কোথায়?

-
নবী মুহম্মদের বাল্যবিবাহ ও কেলা বিগ্যানি
ওমর আলী আশরাফ

১ টি +০/-০