![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Protiti manuser jibonei na kichu sopno thake, thake sopno puroner golpo. Thake sopnovanggar hotashao. tobe amader jibone sopno puroner cheye sopno vanggar golpotai beshi. Kintu sopno puron hok ba na hok, manus tar jiboner shes dinti porjonto dekhe jay. Ashar prodip jaliye rakhe nirbicchinno. R doshjon sadharon manuser moto amio ekjon manus, tai amaro kichu sopno ache, sopno puroner akankka. Jani na amar sopno gulo kokhono puron hobe kina. Ei sopnomoy prithibitake biday janar ag muhurto porjonto ami sopno gulake lalon kore jabo.....
আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকালাম।চোখের সামনে সব অন্ধকার লাগতাছে।আচ্ছা আমি কই নিজের অজান্তেই মুখ থেকে বেড় হয়ে পড়ল কথাটা।চারপাশে তাকিয়ে দেখি নাহ কিচ্ছু দেখা যায় না সব অন্ধকার।শুধু একটা ছোট্ট ফুটো দিয়ে একটা আলো আসছে।হালকা সূর্যের আলো।দাঁড়াতে চাচ্ছি কিন্তু পারতাছি না।পায়ে প্রচন্ড ব্যথা,মাথাটাও কেমন জানি ঝীম ঝীম করতাছে।আচ্ছা কি হইছিল আমার কিছুই মনে করতে পারতাছি না।হাতটা মুখে নিয়ে আসতে দেখি বালি দিয়ে ভরা মুখ আর হাতটা।আস্তে আস্তে অন্ধকার চোখে সয়ে এলে চারপাশে তাকাইয়া দেখে মনে পড়ে যায় সব কিছু।আমার উপর কিছু একটা পড়ে গিয়েছিল।আমি কাজ করছিলাম অন্য সবার সাথে হঠ্যাৎ আমাদের মাথায় ছাঁদটা ধসে পড়েছিল।অনেকদিন থেকেই দেখছিলাম বিল্ডিংটার কোনায় ফাটল ধরছে কিন্তু মালিক কোন গুরুত্ত্বি দিতাছিল না।ভয়ও পাচ্ছিলাম কিন্তু কি করার আছে ভয় তো আর মালিক বা পেটকে মানে না।কাজ না করলে মালিক বেতন দিব না আর বেতন না দিলে খাবার আর পরিবারটাকেও চালানো যাবে না।তাই ভয় নিয়ে কাজ করতে থাকার ফল হল এই ঘটনা।বহু কষ্টে একটু উপরের দিকে উঠে কোনার দিকে গিয়ে চারপাশে তাকাইয়ে দেখি কত দলিত মলিত লাশ আর রক্ত।দেখেই বমি আসতে লাগল,নিশ্বাস নিতেও বড্ড কষ্ট হইতাছিল।সবাই মারা গিয়েছে ওই তো সেলিমের লাশ যে কিনা কিছুক্ষন আগেও হাসতে হাসতে বলতাছিল,বাই বিয়াডা এবার কইরাই ফালামু।এ মাসের বেতনটা নিয়াই বাড়িত যায়া কমু আব্বারে আব্বা আমি বিয়া করুম মাইয়া দেখো।
এই বলেই কি সুন্দর একটা হাসি দিছিল পোলাডা তার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে।আর এখন সেই মুখটা শুধু বের হইয়া আছে অনেক ইটের মাঝখান দিয়ে।মুখটা ধুলা দিয়া ভরে আগের মতই আছে কিন্তু সেই হাসিটা আর নেই।অই যে কোনার ধারে সালমার মুখটা দেখা যাচ্ছে।বেচারির মাথার চারপাশে রক্ত মনে হয় কোন কিছুর সাথে বাড়ি খেয়ে মাথাটাই থেঁতলে গেছে।হাতের মেহেদীটা জ্বল জ্বল করছে সেই হাল্কা আলোর মাঝে।বেশিদিন হয়নি মেয়েটা বিয়ে করেছে আর এখন রক্তমাখা মেহেদী হাতে নিয়ে চুপচাপ হয়ে পড়ে রয়েছে।খানিকটা দূরে দেখা যাচ্ছে মঞ্জুর চেহারাটা।সাদা শার্ট রক্তে লাল হয়ে গিয়েছে।১২ বছর ছেলেটা কি দ্রুতই না কাজ করতে পারত আর কত কাজ করত তার হিসেব ছিল না।টপ টপ করে ঘাম পড়ত কিন্তু একটু বিশ্রাম নেবার নাম ছিল না।এরা সবাই শ্রমিক।এই ফ্যাক্টরীটাতে কাজ করত অন্য সব হাজার শ্রমিকের সাথে।অনেকেই হয়তোবা মারা গেছে অথবা বসে আছে আমার মত হালকা আলোর মাঝে আর অপেক্ষায় আছে মারা নাহলে বাচার আশায়।
আচ্ছা আমাদের কি কেউ নিতে আসব না।এত বড় একটা ধশ হইল কেউ কি আসব না আমাদের বাঁচাতে।আচ্ছা বাইরে কি দিন?ফুটোর কাছে এগিয়ে গেলাম একটু উপর নিচ করে তাকিয়ে দেখি সূর্যের আলো দেখতে পেলাম।আরেকটু কিছু দেখার আশায় চারপাশে চোখ ঘুরোতে লাগলাম।নাহ কিচ্ছু দেখতে পারলাম না।আপনমনেই চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ল আর আল্লাহর নাম নিতে থাকলাম।আহারে চারপাশে কত মানুষ কিন্তু সব মারা গেছে।বাইরে কত আলো আর ভিতরে কত অন্ধকার।বড্ড মার কথা আর ছোট বোনটার কথা মনে পড়তাসে।যেদিন এই সুপারিডেন্টের চাকরীটা পাইলাম মাটা না কতই খুশি হয়েছিল।না জানি মা কতই কানছে এখন খবরটা পাইয়া।আচ্ছা মা কি এই খবর পাইছে?পকেটে তো মোবাইল আছে একটা ফোন দিয়া দেখি তো।মোবাইলটা বের করতে গিয়ে দেখলাম বাম হাত নাড়াইতে পারি না।ভাঙ্গাই গেল নাকি?ডান হাত দিয়ে কোনমতে মোবাইলটা বের করলাম।বের করে দেখি মোবাইলে কোন নেটওয়ার্ক নাই।অনেক কান্না পাইতে লাগল।চীৎকার দিয়ে বলে উঠলাম,ভাইগো কেউ আছো?আমাকে বাচাও ভাই আমি মার কাছে যামু।আমি আর চাকরী করুম না ভাই।আমি মার কাছে যামু।নাহ কোন আওয়াজ পাইলাম না।আমি কি এখানেই মারা যামু?হাত দিয়ে চারপাশে হাতড়াইয়া একটা শিক পাইলাম।মনে হইল আল্লাহ কথাটা শুনছে তাই এটা দিসে।শিকটা ফুটার কাছে নিয়া গিয়া এক হাতে বার বার বাড়ি দিতে লাগলাম।একটু একটু করে দেখি সিমেন্টের আস্তরগুলো পড়তেছে।দেখা আরো জোরে জোরে মারতে লাগলাম আর খোদারে বলতে থাকলাম,খোদা রাতটা যেন এত তাড়াতাড়ি না নামে খোদা।এক হাতে কিছুক্ষন মারার পরে আর কুলালো না।প্রচন্ড কাহিল লাগতাছিল তাই একটু থাইমা থাইমা আবার মারতে শুরু করলাম।কি হল আল্লাহ কথা শুনল না যে রাত হইয়া যাইতাসে কেন?আস্তে আস্তে আলোর রেখাটাও মিলেয়ে গেল।প্রচন্ড গরম লাগতে লাগলে সাথে একটা কেমন জানি বোটকা গন্ধ।নিশ্বাস নেওয়া বন্ধ করে দিতাসে।মানুশের লাশ কি তবে পচা শুরু করতাসে নাকি?জামাটা খুলে মুখের উপর দিলাম।কাধ দিয়ে আটকে রাখলাম যাতে না পড়ে।আবার এক হাত দিয়ে কিছুক্ষন বারি দিলাম।মারে কেন তুই আমারে চাকরি করতে কইলি।এর থেকে গেরামে হাল চাষ করলেও ভালা ছিলরে মা।মা তুই কই মা?আমারে নিয়া যা এখান থেইকা।নাহ আর পারতাসি না শ্বাস নিতে।কেমন জানি মাথাটা চক্কর মারা শুরু হইছে।আমি কি মরে যাইতাসি?নাহ আমি এত তাড়াতাড়ি এই জায়গায় মরতে চাই না।আমি মার কাছে যামু।আমি আমার ছোট বোনটারে চুড়ি কিনা দিতে যামু।আল্লাহ আমারে নিও না আল্লাহ।ওই যে কেউ আসতাসে ওই যে আলো দেখা যাইতাসে।ধীরে ধীরে আলোটা ছোট হয়ে আসতে লাগল তারপর এক সময় সব অন্ধকার।
নিজের কিছু কথাঃআমি যখন এই লেখাটা লিখছি চোখ দিয়ে আপনা থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছিল।চিন্তা করে লিখতে গিয়ে শিউরে উঠছিলাম বার বার।গল্পের থেকে বাস্তবতাটা আরো ভয়াবহ।আমি শুধু তা একটু অনুভব করার চেষ্টা করলাম তাতেই অনেক ভয় পেয়ে গেলাম।আমি এক ক্ষুদ্র মানুষ।সাভারের সেই মানুষদের জন্য আমার এই সামান্য লেখা আর চোখের পানি ব্যতিত দেওয়ার মত কিছু নেই।আল্লাহর কাছে একটাই দোয়া করি খোদা তুমি সহায় হও তাদের প্রতি।তাদেরকে তার মাবাবার কাছে ফিরিয়ে দাও
©somewhere in net ltd.