![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখেও তবু দেখছি না তো অন্যায়-অবিচারের দ্বন্দ্ব, কেউ শুধালে যাচ্ছি বলে আমি আসলে অন্ধ।
ভাগ্য বলতে কিছু নেই এই জগতে। আমাদের সাথে ঘটা যেসব বিষয় আমাদের মন মতো হয়না, সেসব বিষয় হতে নিজেদের সান্ত্বনা দিতে আমরা ভাগ্য শব্দটা বানিয়ে নিয়েছি। আমাদের সাথে যা ঘটে তা মূলত আমাদের কাজকর্ম, আমাদের আশেপাশের লোকজনের কাজকর্ম, বহুকাল ধরে বয়ে আনা আমাদের সমাজের লিখিত-অলিখিত নিয়মনীতি আর 'প্রকৃতির নিয়ম' দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে। এসব বিষয় মিলিতভাবে আমাদের কোন কাজের ফলাফল দেয়। আমাদের কাজকর্মের ফলাফল সুনির্দিষ্ট কিছু নয়; বরং বহু সম্ভাবনার মধ্যে থেকে যে ফলাফলটি কিছু নির্দিষ্ট মানদণ্ড পূরণ করে সেটিই ঘটে থাকে।
ভাগ্য[fate/destiny] সম্পর্কে আমরা প্রচলিত অর্থে কি বুঝে থাকি বা ধর্ম কি বলে সে ব্যাপারে কিছু রেফারেন্স নেয়া যাক-
"the development of events outside a person's control, regarded as predetermined by a supernatural power."
Oxford Dictionary
“Verily, We have created all things with Qadar (Divine Preordainments of all things before their creation as written in the Book of Decrees Al‑Lawh Al‑Mahfooz)”
al-Qamar 54:49
"Surely this ˹Quran˺ is only a reminder to the whole world—to whoever of you wills to take the Straight Way. But you cannot will ˹to do so˺, except by the Will of Allah, the Lord of all worlds."
al-Takweer 81:27-29
Abdullah b. 'Amr b. al-'As reported:
"I heard Allah's Messenger (ﷺ) as saying: Allah ordained the measures (of quality) of the creation fifty thousand years before He created the heavens and the earth, as His Throne was upon water."
Sahih Muslim 2653b
“There is no wisdom, no insight, no plan / that can succeed against the LORD”
Proverbs 21:30
“I foretold the former things long ago, my mouth announced them and I made them known; then suddenly I acted, and they came to pass.”
Isaiah 48:3
অর্থাৎ ভাগ্য হলো আমাদের সাথে ঘটা যেসব বিষয় যা সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক পূর্বনির্ধারিত হয়ে এসেছে, যার দরুন সেসব ঘটনার উপরে আমাদের কোনপ্রকার নিয়ন্ত্রণ নেই। ধর্ম এবং আমাদের প্রচলিত ধারনা থেকে আমরা ভাগ্য সম্পর্কে এই ধারনাই পেয়ে থাকি। কিন্তু বাস্তবে আমাদের সাথে যা ঘটে থাকে তা কি আসলেই সৃষ্টিকর্তা দ্বারা পূর্বনির্ধারিত হয়ে এসেছে? এ প্রসঙ্গে কথা বলার আগে একটি উদাহরণ নেয়া যাক।
ধরা যাক আমি হার্ট অ্যাটাকে মারা গেলাম। এর সম্ভাব্য একটি কারণ হতে পারে- আমি কোন বিষয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। দুশ্চিন্তা থেকে আমার হার্ট অ্যাটাক হলো। আমি মারা গেলাম। দুশ্চিন্তার কারণ ধরা যাক আমার সুবিশাল ব্যবসা আছে। ব্যবসায় কয়েকশত কোটি টাকার লোকসান হতে চলেছে। দেউলিয়া হওয়া ছাড়া এখন আমার আর কোন গতি নেই এবং তাতে আমার এতদিন ধরে গড়া সবকিছু ধ্বংস হওয়ার দ্বারপ্রান্তে এসে পৌছাবে।
১) ধরা যাক আমার বিশ্বস্ত কোন লোকের সাথে একটি চুক্তি ছিল এবং সে চুক্তি ভঙ্গ করায় আমার লোকসান হচ্ছে। সে চুক্তি ভঙ্গ না করলে আমার ব্যবসা ঠিকভাবে আগাচ্ছিলো। এবং আমার দুশিন্তার কোন কারণ ছিলনা। অতএব আমার মৃত্যুর পেছনে অপর লোকের কাজকে দায়ী করাই যায় এই ভিত্তিতে। (আমাদের সাথে ঘটা ঘটনাগুলো অপর লোকজনের কাজকর্মের ফল।)
২) ধরা যাক দেউলিয়া হলে আমার ব্যবসায়িক মেরুদণ্ড ভেঙে যেতো। এখন আমি হয়তো আবার উঠে দাড়াতে পারতাম। কিন্তু দেউলিয়া হওয়ার চাপে আমি মানসিকভাবে নিজেকে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় ঠেলে দিয়েছি। অর্থাৎ নিজের মৃত্যু বয়ে এনেছি। অথবা কোন ভুলের কারণে আমি আমার দিকে ধাবিত এই লোকসান আগেই উপলব্ধি করতে পারিনি। মানুষ ভুলের ঊর্ধ্বে নয় কারণ প্রকৃতি মানুষকে এভাবেই সৃষ্টি করেছে। দোষী আমি এবং প্রকৃতি। ( আমাদের সাথে ঘটা বিষয়গুলো আমাদের কাজের ফল এবং 'প্রকৃতির নিয়ম' দ্বারা প্রভাবিত হয়।)
৩) আবারো ধরা যাক মানসিক চাপের কারণে হার্ট অ্যাটাক হলো আমার। বিবর্তনের ধারায় মানুষের এই দুর্বলতা রয়ে গেছে যে অতিরিক্ত মানসিক চাপ শারীরিক ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিবে। বিবর্তনের ধারায় যদি মানুষ চাপ সহনীয় হয়ে যেতো তাহলে আমি মারা যেতাম না। আমার মারা যাওয়ায় দোষী হলো প্রকৃতি কারণ প্রকৃতির দ্বারা আমার বিবর্তন সাধিত হয়েছে এবং সেই সাথে আমাদের কিছু দুর্বলতা রয়ে গেছে।(প্রকৃতির নিয়ম)
এখানে একটি উদাহরণ এবং তার কিছু সম্ভাবনা নিয়ে বোঝাতে চেষ্টা করলাম কিভাবে কোন একটা বিষয় আমদের সাথে ঘটে থাকে। যেকোনো ঘটনা সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে তা "আমাদের কাজ, আমাদের চারপাশের লোকজনের কাজ, প্রকৃতির নিয়ম" এসব বিষয় দিয়েই নির্ধারিত হয়ে আসছে। যদি আমি এসব বিষয় নিজের মনমতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারি তবেই আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে। এখন আমি চাইলে আমার নিজের কাজ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি যা আমাকে আমার লক্ষ্যে পৌঁছানোর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিবে। এবং আমার যদি অপর লোকদের প্রভাবিত করার অসামান্য ক্ষমতা থাকে তবে আমি অনেকাংশেই আমার আশেপাশের লোকজনের চিন্তাভাবনা থেকে শুরু করে তাদের কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো। তবে প্রকৃতির নিয়ম খুব সামান্যই আমার সুবিধার জন্য পরিবর্তন করা সম্ভব হবে।
অর্থাৎ আমি যদি আমার কাজকর্ম, আমার চারপাশের লোকজনের কাজকর্ম এবং প্রকৃতির নিয়ম পুরোপুরি নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারি তবে যেকোনো লক্ষ্য অর্জন-ই সম্ভব হবে। 'ভাগ্যের' কোন হাত নেই আমাদের সাথে কি ঘটবে তা নির্ধারনে।
আমরা আত্মনিয়ন্ত্রনহীন, নিজের কাজকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনা। আমাদের কাজ আমাদেরকে লক্ষ্যের দিকে ধাবমান করেনা। ফলশ্রুতিতে আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হই। এবং আমরা খুব সুন্দর অজুহাত দিয়ে রেহাই পেয়ে যাই 'ভাগ্যে ছিলোনা'।
ধর্মীয় দিক থেকে একটি যুক্তি দেয়া যায় যে সৃষ্টিকর্তা থেকে থাকলে তিনি সব পূর্বনির্ধারিত করে তার পুতুলনাচের জন্য আমাদেরকে এই জগতে পাঠান নাই। আর যদি না থেকে থাকে তাহলে আমাদের তথাকথিত ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের জন্য কেউ নেই অর্থাৎ ভাগ্য বলতে কিছু নেই।
২| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: ভাগ্য বলে আসলে কিছু নেই।
নিজের মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে অর্জন করে নিতে হয়।
২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১০:০৮
অন্ধঘোড়া বলেছেন: আস্তিকদের এই বিষয়টি মেনে নিতে আসলে খুবই কষ্ট হয়। ধর্ম/ভাগ্যের দোহাই অযুহাত ছাড়া কিছুই না।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই আগস্ট, ২০২২ দুপুর ২:০২
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: ব্লগে স্বাগতম।
সৃষ্টিকর্তাও আছে ভাগ্যও আছে।