নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ পড়তে ভালোবাসি। সাথে লেখালেখির প্রতিও আছে যথেষ্ট আগ্রহ।

অন্ধঘোড়া

দেখেও তবু দেখছি না তো অন্যায়-অবিচারের দ্বন্দ্ব, কেউ শুধালে যাচ্ছি বলে আমি আসলে অন্ধ।

অন্ধঘোড়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেন সব মানুষে সমান অধিকার সম্ভব নয়?

১২ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৩৪

'সমান অধিকার' হলো সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য কিছু বুলি মাত্র। সমাজে, জাতিতে যেসব লোকজন ক্ষমতার দিক দিয়ে যত বেশি শক্তিশালী, তারা তত বেশি সুবিধা ভোগ করে। এসব লোকের জন্য আইন শিথিল, এরা জঘন্যতম কাজ করে পার পেয়ে যেতে পারে। এরাই আবার আইন তৈরি করে, কিন্তু মানুষের কথা বিবেচনা করে না, বরং কার্যকরভাবে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য।
একটা পাহাড়ের সাথে তুলনা করা যেতে পারে- পাহাড়ের চূড়ায় আছে ক্ষমতাধর লোকজন এবং ক্রমে পাহারের তলদেশে ক্ষমতাহীন লোকজন। যারা এই পাহাড়ের চূড়ায় আছে, তাদের জন্য আইন নামমাত্র। এদের ক্ষেত্রে আইন প্রযোজ্য হয়না। আর যারা পাহাড়ের তলদেশে, আইন তাদের উপরে জোরদার ভাবে প্রয়োগ করা হয়। এইযে সমাজ-জাতির সাধারণ মানুষ যারা, ক্ষমতার পাহাড়ের তলদেশে যাদের অবস্থান, এদের ঘাড়ে পা দিয়েই পাহাড়ের চূড়ায় উঠে ক্ষমতাবানরা। ক্ষমতাহীন লোকের ন্যূনতম কাজের জন্য শাস্তি হয়, কিন্তু ক্ষমতাবানদের জঘন্য পাপের জন্য কোন শাস্তি হয়না। এদের শাস্তি দিবে কে? এদের শাস্তি হয়না সচরাচর। সময়ে সময়ে যখন ক্ষমতার লড়াইয়ে টিকে থাকা এদের পক্ষে সম্ভব হয়না, তখন কিছুটা শাস্তি হয়। এ ব্যাপারে ইতিহাসে অনেক উদাহরণ আছে।

ক্ষমতাসীনেরা আইন দুর্ব্যবহার করে, নিজদের স্বার্থে প্রয়োগ করে। এরাই কিন্তু আবার সমান অধিকারের পুণ্যবাণী চেঁচিয়ে প্রচার করে। সমান অধিকার হলো ক্ষমতাবানদের তৈরি করা একটা বুল-শিট মাত্র। পাওয়ার ডাইনামিকস বাদ দেই, রাজনৈতিক কারণ বাদ দেই। স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে দেখলে দেশের চাকা সচল রাখতে সব মানুষের অবদান আছে, কিন্তু সবার অবদান সমান না। সবার যোগ্যতাও সমান না। যোগ্য লোকেরাই কেবল ক্ষমতাসীন হতে পারে, যদিও এর ব্যতিক্রম আছে। যোগ্যতার ভিত্তিতে দেখলে দেশের সব মানুষ কখনোই সমান অধিকার পাবেনা। যে যতো যোগ্য আইন তাকে তত বেশি প্রশ্রয় দিবে, আইন তার দিকে তত বেশি ঝুঁকে থাকবে। এর সাথে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ফ্যাক্টর বিবেচনায় আনলে এসব ফ্যাক্টরে এগিয়ে থাকা লোকজন আইনের "সুবিধা" ভোগ করবে। স্পষ্টই দেখা যায় বিত্তশালী ক্ষমতাধর লোকেরাই আমাদের সমাজ-দেশ-পৃথিবী চালায়।

মানুষের স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য হলো অন্যের চেয়ে নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করা, অন্যের উপরে নিজের কর্তৃত্ব জাহির করা। এসব বৈশিষ্ট্যের কারণে পৃথিবীতে কখনোই সবার জন্য সমান অধিকার বাস্তবায়িত হবেনা। যে অপরাধ করেছে, যে যানে তার দোষ, সে চাইবে আইনের ফাঁকফোকর গলে পার পেয়ে যেতে। আর যারা তার অপরাধের শিকার হয়েছে তারা চাইবে, অপরাধ যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন তার যেন সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা যায়। মানুষে-মানুষে হিংসা-বিদ্বেষ মানুষের স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য। এসব সুপ্তাবস্থায় থাকে যতক্ষণ না সে বাধ্য হয় তার আসল রূপ প্রকাশ করতে। মানুষে-মানুষে লড়াইয়ে ক্ষমতা, বিত্তের পাহাড়ের যে যত উপরে থাকে আইন তার পক্ষে কাজ করে। মানুষ যতই পুণ্যেরবাণী প্রচার করুক না কেন, যতই বলুক মানুষে-মানুষে রেষারেষি বাদ দিয়ে এবার সবাই শান্তির পতাকা তলে একত্রিত হবো, এসব ফাকা বুলি মাত্র। নিজের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হলে এসব পুণ্যবান লোকের আসল রূপ দেখে বিহ্বল হতেই হয়। মানুষের এই যদি হয় আসল বৈশিষ্ট্য তাহলে সমান অধিকার কিভাবে সম্ভবপর হয়?

সমান অধিকার কখনোই সম্ভব না। তাহলে সমান অধিকার নিয়ে কিছু মানুষের মধ্যে এতো উত্তেজনা কেন? উত্তেজনা ক্ষমতাশালী লোকজনের মধ্যে মূলত, এই ফাকা বুলি আওড়িয়ে তারা মানুষকে শান্ত রাখে যে আমরা তোমাদের অধিকারের ব্যাপারে গুরুত্ব দেই। আদতে মানুষ নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছু করেনা। এবং সমান অধিকারও ফাকা বুলি ছাড়া কিছুনা। আমাদের বাংলাদেশের জন্য এই কথা আরো বেশি সত্য। একটু পর্যবেক্ষণ করলে আমাদের চোখে আরো স্পষ্টভাবে দেখা যাবে ক্ষমতা ছাড়া কোন আইনের বিচার খাটে না।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।

আপনার লেখা আমার চোখে পড়েনি। কারন আপনার লেখা এখনও প্রথম পাতায় আসেনি। খুব শ্রীঘই আপনার লেখা প্রথম পাতায় এসে যাবে।

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১০:১৬

অন্ধঘোড়া বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.