নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গল্প নং ০১
------------
সিহাব ফেসবুকে খুব পরিচিত । সবাই তার পোস্টে খুব লাইক কমেন্ট করে । তার লেখাকে বাহবা দেহ । বিশেষ করে মেয়েরা তার লেখা খুবই পছন্দ করে । তার কারন হচ্ছে সে সব সময় নারীবাদী লেখা লেখে । তার পছন্দের লেখার টপিক হচ্ছে মেয়েদের গায়ের রং নিয়ে লেখা । মেয়েদের গায়ের রংটাই আসল না তাদের নিজেস্ব যোগ্যতা এবং মনটাই যে আসল এই বিষয়ে তার কয়েক শ লেখা আছে ।
মেয়েরা তার এই দিকটা অনেক পছন্দ করে । প্রতিদিনই অনেক মেয়ের সাথে সিহাবের কথা হয় ইনবক্সে । কেউ কেউ ওর সাথে কেবল কথাই নয় দেখাও করতে চায় ।
তবে ইদানিং একটা মেয়ে ওর সাথে খুব বেশি কথা বলছে । কয়েকবার বলেছেও দেখা করতে । মেয়েটা ওর সাথে কথা বলে আর ওর লেখার প্রসংশা করে । বিশেষ করে ওর নারীবাদী মনভাব মেয়েটার অনেক ভাল লাগে । সিহাব কেবল হাসে মনে মনে ! এই একটা অস্ত্র দিয়ে অনেক মেয়েকে সে এর আগেও ঘায়েল করেছে । তুমি কি বিশ্বাস কর কিংবা কি কর সেটাতে অনলাইণ জগতের কিছু যায় আসে না । কেবল তোমার সামনের মানুষটাকে বিশ্বাস করাতে হবে যে তুমি তার পছন্দের জিনিসটাই বিশ্বাস কর । ব্যাস ! আর অনলাইনে এর থেকে সহজ কাজ আর কিছু নেই । মেয়েটার সাথে অনেক কথা হয় সিহাবের ফ্রেন্ড লিস্টের এক ছোট ভাইয়ের সাথে মিউচ্যুয়াাল আছে মেয়েটা । ফেসবুকে বেশ কিছু ছবিও আছে মেয়েটার । মেয়েটার নাম অনন্যা । দেখতেও বেশ । সিহাব এতো অপেক্ষা করছিলো ঠিক তেমনই একটা মেয়ে !
একদিন দেখা করার প্ল্যান করে ফেলে তারা । সিহাবের মনে মনে বেশ ফূর্তি কাজ করে সারা দিনে । কিন্তু যখন অনন্যার সাথে দেখা হল তখন সিহাব যেন আকাশ থেকে পড়লো । অনন্যা তার ফেসবুকের ছবির মত মোটেই নয় । গায়ের রং বেশ কালো । মুখটাও অতখানি সুন্দর না ! সব ফটোশপ আর ডিএসএলআরের কাজ ।
এখন সিহাব বুঝতে পারলো কেন অনন্যা এতো গায়ের রং নিয়ে ওর সাথে কথা বলতো । আগে বুঝতে পারে নি । এখন বুঝতে পারছে । দুর শালা ! মনে মনে বলল । এতো বড় ভুল হয়ে গেল । সেদিন অনন্যা অনেক কথা বলল । বলল যে তার যোগাযগ করতে পেরে বেশ ভাল লাগছে । মুখে কিছু না বললেও সিহাব মনে মনে বেশ বিরক্ত হল ।
ওখান থেকে আসার পরপরই সিহাব অনন্যার সাথে যোগাযোগ একদম কমিয়ে দিল । মেসেজ প্রথম প্রথম সিন করতো কিন্তু রিপ্লাই দিতো না । ফোনের নাম্বারটাও ছিল ব্ল্যাক লিস্টে । এরপর আর মেসেজ সিন করাই বন্ধ করে দিল । কদিন পরে আইডিটা ব্লক করে দিল !
তারপর কেটে গেল আরও মাস খানেক ! অনলাইনেরই একটা ইভেন্টে অনেকে এক সাথে মিলিত হল । তারা একটা সচেনতা মূলক র্যালি করবে ! সিহাবও থাকবে সেখানে । বিশেষ করে কিছু ছবি তোলা আর আড্ডা দেওয়াই তার লক্ষ্য ! সকাল সকালই হাজির হয়ে গেল । অনেকে চলে এসেছে ।
সিহাব দাড়িয়ে দাড়িয়ে সবাইকে দেখতে লাগলো । ঠিক তখনই একটা চমৎকার মেয়ের উপর ওর চোখ গেল । গায়ের রং যেমন সুন্দর তেমনি তার মুখ খানি ! লাল রংয়ের সেলোয়ার কামিজে মেয়েটাকে যেন পরীর মত লাগছে ! আর একটু ভাল করে তাকাতেই সিহাবের চেহারা কেমন যেন পরিচিত মনে হল ।
ঠিক তার কয়েক মুহুর্ত সিহাব অবাক হয়ে লক্ষ্য করলো সামনে ঐ চমৎকার মেয়েটা আর কেউ নয়, তার সাথে দেখা করা সেই অনন্যা !
এই মেয়েটা এতো চমৎকার হয়ে গেল কিভাবে ? কিছু সময় যে কোন কথাই বলতে পারলো না ! ঠিক তখনই পাশ থেকে একজন বলে উঠলো
-কি অবাক লাগছে ভাইয়া !
সিহাব তাকিয়ে দেখে একটা ছেলে তার পাশে দাড়িয়ে । আরেকটু ভাল তাকাতেই ছেলেটাকে চিনতে পারলো । অনন্যার সাথে যে ছেলেটা মিউচ্যুয়াল ছিল সে ! সিহাব কিছু বুঝতে পারছে না ! বলল
-মানে ?
-ছেলেটা হাসলো । তারপর বলল
-না মানে আপনার দেখা অনন্যা আর এই অনন্যার ভেতরে কত পার্থক্য । তাই না ?
-হাউ ?
-ভাবছেন এটা মেক আপ ? ভুল । আপনার সাথে যেদিন ও দেখা করতে গেছিলো ওদিন ও মেকাপ করে গিয়েছিলো । মিডিয়াতে ওর এক মামা আছে মেকাম আর্টিস্ট ! কালোকে ফর্সা আর ফর্সাকে কালো বানানো তার কাছে কিছু না !
সিহাব কিছু বুঝতে পারছিলো না ! কেবল বলল
-কেন ? করলো ওটা ?
-ও করে নি । আমার প্লান ছিল । ও আপনার ভক্তই ছিল । কিন্তু আপনার আসল রূপটা দেখাতেই ওকে এটা করতে বলি ! তাই আপনি দেখিয়ে দিয়েছেন ! এখন কেবল অনন্যাই জানে না, আপনার আসল চেহারাটা অনেকেই জানে । খেয়াল কি করছেন যে ইদানিং আপনার কাছে আর আগের মত মেয়েরা ইনবক্স করে না ! আর এবার থেকে ভন্ডামীটা একটু কম করবেন । নিজে যা বিশ্বাস করেন তা ফেসবুকে লিখবেন না ! তাহলে কিন্তু হাতে হাড়ি ভেঙ্গে দিব !
সত্যিই তাই আগের থেকে অনেক কমে গেছে ইনবক্সে মেসেজ আসা ! ছেলেটা হাসতে হাসতে চলে গেল ওর সামনে দিয়ে । সিহাব তাকিয়ে দেখলো ছেলেটা অনন্যার কাছে গিয়ে ওর হাত ধরলো । তারপর দুজন একেবারে ভীড়ের শেষের দিকে চলে গেল ! সিহার কেবল তাকিয়ে রইলো । বুকের ভেতরে একটা কষ্ট হতে লাগলো ওর । এভাবে ধরা খাইয়ে দিল ওকে !
তখনই সিহাব মোবাইল বের করে স্টাটাস লিখলো "অনালইনে বিশ্বাস জিনিসটা নেই বললেই চলে । চারিদিকে ছল-চতুরী আর ছলনা"
সেই পোস্টে সবার আগে হাহা ইমো দিল দুইজন । একটা ঐ ছেলেটি অন্যটা ছিল অনন্যার অন্য এক আইডি থেকে !
গল্প নং ০২
-------------
সুপ্তির সাথে এভাবে আবার দেখা হবে যাবে আমি কোন দিন ভাবি নি । একটা ধরনা ছিল যে কোন দিন ওর সাথে আমার দেখা হবে । তবে সেটা যে এমন ভাবে সেটা আমি কোন দিন ভাবিও নি । ও নিশ্চয়ই ভাবে নি । ওর চেহারা দেখেই আমি সেটা বুঝতে পেরেছি ।
সুপ্তির হাসব্যান্ড ডা. নিয়েল সুপ্তির দিকে তাকিয়ে বলল
-কই দেখো তোমার কোনটা পছন্দ ?
সুপ্তি নিজেকে সামলে নিল । তারপর বলল
-আমার তো সব গুলোই ভাল লাগছে ।
-আরে বিয়ের আর মাত্র একমাস বাকি । এর ভেতরে ফ্ল্যাটের সব কাজ শেষ করতে হবে । আর উনি তো আমাদের জন্য বসে থাকবে না । উনার আরও কাজ করতে হবে নাকি !
তাহলে এখনও বিয়ে হয় নি । সামনের মাসে বিয়ে । যাক ভাল ।
কেন জানি এটা জানতে পেরে নিজের কাছেই ভাল লাগলো । কোন কারন নেই তবুও ভাল লাগলো ।
সুপ্তি ওর হবু হাজব্যান্ডের দিকে তাকিয়ে বলল
-আচ্ছা ঠিক আছে আমি দেখছি । তোমার না হাসপাতালে যাওয়ার কথা !
-হ্যা ! কিন্তু তোমাকে নামিয়ে দেব না ?
-লাগবে না । তুমি চলে যাও । আমি ওনার সাথে বসে আরও একটু ভাল করে দেখি । তারপর ঠিক করি কোন ডিজাইনটা নিব ! কোন ঘরে কোনটা নিবো সেটাও একবার দেখেই ঠিক করার কথা না !
ডাক্তার সাহেব কি যেন ভাবলেন ! তারপর বললেন
-আচ্ছা ঠিক আছে । আমি তাহলে উঠি এখন !
আমাদের রেখেই উনি উঠে চলে গেলেন ! সুপ্তি আমার দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকলো কিছুটা সময় ! তারপর বলল
-কেমন আছো ?
আমি কি জবাব দিবে খুজে পেলাম না । এতো দিন পরে দেখা !
সুপ্তির সাথে !
আমার সেই ছোট্ট নিশ্চুপ সুপ্তি !
তখন সবে মাত্র ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি । কিন্তু ক্লাশ শুরু হয় নি । ক্যাম্পাসে একটা ঝামেলা চলছিলো বলেই আমাদের ক্লাস শুরু হতে দেরি হচ্ছিলো । আমার অবশ্য সেটা নিয়ে চিন্তা ছিল না । আমি আরাম করে বাসায় ছিলাম । তবে আবেদ স্যার আমাকে শান্তি মত থাকতে দিলেন না । বললেন যে আমি নিউ ফার্স্ট ইয়ারের স্টুডেন্টের ক্লাস নিই । স্যারের কোচিংয়েই ক্লাস করে পাশ করেছি । তাই মানা করতে পারলাম না । রাজি হতেই হল ।
সুপ্তিসেই ক্লাসেরই একজন স্টুডেন্ট ছিল । সুন্দরী হিসাবে পুরো এলাকা জুড়ে তার খ্যাতি ছিল । অবশ্য আরও একটা কারন ছিল । মেয়েটি ছিল স্থানীয় মেয়রের মেয়ে । আর তার চাচা ছিল পুরো এলাকার এমপি ! সবাই তাকে এক নামে চিনতো । পুরো এলাকা জুড়েই ছিল তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি ! সবাই এক নামে চিনতো ।
ওকে অংক দেখাতে দেখাতে বুঝতে পারছিলাম আমি ওর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছি । নিজের লিমিট আমি জানতাম কিন্তু নিজেকে ওর পথ থেকে সরানো সম্ভব হল না যখন জানতে পারলাম সুপ্তি আমার উপর একই অনুভুতি পেষন করে । ভয় করলেও কেন জানি জড়িয়ে গেলাম । সব কিছু আস্তে আস্তে চলছিল কিন্তু একদিন আমরা ধরা পরে গেলাম ।
সেদিন অবশ্য একটা বেশি সাহস দেখিয়ে ফেলেছিলাম । ওকে নিয়ে ওর কলেজের পাশের নদীর পাড়ে বসে বসে গল্প করছিলাম । কেউ দেখে ফেলে আমাদের তারপর সে খবর চলে যায় ওদের বাসায় । ওর ছোট চাচা আমাকে কয়েক ঘা লাগিয়ে ওকে নিয়ে যায় । আমি ভেবেছিলাম ব্যাপারটা ওখানেই শেষ কিন্তু সন্ধ্যায় সময় যখন পুলিশ এসে আমাকে ধরে নিলে গেল তখন মনে হল সব কিছু এখানেই শেষ না ।
তারপর ঘটনা খুব দ্রুত ঘটতে লাগলো । ক্ষমতা যে ওদের ছিল সেটা আমি আর আমার ফ্যামিলি দেখতে শুরু করলাম । আমার বাবা সব সময় নীরিহ গোছের মানুষ ছিল । সরকারি ব্যাংকে অফিসার ছিল । ব্যাস । এর বেশি তার আর কোন ক্ষমতা ছিল না । দেখতে দেখতে কেস উঠে গেল কোর্টে এবং উকিল প্রমানও করে ফেলল যে আমি আসলেই এই কাজটা করেছি । অবাক হয়ে দেখতে শুরু করলাম আমার সব পরিচিত মানুষেরা আমার বিরুদ্ধে সাক্ষি দিতে শুরু করেছে । অবাক হয় দেখলাম আবেদ স্যারও আমার বিরুদ্ধে চলে গেল । কিন্তু সব থেকে বড় ধাক্কাটা লাগলো যখন সুপ্তি নিজের মুখে বলল যে আমি ওকে ভুলিয়ে ভালিয়ে ঐ নদীর পাড়ে নিয়ে গেছি ।
আমার বয়স তখন সবে ১৯ হয়েছে । আর ও তখনও নাবালিকা ! সুতরাং আমি ওকে ভুলিয়ে ভালিয়ে নিতেই পারি ! আমাদের উকিলের আর কিছু করার ছিল না । করার থাকার কথাও না ! আমার ৭ বছরই জেল হত কিন্তু বয়স কম বলে ৩ বছরের জেল হল ! আমাকে বাবাকে ওখানে থেকে বদলি করে দেওয়া হল !
জেল থেকে বের হয়ে আমার আর পড়া লেখা হয় নি । অনেক দিন বাসায় বসে ছিলাম । কারো সাথে মিশতাম না । তারপর মনে হল জীবন তো বসে বসে কাটবে না । ইন্টেরিয়র ডিজাইনের কয়েকটা কোর্স করে মানুষ জনের ঘর সাজানোর কাজে গেলে গেলাম । আর কপালটা কি আমি কি না এতো গুলো বছর পরে এলাম সুপ্তির ঘর সাজাতে !
সুপ্তি অনেকটা সময় আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-বললে না কেমন আছো ?
-আছি ভাল ।
-বিয়ে কর নি ?
-রেপিস্টদের এতো সহজে বিয়ে হয় না !
একটু যেন কঠিন কন্ঠেই কথাটা বললাম । যদিও জানতাম এটা বলা হয়তো ঠিক হয় নি । সুপ্তি যে রকম পরিস্থিতির ভেতরে ছিল ওর হয়তো আর কোন উপায় ছিল না । আর কোন পথও খোলা ছিল না তার ! সুপ্তির মুখটা কালো হয়ে গেল । আমি বললাম
-আমার মনে হয় এখানে কাজ করা হবে না । তোমার হবু জামাইকে বল যে তিনি অন্য কাউকে খুজে নেন !
-নো, প্লিজ !
-না আমার পক্ষে এটা করা সম্ভব হবে না ! সরি ! আমি চলে যাচ্ছে !
আমি ল্যাপটপ নিয়ে উঠতে যাবো সেই সময় সুপ্তি আমার হাত চেপে ধরলো ! তারপর বলল
-প্লিজ যেও না !
আমি এক ঝাটকাতে হাত ছাড়িয়ে নিলাম ! যখন ল্যাপটপটা ব্যাগে ভরবো তখন সুপ্তি অবাক করা একটা কাজ করলো ! ওর ব্যাগের ভেতর থেকে একটা সার্জিক্যাল নাইফ বের করলো ! আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তুমি জানো আমি ডাক্তার !
আমি কোন কথা না বলে তাকালাম ওর দিকে । ও নাইফটা ওর হাতের কব্জির কাছে নিল । তারপর বলল
-আমি জানি কোথায় কাটলে খুব দ্রুত রক্ত বের হবে । আর আমি মারা যাবো । যদি তুমি এখন এখান থেকে চলে যাও তাহলে আমি দরজা বন্ধ করে এই নাইফ চালাবো । আই সোয়ার আই উইল ডু ইট !
আমি সুপ্তির কন্ঠের মাঝে একটা বেপরোয়া ভাব দেখতে পেলাম । সত্যিই পেলাম । মনে আসলেই ও এমনটা করবে ! আমি কিছু সময় তাকিয়ে থেকে আবারও বসে পড়লাম ।
-ওকে ফাইন !
আস্তে আস্তে দেখলাম সুপ্তির চেহারার সেই বেপরয়া ভাবটা অনেকটাই কমে আসলো । আমি আবারও ল্যাপটপ বেরকরে ওকে দেখাতে লাগলাম কোন ডিজাইণ ওর পছন্দ ! কিন্তু ওর সেদিকে নজর আছে বলে মনে হল না । এক পর্যায়ে বলল
-তোমার বাবা মা কেমন আছে ?
-আছে এক রকম ! তোমার বাবা কেমন আছে ?
-জানি না !
-জানি না মানে ?
আমি খানিকটা অবাক হয়ে সুপ্তির দিকে তাকালাম । কিছু যেন বুঝতে পারলাম না । সুপ্তি বলল
-আমি ঐদিনের পর আর বাবা সাথে কোন দিন কথা বলি নি ! আমাকে বাবাই সব থেকে বেশি ফোর্স করেছিলো তোমার বিরুদ্ধে .....
আমি অবশ্য আগেই জানতাম এমণই কিছু হয়ে থাকবে । এমনই হওয়ার কথা ছিল । পরিস্থিতি এমনই ছিল হয় তো ! সুপ্তি বলল
-ইন্টারের পর আমি ঢাকায় চলে আসি । তারপর এখান থেকে মেডিক্যালে ভর্তি হই । এর মাঝে আমি খুব কমই শহরে গেছি । যতবার গেছি একবারও বাবা কিংবা চাচাদের কারো সাথে কথা বলি নি কোন দিন ! বাবা এখন এখানেই থাকে তবুও আমি বাসায় যাই না ।
আমার কিছু বলা উচিৎ । কিন্তু কি বলবো আমি খুজে পেলাম না । সুপ্তি বলল
-কিন্তু তবুও আমি নিজেকে কোন দিন ক্ষমা করতে পারি নি । গত আট টা বচর আমি কি পরিমান অপরাধ বোধ নিয়ে বেঁচে আছি তোমাকে আমি বোঝাতে পারবো না । কতবার যে সুইসাইড করতে গেছি কিন্তু পারি নি । বারবার কেবল মনে হয়েছে তোমাকে সত্যি কথাটা না বলে যেতে পারলে আমি মরেও শান্তি পাবো না ।
কথা গুলো বলতে বলতে সুপ্তি কেমন যেন হাপাতা লাগলো । কান্নার জন্য ঠিক মত যেন কথা বলতে পারছে না । আমি বলল
-আচ্ছা ঠিক আছে । আমি জানতাম এমন কিছুই হয়ে থাকবে ! তোমার উপরে আসলে আমার কোন রাগ নেই । আমার কপালে লেখা ছিল এটা !
-না । ছিল না । আমার জন্য হয়েছে । আমি চাইলেই ওখানে বলতে পারতাম যে তুমি কিছু কর নি । পারতাম ! আমি পারতাম ....।
তারপরই সুপ্তি হাউমাউ করে কান্না শুরু করে দিল । ওর কান্না শুনে দেখি বাড়ির কাজের মহিলাটা ছুটে চলে এল । আমার হাত ধরে বসে ও কাঁদছে এমন দৃশ্য নিশ্চয়ই সে আশা করে নি । কিন্তু সুপ্তির সেদিকে লক্ষ্য নেই । ও কথা বেলই চলেছে । এক পর্যায়ে আমাকে সত্যি সত্যিই জড়িয়ে ধরলো । তারপর ফোঁফাতে ফোঁফাতেই বলল
আমাকে প্লিজ এই কষ্ট থেকে মুক্তি দাও ! প্লিজ !
-আমি তো বললাম । আমি আগে থেকেই জানি এমন কিছু হবে ।
আমি তাকিয়ে দেখলাম কাজের মহিলা আস্তে করে ঘর থেকে বের হয়ে গেল । কত সময় পরে ওকে আমাকে ছাড়লো আমি নিজেই বলতে পারবো না । আমার সাথেই ও ঘর থেকে বের হয়ে এল । আমাকে আমার অফিসের সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল হাসপাতালে ! তবে আমার কেন জানি মনে হচ্ছি এই ঘটনা এখানেই শেষ হবে না । শেষ হলও না । সন্ধ্যার সময়ই ডা. নিয়েলের ফোন পেলাম । আমার সাথে সে জরুরী কথা বলতে চায় । কি বিষয়ে কথা বলতে চায় সেটাও আমার বুঝতে কষ্ট হল না । আমি ফোন রেখে যাবো কি না ভাবছি তখনই দেখি আমার অফিসের সামনে সুপ্তি এসে হাজির । আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-নিয়েল তোমাকে ফোন দিয়েছিলো ?
-হ্যা ! আমি ওখানেই যাচ্ছিলাম ।
-যেতে হবে না ।
-যেতে হবে না ?
-না ! ওকে আমি সব কথা বলেছি ! আর এও বলেছি যে ওকে আমি বিয়ে করছি না !
-মানে কি ?
-মানে আমি ওকে বিয়ে করবো না । তোমাকে বিয়ে করবো !
আমি ছোট খাটো একটা ধাক্কার মত খেলাম । আমি জানতাম ও খানিকটা পাগলামো করবএ । ওর চোখ মুখেই সেটা বলছিল । কিন্তু এমন কিছু করবে সেটা আমি নিজেও ভাবি নি । আমি কোন মতে বললাম
-মানে কি ?
-কোন মানে টানে নেই । তোমাকে বিয়ে করবো এবং সেটা এখনই !
-দেখো !
-আমি কিছু দেখতে চাচ্ছি না । আমি বাসাও ফোন করে বলে দিয়েছি । আজকে প্রায় আট বছর পরে আমি বাবাকে ফোন দিয়ে বলেছি যে তোমাকে আমি বিয়ে করতে যাচ্ছি !
-তাই নাকি ? তিনি কি বললেন ?
-তার তো কিছু বলার নেই । তার কাছে তো অনুমুতি চাই নি । কেবল জানিয়েছি !
আমার ভেতরে একটা মিশ্র অনুভুতি হচ্ছিলো । আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না কি করবো ! যখন ওর সাথে কাজী অফিসে ঢুকলাম তখনও বিশ্বাস হচ্ছিলো না । বারবার মনে হচ্ছিলো আমি আমি যেন স্বপ্ন দেখছি ।
তবে আমি খানিকটা কনফিউজ যে এতো গুলো বছর পরেও মেয়েটার মাঝে আমার জন্য ভালবাসা থেকে এই কাজটা করছে নাকি ও অপরাধ বোধ থেকে । তবে যাই থেকে কাজটা করুক না কেন আমি কেন আমার কেন খারাপ লাগছে না । বিশেষ করে ওর চোখে আমার জন্য বেপরোয়া ভাবটা দেখতে ভাল লাগছে ।
আমি ভেবেছিলাম বিয়েতে হয়তো আমরা একা একাই থাকবো । কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম যে সুপ্তির বাবা সেখানে উপস্থিত ! তবে আগের সেই চেহারা আর তার নেই । রাস্তায় আসার পথে সুপ্তি আমাকে অনেক কথাই বলেছে । ওর সরকার বদলানোর সাথে সাথে ওদের প্রভাবও নাকি অনেক কমে এসেছে । তারপর ওর বড় চাচার সাথে জমিজমা নিয়ে ওর বাবার একটা ঝামেলা হয় । গত বছর থেকে সে ঢাকাতেই থাকে ! এর মাঝে একবার নাকি তার হার্টএটাকও হয়েছিলো । সুপ্তি নাকি তখনও তার সাথে কথা বলে নি । তারপর থেকে সুপ্তির বাবা অনেক নরম হয়ে গেছে ! এখন আর সুপ্তি ছাড়া আর কেউ নেই তার । সেই মেয়েই তার সাথে আট বছর ধরে কথা বলে নি । যে কোন বাবার জন্যই এটা অনেক কষ্টের একটা ব্যাপার !
তিনি এখানে কেন হাজির হয়েছেন সেটাও আমার বুঝতে কষ্ট হল না । তিনি হয়তো মনে করেছেন এটার পর যদি তার মেয়ে তার সাথে কথা বলা শুরু করে !
আমি অবশ্য বাসায় ফোন করে বলার সাহস পাই নি । যদিও বাবা আমাকে কিছুই বলে না কোন দিন । জেল থেকে ফেরার পর থেকে আমাদের মাঝে কথা বার্তা অনেক কম হয় ! মায়ের সাথেই আমি যা কথা বলি । মাকে যখন আজকে বললাম সুপ্তির কথা মা অনেক অবাক হয়েছিলো । প্রথমে রাগ পরে সব খুলে বলাতে কিছুটা শান্ত হয়ে এল । এখন যদি মাকে বলি যে ঐ মেয়েকেই আমি বিয়ে করে ফেলেছি তাহলে তার মনভাব কেমন হবে আমি সেটা বুঝতে পারছিলাম না !
সুপ্তির বাবা নরম কন্ঠেই আমাদের জন্য দোয়া করলেন । আমার দিকে তাকিয়ে বললেন যে যা হয়েছে সেটাকে যেন আমি ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করি । আর সম্ভব হলে তাকে যেন ক্ষমা করে দেই । যদিও উনি ওনাদের বাসায় যেতে বলছি সুপ্তি রাজি হল । ও আমার সাথে আমাদের বাসায় যাওয়ার জন্য রিক্সায় উঠলো !
রিক্সা যখন চলতে শুরু করলো তখনও আমি ঠিক বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে সেই কবেকার দেখা স্বপ্নটা এভাবে এমন করে সত্যি হয়ে যাবে । হয়তো এভাবেই আমার আর সুপ্তির ভাগ্যটা লেখা ছিল !
গল্প নং ০৩
মা এমন কিছুই বলবে আমি ভাল করেই জানতাম । তাই অবাক হলাম না । আমি যদি মায়ের জায়গাতে থাকতাম তাহলে আমার মনভাবও হয়তো এমনই হত । মা আমার দিকে কঠিন চোখে তাকিয়ে বলল
-তুই কোন হিসাবে ঐ মেয়েটাকে বিয়ে করতে চাস শুনি ?
-কোন হিসাবে না ! পছন্দ হয়েছে ব্যাস !
-এভাবে তো জীবন চলে না ! মেয়ে একে তো এতিম তার উপর একবার বিয়ে হয়েছিলো । আর সব থেকে বড় কথা মেয়ে একটা বাজা....
-প্লিজ মা ! এই শব্দটা ব্যব হার না করলে হয় না !
-কেন করবো না ? এটা কি মিথ্যা ?
আমি কোন কথা বললাম না । এখনও ঠিক বুঝতে পারছি না এই তথ্যটা মাকে কে দিলো । খুজে পাচ্ছি না ! আমি বললাম
-এটার জন্য ওর নিজের কোন দোষ নেই । এমন কিছু তো আমার সাথেও হতে পারতো নাকি !
-এই সব বাজে কথা বলবি না ! আমি ঐ মেয়েকে ঘরের বউ করে আনবো না ব্যাস । কথা এখানেই শেষ ।
আমি জানি কথা বলে লাভ নেই । তবুও অহীনের কথা শুনেই আমি মায়ের সাথে কথা বলতে এসেছিলাম । মা যে রাজি হবে না সেটা আমি আগে থেকেই জানতাম !
অহীনের সাথে পরিচয় খানিকটা ইয়ার্কি মারতে গিয়ে । কোন সিরিয়াস কিছু মানে ছিলও না । মাঝে মাঝেই আমি পত্রিকার পাত্র চাই বিজ্ঞাপন গুলো মন দিয়ে পড়ি ! কেন জানি আমার খুব মজা লাগে । এমন ভাবে একটা বিজ্ঞাপন দেখে আমি এক ঘটককে ফোন দেই । তাকে বলি বেকার কোন ছেলেকে কোন মেয়ে বিয়ে করতে চায় কি না দেখেন তো ! কয়েক মিনিট কথাও হয় সেই ঘটকের সাথে । তারপর আমি ফোন টা রেখে দেই । কিন্তু কোন দিন ভাবিও নাই পরে এই ঘটক আমাকে আবার ফোন দিবে !
ঠিক দুই সপ্তাহ পরে ঘটকের আমাকে ফোন এসে হাজির । এবং সে আমাকে জানালো যে একটা মেয়ে পাওয়া গেছে । বেকার হলেও সমস্যা নেই । কিন্তু মেয়েটার আগে একবার বিয়ে হয়েছিলো । আমি তখনও সিরিয়াস না । ভাবলাম কাজ যখন নেই যাই দেখা করেই আসি !
কিন্তু যখন দেখা করতে গেলাম সত্যি সত্যিই আমি বড় রকমের একটা ধাক্কা খেলাম । মানুষের চেহারায় যে এমন মায়াময় হতে পারে আমি অহীনকে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না । ও যখন আমার সাথে কথা বলছিলো তখন আমি কেবল ওর চেহারার দিকে তাকিয়ে ছিলাম । বুঝতে পারছিলাম যে আমার ভেতরে কিছু একটা পরিবর্তন হচ্ছে ।
অহীন কথাই বলল সে । তার আসলে এই পৃথিবীতে কেউ নেই । একজনকে বিয়ে করেছিলো আকড়ে ধরে বাঁচার জন্য কিন্তু কদিন পর থেকেই সে অহীনকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করতে শুরু করে । অহীনের নামে দুটো ফ্ল্যাট ছিল সেগুলো লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে । অহীন হয়তো লিখেও দিতো তবে একটা সময় জানতে পারে যে সেই ছেলেটার নাকি আরও কয়েকজনের সাথে সম্পর্ক আছে ! আর সে লিখে দেয় নি । কারন জানতো লিখে দিলেই ওকে ছেড়ে দিবে সে । আর ও একেবারে অস হায় হয়ে পড়বে !
তবুও একটা ফ্ল্যাট নাকি ওর হাত ছাড়া হয়ে গেছে ! ওর আগের স্বামীই নিয়ে নিয়েছে । যাক সেটাতে অহীনের কোন দুঃখ নেই । তারপর থেকেই একাই আছে সে । তবে একটা সময় এসে বুঝতে পারে একা থাকাটা কতটা কষ্টের !
ঐদিনের পর থেকেই আমি অহীনের সাথে যোগাযোগ শুরু করি । একটা মাস প্রায় নিয়মিত দেখা সাক্ষাতের পর অহীন আমাকে আরও একটা সত্য কথা বলে । ওর যে কোন দিন সন্তান হবে না এই সত্যটা ও প্রথমে আমাকে বলে নি । তবে আমার সাথে কথা বলার পরে ও ওর মনে হয়েছে আমাকে ও ঠাকাচ্ছে । তাই সত্যটা বলেই দিল । আমার কেন যেন মনটা পরিবর্তন হল না । আমি ওকে বিয়ে করবো বলে মনস্থির করেই ফেললাম !
মাকে কিছুই বলি নি তবে মা কেমন করে যেন জেনে গেল । বুঝতে কষ্ট হল না কিভাবে জেনে গেল । আমার বাবা পুলিশে চাকরি করে । বড় ভাইও পুলিশে ঢুকেছে । ছোট বেলা থেকেই আমি কি করি না করি সব খবর কেমন করে যেন মায়ের কাছে পৌছে যেত । মা সব জানতে পেয়ে চিৎকার চেঁচামিচি শুরু করে দিলেন । কোন ভাবেই তিনি এই বিয়েতে মত দিবেন না !
তবে আমার মত বদলালো না ! কিন্তু অহীনের এই ব্যাপারে একটু আপত্তি ছিল । ও আমাকে বলল যেন আমি বাসাতে রাজি করাই । ও আসলে ওমতে বিয়ে করতে চাচ্ছে না ! আমি কয়েকবার বললাম যে লাভ নেই । তবুও শুনলো না !
সন্ধ্যাবেলা অহীনের সাথে একটা রেস্টুরেন্টে দেখা হল । যখন অহীনকে মায়ের না রাজী হওয়ার কথা বললাম ওর মুখ কালো হয়ে গেল ! আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তোমার উচিৎ হবে না আমাকে বিয়ে করা !
আমি বললাম
-তুমি আমার দিকটা দেখছো না ?
-না অপু ! ফ্যামিলি খুব জরূরী একটা বিষয় ! আমার নেই তো আমি জানি !
আমি কি বলবো খুজে পেলাম না । ওর মুখ দেখেই মনে হল কথা গুলো বলতে ওর ভেতরটা কষ্টে শেষ হয়ে যাচ্ছে তবুও ও বলছে । আমি ওকে বসিয়ে রেখে ওয়াশ রুমের দিকে গেলাম । আয়নার সামনে দাড়িয়ে অনেকটা সময় ঠিক করলাম ওকে কিভাবে রাজি করাবো ! নিজের সাথেও একটা বোঝা পড়া করে নিলাম । মা বাবা হয়তো রাগ করবে তবে তারা একেবারে আমাদের ফেলে দিতে পারবে না ।
যখন ফিরে এসেছি তখন দেখলাম আমাদের টেবিলে একটা লোক অহীনের সাথে কথা বলছে । আরও একটা কাছে যেতেই বুঝলাম যে লোকটা ওর সাথে কথা বলছে না ওকে খানিকটা টিজ করছে !
আমি লোকটা কাধে হাত দিয়ে বললাম
-কি হচ্ছে ব্রাদার ?
লোকটা আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-নিজের চরকায় তেল দিন !
-জি এটা আমারই চরকা ! আপনি কে ?
-আমি কে ?
লোকটা যেন এই কথা শুনে বেশ মজা পেল ! তারপর বলল
-আমি ওর জামাই !
আচ্ছা ! এই তাহলে সেই ভদ্রলোক ! আমি বললাম
-আপনি ওর হ্যাজব্যান্ড ছিলেন ! এখন আর নেই !
-আচ্ছা ! আপনি কে ?
-আমি ওর টু বি হাজব্যান্ড !
লোকটা তারপর অহীনের দিকে তাকিয়ে বলল
-আচ্ছা তাহলে এরই ভেতরে আরেক জন জুটিয়ে ফেলেছো ? বাহ ! তোমার তো .....
আমি কেবলই অনুভব করলাম যে আমার শরীরে একটা তীব্র রাগ অনুভুত হচ্ছে । আমি যথা সম্ভব নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম
-ব্রাদার আপনি আপনার নিজের সিটে যান প্লিজ !
-আরে রাখেন ! এই বা....
আমি কেবল একটা বার অহীনের চোখের দিকে তাকালাম । ও ততক্ষনে কাঁদতে শুরু করেছে । শব্দটার প্রথম অক্ষর শুনে আমার নিজের উপর সব নিয়ন্ত্রন হারিয়ে গেল ! আমি গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে লোকটা নাক বরাবার একটা ঘুসি মারলাম ! ব্যাস ! আর কিছু করতে হল না । লোকটা যেন উল্টে গিয়ে সামনের টেবিলের উপর পড়লো । যখন উঠলো ততক্ষনে নিজের নাক চেপে ধরেছে । সেখান দিয়ে রক্ত পরতে শুরু করেছে ! আমি বেটাকে আরেকা ঘা দিতে যাবো তখন অহীন আমার হাত চেপে ধরলো ! বলল
-প্লিজ ! স্টপ !
রেস্টুরেন্টের ম্যানেজের দৌড়ে এল । লোকটা আমাদের নামে কিছু বলতে গেলেই আমি তেড়ে গেলাম । বললাম শ্লা #@%& আমার ওয়াইফ কে তুই বাজে কথা বলবি তোকে কোলে তুলে আদর করবো ?
আমার কথার সমর্থনে দেখলাম দুটো মেয়ে উঠে দাড়ালো । তারা বলল যে তারাও দেখেছে সে লোকটা অহীনে ডিস্টার্ব করছে । সাথে সাথে আরও কয়েকজনও একই কথা বলল ! ম্যানেজার তবুও আমাদেরকে বাইরে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলো !
আর বেশি ঝামেলা না করে বাইরে চলে এলাম । যাওয়ার আগে লোকটা আমাকে বলে গেল আমাকে দেখে নেবে ! যদি সে ও আমার ব্যকগ্রাউন্ড জানতো তাহলে হয়তো এতো কনফিডেন্ট দেখাতো না !
অহীনকে নিয়ে রিক্সা করে যাওয়ার সময়ও ও কাঁদছিলো । তবে সেই সাথে ও আমার হাত শক্ত করে ধরে রেখেছিলো । আমার নিজেকে নিয়ে ভয় ছিল না । ঐ লোক আমার কিছু করতে পারবে না । কিন্তু অহীনকে নিয়ে একটা ভয় ছিল । যদি ওর কাছে যায় তখন ?
আমার মাথায় আর কোন কিছু কাজ করলো না । এক প্রকার জোর করেই আমি অহীনকে কাজী অফিসে নিয়ে গেলাম । ও মানা করতে চাইলেও ওকে বিয়ে করেই ফেললাম !
বাসায় ফোন করতেই মা বলল যে আমি যেন ঐ বাসাতে না যাই ! ব্যাস গেলাম না । অহীনকে নিয়ে ওর ফ্ল্যাটে উঠে পড়লাম ! রাতের বেলা যখন ও আমার জন্য টেবিলে খাবার দিচ্ছিলো তখনও আমার ঠিক বিশ্বাস হচ্ছিলো না যে আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে । অহীন ভাত দিতে দিতে বলল
-এভাবে একা একা বিয়েটা না করলে হত না ?
-আরে তুমি চিন্তা কর না তো ! মা রাগ করেছে তবে দেখো কদিনের ভেতরেই মেনে নিবে সব !
অহীন শুকনো মুখে আমার পাশে বসলো ! আমি বললাম
-তবে তোমার এক্স হাজব্যান্ডকে একটা ধন্যবাদ দিতেই হয় !
-কেন ?
ও খানিকটা অবাক হল আমার কথা শুনে ! আমি বললাম
-বেটার সাথে না দেখা হলে এমন কিছু হত না । আর এভাবে আমাদের বিয়েটাও হত না । আসলে সব কিছুর জন্য একটা ধাক্কার দরকার । সেটা ঐ বেটার তৈরি করেছে । ভাবছি একদিন বেটাকে দাওয়াত করে খাওয়াবো ! কি বল !
অহীন আমার দিকে কিছু সময় তাকিয়ে থেকে হেসে ফেলল ! মায়াময় হাসি ! তারপর হাসি থামিয়ে বলল
-আমাকে ছেড়ে যাবে না তো কোন দিন ?
এমন ভাবে এর আগে কেউ আমাকে এই কথটা জানতে চায় নি । কথাটা একেবারে বুকের ভেতরে গিয়ে লাগলো । চেয়ার ছেড়ে উঠে গিয়ে ওর কপালে একটা চুমু খেলাম ! তারপর বললাম
-তোমার সাথে এমন ভাবে আঠার মত লেগে থাকবো যে তুমি বিরক্ত হয়ে বলবে দুরে যাও তো !
-কোন দিনও বলবো না !
ওর চোখে আমি আবার অশ্রু টলমল করতে দেখলাম । আমি যে সত্যি কথাই বলছি ওর সেটা বুঝতে কষ্ট হচ্ছে না ! সামনে আমাদের চমৎকার দিন অপেক্ষা করছে !
গল্প নং ০৪
ফাইজা আরেকবার তাকালো পেছন ফিরে । অপু তখনও আকাশের দিকে তাকিয়ে কি যেন ভাবছে । ফাইজার মনটা খানিকটা খারাপ হল । ছেলেটা এমন কেন ?
প্রতিবার যখন দেখা শেষ করে যে যার বাসার দিকে এগিয়ে যায় তখন ফাইজার আশা করে থাকে যে যতটা বার ও পেছন ফিরে তাকাবে অপু যেন ওর দিকেই তাকিয়ে থাকে । কিন্তু এমনটা একবারও হয় না । প্রতিবার ফিরে যাওয়ার সময় ফাইজার মনে হয় পরের বার যখন আবার দেখা হবে তখন অপুকে আচ্ছা করে বকে দিবে । কিন্তু কোন পরের বার আর বলা হয় না ।
আজকেও কত কিছু বলার জন্য এসেছিলো কিন্তু বলতে পারলো না । আজকের পর হয়তো আর কোন দিন ওর সাথে দেখাও হবে না । এই কথাটাই শত চেষ্টা করেও বলতে পারে নি ও ! অপু যেন আজকে আকাশের দিকেই বেশি তাকিয়ে ছিল ! ও সব সময় বলতো ওর আকাশ টাকেই বেশি আপন মনে হয় । সবাই ওকে ছেড়ে চলে গেলেও আকাশটা ওকে কোন দিন একলা করে ছেড়ে যাবে না !
অপুর তাই আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে ভাল লাগে । এমন কি যখন ওর সাথে তখনও মাঝে মাঝে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে । একবার ফাইজা বিরক্ত হয়ে বলেছিলো
-এতো যদি আকাশ ভাল লাগে তাহলে আমি কেন এসেছি !
অপু প্রথমে বুঝতে পারে নি ফাইজার বিরক্তির কারন । তবে একটু পরে যখন বুঝতে পারলো তখন বলল
-আমার জীবনে তুমি আর আকাশ ছাড়া আর কে আছে বল !
-আমার থেকেও আকাশটা বেশি প্রিয় তোমার কাছে ? অন্তত আমি যখন সাথে থাকি তখন তো আমার দিকে তাকাও !
অপু এই কথাটার জবাব সাথে সাথেই দেই নি । কিছু সময় ওর চোখের দিকে তাকিয়ে থেকে তারপর বলেছিলো
-তোমার চোখের দিকে বেশি সময় তাকালে কেমন যেন নেশা ধরে যায় ! সেই নেশা কাটানোর জন্যই আকাশের দিকে তাকাতে হয় !
-হয়েছে ! আর তেল দিতে দিতে হবে না !
-তেল না । সত্যি বলছি !
ফাইজা আর কথা বাড়ায় নি । কারন ও ভাল করেই জানতো যে আসলেই অপু মিথ্যা বলছে না । এই ব্যাপারটা ওর নিজের ভেতরেও আছে । অপুর চোখের দিকে খুব বেশি সময় সে তাকিয়ে থাকতে পারে না !
কিন্তু আজকে আসলেই ফাইজার মনে হচ্ছে অপুর আসলেই ঐ দুরের আকাশের কাছে একলা রেখেই সে চলে যাচ্ছে ! আর কোন দিন দেখা হবে ওদের !
রিক্সাটা একেবারে চোখের আড়াল চলে যাওয়ার আগে ফাইজা আরেকবার পেছন ফিরে তাকালো । দেখলো অপু মোবাইলে কি লিখছে !
কয়েক সেকেন্ড পরেই ওর মোবাইলের ম্যাসেজ টোন বেজে উঠলো ! অপুর মেসেজ ! সেখানে লেখা
"আজকে তোমার চোখের দিকে একটাবারও তাকাতে পারি নি । তাকালেই হয়তো তুমি বুঝে যেতে যে আমি সব কিছু জানি"
মেসেজার দিকে তাকিয়ে ফাইজার চোখ দিয়ে পানি পড়তে শুরু করলো । বুকের ভেতরে কেমন একটা ফাঁকা ফাঁকা লাগতে শুরু করলো । মনে হল যেন ও ঠিক মত নিঃশ্বাস নিতে পারছে না ! ফাইজা রিক্সাওয়ালাকে বলল
-মামা রিক্সা ঘুড়ান !
-কি কইলেন ?
-বললাম রিক্সা ঘুড়ান !
-আফা কি হইছে ? আপনে কি কানতেছেন ?
-যা বলছি করেন !
রিক্সা আর বেশি কথা বলল না । রিক্সাটা ঘুড়িয়ে আবার আগের জায়গাতে নিয়ে গেল । ফাইজা ঝাপসা চোখে দেখলো অপু তখনও একই জায়গাতে দাড়িয়ে আছে । ওর দিকে তাকিয়ে আছে অবাক হয়ে । ওকে এভাবে আবার দেখবে ভাবে নি !
ফাইজা বলল
-রিক্সাতে ওঠ !
অপু কোন কথা না বলে রিক্সাতে উঠে এল ।
-মামা চলেন !
রিক্সাতে চলতে শুরু করলো । প্রথম কয়েক মুহুর্ত কেউ কোন কথা বলল না ! তারপর ফাইজা অপুর হাতটা শক্ত করে ধরে বলল
-সারাদিন আকাশের দিকে তাকিয়ে এতো কি শুনি ? এই হাতটা শক্ত করে ধরে বলা যায় না যে আমাকে ছেড়ে যেও না !
অপু বলল
-এই কথা কেন বলতে হবে ?
ফাইজা খানিকটা চিৎকার করে বলল
-কেন বলতে হবে মানে কি ? তোমার সামনে তোমার প্রেমিকাকে কেউ বিয়ে করে নিয়ে যাবে আর তুমি চেয়ে চেয়ে দেখবে ! প্রেমিকার দিকে তাকালেও না হয় উনি তাকিয়ে থাকবে আকাশের দিকে !
-আকাশ আবার কি করলো !
-চুপ ! আজকের পর থেকে আকাশের দিকে তাকালে একেবারে চোখ তুলে নিবো ! এই দেখো সিপটিপিন এটা দিয়ে গেলে দিব !
এই বসে সত্যি সত্যি জামায় লাগানো সিপটিপিন খুলে অপুকে দেখালো !
অপু খানিকটা অবাক হতে গিয়ে হেসে ফেলল ! তারপর বলল
-তোমার কি হয়েছে বল না ! আর আমরা কোথায় যাচ্ছি ? তোমার না সামনের সপ্তাহে আংটি পড়াতে ছেলে পক্ষ আসছে !
ফাইজা কোন কথা না বলে কিছু সময় তাকিয়ে রইলো । অপু সব কিছু জানতো ! এখন ওর ইচ্ছে করছে ওকে ধাক্কা দিয়ে রিক্সা থেকে ফেলে দিতে । কেন রাগ উঠছে ও নিজে সেটা বলতে পারবে না । এই রাগের কোন ব্যাখ্যা ওর কাছে জানা নেই ।
অপু বলল
-আচ্ছা ঠিক আছে আর কিছু বলতে হবে না । অন্তত বলবে তো আমরা কোথায় যাচ্ছি ?
-জাহান্নামে !
-ও ! তাই নাকি ! এটা তো ভুল রাস্তা !
অপু তারপর রিক্সাওয়ালে বলল
-মামা আপনি উল্টা পথে যাচ্ছেন ! ঐ মগবাজার কাজী অফিসের দিকে যান ! শুনেন নাই ম্যাডান জাহান্নামে যেতে চাচ্ছে !
ফাইজা অপুর দিকে অগ্নি চোখে তাকাতে গিয়েও বেশি সময় রাগ ধরে রাখতে পারলো না ! হেসে ফেলল ! এই ছেলেটাকে ছেড়ে ও চলে যাচ্ছিলো এটা ভাবতেও ওর এখন কেমন যেন লাগছে । একে ছেড়ে থাকা কি ওর পক্ষে সম্ভব !! ফাইজা আরও একটু শক্ত করে অপুর হাত টা ধরলো !
রিক্সা টুংটাং করে এগিয়ে চলছে মগবাজার কাজী অফিসের দিকে !
গল্প নং ০৫
মিতুর মনে হল কেউ যেন ওকে ডাকছে । ইচ্ছে হল চোখ বন্ধ করে আরও কিছুটা সময় শুয়ে থাকে । কিন্তু কন্ঠটা খুব বেশি পরিচিত । চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে অপু ওর মুখের সামনে তাকিয়ে আছে ! খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে গেল ও । তবে সেটা ভাল লাগার দিকে প্রবাহিত হতে একটুও সময় লাগলো না !
মিতু বলল
-কটা বাজে !
অপু হাসলো । তারপর বলল
-প্রায় দুইটা !
-কিইইইই !!
চোখ কপালে তুলে মিতু বিছানা থেকে উঠে চাইলে অপু ওকে আটকালো । বলল
-এতো ব্যস্ত হতে হবে না ! তোমার শরীর ভাল না । শুয়ে থাকো !
-আরে রান্না করতে হবে না ! তুমি .....
তখনই ওর মনে হল আজকে তো ছুটির দিন না । অপু বাসায় কি করছে ! অপুর দিকে তাকিয়ে বলল
-তুমি বাসায় কেন ? অফিস ?
-গিয়েছিলাম । ছুটি নিয়ে চলে এসেছি ।
মিতুর কেন জানি খুব বেশি ভাল লাগলো । ওর শরীরটা গতকাল বিকাল থেকেই ভাল নেই । জ্বর জ্বর ভাব ছিল সেই সাথে মাথা ঘুরাচ্ছিলো । অপু অফিস থেকে এসেই ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলো । ডাক্তার অবশ্য তেমন কিছু বলে নি কেবল কিছু টেস্ট করতে দিয়েছে । সেই সাথে বলেছে পুরোপুরি রেস্ট থাকতে কদিন ।
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠতে গেলে অপু ওকে বাধা দেয় । নিজেই ওর জন্য পাউরুটি আর ডিম ভেজে আনে । তারপর ওকে ঘুমাতে বলে । সেই যে সকালে নাস্তা করে ঘুমিয়েছে এখন ঘুম ভেঙ্গে দেখে দুপুর হয়ে গেছে । তবে অপু যে ওর পাশ রয়েছে এটা দেখে ওর খুব বেশিই ভাল লাগছে । মিতু বলল
-তুমি খাবে না ? দুপুর হয়ে গেল তো !
-আরে বাবা আস্তে আস্তে ! আমি এতো সময় কি করেছি !
-মানে ?
-মানে হল তোমার মত চমৎকার রান্না করতে পারলেও আমি কিন্তু রান্না করতে পারি !
মিতু অবাক হয়ে বলল
-তুমি রান্না করেছো ?
-হাট মুখ ধুয়ে এসো ! টেবিলে গরম গরম খাবার হাজির !
মিতু আরও খানিকটা সময় বিশ্ময় নিয়ে অপুর দিকে তাকিয়ে রইলো । একটা অজানা ভাল লাগা নিয়ে ওয়াশ রুমের দিকে গেল । গতকাল কেই শরীর খারাপ নিয়ে খুব খারাপ লাগছিলো । আর আজকে মনে হচ্ছে, শরীর খারাপ হয়েছে ভালই হয়েছে । নয়তো অপুর এই দিকটা সে দেখতে পেত না ।
খাবার টেবিলে এসে খানিকটা অবাকই হয়ে গেল । ভেবেছিলো এক পদের খাবার থাকবে হয়তো কিন্তু বেশ কয়েক রকমের খাবার দেখে অবাক না হয়ে পারলো না । মিতু বলল
-এসব তুমি রান্না করেছো ?
-সব না ! এই মুরগির মাংসটা আসার সময় নিয়ে এসেছি ! আর ইলিশ মাছ, টাকি মাছের ভর্তা আর ভাজিটা আমি করেছি । মাস রান্না যদি খারাপ হয় তাহলে তুমি কি দিয়ে খাবে এই ভেবে মাংশটা কিনে এসেছি ! আর ...
-আর কি ?
-ডাল রান্না করেছিলাম । কিন্তু রংরা ভাল হয় নি । দেখতে ভাল লাগছে না তাই নিয়ে আসি নি।
মিতু বলল
-কই নিয়ে এসো !
-আগে এগুলো দিয়ে খাও তো !
-আরে নিয়ে এসো তো !
অপু উঠছে না দেখে মিতু নিজেই চলে গেল রান্না ঘরে । নিজেই নিয়ে এল ডালটা ! রংটা আসলেই খানিকটা অন্য রকম হয়েছে । চামচ দিয়ে মুখে দিয়ে দেখলো স্বাধটা একেবারে সূস্বাধু না হলেও খারাপ হয় নি !
মিতু মুরগির মাংসটার দিকে হাত বাড়িয়েও দেখলো না । ভাজি আর ভর্তা দিয়ে শুরু করলো । শেষ করলো ডাল আর মাছ দিয়ে ! কাল রাতে একটুও খেতে ইচ্ছে করছিলো না কিন্তু আজকে একেবারে পেত ভর্তি করে খেল । বিয়ের পর এতোটা আনন্দময় সময় ওর জীবনের এসেছে কি না ও বলছে পারবে না ! ইচ্ছে হচ্ছে টেবিলে থাকা সব টুকু তরকারি খেয়ে ফেলতে ।
অপুর খাচ্ছে চুপচাপ ! ওর দিকে তাকিয়ে বলল
-খেতে পারছো ?
-হুম !
হাসলো একটু ! তারপর বলল
-সব বউদের স্বামীর হাতের রান্না খাওয়ার সৌভাগ্য হয় না ! এবার থেকে প্রতি ছটির দিনে রান্না করবে তুমি ! মনে থাকবে ! ডালের রংটা কিভাবে আনতে হয় সেটা আমি তোমাকে শেখাবো !
দুজনেই হাসলো একে অন্যের দিকে তাকিয়ে । সামনের চমৎকার দিন গুলোর কথা ভেবে !
গল্পঃ টুকরো জীবন দৃশ্য
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:০৮
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য
২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০১
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ফাইভ ইন ওয়ান!!
ব্রো এন্টাসিড হবে ??/
এত্ত ভাল ভাল একসাথে যদি গ্যাস হয়- হা হা হাহা
দারুন সব গল্পে অনেক ভাললাগা
+++++++++++++
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:০৪
অপু তানভীর বলেছেন: পড়ার জন্য থেঙ্কু
৩| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫০
হাতুড়ে লেখক বলেছেন: সব গুলো গল্পের প্লট একই রকম। কাজেই অনেকগুলো তরকারির এক স্বাদ পেলাম। অবশ্যি আমার জিহ্বায় ও সমস্যা থাকতে পারে!
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:০৬
অপু তানভীর বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ
৪| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৬
রাতু০১ বলেছেন: দুই নাম্বার.......(ভাল লাগছে)
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:২৫
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ
৫| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:০৮
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: একটি পড়েছি , বাকিগুলোও পড়ব এক এক করে পড়ছি আপনার গল্প সমগ্র এমনিতে আমার প্রায় পড়া শেষ যা ব্লগে প্রকাশিত এর বাহিরে থাকলেও হয়তো কোন দিন পাঠে চলে আসবে । ভাল থাকবেন কামনা রইল।
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:২৩
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ
৬| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:২৬
ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন:
অন্তরের কথা হোক ইঙ্গিতে প্রকাশ!
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৫৮
অপু তানভীর বলেছেন:
৭| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৭
অবনীলের ডানা বলেছেন: প্রথম গল্পের থিমের মত একটা গল্প অনেক আগে ছুটির দিনে পড়েছিলাম। তবে এটাও সুন্দর।
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:১৯
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য
৮| ৩১ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৯:২৮
খাঁজা বাবা বলেছেন: ভাল লাগছে
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৮
একজন সত্যিকার হিমু বলেছেন: প্রথমটা পড়েছি ।ভাল লেগেছে ।
পেজটা সেভ করে রেখেছি ।অন্যগুলি পরে পড়বো ।
ধন্যবাদ ।