নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রান্না ঘর থেকে বাইরে বের হতে গিয়েই ওর চোখ ড্রয়িং রুমের দিকের গেল । রান্না ঘর থেকে না বেরিয়েই প্রায় পুরো ড্রয়িং রুমটা ভাল করে দেখা যায় । আবীরের সাথেই ওর বাইরে যাওয়ার কথা । ওকে উইনিভার্সিটিতে নামিয়ে দিয়ে আবীর অফিস যাবে । ড্রয়িং রুমে বসে চায়ের কাপে শেষ চুমুক দিচ্ছিলো আবীর আর খবরের কাগজে চোখ বুলাচ্ছিলো ।
মিতু দেখতে পেল আবীরের চোখ গেল মিতুর পার্সের উপর । পার্সটা ওর ব্যাগের উপরেই রাখা ছিল । আবীর আস্তে করে পার্ট টা তুলে নিল । তারপর একবার তাকালো এদিকে । মিতুর চট করে সরে গেল । আবীর ওকে দেখতে পেল না । মিতু আবার যখন ফিরে তাকালো দেখতে পেল আবীর ওর পার্সের ভেতরের টাকা গুনছে । তারপর নিজের পার্স বের করে দুইটা নোট মিতুর পার্সের ভেতরে ঢুকিয়ে আবার আগের স্থানে রেখে দিল । এমন একটা ভাব যেন পার্সটা সে কোন দিন স্পর্শই করে নি ।
মিতুর মুখে একটা মৃদু হাসি দেখা দিল । গত সপ্তাহেও আবীর নিশ্চয়ই এই কাজটা করেছে । পার্টে দুই হাজার দুটো নোট দেখতে পেয়ে ও বেশ অবাক হয়ে গিয়েছিলো প্রথমে । পার্সটা ওর কাছেই থাকে সব সময় । তারপর বুঝতে পেরেছে কে টাকা রাখতে পারে । আজকে চোখের সামনে দেখতে পেয়ে মনটা একদম ভাল হয়ে গেল ।
রান্না ঘর থেকে রান্না থেকে বেরিয়ে আবীরের সামনে গিয়ে হাজির হল । আবীর তখনও গম্ভীর মুখে পেপার পড়েই চলেছে । এমন একটা ভাব যেন কিছুই হয় নি । ও সব সময় এমন করেই থাকে ।
মিতুর খুব ইচ্ছে হল এই গম্ভীর মুখ থাকা গালটা একটু টেনে দিতে ।
করবে নাকি ?
নিশ্চয়ই খুব অবাক হয়ে যাবে !
মিতুর একবার ভাবলো । একবার মনে হল এসব কিছুই করার দরকার নেই । কিন্তু তারপর জোড়ে করে একটা দম নিল । তারপর হাতটা আবীরের গালের কাছে নিয়ে গিয়ে টেনে ধরলো ।
মিতু যা ভেবেছিলো তাই হল । আবীর অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো মিতুর দিকে । ওর চোখে জিজ্ঞাসা ।
মিতু খুব স্বাভাবিক কন্ঠে বলল
-ইচ্ছে হল !
-মানে ?
-মানে তোমার গাল টানতে ইচ্ছে হল তাই !
আবীর যেন নিজের কানকে ঠিক বিশ্বাস করতে পারছে না । তার নিজের বিয়ে করা বউ তার গাল টেনে দিয়েছে । মিতু বলল
-বাহরে তোমার যা ইচ্ছে করে তুমি কর না ?
তারপর কিছুটা সময় থেকে বলল
-নাহ ! তোমার যা ইচ্ছে করে তুমি তা কর না ।
আবীর এবার একটু যেন নড়ে চড়ে বসলো । তারপর
-কেন করবো না ? আমিও তো করি !
-মোটেই না ।
-তোমাকে কে বলল শুনি ?
-বলতে হবে কেন ? আমি জানি !
-কি জানো শুনি ?
-আজকের সকালের কথাই যদি ধরি, আমি যখন গোসল করে বের আয়নার সামনে বসলাম তুমি আয়নার ভেতর দিয়েই আমার দিকে তাকিয়ে ছিলে অনেকটা সময় । একভাবেই তাকিয়ে ছিল । তখন তোমার খুব ইচ্ছে করছিলো আমাকে চুমু খেতে । তাই না ?
আবীর এবার সত্যিই অবাক হয়ে তাকালো । মিতুর যদিও কথাটা খানিকটা আন্দাজের উপরেই বলেছে তবে সে জানে কথাটা সত্যি । আয়নার ভেতর দিয়ে যখন মিতু আবীর চোখ দেখতে পেল তখন সত্যিই মনে হয়েছিলো যে আবীর মনে মনে ওকে চুমু খেতেই চাচ্ছে কিন্তু সংকোচের কারনে বলতে পারছিলো না । কিন্তু এখন সেটা ধরা পড়ে গিয়ে অপ্রস্তুত হয়ে গিয়েছে ।
আবীর কোন কথা না বলে অন্য দিকে তাকিয়ে রইলো । একবার মনে হল খুব জোরে করে আবীরকে চুমু খায় কিন্তু বাসায় আরও মানুষ জন রয়েছে । যে কোন সময় চলে আসতে পারে । তাই সেটা আপাতত করতে পারলো না । আবীর জলদি করে বলল
-চল আমার অফিসের দেরী হয়ে যাচ্ছে ।
দুজনেই লিফটে উঠতেই দেখতে পেল আগে থেকেই সেখানে একজন মহিলা রয়েছে । কিন্তু এক তলা নামতেই লিফট থেমে গেল । মহিলা সেখানে নেমে গেল । আবার যখন লিফট চলতে শুরু করলো তখন ওরা দুজন ছাড়া আর কেউ নেই লিফটের ভেতরে । মিতু দেখলো এখনও কম করে হলেও ছয় তলা নামতে হবে । এখনই সুযোগ । যদিও পথে আবারও লিফট থেমে যেতে পারে । যাক সেটা হলে একটা সিগনাল পাওয়া যাবে ।
আর দেরি করলো হল । আবীরকে চমকে দিয়ে সোজা আবীরের ঠোঁটে গভীর একটা চুমু বসিয়ে দিল । আর ছাড়লো না ওকে । একেবারে যখন লিফট গ্রাউন্ড ফ্লোরে থামলো তখন মিতু ছাড়লো ওকে ।
মনের ভেতরে একটা অন্য রকম আনন্দ হচ্ছিলো । কিন্তু আবীর ঠিক সহজ হতে পারছিলো না । রিক্সা ডাকার সময়ও মিতু বুঝতে পারছিলো আবীর ঠিক মত কথা বলতে পারছে না । আজকে বেচারা অফিসে গিয়ে ঠিকঠাক মত কাজ করতে পারবে কি না কে জানে !
যখন রিক্সা চলতে শুরু করলো মিতু তখন আবীরের হাত ধরে বলল
-এতো অস্বস্তির কি আছে শুনি ? আমি কি অন্য কেউ ?
-না আসলে সেটা না !
-এখনও গলা কাঁপছে ।
-আসলে বাইরে এভাবে ......
-তাই না ? শুনো আজকে বাসায় আসো তারপর তোমার ব্যবস্থা নিব । ঠিক করেছি তোমার বাসার সবার সামনে ....
-মাফ চাই । তুমি যা বলবে শুনবো তবে এটা করো না প্লিজ ......
মিতু কথাটা শুনে এতো মজা পেল যে জোরে করে হেসে উঠলো । হাসিটা এতোই জোরে ছিল যে আশে পাশের মানুষও ওদের দিকে ফিরে তাকাতে লাগলো । সারাটা রাস্তা মিতু হেসেই চলল কেবল !
মিতু যখন ওর ক্যাম্পাসের সামনে নেমে গেল আবীর হঠাৎ করে ওর হাত ধরলো । তারপর বলল
-থেঙ্কিউ !
মিতু একটু হাসলো । তারপর বলল
-সাবধানে যেও । বাসায় দেখা হবে !
তারপর হাটা দিল গেটের দিকে ।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৮
অপু তানভীর বলেছেন: সবার কাছে নয়
২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:২৯
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: টিপিক্যাল...
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৮
অপু তানভীর বলেছেন: হুম
৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:২০
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: হাসলাম কতক্ষন!
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৮
অপু তানভীর বলেছেন: ভাল
৪| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০২
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: পড়ে ভাল লাগল।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৯
অপু তানভীর বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ
৫| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১৯
আহমেদ জী এস বলেছেন: অপু তানভীর,
টুকরো কিছু আনন্দঘন সময়ের ছবি।
অনেক টাইপো আছে আর প্রথম লাইনে "চোখ" শব্দটি দু'বার হয়েছে।
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১:১৬
অপু তানভীর বলেছেন: আসলেই এই রকম আনন্দঘন সময় গুলোর জন্যই জীবন সুন্দর !
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:১৪
রাজীব নুর বলেছেন: আবীর আর মিতুর গল্প।
চুমু টা আজকাল খুব সস্তা হয়ে গেছে।