নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিশাতের মনের ভেতরে একটা আলাদা আনন্দ কাজ করছে । বুকটা যেন স্বাভাবিকের চেয়েও একটু বেশি লাফাচ্ছে । এই আনন্দ ধরে রাখতে পারছে না নিজের ভেতরে । কিন্তু আবার কাউকে বলতেও পারছে না ।
এতো দিন পরে গাধাটা একটু সাহস জোগার করেছে ওকে কিছু বলার ! গত রাতেই সে খবর পেয়েছে শুভ আজকে নিশাতের সাথে কথা বলবে । সাথে সাথে নিশাতকে এও জানানো হয়েছে যে শুভ কয়েক দিন থেকেই একটা নীল রংয়ের খাম খুব যত্ন করে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে । খামটা যে ওর জন্য সেটা আর কারো বুঝতে বাকি নেই । নিশাতের ইচ্ছে ছিল শুভ কথাটা ওকে সরাসরি মুখেই বলুক । কিন্তু চিঠিতে বলাটাও খুব মন্দ না । অনেক আগে যখন এখনকার মত মোবাইল ইন্টারনেট ছিল না তখন মানুষ ঠিক এই ভাবে চিঠি লিখে মনের কথা প্রিয় মানুষকে জানান দিতো । এটাই বা কম কি !
ক্যাম্পাসে পা দিতেই নিশাতের মনের ভেতরকার ধুকধুকানী আরও একটু বৃদ্ধি পেয়ে গেল । ওর চোখ চারিপাশে শুভকে খুজতে লাগলো । ছেলেটা কোথায় গেল ? আজকে যদি সত্যিই শুভ কিছু না বলে তবে ঠিক করে আর কোন দিন ওর সাথে কথাই বলবে না ।
নিশাত মনে মনে কপট অভিমান করে করলো । সাথে সাথে নিজের মনেই হেসে উঠলো । নিজের এমন ছেলেমানুষী কাজে নিজের কাছেই লজ্জা পেয়ে গেল ও ।
শুভকে ও কত দিন থেকে পছন্দ করে । কিন্তু একটা মেয়ে হয়ে আগে কিভাবে বলবে ওর ভাল লাগার কথা । তাই চুপচাপ সব সময় শুভর দিকে তাকিয়ে থাকতো । ওর সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করলেও কথা বলতে পারতো না লজ্জায় । খুব ইচ্ছে করতো শুভ ওর কাছে এসে কথা বলুক !
তারপর একদিন নিশাত নিজেই জানতে পারলো যে ও যেমন শুভকে কিছু বলতে চায় ঠিক তেমনি শুভও ওকে অনেক দিন থেকে কিছু বলতে চায় । বেচারা লজ্জা ওর সাথে কথাই বলতে পারে না । এটা জানার পরে সেদিন নিশাতের মনে যে কি পরিমান আনন্দ হয়েছিলো তা সে বলে বোঝাতে পারবে না ।
তারপর অনেক কয়টা দিন কেটে গেছে । কেবল ওদের দুজনের চোখাচোখি হয়েছে । কথা হয় নি । যখন দু পক্ষেই কথা বলতে আগ্রহী কিন্তু দ্বিধা আর লজ্জার কারনে কেউ আগে এগিয়ে আসতে পারছে না তখন ওদের বন্ধুরা এগিয়ে এল । প্লান করে ঠিক করা হল ওরা কোথায় দুজন কথা বলবে । তবে শুভকেই বলতে হবে সব ।
শুভ প্রথমে একটু ইতস্তত করেছিলো বটে তবে পরে রাজি হয়ে গেল । তারই পরিপেক্ষিতে আজকের এই পরিকল্পনা । পরিকল্পনাটা খুব সহজ । আজকে ওদের দ্বিতীয় প্রিয়ডে কোন স্যার নেই । স্যার যখন প্রথম প্রিয়ডে ক্লাস নিয়ে বের হয়ে যাবে তখনও ক্লাসের সবাই রুম থেকে বের হয়ে যাবে । কেবল বসে থাকবে নিশাত আর শুভ । তারপরই শুভর যা বলার বলবে !
নিশাত উৎকন্ঠা নিয়ে প্রথম ক্লাসটা পার করলো । স্যার বের হয়ে যাওয়ার ৫ মিনিটের মাথায় আস্তে আস্তে সবাই রুম থেকে বের হয়ে গেল । নিশাত তাকিয়ে দেখলো শুভ সামনের দিকে একটা বেঞ্চে বসে আছে । চুপচাপ সেও কিছু সময় বসে রইলো । বুকের ভেতরটা ঢিপঢিপ করতে লাগলো । সেই সাথে এৎা ভাল লাগার অনুভূতি ধীরে ধীরে বেড়ে চলছে ।
এই তো শুভ উঠছে । ওর মুখটা দেখা যাচ্ছে !
ইস !
কেমন নার্ভাস লাগছে !
নিশাতের হাসি পেয়ে গেল !
ছেলে গুলো সব জাগয়াতে এতো বাহাদুরী করে কিন্তু এই সামান্য একটা কথা বলতে গেলেই ওদের গলা শুকিয়ে যায় !
নিশাত দেখতে পেল শুভ কেমন ধীর পায়ে ওর দিকে এগিয়ে আসছে । একটা সময়ে ঠিক ওর সামনে এসে দাড়ালো ।
কিছু বলতে গিয়েও আটকে গেল !
নিশাতের আবারও হাসি পেয়ে গেল । শুভ যেন ঠিক মত নিঃশ্বাস নিতে পারছে না । শেষে নিশাত নিজে বলল
-বস আমার সামনে ! ঠিক মত শ্বাস নাও !
এই কথা শুনে শুভ যেন একটু প্রাণ ফিরে ফেল । ফ্যাকাশে ভাবে হাসলো । তারপর বসে পড়লো ওর ঠিক সামনে । নিশাত তখন তীক্ষ চোখে শুভ কে লক্ষ্য করছে । ছেলেটা আসলেই একটু নার্ভাস হয়ে গেছে । আজকে কি বলতে পারবে যে কথাটা বলতে এসেছে ?
শুভ বলল
-তুমি কেমন আছো ?
নিশাত হেসে ফেলল । ওর হাসি দেখে শুভ যেন একটু বুকে বল পেল । মনে মনে ঠিক করেই নিল আজকে কথাটা ওকে বলতেই হবে । যদি মুখে নাও বলতে পারে তাহলে নীল রংয়ের খামে সেটা লিখে নিয়ে এসেছে । খাম টা ওকে দেবেই ।
নিশাত নিশ্চয়ই রাগ করবে না । রাগ করতে পারে না !
নিশাত বলল
-বল কি বলবে চাও ?
-আসলে ...
-অনেক দিক থেকেই তো বলতে চাচ্ছো, তাই না ?
-আসলে হ্যা । আমি অনেক দিন থেকেই কথাটা তোমাকে বলতে চাচ্ছি কিন্তু বলতে পারছি না ।
-তাহলে বলে ফেল !
-রাগ করবে না তো ?
-তোমার কি মনে হয় রাগ করলে আমি এখানে আসতাম ?
-তাও ঠিক ! তাহলে বলেই ফেলি । তাই না ?
-হুম বলে ফেল ।
শুভ বড় করে একটা দম নিল । কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলো না । একটা সময়ে বুঝতে পারলো যে তার পক্ষে নিশাতের সামনে কথাটা কোন ভাবেই বলা সম্ভব না । বকের ধুকধুকানী বেড়ে গেল অনেক গুণে । তারপর নিশাতের দিকে তাকিয়ে বলল
-মানে আমি বলতে চাইছি তুমি তো নিজেকে তরুনী কর তাই না ?
নিশাত খানিকটা অবাক হয়ে বলল
-এই প্রশ্ন কেন ?
-না মানে এমনি ! আসলে আমি আমি যা বলতে চাই সেট আমি মুখে বলতে পারছি না । এই নীল খামটাতে লিখে এনেছি !
এই কথা বলেই শুভ নীল খামটা বের করে নিশাতের হাতে বাড়িয়ে দিল । তারপর বলতে গেলে একেবারে দৌড়ে বেরিয়ে গেল ক্লাস রুম থেকে । নিশাত নীল খামটার দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুটা সময় । একবার মনে হল খামটা এখন না খুলে বাসায় গিয়ে খুলবে । কিন্তু তারপরই মনে হল এতোটা সময় ওর পক্ষে অপেক্ষা করা কোন ভাবেই সম্ভব না । দ্রুত খামটা খুলে ফেলল । ভেতরে মাত্র একটা লাইণ লেখা । লাইন গুলো পড়ে নিশাত কেবল থ হয়ে রইলো!
শুভ লিখেছে "কেবল তরুণ ভোটার নয়, তরুণী ভোটারের কাছেও একটাই চাওয়া "নৌকা মার্কায় ভোট টা দিও"
২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৪৯
অপু তানভীর বলেছেন:
২| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৫৩
মা.হাসান বলেছেন: Fatafati
২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:১৩
অপু তানভীর বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ
৩| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:১০
যোখার সারনায়েভ বলেছেন: পড়লাম।
২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪০
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫১
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: -_-
২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪০
অপু তানভীর বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: আমি অন্ধ হতে চাই, দু’ চোখে যা দেখি, সেসব দেখতে নাহি চাই।
আমি কালা হতে চাই, দু’ কানে যা শুনি, সেসব শুনতে নাহি চাই।