নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছবিঃ গুগল
রাতের বেলা আমার মনে হচ্ছিলো সুপ্তিকে ঐ মেসেজটা পাঠানো আমার মোটেই উচিৎ হয় নি । তবুও কেন যে আমি পাঠিয়ে ফেললাম আমি নিজেই জানি না । আমার কেবল মনে হয়েছে ওকে এই কথাটা না জানাতে পারলে হয়তো আমি দম বন্ঢ হয়ে মারা যাবো ।
প্রতিটা মানুষেরই কিছু নির্দিষ্ট পোশাকে তার স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি সুন্দর লাগে । আবার অন্য ভাবে বললে কিছু কিছু মানুষের চোখে অন্য মানুষকে কিছু নির্দিষ্ট পোশাকেই সব থেকে বেশি সুন্দর লাগে । যেমন আমার পাশের বাসার মেয়েটি আমাকে প্রায়ই বলতো যে আমাকে নীল শার্টে বেশ লাগে দেখতে । যদিও নীল শার্ট আমার কোন দিনই পছন্দের ছিল না । আমার চোখে নিজেকে নীল শার্টে ততটা আকর্ষনীয় মনে হয় নি কিন্তু ঐ মেয়েটির চোখে মনে হয়েছিলো নিশ্চয়ই ।
গত পরশুদিন ও ফেসবুকে নিজের একটা চমৎকার ছবি দিয়েছিলো । নীলচে ছাই রংয়ের জামা পরেছিলো । জামার ভেতরে লালা ফুলের কাজ করা । সেই সাথে লাল ওড়না আর লাল রংয়ের সেলোয়ার ! আমার কাছে কেবল জানি মনে হল সুপ্তি যদি এই জামাটার সাথে লাল চুড়িদার অথবা লাল লেগিংস পরতো তাহলে ওকে আরও বেশি সুন্দর লাগলো । আমার চোখে অন্তত ।
আমার কি মনে হল আমি কিছু না ভেবে ছবিটা ওর ইনবক্সে সেন্ড কারলাম তারপর ওকে বললাম কথাটা । কথাটা বলেই মনে হল মোটেই বলা ঠিকখয় নি । সুপ্তির সাথে আমার ক্লাসে সরাসরি মোটেই কথা হয় না । মাঝে মাঝে চোখাচোখি হয় আর টুকটাক কথা বার্তা । ফেসবুকে তার ছবি দেখি, লেখা পড়ি সেও আমার ছবি দেখে লেখা পড়ে । এছাড়া আমরা এক সাথে বসে কোন দিন গল্প করেছি কি না সেটাও আমার মনে পড়ে না আর আমি কি না ওকে এই কথা বলে ফেললাম ! মনে হতে লাগলো সুপ্তি চাইলেই এই ইনবক্স নিয়ে ওর বান্ধবীদের সাথে হাসাহাসি করতে পারে, আমার সেখানে কিছুই করার থাকবে না ।
তবে আমাকে খানিকটা নিশ্চিন্ত করে দিয়ে সুপ্তি আমার ইনবক্সে উত্তর দিল । ও লিখলো যে টাইট ফিটিং কিছু ও ঠিক পরে না । আমি খানিকটা নিশ্চিত হলাম । মনে হল যে সুপ্তি আমার কথায় রাগ করে নি এটাই অনেক বড় কিছু ।
কিন্তু সব থেকে বড় সারপ্রাইজ টা পেলাম যখন দেখলাম সুপ্তি ঐ পোশাকটা পরেই ক্যাম্পাসে এসেছে । এবং তারপর ওর পরনে সেই লাল রংয়ের সেলোয়ারটা নয় বরং লাল রংয়ের একটা লেগিংস পরা !
আমি আমার নিজের চোখকে ঠিক বিশ্বাস করতে পারছিলাম না !
বারবার কেবল মনে হচ্ছিলো এও কি সম্ভব নাকি আমি স্বপ্ন দেখছি ! কিছুই বিশ্বাস হচ্ছিলো না ! তবে মনের ভেতরে একটা তীব্র আনন্দবোধ হচ্ছিলো !
আমি কেবল কিছু সময় ওর দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলাম কিছুটা সময় । মুখ দিয়ে একটা কথাও বের হল না । সুপ্তি আমার দিকে তাকিয়ে কেবল মৃদ্যু স্বরে হাসলো । ওর চোখ যেন আমাকে বলছে যে, কি ! জনাব কেমন লাগছে আমাকে !
আমার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছিলো যে তোমাকে সব থেকে সুন্দর লাগছে ! আমার দেখা সব থেকে সুন্দর মেয়েটি হচ্ছো তুমি !
কিন্তু বলতে পারলাম না । তবে আমার মনে হল আমার চোখের চাহনী দেখে ও ঠিকই বুঝে গেল !
পুরো ক্লাসের সময়টা আমার সময় সুযোগ পেলেই কেবল ওর দিকে ফিরে ফিরে তাকাচ্ছিলাম । বারবারই ওকে দেখতে ইচ্ছে করছিলো কিন্তু ওর সামনে যেতে লজ্জা লাগছিলো এমন কি ওর সাথে চোখাচোখি হয়ে গেলেও কেমন যেন একটা লজ্জা অনুভব হচ্ছিলো । আমি চোখ সরিয়ে নিচ্ছিলাম ।
ক্লাস শেষ হয়ে যাওয়ার পরে খুব বেশি করে ইচ্ছে ওর সাথে গিয়ে কথা বলি । ওকে আজকে এক কাপ কফি খাওয়াতে নিয়ে যাই । সব থেকে ভাল হয় ওকে নিয়ে এখন বই মেলার দিকে রওনা দেই । ওখানে খানিকটা ঘোরাঘুরি করে তারপর কোন কফি শপে বসে ওর গল্প করি ।
কিন্তু কিছুই বলতে পারলাম না । চোখের সামনে দেখলাম যে সুপ্তি ওর বন্ধুদের সাথে গল্প করতে করতে চলে গেল । আমি তাকিয়ে রইলাম ওর দিকে । খুব মন খারাপ হয়ে গেল । ওর সাথে একটু কথা বলতে পারলে এতো ভাল লাগতো !
তারপরই আমার মোবাইলে একটা টুং করে মেসেজ বেজে উঠলো । সেখানে একটা মাত্র শব্দ লেখা !
"গাধা"
আমি খানিকটা সময় বোকার মত তাকিয়ে রইলাম মেসেজটার দিকে । কারন মেসেজটা যে নাম্বার থেকে এসেছে সেটা মোবাইলে সেভ নেই । কিন্তু আমি জানি মেসেজটা কে পাঠিয়েছে । আমাকে গাধা কেন বলল ? কি গাধার কি কাজ করলাম ?
তারপর আবারও মেসেজ টোনটা বেজে উঠলো । সেখানে একটা লাইন লেখা "বইমেলায় যাচ্ছি"
সুপ্তি বই মেলাতে যাচ্ছে । এটা সে আমাকে নিজে জানানোর মানে হচ্ছে ও চাচ্ছে আমি যেন বই মেলাতে যাই । এবার ওর গাধা বলার কারনটা আমি বুঝতে পারলাম । আমি আর দেরি না করে সোজা ক্যাম্পাসের গেটের দিকে রওয়ানা দিলাম ।
গেটের কাছে গিয়ে ভাবছি কিভাবে যাবো মেলাতে তখনই আমাকে অবাক করে আমার সামনে একটা রিক্সা এসে থামলো । রিক্সাতে সু্প্তি বসে ছিলো । আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-উঠে আসো ! গাধা !
আমি কেবল হাসলাম তারপর সুপ্তির পাশে উঠে বসলাম !
রিক্সা যখন চলতে শুরু করলো আমার কাছে মনে হল এই পুরো শহরকে চিৎকার করে জানিয়ে দেই । একটা মাইক ভাড়া করে বলি "দেখো আমার দিকে তাকিয়ে । আমার পাশের পৃথিবীর সব থেকে সুন্দরী মেয়েটি বসে আছে"
রিক্সা চলতে থাকে বইমেলার দিকে । সেই সাথে চলতে থাকে আমার দুজনের গল্প !
০১ লা মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:১২
অপু তানভীর বলেছেন: এমনই হবে জীবনে । জীবনে বেশির ভাগ মানুষই এমন গাধার ডাক শুনতে পারে না ।
২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:০৬
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: গাধারাই জাবরকাটে।
০১ লা মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:১২
অপু তানভীর বলেছেন: তা কাটে !
৩| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:১৮
রিফ্রাক্শন বলেছেন: আমার পাশে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ে বসে আছে।
সুন্দর। চলুক গল্প।
০১ লা মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:১৪
অপু তানভীর বলেছেন: গল্প বলবে !
৪| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৪৭
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: সুন্দর।
০১ লা মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:১৪
অপু তানভীর বলেছেন:
৫| ০১ লা মার্চ, ২০১৯ দুপুর ২:১৩
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর গল্প।
০১ লা মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:১৪
অপু তানভীর বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৩০
মা.হাসান বলেছেন: আফসোস, বুড়া হইয়া গেলাম, গাধা হইতে পারলাম, কেউ কেউ কপাল লইয়া আসে
পুস্টে প্লাসাইলাম।