নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

অপু তানভীর

আমার চোখে ঠোঁটে মুখে তুমি লেগে আছো

অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ বহ্নিকথন

০৩ রা মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৭


ছবিঃ গুগল

আমার মনে একটা ক্ষীণ সন্দেহ দেখা দিলো যে বহ্নি হয়তো আমার সাথেই দেখা করার জন্য আজকে এই বইমেলাতে এসেছে । অন্তত ওকে দেখে আমার তাই মনে হল । আমার পছন্দের ব্যাপারে বহ্নির খুব পরিস্কার ধারনা থাকার কথা । আমি কোন ধরনের পোশাক পছন্দ করি কিংবা কি সাজে আমার মেয়েদেরকে ভাল লাগে সেটা খুব ভাল করেই জানে । আজকে ওকে দেখে আমার কেবল মনে হল ও যেন কেবল আমার জন্যই এসেছে ।
এতো দিন পরে আবার আমার কথা মনে পড়লো ওর !
আমি আরেকবার তাকালম বহ্নির দিকে । বহ্নি আজকে ধবধবে সাদা লেগিংসের সাথে সাদা কামিজ পরেছে । সেই সাথে সাদা ওড়না । এটা যে আমার পছন্দের পোশাক এটা ওর খুব ভাল করে জানা । তাই আমার মনে হল ও আসলে আমার জন্যই আজকে মেলাতে এসেছে !

আমি স্টলের মাঝে চুপচাপ বসে আছি । মাঝে মাঝে একজন দুজন আসছে । বইয়ের খোজ করছে । কেউ নেড়ে চেড়ে দেখছে । কেউ বা কিনছে আবার কেউ রেখে চলে যাচ্ছে । এমন সময় আমি বহ্নিকে দেখতে পেলাম । মৃদ্যু ভাবে হাটছে আর স্টল নাম্বার খোজার চেষ্টা করছে । আমার কেন জানি মনে হল আমার স্টল নাম্বারটাই ও খুজে বেড়াচ্ছে । একবার মনে হল ওর নাম ধরে ডাক দেই । আমার খোজে না আসলেও আমাকে দেখলে নিশ্চয়ই এগিয়ে আসবে । কিন্তু কেন জানি দিলাম না । কোথায় যেন একটা দ্বিধা হল । খানিকটা সংকোচ থেকে বহ্নিকে আর ডাক দিতে পারলাম না ।

বহ্নির সাথে আমার পরিচয়টা বেশ অদ্ভুদ ভাবে হয়েছিলো । অন্তত আমি কোন দিন ভাবি নি যে এমন করে কোন মেয়ের সাথে আমার পরিচয় হতে পারে । একটা মেয়ে হঠাৎ করে আমার সামনে এসে হাজির হয়ে বলল যে, আমাকে একটু লিফট দেনতো ! আমি তাকে লিফট দেবো তারপর আমাদের প্রেম হয়ে যাবে । এরকম টা কেবল আমার গল্পে হয় । আর কোথায় না । তবুও তেমন ভাবেই হঠাৎ করে ব হ্নি আমার সামনে এসে হাজির হয়েছিলো ।

আমার অনেক আগে থেকেই হুটহাট করে একা একা এদিক ওদিক ঘুরতে যাওয়ার অভ্যাস । সেবার গিয়ে হাজির হয়েছি কক্স বাজারে । অটো ভাড়া করে বিকাল বেলা গিয়েছি ইনানী বিচে । সি চেয়ারে যখন অলস সময় কাটাচ্ছিলাম তখনই মেয়েদের দলটা দেখতে পেলাম । সব মিলিয়ে ৫ জন মেয়ে । দৌড়াদৌড়ি করছে এদিক ওদিক । ব্যাপারটা আমার বেশ মজা লাগলো । মেয়ে গুলো সবই দেখে মনে হল যেন টারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে । আর সেখানে তারা দৌড়ে বেড়াচ্ছে যেন তার প্রাইমারিতে পড়ে । বিশেষ করে একটা মেয়েকে খুব বেশি করে চোখে পড়লো । কালো একটা জিন্সের সাথে একটা নীল রংয়ের টিশার্ট পরে আছে । সেই সব থেকে বেশি লাফালাফি করছে ।


ফেরার সময় সব ঘটনাটা ঘটলো । আমার অটো আগে থেকে রিজার্ভ করা ছিল । আমি অটোতে উঠে রওয়ানা দিতেই সেই কালো জিন্স আর নীল টিশার্ট পরা মেয়েটাকে রাস্তার ধারে দাড়িয়ে থাকতে দেখলাম । এবং অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম মেয়েটা আমার অঅ বাইকটাই হাতের ইশারাতে থামতে বলছে । আমি অটোমামাকে থামতে বললাম !

মেয়েটা আমার দিকে এসে একটা হাসি দিল । তারপর বলল
-আপনি কি কলাতলীর দিকে যাচ্ছেন ?
-হ্যা !
-আমাকে কি একটু লিফট দেওয়া যায় !

আমি জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছিলাম আপনার বন্ধুরা কোথায় কিন্তু মেয়েটা সেই সুযোগ না দিয়ে বলেই চলল
-আসলে আমার ফ্রেন্ডরা গেছে আরও একটু সামনে কিন্তু আমার অফিস থেকে ফোন এসেছে । এখনই ফিরে যেতে হবে । কিন্তু জানেনই তো রিজার্ভ না করে আনলে এখান থেকে গাড়ি পাওয়া খানিকটা মুস্কিল !

আমি কেবল একটু হাসলাম । এমন সময় কোন ভাবেই বলার উপায় নেই যে, নাহ আপনাকে নেওয়া যাবে না । তার উপর সামনের জন যদি সুন্দরী মেয়ে হয় !
মেয়েটি উঠে বসলো । আমার মুখো মুখিই বসলো । তারপর বলল
-হ্যালো আমি বহ্নি ! এখানে ইউএনের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের কাজ করি ।

আমি ভেবেছিলাম মেয়েটি মেয়েটি হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে । পরে অফিসের কথা শুনে একটু অবাক হয়েছিলাম । এখন ইউএনে চাকরি করে শুনে সত্যিই অবাক হলাম । মেয়েটির বয়স কত হবে খানিকটা আন্দাজ করার চেষ্টা করলাম । দেখে মনে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্স্টইয়ার পার করে সেকেন্ড ইয়ারে উঠেছে !
আমি বললাম
-এখানে কোথায় থাকেন ?
-শহরেই । একটা হোস্টেল আছে ! তা আপনি টুরিস্ট ?
-হ্যা । আমি ঢাকাতে থাকি !
-একাই এসেছেন ? আর কেউ আসে নি ? বন্ধু কিংবা বউ !

আমি হেসে ফেললাম ! তারপর বললাম
-মানুষের সঙ্গ আমার ঠিক পছন্দ না । তাই বন্ধু বান্ধবের সংখ্যা কম । যারা বন্ধু তারা এখন সবাই ব্যস্ত আর এখনও বিয়ে করি নি কিংবা হয় নি তাই একাই আপাতত !
বহ্নি বলল
-কতদিন থাকবেন ?
-ঠিক নেই । কোন হিসাব করে আসি নি । পকেটে যতক্ষন টাকা আছে থাকবো আশা করি !

বহ্নি কিছু সময় আমার দিকে তাকিয়ে রইলো । ওর তাকিয়ে থাকার ভেতরেই যেন কেমন একটা ভাব ছিল । কিছু সময়ের জন্য আমি কি বলবো খুজে পেলাম না । নিজের ভাবেই কেমন যেন অস্বস্থি লাগা শুরু করলো । অবশ্য বহ্নি একটু পরেই চোখ সরিয়ে নিল ।

তারপর পুরোটা পথ আমাদের টুকটাক কথা হতে থাকলো যদিও বেশির ভাগই বহ্নিই বলল । আমি হু হা করলাম আর মাঝে মাঝে কিছু বলছিলাম । কেন জানি হঠাৎ করে আমার বহ্নির সাথে কথা বলতে ভাল লাগছিলো । এমন সাধারনত আমার সাথে খুব একটা হয় না । আমার মানুষের সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে না, তাদের কথাও শুনতে ভাল লাগে না আমার কিন্তু বহ্নির কথা শুনতে ভাল লাগছিলো । কি কারনে আমার ভাল লাগছিলো সেটা বলতে পারবো না তবে লাগছিলো ।

তবে সব থেকে বড় রকমের ধাক্কাটা আমি খেলাম যখন কলাতলীতে এলাম । আমার হোটেলের সামনেই অটো থামলো । অটোওয়ালাকে বললাম বহ্নিকে যেন ওর অফিসের সামনে নামিয়ে দেয় । যখন আবার অটো চলতে শুরু করলো তখন বহ্নি হঠাৎ করে আমাকে বলল
-তো লেখক সাহেব আসি ! আবার দেখা হবে আশা করি !

আমি কথা শুনে হাসতে গিয়ে থেমে গেলাম ! আমি যে লেখালেখি করি এই কথা আমি মোটেই বহ্নিকে বলি নি মোটেও । ও তাহলে কিভাবে জানলো ?
আমি ওর দিকে দেখি ও আমার দিকে তাকিয়ে মৃদু ভাবে হাসছে । আর হাত নাড়ছে । আমি বোকার মত কিছু সময় তাকিয়ে রইলাম । চোখের সামনে অটো বাইকটা হারিয়ে গেল ।

ঐদিন রাতে বেশ কিছুটা সময় ভেবেও কিছু খুজে পেলাম না । তবে এই টুকু বুঝতে কষ্ট হল না যে বহ্নি আমাকে আগে থেকেই চেনে । ইনানীতে আমাকে দেখতে পেয়েছে তারপর ইচ্ছে করে আমার সাথে এসেছে ।


বহ্নির সাথে দেখা হল পরদিনই । আজকে আর কোথাও যাই নি । হাতে সেন্ডেল নিয়ে আমি হাটছিলাম সমুদ্রের পানিতে পা ডুবিয়ে । ছুটির দিন না, টাই বিচে ভীড় কম ছিল । আমার শান্ত বিচে হাটতে বেশ ভাল লাগছিলো । এমন সময় পেছন থেকে ঘারে কারো স্পর্শ পেলাম । তারপর হাসির আওয়াজ ! আমি পেছন ফিরে তাকাতেই দেখতে পেলাম বহ্নিকে । আজকেও গতদিনের মত জিন্স আর টিশার্ট পরে আছে তবে আজকের টিশার্ট ওদের অফিসের লোগো লাগানো । সম্ভত অফিস থেকে এসেছে !

আমার দিকে তাকিয়ে ব হ্নি বলল
-কি লেখক সাহেব, রাতে ঘুম ভাল হয়েছে ?
-হ্যা ! কেন ?
-আমার তো মনে হচ্ছে না ।
-এমনটা মনে না হওয়ার কারন টা কি ?
-আমার মনে হচ্ছে আপনি কারো কথা খুব করে ভেবেছেন সারা রাত ভর ?

আমি বললাম
-নাহ ! আমার ঘুমে সমস্যা হয় না !
-সত্যিই কি ?
-সত্যি ।
-যাক ভাল । না হলেও ভাল ।
-তবে কৌতুহল অবশ্যই হয়েছে । অবাকও হয়েছি । আমাকে আপনি চিনেন কিভাবে ?
-চিনি কোন ভাবে ! তবে আমি আপনাকে দেখে অবাক হয়েছি বেশি । আপনাকে কোন ভাবেই গতকাল ওখানে আশা করি নি ।
-তার মানে আপনার অফিস থেকে ডাক আসে নি । আমার সাথে যাওয়ার জন্য মিথ্যা বলেছেন !
-একেবারে যে মিথ্যা বলেছি সেটা না । অফিস থেকে সত্যিই ডাক এসেছিলো তবে এতো জরুরী ছিল না যে তখনই যেতে হবে । এই আর কি !
-তা বলা যায় আমাকে কিভাবে চিনেন বলা যায় ?
-আপনাকে আর কিভাবে চিনবো বলুন ! যেভাবে চেনার কথা ! অনলাইন ! তারপর লেখা পড়াপড়ি ! সেখান থেকে ব্লগ ফেসবুক !

আমি অনলাইনে টুকটাক গল্প লিখি অনেক দিন । তবে সেটার জন্য কোন ভাবেই নিজেকে লেখক হিসাবে পরিচয় দেওয়া যায় না । টাইম পাস করা লেখা । সময় কাটানোর জন্য আর কি ! আর সেই লেখা পড়ে কেউ যে আমার কথা মনে রাখবে আবার বাস্তবে আমার সাথে দেখাও করবে এটা ভাবতে একটু অবাকই লাগে আর কি !

আমি বহ্নিকে বললাম
-আমি খানিকটা অবাকই হলাম সত্যি !
-অবাক হওয়া ভাবলো । দেখি আসেন দেখি একটা কাজ করি !
-কি !
-আপনার সাথে একটা ছবি তুলি !
-ছবি ! একটা কারন অবশ্য আছে । সেটা আমি পরে বলবো !

আমি আর কিছু না ভেবে রাজি হয়ে গেলাম । বেশ কয়েকটা ছবি তুললো ও । একটা সময় বিচের ফটোগ্রাফারেরা এসে হাজির । তারা আমাদের কে কাপল ভেবেছে । তারা ছবি তুলে দিবে । আমি মানা করতে যাবো কিন্তু বহ্নি সেটা করতে দিল না । সত্যিই সত্যিই আরো ছবি তোলা হল । কোন দিকে কিভাবে পোজ দিয়ে দাড়াতে হবে সেটা বলে দিচ্ছিলো ওরা । বহ্নি হাসতে হাসতে তাই করছিলো আর আমাকে দিয়েও তাই করাচ্ছিলো !

একটা সময় আমাদের ছবি তোলা পর্ব শেষ হল । আমরা আরও কিছু সময় হাটাহাটি করলাম । এবং একটা সময় আমি কেবল আবিস্কার কারলাম যে আমি অনলাইনে যা লিখি বহ্নির তার সবই পড়ে । এবং আমার পছন্দ অপছন্দের কথা সব জানে ! ব্যাপারটা আমার কাছে আনন্দময় ছিল ।

তারপর ওর কাছে যেন আরও সময় কাটতে লাগলো বেশি করে । সেবার আরও একটা সপ্তাহ বেশি থেকে গেলাম কক্সবাজারে । প্রতিদিনই ও অফিস শেষে চলে আসতো বিচে । আমরা হাটাহাটি করতাম, ফটোগ্রাফারাররা আমাদের ঝেঁকে ধরতো ছবি তোলার জন্য । তারা ভাবতো আমরা হয়তো কাপল । এভাবে অনেক ছবি জমা হয়ে গেল আমাদের ।

তারপরই আমি একটা গাধার মত কাজ করে ফেললাম । কি মনে হল ওর আর আমার একটা ছবি আমার ফেসবুক প্রোফাইলে দিয়ে দিলাম । আর নিচে লিখে দিলাম যে প্রেমিকার সাথে দেখা করতে এসেছি সমুদ্রে !

আমি কেবল ফান থেকেই কাজটা করেছিলাম । যদিও আমার ধারনা ছিল না বহ্নি ব্যাপারটা মোটেই ভাল চোখে দেখবে না । আমার আসলে মনে হয়েছিলো যে ও আমার পছন্দ করে তাই আমি যাই করি না কেন সেটাতে ও আপত্তি করবে না । কিন্তু আমার ধারনাতে খানিকটা ভুল ছিল ।
ঐদিন বিকেলে ও সত্যিই আমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করলো বেশ খানিকটা ! আমি কেন এই কাজটা করলাম এটা নিয়ে ! আমি প্রথমে ঠিক বুঝতে পারলামই না কি করবো ! আমার মনে ধারনাই ছিল না এমন কিছু হতে পারে ! যদিও কাজটা গাধার মতই ছিল । এক সাথে ছবি আপলোড দেওয়া পর্যন্ত হয়তো ঠিক ছিল কিন্তু ঐ লাইন গুলো লেখা আমার মোটেি ঠিক হয় নি । সরি বললাম ওকে তবে ওর রাগ কমলো না মোটেই । আমার সাথে আর কথাই বলল না ।

আমি আর একদিন অপেক্ষা করেছিলাম কক্সবাজারে তবে ঐদিন আর আর বহ্নির সাথে আমার দেখা হয় নি । ও দেখা করতে আসে নি । ওটাই বলতে গেলে ওর সাথে আমার শেষ দেখা ছিল ।


-ভাইয়া "বহ্নিকথন" আছে ?
আমি আবার পুরানো ভাবনা থেকে বাস্তবে ফিরে এলাম । তাকিয়ে দেখি একজন সামনে দাড়িয়ে আছে । স্টলের অন্যেরা বেশ ব্যস্ত তাই আমিই এগিয়ে গেলাম । বইটা এগিয়ে দিলাম । আমার নিজের লেখা বই ! "বহ্নিকথন" । এই নাম দেওয়ার পেছনে কোন কারন নেই তবুও দিয়েছি !


আরও বেশ কিছু সময় পার হয়ে গেল তবে বহ্নি আর এল না । আমার ধারনাতে ভুল ছিল । ও আসে আমার সাথে দেখা করতে আসে নি হয়তো । মেলাতে আসতেই পারে বই কিনতে । তারপরই খানিকটা ব্যস্ত হয়ে গেলাম । কিছু পরিচিত বড় ভাইয়েরা এসেছিলো । তাদের সাথে কথা বলতেই হল । আমার প্রকাশক মশাইও ছিলেন । আমার এসব ভাল না লাগলেও কাজ গুলো মাঝে মাঝে করতে হয় ।


মেলা শেষ হয়ে যাওয়ার সময় আরেকবার স্টলের সামনে গিয়ে বহ্নিকে দেখতে পেলাম । বহ্নিকথন নিয়ে দাড়িয়ে আছে । স্টলের একটা ছেলে আমাকে বলল যে বহ্নি অনেকটা সময় আমার জন্য অপেক্ষা করছে ! আমার সাথে দেখা করবে বলে !

কেমন যেন অদ্ভুদ অনুভূতি হল আমার নিজের ভেতরে । এতো গুলো বছর পরে হঠাৎ ওকে এভাবে দেখে সত্য অনুভূব করলাম যে সেদিকেই ঐ কদিনের অনুভূতিটা আমি এখনও ভুলি নি । বহ্নি আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো একটু ! আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-অটোগ্রাম দিবেন না ?




মেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও আমরা অনেকটা সময় মেলার মাঠেই বসে ছিলাম । ব হ্নির ঐদিন ও ভাবে রেগে যাওয়াটা আমার কাছে সেদিন বেশি মনে হলেও যখন আজকে ও সেটার কারন ব্যাখ্যা করলো তখন মনে হল সত্যিই আমি গাধামীই করেছিলাম । বয়স তখন কম ছিল বিধায় এতো চিন্তাভাবনা করি নি ।

এক প্রকার বাসার বিরুদ্ধে গিয়েই বহ্নি ওখানে চাকরিটা নিয়েছিলো । মাস্টার্স না করেই সেখানে গিয়েছিলো ও চাকরিটা করার জন্য । আমি যখন ছবিটা আপলোড দিয়েছিলাম সেটার খবর ওর বাসায় পৌছে গিয়েছিলো । ও বাবা খুব রাগারাগি করেছিলো । ওখান থেকে সেদিনও ওকে বাসায় ফিরে যেতে বলে । ওর কোন আপত্তিই তারা আর শোনে নি ।
এই সব কিছুই হয়েছিলো কেবল আমার গাধামীর জন্য । আমার নিজের কাছেই খানিকটা লজ্জা লাগলো ঐ কাজটা করার জন্য । ওকে সরি বললাম !

তারপর ওখান থেকে ও চলে আসে । ঢাকাতে এসে মাস্টার্স শেষ করে তারপর আবার নতুন চাকরিতে ঢুকে । মাঝে কয়েকটা বছর পার হয়ে গেছে । বহ্নির রাগটা শেষ হয়ে গেছে । তাররপই ও জানতে পারে আমার বই বের হচ্ছে । আর বইয়ের নামটা দেখে ও আর থাকতে পারে নি ।


পরিশিষ্টঃ

বহ্নিকে যখন ওর বাসায় পৌছে দিলাম আবার মনে আবারও সেই দিনের মত অনুভূতি এসে জমা হল । মনে হচ্ছিলো আমি সেই ক বছর আগে পৌছে গেছি । আমরা সমুদ্র পাড়ে এক সাথে হেটে বেড়াচ্ছি । যখন রিক্সা চলা কালীন সময়ে ওর চুপ উড়ছিলো আমার মনে হচ্ছিলো যেন সমুদ্রের বাতাসে ওর চুল গুলো উড়ছে ।

গেটের কাছে রিক্সা এসে থামলো । বহ্নি আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-আবার দেখা হবে !

আমি হাসলাম ! আবার তো দেখা হবেই । হতেই হবে ! "বহ্নিকথন" দুই বের করতে হবে তো !

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১:১১

রাজীব নুর বলেছেন: দুই একটা বানানে সমস্যা আছে।

০৩ রা মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১:৪৯

অপু তানভীর বলেছেন: আমার গল্পে অবশ্য বানান ভুল থাকবেই !

২| ০৩ রা মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১:৪৮

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: বহ্নিকথন সুন্দর প্রয়াস।

০৩ রা মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১:৫২

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.