নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাধারন মানুষ, সাধারণ চিন্তা

রেজা শাহ্‌

আমি তো এই আমি ব্রহ্মপুত্র বিধৌত পুত্র

রেজা শাহ্‌ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রসে রসে খাদ্যাধিকার প্রয়োগ

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:২০

3.30 ঘন্টার এক বিমান যাত্রা শুরুর ১০ মিনিটের মধ্যেই ব্যাগ থেকে চিপস বের করে খাওয়া শুরু করলাম ।

অনেকক্ষন ধরে এবং একটা একটা করে।
কুড়কুড়ে মুড়মুড়ে আওয়াজ তুলে এগাল ওগাল চিবিয়ে আয়েশ করে খাওয়া চলছে।
কেয়ামত চলে আসবে কিন্তু চিপস খাওয়া যেনো আর শেষ হবে না।

প্রায় ৩০ মিনিট ধরে চল্লো আমার এ খাওয়া।

ওদিকে পাশে বসা প্রায় ৪৬/৪৭ বছর বয়সি স্প্যানিশ ভদ্র মহিলা এতক্ষন ধরে আমার চিপস ভক্ষণ অবলোকন করছিলেন।
আমি তাকে আড়চোখে কয়েকবার ঢোক গিলতে দেখেছি । আমাকেও তিনি আড়চোখে কয়েকবার দেখেছেন ।

মনে মনে হয়তো বলতেছেন, “এই ছেড়া বাপের জন্মে চিপস খাস নাই?”

কিছু বলার নেই । য়ুহ,,,
খাদ্য ভক্ষন আমার অধিকার । এবং পেটে ক্ষুধা থাকলে চোখে ঘুমও আসে না।

তাছাড়া আমার থেকে ১০/১২ বছরের বয়স্ক কোন মহিলাকে সামান্য চিপস অফার করে ভাব জমানোরও কোন মানে হয় না ।

নো-নেভার।

বিমানের ভিতর এটা শোভনীয়ও নয়।
(কম বয়সি সুন্দরী হলে হয়তো সূত্র চেন্জ হতো ।
তাছাড়া বিমানে যেহেতু মলম পার্টি নাই তাই বাংগালী হলে রিস্ক নিয়ে বলতাম,
“আন্টি, চিপস খাইবাইন?”

আমি চিপস শেষ করে ব্যাগ থেকে ইয়াবড় বিস্কুটের প্যাকেট বের করলাম।
এবার তিনি নিশ্চিত ভেবেছেন আমার বাপ দাদারা রাক্ষস ছিলেন। ভাবে সাবে তেমনি মনে হলো।

কুটকুট করে বিস্কুট খাচ্ছি আর জিহ্বা দিয়ে দাঁতের কোনায় আটকে থাকা বিস্কুট ছোটানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছি। এদিক সেদিক তাকিয়ে কেউ যেনো না দেখে এক/দুইবার আংগুল দিয়ে দন্তকোনার বিস্কুট ছোটালাম । (সবাই তাই করে)।

এবার বিস্কুট ও শেষ হলো।

টান টান হয়ে একটা ঘুম দিবো যখন প্রিপারেশন নিচ্ছি ।

এমন সময়,
ভদ্রমহিলা তার ঝোলা থেকে একটা Doritos চিপসের প্যাকেট বের খাওয়া শুরু করলেন।
লও ঠ্যালা ।

এবার যেনো উনার প্রতিশোধ নেবার পালা।
হয়তো এই চিপসটি তিনি দুই আড়াই ঘন্টা পরে খাবেন বলে ভেবে রেখেছিলেন । কিন্তু না, মোক্ষম সময়ে কিভাবে জবাব দিতে হয় তিনি তা জানতেন।

ভদ্রমহিলা এবার একটা একটা করে, দীর্ঘসময় ধরে চিপস খেতে লাগলেন।
এ যেনো, কেয়ামত চলে আসবে কিন্তু চিপস খাওয়া আর শেষ হবে না।
একটা করে চিপস বের করার সময় প্যাকেটের যে শব্দ হচ্ছিলো তা হিরোশিমায় বোম পরার শব্দকেও হার মানাবে বলে আমার মনে হলো।

চশমার উপর দিয়ে দুই/একবার আমাকে আড়চোখে দেখেছেন।
মনে মনে হয়তো কয়েকবার ব্যাংগ করেছেন-
“দেখ্ হতচ্ছাড়া, কেমন লাগে” ।

এ নিরব যুদ্ধ চল্লো লম্বা সময় ধরে।

বিজয়ী হয়েছেন একটা ভাব তার ভিতর ফুটে উঠেছে আমি স্পষ্টত খেয়াল করলাম।

যুদ্ধে হেরে গেছি এমন ভাব ধরে সিটে হেলান দিয়ে পরে রইলাম। আর কৌশলে দেখতে লাগলাম তার চিপস খাওয়া কখন শেষ হয় ।

পাইলট যখন ঘোষনা দিলেন আর ৩০ মিনিটের মধ্যেই আমরা ল্যান্ড করবো ।

ঠিক তখনি আমি আমার ঝোলা থেকে দুটো আপেল আর বড় সাইজের দুটো কমলা বের করে সিটের সামনে ট্রেতে রাখলাম।

একটা আপলে ছোট্ট করে কামড় দেই আর আস্তে আস্তে করে চাবানি দেই । যেনো খয়ের দিয়ে পান খাচ্ছি । ট্রেতে কামড় দেয়া আপেল রেখে একটি কমলা লেবু খুব স্লো মোশনে ছিলতে লাগলাম। যেনো নকশি কাথাঁ সেলাই করছি।

এ যেনো কমলা লেবুর গন্ধে সুন্দরবনের মৌমাছিরাও রকেট ভাড়া করে এসে এই বিমানে হুমড়ি খেয়ে পরবে।

কি আর করবো বলুন!!

বাংগালী হলে অবশ্য বলতাম,
“আন্টি, কমলা লেবু খাইবাইন?

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৫৩

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: হাহাহ...
গল্পের নামঃ দুই খাদকের হঠাৎ দেখা হলে মন্দ হতো না...
উপভোগ্য ছিলো লেখা...

২| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:২৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: :)

৩| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:১৩

জাহিদ অনিক বলেছেন: বেশ ! আমারাও না হয় নিজ নিজ চেয়ার টেবিলে বসে আপনার সাথে আপেল আর চিপস চাবালুম

৪| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:১৭

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: হাহা, খেতে খেতে প্রতিশোধ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.