নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি এক যাযাবর

Palol

একজন সংবাদ কর্মী, মানুষ ও প্রকৃতির জন্য ভাবিত। সংবাদপত্রে যা লিখতে পারি না, তাই এখানে লিখতে চাই।

Palol › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটা বাস্তব গল্প

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৩০





এক.



আমার কলিগ সোহেল রহমান, বাড়ি রংপুরের পিরগঞ্জে, বিয়ে করেছেন বছর খানেক হল। বউ নিয়ে বাড়ির উঠোনে উঠার আগে প্রথমে কোন কাজটি করেছিলেন,সেই গল্পই বলছিলেন তিনি। আগে থেকেই একটি বকুল গাছের চারা কিনে রেখেছিলেন তার বন্ধু তুল্য ছোট ভাইকে দিয়ে। কথাটি রীতিমত গোপন রেখেছিলেন মা বাবা এমনকি নতুন বউয়ের কাছেও।

ঘরে উঠার আগে বউকে নিয়ে গেলেন আঙ্গীনার কানাচে এক চিলতে ফাকা জায়গায়। আগে থেকেই ঠিক করে রাখা বকুল গাছের চারাটি বউকে দিয়ে লাগালেন সেখানে। পানি দিলেন। নিরাপত্তা বেষ্ঠনী (বেড়া) দিলেন। তারপর বউ কে নিয়ে ময়মুরুব্বীদের সঙ্গে ঘরে ঢুকলেন।

গাছটি এখন বেশ বড় হয়েছে। হয়ত একদিন ফুলের গন্ধে মৌ মৌ করবে চারদিক। একটা অজানা বন্ধন আরো গভীর করে দেবে ওদের সম্পর্ক।



দুই .



অদ্য সাহা, একজন বড় জোতদার, বাড়ি সিরাজগঞ্জের জামতৈলে। একটি বড় মহীরুহ বট গাছের ছায়ায় বসে তার গল্পটি শোনালেন একই এলাকার একজন মুরুব্বী গোছের লোক। তিনি বলছিলেন, বাপু এই বট গাছটি দেখছেন না ? এটা অদ্য সাহার লাগানো গাছ, তার প্রথম পুত্র জন্ম নিলে এই গাছটি লাগিয়েছিলেন তিনি। আর ওই যে কয়েলগাতির রেলক্রসিংয়ের কাছে আরেকটি বড় বট গাছ দেখছেন, ওটা লাগিয়েছিলেন তার দ্বিতীয় পুত্র জন্ম নিলে। আর ওই যে রসুলপুরের পাশের বট গাছটা সেটা তৃতীয় পুত্র জন্ম নেয়ার সময়। এভাবে চারপুত্রের জন্মের সময় চারটি বট গাছ লাগিয়ে ছিলেন তিনি। বাপু এমন যে দিন কাল পড়েছে, আমরা শুধু গাছ কাটতেই জানি।

.......................................................................................



উপরের গল্পটি এতটুকুও গল্প নয়, সবটুকুই সত্য ঘটনা। আমি শুনে পুলক অনুভব করেছি। ভেবেছি আমাদের অনেক সংস্কার রয়েছে, অনেক কুসংস্কার। এমন আরেকটি সংস্কার কিংবা 'কুসংস্কার' রাখলে ক্ষতি কী, যে অদ্য সাহার মত কারো সন্তান জন্ম নিলে কিংবা বিয়ে করলে সোহেলের মত গাছ লাগাতে হবে। এমন বিশ্বাস চারিয়ে উঠলে ক্ষতি কী, এমন ব্যাক্তিজীবণের এমন স্মরণীয় ঘটনায় গাছ লাগালে, বিয়েটা আরো মধুর হবে, কিংবা নবজাতক দীর্ঘ আয়ু পাবে।

ক্ষতি কী বিয়ে কিংবা সন্তান জন্ম কিংবা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটণায় গাছ লাগানোর মত একটা বিষয় আমাদের সংস্কৃতি অংগ হয়ে উঠে?



মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:২৩

আদার ব্যাপারি বলেছেন: আমিও বিয়ের দিন বউকে দিয়ে একটা বকুল গাছ লাগামু। তারপরে ফুল ফুটলে বউয়ের খোপায় বকুল ফুলের মালা দিমু। হে হে মজাই মাজা। :-P :-P :-P :-P

০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৪৪

Palol বলেছেন: আদার ব্যাপারি, যতই হাসেন, বিষয়টি কিন্তু ঠুনকো নয়, এটা দরকার। তবে মজা পাওয়াটা খারাপ না।

২| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৩৭

অর্থনীতিবিদ বলেছেন: আমি আমার গ্রামের বাড়িতে এত গাছ লাগিয়েছি যে বিয়ের দিন আরেকটা গাছ লাগাতে গেলে রীতিমতো গবেষণা করতে হবে স্থান নির্বাচন করার বিষয়ে। আপনার পোস্টের মূল আবেদনটি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে এই কামনা করছি।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৪৮

Palol বলেছেন: জনাব অর্থনীতিবিদ,
আপনার নিজের জায়গাতেই যে গাছ লাগাতে হবে এমন দিব্যিতো কেউ দেয় নাই। অন্যের জায়গায় এমনকি সরকারি জায়গা, চাই কি স্কুল কলেজের ক্যাম্পাসেও গাছ লাগানো সম্ভব।

পোষ্টের মুল আবেদনটি সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করবে--এমন কামনার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

৩| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:২২

অর্থনীতিবিদ বলেছেন: আমার নিজের জায়গায় গাছ লাগাতে হবে এমন দিব্যি কেউ দেয়নি এটা ঠিকই বলেছেন। সরকারি জায়গা, স্কুল, কলেজের জায়গাতেও গাছ লাগানো সম্ভব। সরকারি রাস্তা এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠের পাশে গাছ লাগানোর কিছু অভিজ্ঞতা অবশ্য আমার আছে।

গ্রাম ছাড়ার পূর্বে নদী তীরবর্তী বেড়ি বাধে গ্রামের ছেলেদের নিয়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বেশ কিছু মেহগনি গাছের চারা লাগিয়ে ছিলাম। বেড়া দিয়েছিলাম। সার্বিক পরিচর্যা করেছিলাম। প্রথম দিকে গাছগুলো ভালই ছিল। যত বড় হতো দেখতে ততই ভাল লাগতো। নদীর তীরের উচুঁ জমিতে পর্যাপ্ত আলো বাতাস পেয়ে গাছগুলোর বাড়তে খুব বেশি সময় লাগেনি। আর তারপরই শুরু হল সমস্যা। সরকারি জমি এদিকে আমিও ঢাকায় এ সুযোগে পাশ্ববর্তী গ্রামের কতিপয় প্রভাবশালী মানুষ অধিকাংশ বড় বড় গাছগুলো কেটে নিয়ে গেল। শোনার পরে খুব দুঃখ পেয়েছিলাম। এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কিছু বিব্রতকর অভিজ্ঞতাও হয়েছিল। তবে সুখের বিষয় প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন স্থানগুলোতে লাগানো গাছগুলো ভালই আছে।

প্রকৃতপক্ষে নিজের জায়গায় বা সরকারি জমিতে গাছ লাগানো তথা স্থান গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো বেশি বেশি করে লাগানো এবং এই লাগানোর উপকারিতা বা গুরুত্ব বুঝতে পারার মতো মানসিকতা বা সচেতনতা বা উপযুক্ত শিক্ষা। যখন মানুষ গাছ লাগানোর উপকারিতা বা গুরুত্ব নিজে থেকে অনুভব করতে পারবে তখন আর কাউকে বলতে হবে না। নিজ উদ্যোগেই মানুষ তখন গাছ লাগাবে। আশা করি সেই দিন আর খুব বেশি দূরে নেই যেদিন আমাদের দেশ আবার সবুজে শ্যামলে ভরে উঠবে।

০৬ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৪

Palol বলেছেন: আপনি শুধু অর্থনীতিবিদই নন, একজন প্রকৃতিবিদও বটে। আপনার তিক্ত অভিজ্ঞতার জন্য দায়িরা অর্থাত সমাজের কুতসিত মানুষদের পাশাপশি ভাল মানুষও রয়েছে। এদের সংখ্যা বাড়তে পারে, তখন আপনার দলই ভারী হবে, আমরা সেই দিনের জন্য প্রার্থনা করি। আমার কথা হল গাছ লাগানো হোক, কারণে আর অকারণে। নানা উছিলায়, নানা ছুতোয়, নানা উতসব পার্বণে, শুরু হয়ে যাক কর্মযজ্ঞ। ধর্ম মত সম্প্রদয় ও দল নির্বিশেষে সকলেই এগিয়ে আসুক। আমাদের প্রিয় ধরণীকে বাচাঁতে হবে। আসুন বলি, ঈদে বাড়ি গিয়ে অন্তত একটি ফলের কিংবা বনজ কিংবা ওষুধী গাছ লাগাই। ধন্যবাদ, জনাব অর্ধনীতিবিদ ভাই। আপনার দলই ভারী হোক, আপনার জন্য শুভ কামনা।

৪| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫২

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: আপনার লেখাটা অনেক ভালো লাগলো। ভালো লাগলো উপরের মন্তব্যে লেখা এই অংশটুকু
"আমার কথা হল গাছ লাগানো হোক, কারণে আর অকারণে। নানা উছিলায়, নানা ছুতোয়, নানা উতসব পার্বণে, শুরু হয়ে যাক কর্মযজ্ঞ। ধর্ম মত সম্প্রদয় ও দল নির্বিশেষে সকলেই এগিয়ে আসুক। আমাদের প্রিয় ধরণীকে বাচাঁতে হবে। আসুন বলি, ঈদে বাড়ি গিয়ে অন্তত একটি ফলের কিংবা বনজ কিংবা ওষুধী গাছ লাগাই।"



ভালো থাকুন প্রিয় ব্লগার। শুভকামনা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.