| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পীর হাবিরূর রহমান
রাজনৈতিক বিশ্লেষক। নির্বাহি সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন
'শেখ ফজলুল হক মনি কিলড, সিরাজুল আলম খান আনট্রেস, আবদুর রাজ্জাক ডেড অ্যান্ড তোফায়েল আহমেদ হাফডেড।' কথাটি এক প্রাণবন্ত আড্ডায় বললেন রাজনীতির জীবন্ত কিংবদন্তি তোফায়েল আহমেদ। শনিবার রাতে মেহেরপুর থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান তার বাসভবনে এক নৈশভোজে ডেকেছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পংকজ সরেনকে। দাওয়াত করেছিলেন রাজনীতিবিদ আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, প্রখ্যাত সাংবাদিক ও টিভি উপস্থাপক মতিউর রহমান চৌধুরী, চ্যানেল আইয়ের টকশো তৃতীয় মাত্রার উপস্থাপক জিল্লুর রহমান প্রমুখকে। রাজনীতিবিদ আর সাংবাদিক, সঙ্গে বন্ধুপ্রতিম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের কূটনীতিক এক জায়গায় বসবেন আর শুধু নৈশভোজে রাত গভীর হবে তা কি হয়? আর সেই আড্ডায় রাজনীতির চালচিত্র ঠাঁই পাবে না তাও ভাবা যায় না। আড্ডাপ্রিয় বাঙালির রাজনীতিবিদদের সঙ্গে যদি আসন নেন তোফায়েল আহমেদ তাহলে তো কথাই নেই। আড্ডায় আর কারও ফ্লোর পাওয়ার সুযোগইবা কই! তাই শনিবার রাতের এই হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশের মনখোলা কথাবার্তা, হাসিঠাট্টা মিলিয়ে জমে ওঠা প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যমণি হয়েছিলেন তারকা রাজনীতিবিদ তোফায়েল আহমেদ। যার হাত ধরে বরিশাল বিএম কলেজে উত্তাল ষাটের শুরুতে তোফায়েল ছাত্রলীগ রাজনীতির তালিম নিয়েছিলেন সেই আমির হোসেন আমু মাঝে মধ্যে সুর ধরিয়ে দিচ্ছিলেন। শুনছিলেন বেশি আর বলছিলেন কম। বাকিরা সবাই দারুণ উপভোগ করলেন প্রাণবন্ত আড্ডা। হাসানুল হক ইনু গল্পে গল্পে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাথা নিয়ে বললেন, আমাদের মুজিব বাহিনীর চার প্রধানের মধ্যে তোফায়েল ভাই-ই আছেন। মনি ভাই, রাজ্জাক ভাই মারা গেছেন। সিরাজ ভাই থেকেও নেই। এই বক্তব্যের জবাবে তোফায়েল তার স্বভাবসুলভ কায়দায় তাকেসহ বাকিদের নিয়ে ওই মন্তব্যটি করেন। এর আগে একবার তোফায়েল এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন তার অতীত আছে, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নেই। তাই অতীত স্মৃতি রোমন্থন করেন। শুনে জবাবে তার বন্ধু আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছিলেন, তোফায়েল কোরআনে হাফেজ হলেও অর্থ জানেন না। তিনি অর্থ জানেন। ভবিষ্যৎ আছে কিনা তা বলবেন আল্লাহ। তোফায়েল নন। তোফায়েলের ভবিষ্যৎ কী লেখা আছে তা তার জানার কথা নয়। আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান কেবিনেট ও নেতৃত্ব নিয়ে কথা উঠলে তোফায়েল আহমেদ ফের ফ্লোর নিয়ে বলেন, আমাদের সরকারের মন্ত্রীরা নিষ্কলুষ। বিতর্কমুক্ত। যদি আমাকে মন্ত্রী করা হতো তাহলে দেখা যেত কেউ পক্ষে, কেউ বিপক্ষে আছেন। আমু ভাইকে মন্ত্রী করলেও একই অবস্থা। তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, এম কে আনোয়ার, ড. মোশাররফ হোসেন সবার বিরুদ্ধে মামলা আছে। যদিও তারা পণ্ডিত, জ্ঞানী মানুষ ও সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য সতীশ চন্দ্র রায়, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনরা ফুলের মতো পবিত্র। তাদের নামে কোনো মামলা নেই। তোফায়েলের রসিকতায় তখন সবাই হাসতে হাসতে রীতিমতো গড়াগড়ি খান। একজন বলেই উঠেন 'লা জবাব'। তোফায়েলের জবাব নেই। পংকজ সরেনও আনন্দঘন আড্ডাটি দারুণ উপভোগ করলেন।
©somewhere in net ltd.