নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগ আমার ইচ্ছা ফেসবুকে আমি https://goo.gl/MsyCIb

রুদ্র রিটার্ন

রুদ্র রিটার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভ্যাটের গল্প

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২১

পুলিশের গাড়ির সামনে ছেলেটি ব্যানার নিয়ে কাঁপা কাঁপা পায়ে দাঁড়িয়ে রইলো ..
মোটা ফ্রেমের চশমা পড়া, ছোট চুল, গোল গাল চেহেরা দেখলেই বুঝা যায় এই ছেলে কখনো আন্দোলনে আসে নি।অবস্থা বেগতিক হলে যে উল্টা দৌড় দিতে হয় সে সম্পর্কে আইডিয়া নেই। এই ধরনের ছেলেগুলো সাধারনত ফার্মের মুরগীর বাচ্চার মত থাকে, ঝামেলা এড়িয়ে চলে।এই ছেলের ত ব্যানার হাতে আন্দোলনে আসার কথা না, তাহলে?
.
ইয়াজউদ্দীন সাহেব ছেলেটার দিকে তাকিয়ে রইলেন। কি করবেন তিনি বুঝতে পারছেন না। প্রচন্ড বিরক্ত লাগছে তার। আজকে ডিউটিতেই আসতেন না। প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করছে। দীর্ঘদিনের সঙ্গি এই মাথা ব্যাথা।বহু ডাক্তার দেখিয়েছেন। কেউই সমস্যাটা ধরতে পারেন না।কোনো অষুধই কাজ করে নাহ। কাল বিকেলে তাঁর শালাবাবু খবর দিলেন খাগড়াছড়িতে নাকি এক পীর আছেন.... মৃত্যু পথযাত্রী মানুষকেও ফিরিয়ে আনেন। সেখানে একবার শেষ চেষ্টা করা যেতে পারে ..
ইয়াজউদ্দিন সাহেবের উপর অর্ডার এসেছে এখানে ছত্রভঙ্গ করতে হবে। তিনি তার ব্যাটেলিয়ন নিয়ে এসেছেন। লাঠি চার্জ চলছে। দরকার পরলে রাবার বুলেট চালানো হবে। সবাই যেদিকে পারছে ছুটে পালাচ্ছে কিন্তু এই ছেলে দাঁড়িয়ে আছে কেনো?
তিনি ছেলেটাকে দাঁত মুখ খিচিয়ে একটা হুংকার দিবেন ভাবলেন। তার দীর্ঘদিনের পুলিশের অভিজ্ঞতায় দেখেছেন এই ধরনের ছেলেগুলো ধমকেই কাবু হয়ে যায়।আর এই ছেলে ভয়ে কাতর হয়ে আছে। হুংকারই যথেষ্ঠ।
তিনি তার পুলিশি গলায় গম্ভীর ভাবে বললেন, 'কি রে ! কি চাস ? দৌড় দে নইলে গুলি করবো '
বলেই চমকে উঠলেন, তার গলার স্বর নিজের কাছেই অপরিচিত ঠেকছে।
কিন্তু ছেলেটা অনড়।সম্ভবত ভীষণ ভয় পেয়েছে। দৌড়াতে পারছে নাহ।
হঠাৎ করেই ইয়াজউদ্দীন এর তার নিজের ছেলের কথা মনে পড়ে গেলো। এই ছেলের সাথে ভালোই মিল আছে। গোলগাল চেহারা, মোটা ফ্রেম, হালকা দাড়ি.. ছেলেটার নাম কি?
একটু হালকা কথা বার্তা বলে ছেলেটাকে সহজ করে নেওয়া যাক।
.
তিনি জিজ্ঞেস করলেন, "এই তোমার নাম কি?"
ছেলেটা ভয়ার্থ গলায় ভীর ভীর করে কি যেনো বললো।স্পষ্ট না। ছেলেটা ভালোই ভয় পেয়েছে। তিনি আরেকটু কাছে এগিয়ে গেলেন শোনার জন্য। ছেলেটা আবারো বললো 'আমাকে গুলি মারবেন না প্লিজ, আমি বাঁচতে চাই '
"এই ছেলে তোমাকে আমি গুলি মারবো না, ভয় দেখাচ্ছি শুধু। আন্দোলনে আসছো কেনো? কোন ভার্সিটির তুমি? "
'আমি ভার্সিটির না কলেজের ছাত্র '
ইয়াজউদ্দিন সাহেব চোখ কপালে ঠেকলো। বলে কি এই ছেলে, কলেজে পড়ে এই পুচকা আন্দোলন করতে এসেছে কেনো? টাকার বিনিময়ে এসেছে নাকি? ইয়াজউদ্দীন সাহেবের মনটাই খারাপ হয়ে গেলো। ছাত্রদের কাজ হচ্ছে পড়াশুনা করা, তা না করে তারা এখন আন্দোলন ফান্দোলন করব বেড়ায়, এই দেশ টার হবে কি?
তিনি গম্ভীর গলায় বললেন, "শোনো বাবা, এখন হচ্ছে পড়াশুনার সময়। পড়াশুনা করে ভালো চাকরী করে বাবা-মা এর মুখ উজ্জ্বল করবা। কেনো শুধু শুধু নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলনে আসো? এই আন্দোলন করে কি লাভ হবে? একটা গুলি খেয়ে গেলে তোমার কি অবস্থা হবে জানো? এইগুলা না করে বাসায় যাও পড়াশুনা করো "
.
ছেলেটা এইবার ধীরে কিন্তু দৃঢ় কণ্ঠেই বলে উঠলো, ' আমি আমার আব্বা আম্মার একমাত্র ভরসা। পড়া শুনা শেষে সংসারের হাল ধরতে হবে। যা অবস্থা শুরু হয়েছে আর পড়াশোনা করা লাগবে না।এমনিতেই আমার আব্বা আম্মা মারা যাবেন, এরচেয়ে ভালো আমিই আগে গুলি খেয়ে মারা যাই, সাহস থাকলে মারেন গুলি...আমি আমার দাবী না মানা পর্যন্ত নড়বো নাহ ''
.
ইয়াজউদ্দীন সাহেব বলার মত কিছু খুঁজে পেলেন নাহ .. .. তিনি তাকিয়ে আছেন ছেলেটার দিকে .. ছেলেটাকে এখন তার ভয় লাগছে .. কেমন মায়া মায়া চেহেরার মাঝে একটা কঠিনত্ব আছে ..ছেলেটাকে এখন মোটেও ভীতু মনে হচ্ছে নাহ ..সে অটল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, তার দাবী মানার আগ পর্যন্ত সে তার জায়গা থেকে সরবে নাহ।
.
আশে পাশে তাকিয়ে পকেট থেকে বেরেটা নাইন্টি টু রিভালবার টা বের করলেন তিনি। চোখগুলো ঝাপসা হয়ে এসেছে ... কিছু করার নেই, অর্ডার এসেছে জায়গা ক্লিয়ার করতেই হবে।
**
... এটা একটি কাল্পনিক কাহিনি। এই কাহিনির প্রেক্ষাপট ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন নাকি ২০১৫ সালের ভ্যাটের বিরুদ্ধে আন্দোলন তা ইয়াদ নাই আমার .. .
কার্টেসি - Nahid Ashraf
লিংক- Click This Link

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৭

শায়মা বলেছেন: এই ছেলেকে মারলে কিন্তু পুলিশের খবর আছে! X((

২| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৯

রুদ্র রিটার্ন বলেছেন: একটা মরবে আরো হাজার এমন দাঁড়াবে

৩| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৮

জেকলেট বলেছেন: ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি নামের একটা প্রভাব থাকে আমাদের মাননীয় অর্থমন্ত্রীর কাজ কারবার দেখে তার হাতেনাতে প্রমান পেলাম।

৪| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৮

ফাহাদ মুরতাযা বলেছেন:



বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভ্যাট দিতেই হবে বলে জানিয়েছেন সজিব ওয়াজেদ জয়। উনি বলেছেন, "দেশের ৮৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পড়া লেখা করে সরকার তাদের জন্য কোন ধরেন ভর্তুকি দিবে না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তুকি দিলে এটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেয়ার হোল্ডারদের পকেটে চলে যাবে। শিক্ষার্থীদের কোনো লাভ হবে না।"

উনি তো দেখি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে কোন ধারণাই রাখেন না, অথবা না জেনে-শুনে সবাইকে বিভ্রান্ত করতে ভুল তথ্য দিয়েছেন। সঠিক তথ্য হচ্ছে, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার কোন ভর্তুকি দেয় না। বরং শিক্ষার্থীদের বেতনের ওপর যে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে- তার পূর্ন নাম 'Value-Added Tax' বা 'মূল্য সংযোজন কর'। ২০টাকা কেজি আলু কিনে তা ১১০টাকা কেজি সয়াবিন তেলে ভেজে ফার্স্টফুডের দোকানে যখন সেই পটেটো চিপস ১২০০টাকা কেজি দরে বিক্রী করা হয় তখন এই সযোজিত মূল্যের ওপর ভ্যাট ধার্য করা হয়। শিক্ষা কী পটেটো চিপসের মত পন্য? বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কী ফার্স্টফুডের দোকান? এখানে মিথ্যা ভর্তুকির দোহাই দিয়ে উনি কেমন করে ভ্যাট বসানোকে বাধ্যতামূলক করে দিচ্ছেন?

উনি না আমাদের তরুন প্রজন্মকে নিয়ে 'ইয়ং বাংলা' গড়েছেন? এই তার আসল চেহারা? যেহেতু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন সরকারী ভর্তুকী দেয়া হয় না, তাই তার লাভের ভাগ তো কখনোই শিক্ষার্থীদের পকেটে আসার সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু উনার আরোপ করা এই ভ্যাটের টাকা তো আমাদের মত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পকেট থেকেই দিতে হবে। উনি আমাদের লাভ না দেখলেও লোকসানটা ঠিকই বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন। ৮৩টি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৭৫টিই মধ্যবিত্ত আর নিম্ন মধ্যবিত্তদের উচ্চ শিক্ষার বিকল্প প্রতিষ্ঠান। এখানকার প্রায় ৭৫% শিক্ষার্থী প্রাইভেট ট্যুশনি করে বা খণ্ডকালীন চাকরী করে বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ জোগাড় করে। তাদের ওপর বছরে আরো ৩০/৪০ হাজার টাকার বোঝা চাপিয়ে দিয়ে উনি কেমন কাজ করলেন?

উনি কী তাহলে আমাদের পকেট কাটা জবরদস্তি ভ্যাটের টাকা দিয়ে উনার 'ইয়ং বাংলা' চালাবেন? সেইক্ষেত্রে উনার ইয়ং বাংলায় বাংলাদেশের ৯৫% তরুণের কোন অংশদারিত্ব থাকবে না।

-ড. সাকিল আল মামুন।
১. সরকার কোনদিনই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা এর শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তুকি দেবে না জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

আর এটা ভোরের কাগজের লিঙ্ক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.