![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঢাকায় আসবো,বাস কাউন্টারে বসে আছি। অনেক
ভিড়,অনেকে দাঁড়িয়ে আছে।
ফ্যানের বাতাসে কাজ হচ্ছিলো না
দেখে বেরিয়ে আসলাম। কাউন্টারের
সামনে আসতেই জবার সংগে দেখা
হয়ে গেলো।
অনেক দিন পর দেখা, হাই স্কুলের শেষ
বর্ষে দেখা হয়েছিলো শেষবারের মত।
আজ আবার অনার্সের শেষ বর্ষে দেখা
হয়ে গেলো।
স্কুলের পর কখনো কথা হয়নি, অন্য সব
বান্ধবির সংগে যোগাযোগ হলেও
জবার সংগে কখনো যোগাযোগের
চেষ্টাও করিনি কিন্তু আজ হঠাৎ দেখা
হতেই কথা বেরিয়ে গেলো।
কত চেঞ্জ হয়ে গেছে। আগে তুফানে
উড়ে যাওয়ার মত ওজন ছিলো,এখন
স্বাস্থ্যবান হয়ে গেছে।
চোখের চশমা হাতে ছিলো তাই তার
সিঁথির সিঁদুরে চোখ পড়েনি প্রথমে,
চশমা পড়ে সেটা দেখে অবাক হয়ে
গেলাম।
জবা আর আমি মুখোমুখি। ছয় বছর পর জবার
সেই রাগ আর নেই, হাসিমুখে কথা
বলতেছে। কাউন্টার থেকে বলেছে
বাস আরও দু ঘন্টা পর ছাড়বে।
জবা তার স্বামীর সংগে পরিচয় করে
দিলেন। দেখে সরল সিধে মনে হলেও
অনেক উচ্চ শিক্ষিত তবে শিক্ষার ভারে
গোমরা মুখো হয়ে পড়েন নি। দু মিনিট
কথা বলেই ভাব জমে গেলো ।
উনি চা খাওয়ার রিকুয়েস্ট করতেই accept
করে ফেললাম।
রাস্তার পাশে বনলতা হোটেল,
সেখানে বসে আড্ডা জমে উঠলো।
বান্ধবির বর বললেন,"তোমাকে কি
শালা বলবো নাকি প্রতিদ্বন্দ্বী বলবো?
"
-শালা বলবেন, প্রতিদ্বন্দী বলতে
যাবেন কোন কারণে?
বলেই বান্ধবির দিকে তাকালাম। সে
মিষ্টি হেসে বললো ভুলে গেছো সব
কিছু?
- না, না সে ভোলে নি, বলতে লজ্জা
করতেছে। শেষে যদি আমি রাগ করি।
আমার বউয়ের প্রথম প্রেম যে,তাকে প্রতিদ্বন্দ্বী বললে বলা যায়। এখনো তোমার গল্প করে, তোমার কবিতা পড়ে পড়ে শুনায়।
রাহুল দা বলে উঠলেন।
জবা আমাকে এখনো মনে রেখেছে, আমার সেই কবিতাগুলো যেগুলো এখন পড়লে হাসি পায় সেগুলো সে সংরক্ষণ করেছে? শুনে বিস্মিত হয়ে গেলাম।
জবার সংগে যা ঘটেছিলো সব মনে আছে তবুও বলতে লজ্জা লাগে।
জবা আর প্রিয়া,ক্লাসের সেরা বান্ধবি জুটি। জবা আর প্রিয়া প্রায় একসংগেই
বসতো। প্রিয়া কে সেই প্রথম দিন থেকে
ভালো লাগতো, তাই প্রিয়া যে
বেঞ্চে বসতো তার সমান্তরালে
বসতাম। প্রিয়া হয়তো বিষয় টা বুঝতো কিন্তু
কিছু বলতো না। মাঝে মাঝে হাসি
দিতো, আমিও হাসতাম। কখনো কখনো
চোখ মারতাম। এভাবেই অনেকদিন
কেটে গেছে, স্কুলের কড়াকড়ি নিয়মের
কারনে প্রিয়ার সংগে কখনো কথা
হয়নি ।
স্কুলের শেষ দিন,
সকলে কাজে ব্যস্ত। রোদে আরিফের
সংগে বসে আছি,এমন সময় জবা সামনে
এসে দাড়ালো।
- কিছু কথা ছিলো তোমার সংগে।
- বলো
-সাইডে চলো
- না এখানেই বলো
তবুও জোরাজুরি তে সাইডে যেতে
হলো।
জবা বললো - সে লক্ষ্য করেছে আমি
তাকে অনেকদিন যাবত ফলো করি, চোখ
মারি কিন্তু সাহস করে কখনো বলতে
পারিনি।
শুনে থ হয়ে গেলাম, খুলে বললাম
প্রিয়ার বিষয়ে। সে বিশ্বাস করলো
না,একটা চিরকুট দেখিয়ে বললো আমি
তাকে মেরেছিলাম, যেটা তে
ভালোবাসার কথা আছে।
আমি প্রিয়া কে মেরেছিলাম, কিন্তু
জবা পেয়েছিলো। ভেবেছিলাম জবা
কে প্রিয়া সব বলেছে কিন্তু ভুল ধারণা
ছিলো।
যাই হোক, জবা কে ফিরিয়ে
দিয়েছিলাম। জবার সংগে তারপর আর
কথা হয়নি।
রাহুল দা গল্প শুনে হেসে গড়াগড়ি দেওয়ার মত অবস্থা। তিনি রবির ফ্রি wifi এর বিজ্ঞাপনের কথা টা মনে করে দিলেন। বিজ্ঞাপনের মেয়েটা ছেলেটা কে ভুল বুঝেছিলো।
রাহুল দা তার স্কুলের কিছু মজার গল্প
শুনালেন, কিছু জ্ঞানগর্ভ আলোচনা
করলেন। বললেন ছোটবেলায় এসব ঘটেই।
বাস ছেড়েছে, আজ আবার জবার সংগে
সমান্তরালে বসে আছি।
তারা দুজন গল্প করতেছে,জবা
হাসতেছে। আজ জবা কে সুন্দর
লাগতেছে। বাতাসে জবার চুল উড়ে কপালে আসতেছিলো,রাহুল দা বার বার ঠিক করে দিচ্ছিলেন। রাহুল দা কে হিংসে হচ্ছে ।
তাদের সুখ সহ্য হচ্ছিলো না দেখে চোখ
বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করতেছিলাম। কিন্ত বার বার প্রিয়ার ছবি ভেসে আসতেছে। প্রিয়াও হয়তো কারো সংগে এমনই
হাসাহাসি করতেছে।
©somewhere in net ltd.