![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই ব্লগে এটা আমার প্রথম লেখা। আশা করি সবার ভাল লাগবে।
আজকের সমাজে আমরা যারা দু কলম পড়েছি , তারা সবাই তসলিমা নাসরিন কে চিনি। এমন ও আবার হতে পারে আমরা অনেকেই তসলিমা নাসরিনের বই পড়েছি। কিন্তু তসলিমা নাসরিনকে চেনা বা জানা টা কোন অপরাধ নয়, অপরাধ হল তার রচিত কিছু ইসলাম বিরোধী ও নারী বাদী বই কে সমর্থন দেওয়া। যাইহোক একজন মুসলিম হিসেবে আমি ও তসলিমা নাসরিনের ইসলাম বিরোধী কথাবার্তা সমর্থন করি না। তবে নারী হয়ে ও তসলিমা নাসরিন নারীদের নিয়ে কিছু কিছু বই লিখেছে, যা আমাকে ভাবতে শিখিয়েছে। ধন্যবাদ,লেখিকা তসলিমা নাসরিন। যদি ও আমি পুরুষ তারপর ও বলছি, তসলিমা নাসরিনের অশ্লীলতায় পরিপূর্ণ এই সব নারী বাদী বইয়ের কিংবা গল্পের কিছু মৌলিক এবং ইতিবাচক দিক রয়েছে। লেখিকার এই ধরনের বই যেমন একদিকে আমাদের সমাজে ঘঠে যাওয়া কিছু ঘটনা আলোকপাত করে,অন্যদিকে মেয়েদের কে দেখিয়ে দেয় নিজেদের দূর্বলতা। পশ্চিমা দেশগুলো ছোট ছোট পোশাক পরে অর্ধ নগ্ন, পক্ষান্তরে আমরা সম্পূর্ন পোশাক পরিধান করে যে অর্ধ নগ্ন, সে কথাটি লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরাই মনে হয় তসলিমা নাসরিনের অপরাধ। যদি ও আমার লেখার বিষয় তসলিমা নাসরিন নয়, বর্তমান সমাজের নগ্নতা, তবু এই বিষয়ে লিখতে গিয়ে দূর্ভাগ্যক্রমে আমার লেখায় বার বার তাকে টেনে নিয়ে আস্তে হচ্ছে। একটু ভেবে দেখুন! কি হচ্ছে আমাদের সমাজে,দেশে ও বিশ্বে। আমি পুরুষ হলে ও নারীর গর্বে জন্মেছি। এই দেশের মেয়েরা আমার ও মা-বোন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রেখে আমাকে বলতে হচ্ছে, আমরা কেউ কি ভেবেছি? শতকরা কত জন মেয়ে স্বতী! কত জন মেয়ে বিয়ের আগ পযর্ন্ত তাদের কুমারীত্ব রক্ষা করতে পেরেছে বা করেছে! হয়তো আমার এই কথাটা ,আমার মা বোন –প্রতিবেশী সহ প্রতিটি নারীকে কষ্ট দিবে কিংবা অনেকেই আমাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করবে। আমি অবশ্যই ,কার কথাই কষ্ট নিব না, কারন আমি আল্লাহ পাকের পবিত্র কালামে বিশ্বাসী। পবিত্র কুরানের সূরা আন নূর এর বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ রব্বুল আলামিন বলেছেন, ……নিশ্চয় ব্যবিচারী পুরুষের জন্য ব্যবিচারি নারী । সুতারাং আপনাদের কাছে আমার একটা অনুরোধ, এই কথাটা জীবনের প্রতিটিক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করবেন। আমার প্রশ্ন ছিল, কতটা মেয়ে বর্তমানে সতীর্ত্ব বা কুমারীত্ব রক্ষা করতে পারে? পারবেই বা কিভাবে? যেখানে ঘর থেকে শুরু করে পোশাক পরিচ্ছদে নেই ইসলামের বিন্দু মাত্র চিহ্ন! চলাফেরাই নেই কিঞ্ছিত পরিমান রেওয়াজ। একটা বিষয় আমাদের সবার জানা থেকে ও অজানা! তা হল- আগুনের স্পর্শে মোম গলে যায়। যেখানে দুইজন ছেলে-মেয়ে, যুবক-যুবতী,তরুণ-তরুণী বা নারী-পরুষের একসাথে চলাফেরাই কোন বিধি-নিষেধ নেই,সেখানে কিছুটা অনৈতিক কর্মকান্ড ঘঠে যাওয়াটা আগুনে মোম গলে যাওয়ার নামান্তর। প্রতিটি মা-বাবার কাছে আমার প্রশ্ন! আপনি কি একবার ও খবর নিয়েছেন? আজ সারাদিন আপনার ছেলে বা মেয়েটি কোথায় ছিল? তারা কি আজ নামায আদায় করেছে? তাদের আজকের কর্মঘন্টা কি ছিল? সমাজে যতদিন আমরা মা-বাবারাই এই সব নৈতিক দায়িত্ব বোধ সম্পর্কে সচেতন হব না, ততদিন পযর্ন্ত সমাজ থেকে পোশাকের আড়ালে ঘটে যাওয়া যৌনতার উচ্ছেদ করতে পারব না।
বর্তমানে আমাদের সমাজে কিছুটা ন্যায়-বিচারের প্রভাব লক্ষ্যনীয়। অবিবাহিত কোন মেয়ের গর্ভে যখন সন্তান আসে তখন একশ্রেণীর নির্লজ্জ্ব মা-বাবা বিচারের জন্য গ্রামের অভিভাবকের কাছে ছুটে যায়, কারন , অমুকের ছেলেটা তার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দিনের পর দিন ভোগ করেছে। গ্রামের প্রতিনিধিরা ও বিচার করেন, হয় বিয়ে , না হয় ৫০০০০ টাকা জরিমানা! আমি এমন মা-বাবাদের প্রশ্ন করতে চাই, আপনারা এত দিন কোথায় ছিলেন? অমুকের ছেলের সাথে বিয়ের আগে আপনার মেয়ের কিসের সম্পর্ক ছিল? একটা যুবক ছেলের সাথে একটা যুবতী মেয়ের কিসের সম্পর্ক তা কি কখন ও মনে প্রশ্ন জাগেনি? এমন মা-বাবাদের সংখ্যা ও কম নেই যাদের উত্তর, হ্যা, আমরা জানতাম ওদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। এ কেমন বন্ধুত্ব! আপনারা কি কখন ভেবেছেন? যে ছেলে বা মেয়ের সাথে আপনার সন্তানের সম্পর্ক,তার মধ্যে বন্ধুত্বের কয়টি গুন ছিল? তার পরিবার কি নামাজী ছিল? এখন বলছেন অমুকের ছেলে প্রলোভন দেখিয়ে.........। আহা রে, আমার সমাজ ব্যবস্থা! হায় রে আমার মা-বাবা! আমরা নিজের ছেলে মেয়েদের পোশাকের অন্তরালে নগ্ন দেখতে ভালবাসি। আমরা পোশাক নামের পর্দা ব্যবহার করি কিন্তু নৈতিকতার পর্দা মানি না! আমাদের লেখিকা তসলিমা নাসরিন হয়তো মেয়েদের পোশাক নামের পর্দা থেকে বের হতে বলেছেন, কিন্তু নৈতিকতার পর্দা থেকে কখনোই বলেনি। জাগো গো ভগিনী বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত মেয়েদের ঘর হতে বের হতে বলেছেন, কিন্তু শালীনতার পর্দা থেকে বলেনি। এমন কোন মা-বাবা আছেন কী, যারা জানেন না ছেলে-মেয়ের বন্ধুত্ব মানে প্রেম-ভালবাসা? জানেন,জানলেও বুঝেন না! কিংবা বুঝে ও সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন। দু-টা বিপরীত লিঙ্গের মধ্যে সম্পর্ক মানে বন্ধুত্ব তা ভেবে নেওয়া টা বোকামি মাত্র, প্রেম-ভালবাসার ও হতে পারে! বর্তমানে আমাদের দেশে প্রচলিত প্রেম-ভালবাসাই যৌনচার,যা আমরা পোশাকের আড়ালে ঢেকে রাখি।
আমি শুধু শুধু মা-বাবাকেই অপরাধী বলে যাচ্ছি, কিন্তু আমাদের দেশের যে সব ছেলে মেয়ে এই সব অপকর্মে লিপ্ত তাদের মানসিক অবস্থা আর ও মারাত্নক রোগে আক্রান্ত। আমি তাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি, যারা ভেবেছেন, পোশাক ঢাকা নগ্ন দেহ” হয়তো যৌনতার ভিডিও ফুটেজের মত হবে! কিন্তু আমি পারলাম না। কারন, আমি বাহ্যিক পোশাকের কথা না বলে মানসিক ধ্যান ধারনার কথা বলছি। এই ধারায় নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের তুলনা হয় না, কারন তিনিই পারেন , লেখনীর মাধ্যমে বর্ণনা করতে কিভাবে নিজের দেহের উপর দিয়ে বয়ে গেছে প্রতিটি লোহ দন্ডের ঘাত। দায়িত্বহীন স্বামী কিভাবে নিজের স্ত্রীকে ভোগ করে, কতটা ভোগের বস্তু হিসেবে কাত-চিত করে নিজের কামনা চরিতার্থ করে। এই সাহসের কাজটি নিজ গুনে করেছেন তসলিমা নাসরিন, যা অন্য নারীদের পক্ষে আজ অবধি সম্ভব হয়ে ওঠেনি। কেউ একজন কি বলতে পারেন তসলিমা নাসরিনের এই কথা গুলো মিথ্যা? আসলে আমাদের সমাজের প্রতিটা নারী এই সমস্যায় ভুক্তভোগী! অথচ কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না। এর জন্য আমি দায়ী করব বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা ও নারীদের নৈতিকতা। নারীরা আজ নিজেদের পুরুষের ভোগের বস্তু ও বাজারের পন্য বানাতে ভালবাসে। নিজেদের অজান্তে এক অঘোষিত প্রতিযোগিতায় নেমেছে, কিভাবে পশ্চিমা পোশাক ও সাজে বেশি বেশি পুরুষের মন পাওয়া যায়, নিজের দেহ কে কতটা মূল্যহীন করে পুরুষের অর্থকে আপন করা যায়, কতটা একাকী গোপনে সময় দিলে চরিত্রহীন লোকটির মন পাওয়া যায়। এই ধরনের মনমানসিকতার জন্য নারীরা আজকের সমাজে প্রতি পদে পদে বিভিন্ন দূর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে। বোন,আপনারা কি একবার ও ভেবে দেখেছেন? যে ছেলেটার মিষ্টি কথায়,টাকা-পয়সা ও গাড়ি বাড়ির লোভে তার প্রতি ধাবিত হচ্ছেন, তার চরিত্রটা কেমন? সেকি রাতের শুক পাখির মত যৌবনের তাডানায় আসে আবার যৌবনের স্বাদ মিঠালেই ফু মেরে চলে যায়? হে বোন নিজেকে পর্দা থেকে আলাদা করি ও না। এটিই তোমার জীবনের একমাত্র স্বাদ, সম্বল আর কিছুই নেই। পতিতালয় থেকে যেমন একজন পতিতা বা বৈশ্যা এনে যদি জনসন্মুখে বলা হয়, কে এই মেয়েটিকে বিয়ে করবে? তখন যেমন কোন লোক পাওয়া যাবে না, তেমনি কাপডের আড়ালে যদি কেঊ নিজেকে বৈশ্যা বৃত্তির পেশায় নিয়ে যায় তার পরিনাম ও ভাল হবে না।
আমাদের দেশের বর্তমান কিছু জনপ্রিয় রেডিও অনুষ্ঠানের নাম “ জীবনের গল্প, যাহা বলিব সত্য বলিব,লাভ গুরু” ইত্যাদি। এই সব অনুষ্ঠানের শ্রোতার অভাব নেই! কারন, এখানে বর্ণনা করা হয় বিভিন্ন যৌনচারের কাহিনী। কি চমৎকার অনষ্ঠান! একটা মেয়ে বা ছেলে অনায়াসে বলে যচ্ছে, কিভাবে একের পর এক অন্যের সাথে অবৈধ শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হয়েছে। বর্ণনাকারীকে থামিয়ে দিয়ে মাঝে মাঝে আর জে নামের লোকটি যাবতীয় বেহায়াপনার পোশাক পরে খুলে দেয় কথার রসের ঝুড়ি। প্রথমে কে কার দেহে হাত দিল? প্রথম চুম্বনটা কে করেছিল? প্রথমবার মিলনে যে কষ্ট পেয়েছেন, পরের বার ও কি একই কষ্ট পেয়েছেন? আপনি কি জানতেন না,সে প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিল কি নেয় নি? হায় রে মানুষ! যেখানে পবিত্র কুরানে এসেছে, তোমরা নিজেদের পাপ কর্ম গুলো ঢেকে রাখ যেন কেউ জানতে না পারে, এছাড়া ও একে অন্যের দোষ ত্রুটি গোপন করার কথা বলা হয়েছে। সেখানে আমরা সরাসরি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিশ্বকে জানাচ্ছি, নিজের ও প্রতিবেশীর অনৈতিক যৌনতার কথাবার্তা। যাইহোক, আমাদের মনের অজান্তে নির্লজ্জ্বভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তরুন সমাজের কাছে পৌছে যাচ্ছে এই সব যৌনতা। যুব সমাজ এখন থেকে শিখে নিচ্ছে, মেয়েরা হল; শুধু মাত্র ভোগের বস্তু, কিছুটা অর্থের বিনিময় তাদের দেহটা ভোগ করা যায়। তাই দেখাযায়,সমাজের এমন কিছু পরিবার আছে যাদের সংসার চলে নিত্যদিনের সামান্য উপার্জন দিয়ে অথচ ঐ পরিবারের উঠতি বয়েসের ছেলেটার চলাফেরা যেন রাজপুত্র! যে সময় ছেলেটার পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার কথা সেই সময় বিভিন্ন মিথ্যা কথা বলে মা-বাবার কাছ থেকে আদায় করে নিজেদের মাস্তি মারার টাকা। এমন কি প্রয়োজনে টাকার জন্য জড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন অপকর্মে।
মোটকথা, আমদের দেশে রেডিও সমূহের এই ধরনের অনুষ্ঠান প্রচারের ক্ষেত্রে কোন ধরাবাধা নিয়ম নেই। রেডিওর এই ধরনের অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের উপর মহলের ও কোন মাথা ব্যাথা নেই বলা চলে। অন্তত;জাতির ভবিষ্যতের কথা ভেবে,রেডিওর মাধ্যমে যেন আর কারো যৌনতা প্রকাশ না পায় সে ব্যবস্থা করা উচিত। আমার দৃষ্টিতে পর্নোগ্রাফি এবং এই ধরনের অনুষ্ঠানের কোন পার্থক্য আছে বলে মনে হয় না। আমি বলে হয়তো “পোশাক ঢাকা নগ্ন দেহ” প্রবন্ধ লিখে আপনাদের মন রক্ষা করতে পারলাম না। এই ধারার লেখিকা তসলিমা নাসরিন হলে আর ও ভাল লিখত। কিন্তু একটা কথা মনে রাখবেন,তসলিমা নাসরিনের বই মানেই যৌনতা বা নগ্নতার পান্ডুলিপি নই, সমাজের পর্দার আড়ালে মেয়েদের উপর ঘটে যাওয়া নির্যাতন প্রকাশই তার লেখার অন্যতম একটি ধর্ম।
সমাপ্ত!
আমার প্রবন্দধ পড়ে ভাল লাগলে মন্তব্য করবেন।
©somewhere in net ltd.