![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের অনেকের কাছে জানা, আর তা হল পৃথিবীর আকৃতি গোলাকার। সেইজন্য এই ঘূর্ণয়মান পৃথিবীতে আমরা যারা বিভিন্ন প্রান্তে বসবাস করি, প্রত্যকের একে অপরের সাথে মিলিত হবার একটা সম্ভবনা রয়ে যায়। এত বড় একটি পৃথিবীতে বাস করে যদি একে অপরের সাথে মিলিত হওয়ার সম্ভবনা থাকে তাহলে বাংলাদেশ নামক ক্ষুদ্র একটা রাষ্টে বাস করে আপনি কত শ্রেণী পেশার ধর্মের মানুষের সাথে সাক্ষাত হতে পারে আপনি কল্পনাই করতে পারবেন না। বর্তমান বিশ্বে উচু নিচু শ্রেণীর অনেক পেশা নিয়ে মানুষের জীবিকা চলে। এই পেশা জগতে এমন কিছু পেশা আছে যা আমাদের চোখে অত্যন্ত নিম্নমানের। সেগুলো হল- জেলেদের পেশা, নাপিতের পেশা, মুচির পেশা ইত্যাদি। অন্যদিকে এমন কিছু পেশা আছে যা আমাদের সমাজে আপাতত দৃষ্টিতে অত্যন্ত ঘৃণ্য এবং যাদের কোন সামাজিক মর্যদা নেই বলে পরিগনিত। এমন একটি পেশার নাম কেউ বলে পতিতা বৃত্তি, আবার কেউ বলে বেশ্যা বৃত্তি। এখানেই আমি পেশাটিকে আপাতত দৃষ্টিতে ঘৃণ্য বললাম কারন , এটা আমরা যারা লোক দেখানো কর্মেযুক্ত তাদের দোষী মনে করি কিন্তু যারা লোক চক্ষুর অন্তরালে এইসব ব্যবসা চালিয়ে যায় তাদের দোষটা কেউ দেখে না। আপনি একটু লক্ষ্য করলে বিষয় টা বুঝতে পারবেন।
গল্পের ফাকে এতক্ষন কথা গুলো বলছিলেন অপয়া। অপয়া নামটি তার আসল নাম নয়, গল্পের প্রয়োজনে কিংবা তার জীবনের করুন পরিনতির কারনে এই নামটি ব্যবহার করা। অপয়া মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। ময়মনসিংহ শহরের ভালুকা গ্রমে তাদের ছোট্র একটা সংসার। মা-বাবা আর দুইবোন ও ছোট ভাই। অপয়ার বাবা তাহের একজন সিএনজি চালক। এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে সিএনজি চালকের পরিবার মধ্যবিত্ত হয় কিভাবে? হ্যা এইতো সেইদিন বাংলাদেশ কে মধ্যবিত্ত হিসেবে ঘোষনা করা হল। তাছাড়া ও বাংলাদেশে এমন কিছু প্রত্যন্ত অঞ্চল আছে, সেখানে ভিক্ষার চালে যাদের সংসার চলে তারা নিম্নবৃত্ত, যারা দিনে এনে দিনে খায় তারা মধ্যবিত্ত, এবং যারা আজকের খাবার দুইদিন আগে যোগাড় করে তারা ধনীর কাতারে বিবেচ্য। এই ধরনের গ্রামের আর ও কিছু বৈশিষ্ট্য হল; এলাকার ক্যাডার মাস্তানরা হল সেখনকার প্রধানমন্ত্রী আর চৌকিদার হল আইনের বড় কর্তা।
সিএনজি চালক বাবার সংসারে ভালই যাচ্ছিল দিন। ২০০১ সালে অপয়া তখন গ্রামের একটা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণী পডুয়া সদ্য যৌবন প্রাপ্ত কিশোরী। আমি দেখেছি খোলা চুলে স্কুলে যাওয়া হাজার ও অপয়ার উড়নাহীন উলঙ্গ বুকের ভাজে জোড়া স্তনের ভেসে ওঠা। সবেমাত্র কেউ একজন তার চোখের পাতায় কাজলের আচড় এঁকেছে। এমন নান্দনিক সৌন্দর্যে যৌবন প্রাপ্ত হাজার ও অপয়ার অবাধ চলাফেরা প্রতিটি গ্রামে মহল্লায়। যৌবনের এই অতুলনীয় যৌন্দর্যই এক মুহুত্বেই একটা মেয়ের জীবনকে মিশিয়ে দেয় অন্ধকারের অতল গহব্বরে। বাকী গল্পটা শুনেন অপয়ার মুখে। আর্থিকাবস্থা ভাল না হওয়ায় গ্রামের অন্য কোন মেয়ে স্কুলে তেমনটা স্কুলে যেত না। আমি একাই স্কুলে আসা যাওয়া করতাম। সেদিন ছিল রোববার, আমার স্কুলের ক্লাস শেষে নিতাই স্যারের কাছে প্রাইভেট শেষ করে বাসায় ফিরছিলাম। হঠাত আমার সামনে এসে দাড়াল জাবেদ,আলম ও মিলন। আমি পিছনে ফিরে তাকা্লাম, কেউ নেই। যদি ও আমি তাদের চিনে তারপর ও একটা ভয় কাজ করছিল। আলম সাবার আগে বলে উঠল,
চল সুন্দরী ,একটু জঙ্গলে চল।
এটা আপনি কি বলছেন আলম ভাই?
এত কিছু বুঝতে হবে না। যাবি, না জোর করে নিয়ে যাব?
যাব মানে কি? আমি যাব না।
আলম হাত বাড়িয়ে আমার মুখে টেপ জাতিয় কিছু একটা দিয়ে আটকিয়ে দেয়। আমি তখন কোন কথা বলতে পারছিলাম।এরপর ওরা তিন জনে মিলে আমাকে নিয়ে গেল জঙ্গলে। আমার হাজার চিৎকারের আওয়াজ মুখের বাধন ভেদ করে বের হচ্ছে না। আমার একটা হাত জাবেদ আরেকটা হাত মিলন ধরে আমাকে মাটিতে শুয়ে দিয়ে শক্ত করে ধরে আছে। আলম আমার পায়ের উপর বসে আমাকে বিবস্ত করে চলেছে। আমি চোখ বন্ধ করে ফেলি। এইভাবে তারা একের পর এক আমার শরীরের উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। আমি জানি না কত টা সময় ধরে ওরা আমার উপর পাশবিক নির্যাতন করেছিল। আমি যখন চোখ মেলে তাকালাম, নিজেকে আবিস্কার করলাম সেই জায়গায় যেখানে আমাকে ওরা নিয়েগিয়েছিল। কিন্তু এখন ওরা কেউ নেই। আমার হাত পা সবি ঠিক আছে কিন্তু নিজেকে কিছুটা ভারি মনে হচ্ছে। ভাবতেই মনে পড়ল সেই প্রথম লোহদন্ডের ফোড়ন যা আমার মাংস পিন্ড ভেদ করেছিল। তারপর কোন রকমে দৌড়ে চলে আসলাম ঘরে।
ঘরে ঢুকার সময় আমাদের বাসার সামনে কিছু আত্নীয় স্বজন সহ ভিড় করতে অনেক কে দেখলাম। আমি বাসায় প্রবেশ করতেই মা আমার কাছে আসে। আমি মাকে পুরো ঘটনা খুলে বলি। মা-বাবা সহ এলাকার সবাই চৌকিদার নিয়ে বিচার চাইতে গেছিল, বিচার অবশ্যই পেয়ে ও ছিল। আমার সম্ভ্রম হারানোর বিনিময়ে কিছু টাকার প্রস্তাব। সেই অভিমানে গ্রাম ছেড়ে আজকের এই ঢাকা শহরে আমার আগমন।
অবশ্যই আজকের অপয়ার সাথে আমার পরিচয়টা ২০০৯ সালে। আমি চাকুরীর সুবাধে ঢাকার সাভারে কিছুদিন কর্মরত ছিলাম। এক সন্ধ্যায় আমরা বেশ কয়েকজন মিলে স্থানীয় একটি মেলা দেখতে যায়। সেখানেই আমি প্রথম বারের মত দেখলাম অন্যরকম এক প্রদর্শনী!' ডানা কাটা পরীদের ঝুমুর নৃত্য ।' পঞ্চাশ টাকার একটি টিকিটের বিনিময় বসে পড়লাম অনুষ্টানে। আমার জীবনে এই ধরনের অভিজ্ঞতা আর নেই। ঝুমুর নৃত্য হয় পর্দার অন্তরালে, তাই অনেকে বাইরে থেকে বুঝতে পারে না এই ঝুমুর নৃত্য আসলে কী। তাদের জন্য আমার আজকের এই লেখা " জীবন যেখানে যেমন হয়।" ঝুমুর হল, এই যুগের কিছু অসহায় রমনী। যারা বিভিন্ন কারনে আজকের ঢাকার ঝুমুরীতে পরিনত হয়েছে। ঝুমুর নৃত্য শুরু হয় কিছু অশ্লীল গানের কথার সাথে অর্ধ উলঙ্গ দেহ প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে। মাঝ পথে দর্শকদের দিয়ে ঝুমুরীদের দেহে স্পর্শের লীলাখেলা সহ শেষে বিবস্ত অবস্থায় এই নৃত্যের অবসান ঘটে। মুলত যারা এই নৃত্য প্রদর্শন করে তারা ভোগের বস্তু, কামভাবের লোভ লালসা মিঠানোর জন্যই এদের জন্ম বলে মনে করে দর্শক শ্রোতা। এমন ও দেখা যায় টাকা আদায়ের জন্য ঝুমুরীরা নৃত্যের ফাকে ফাকে দর্শক শ্রোতাদের হাতে স্পর্শ করতে দে নিজেদের দেহ ও যৌবন রসে পরিপূর্ন স্তন জোড়া। আর আমরা বাঙ্গালী , কম টাকা দিয়ে বেশি নিব এমন সহজাত অভ্যাসের কারনেই ক্ষুদার্ত সিংহের মত নিঃশব্দে গর্জে ওঠে ঝাপিয়ে পড়ি নগ্ন দেহের উপর। এটাই হল বর্তমান বিশ্বের প্রচলিত নিয়ম,' কার ও অভাব, কার ও ন'
মেলা শেষে আমি অপয়াকে প্রশ্ন করেছিলাম, এই পেশাটা আপনার কেমন মনে হয়? নির্লজ্ব হাসি হেসে উত্তর দিল অপয়া,' আমি এটা করে খায়, আমার ভালই লাগে। আপনার কেমন লাগে?' আমি কোন উত্তর দেয়নি। শুধু নিজেকে বিবেকের দংশন থেকে রক্ষা করার জন্য কিছু একটা ভাবছিলাম নিরবে। আমার নিরবতা ভেঙ্গে দিয়ে অপয়া বলল, 'আপনি আমার গল্প শুনতে চেয়েছেন? কথাটা বলে চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে দাড়াল জানলার পাশে। এই বার কিছুক্ষন সে নিজেই চুপ। জানি না কার জন্য তার জানলার পাশে দাঁড়িয়ে এই নীরবতা। তারপর অপয়া আবার গল্প বলা শুরু করল।
আমি বাড়ি থেকে ঢাকায় এসে প্রথমে আমার এক খালাতো ভাইয়ের বাসায় ছিলাম। কিছুদিন যাওয়ার পর আমি ভাইকে বলেছিলাম আমাকে একটা চাকুরীর ব্যবস্থা করে দাও। কিছুদিন যেতে না যেতেই একটা বাড়িতে ঝিয়ের কাজ পেলাম ভাইয়ের সহযোগিতায়। কিন্তু আমার ভাগ্যটাই অন্যরকম। গৃহকর্তার স্ত্রী বর্তমান থকা শর্তে ও তার দৃষ্টি আমাকে করেছে গ্রাস। প্রতিনিয়ত গৃহকর্তীর অনুপস্থিতিতে তার কুপ্রস্তাব আমাকে করে তুলেছে অসহ্য। তাই আমি চাকুরীটা ছেড়ে দেওয়ার সিদার্ন্ত নেয়। বিপত্তিটা ঘটল সেদিন , আমার পাওনা টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য গৃহকর্তা আমাকে ডেকে পাঠায়। আমি সকাল ৯ টায় তার সামনে হাজির, তখন তিনি সোফায় বসে সিগেরেট সেবন করছিলেন। আমাকে দেখা মাত্রই হাত থেকে সিগেরেট ফেলে দিয়ে ওঠে দাড়ালেন। আমি কিছু বিঝে উঠার আগেই আমাকে মুখ চেপে জড়িয়ে ধরে নিয়ে গেলেন অন্যরুমে। আমি চিৎকার করতে চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু পারিনি। হয়তো সেদিন চিৎকার করলে ও কেউ শুনতে পেত না। অবশেষে জোরপূর্বক নরপশু আমাকে ভোগ করে তার মনের জ্বালায় মিঠায়। দ্বিতীয় বারের মত যে নারী তার সম্ভ্রম হারায় তার বাকীই বা আছে কি? এরপর থেকে আমি আর কোনদিন ঐ বাসায় যায়নি। ভাইয়ের বাসায় থাকতাম। ইতিমধ্যে ভাইয়ের বন্ধু জামানের সাথে আমার মনের প্রনয় হয়ে কবে জানি দৈহিক সম্পর্কে জড়িয়ে গেলাম বুঝতে পারিনি। একটা সময় আমি বুঝতে পারলাম , আমি অন্তঃসত্তা । জামান কে বিয়ের কথা বলি সে রাজি ও হয়, তবে একটা শর্ত দিল যে আমার ভাইয়ের অজান্তে তার বাসা থেকে আমাকে পালিয়ে যেতে হবে।
আমি ও যথারীতি নিজের কুকর্মের ও গর্ভে আসা সন্তানের মুখ দেখার আশায় রাজি হয়ে গেলাম। একটি বার ও ভাবলাম না, যে ভাই আমাকে এতদিন আপন মনে করে আশ্রয় দিয়েছিল তার কথা। সেটাই ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল, যে ভুল আজ আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে। জামান আমাকে এই সাভারের এক ভাঙ্গা বাসায় নিয়ে আসে। আমরা স্বামী স্ত্রীর মত থাকি, হয়তো কিছুদিন পর সে আমাকে বিয়ে করবে এমন একটা বিশ্বাস ছিল আমার। একরাতে সে আমাকে খাবারের সাথে কিছু ওষুধ খাওয়ায়। পরের দিন সকালে নিজেকে আবিষ্কার করলাম এক ভিন্ন পরিবেশে। আমি বুঝতে পারছি গত রাতে আমার কি হয়েছে। আমার পেটের বাচ্চা আর নেই। চোখ মেলে তাকাতেই দেখলাম আমার বয়সী কিছু মেয়ে হাসা হাসি করছে। তাদের একজনের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম জামানের কাজ কি। কি আর করা, ওখানেই রয়ে গেলাম। যে জীবনে আর কিছুই বাকী রইল না সে জীবনে আর কোথাও গিয়ে লাভ কি?
কিছুদিন পর জামানের সাথে আবার দেখা হল। আমি তাকে শুধু মাত্র একটা প্রশ্ন করেছিলাম,' আমার সাথে কেন এমন করেছিলে?' জামান আমার দিকে একটু ও তাকায়নি, পিছন ফিরে বলেছিল,' আমি খারাপ কাজ করি,তাই কার ও পিতা হওয়ার অধিকার আমার নেই, তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও।' হয়তো অপরাধবোধ তার মাঝে ও ছিল ! সেদিন থেকে সময়ের হাত ধরে এই জীবন নিয়ে এত দূর এসেছি। এখন আমার কিছুই খারাপ লাগে না। কেন জানেন? আমাদের ও চলার মত, বাচার মত অর্থ দরকার। সমাজে সবাই আমাদের হেয় করে দেখে, অথচ কেউ একবার ও জানার বা বুঝার চেষ্টা করেনা কেন আমরা এই পথে এসেছি। দেশে অনেক আইন আছে, কিন্তু আমাদের কাজে বাধা দেওয়ার মত আইন কিংবা সরকার কিছুই নেই।
মাঝে মাঝে খুব কষ্ট হয় যখন দেখি খরিদ্দার তার টাকার বিনিময়ে পাওয়া আমাদের দেহ নামের পন্যটি ব্যবহারে নুন্যতম মানবিক অনুভুতি পর্যন্ত দেখায় না। আমাদের দেহ টাকা বুঝে না। প্রতিটি স্ত্রী যেমন তার স্বামীর টাকায় বিলাসী জীবন যাপন করে, আমরা ও তাই করি। তার মানে এই না যে আমাদের শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গুলো মরে গেছে.........। অপয়ার একটানা কথা গুলো বলে যাচ্ছিল। বুঝতে পারলাম, এখন সে প্রতিবাদী। আমি অপয়াকে থামিয়ে দিয়ে বলতে বাধ্য হলাম,' আমাকে যেতে হবে।'
যেতে হবে যাও, তবে আবার এসো। না হয় আমরা চলব কিভাবে???
সমাপ্ত!
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৯
কবি হাইড্রা বলেছেন: সমাজ কে এর দায় নিতে হবে।
২| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৩৩
মোবাশ্বের হোসেন বলেছেন: নিঃশব্দ হাহাকার
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৫০
কবি হাইড্রা বলেছেন: আমরা নিঃশব্দের হাহাকার বলে এড়িয়ে গেলে জাতির কি হবে?
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: পর্নো ছবিতে এবার ঢাবি শিক্ষার্থীরা
