নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাহাত হোসেন পল্লব এর ব্লগ

মানুষ মানুষের জন্যে

রাহাত হোসেন পল্লব

আমার ফেইসবুক লিঙ্ক www.facebook.com/rahathossain.pollob

রাহাত হোসেন পল্লব › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজনীতি !!!

১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৩৯

রাজনীতি মানে হচ্ছে , জীবন নিয়ে খেলা ! রাজনীতি মানে হচ্ছে , সকালের প্রানবন্ত একটি মানুষকে সন্ধ্যায় লাশ বানিয়ে ঘরে পাঠানো ...



বাস্তব ঘটনার প্রেক্ষিতে একটি কাল্পনিক গল্প



(১)

বিরোধীদলের নেতা খালেদ ইফতেখার দলীয় কার্যালায়ে মিটিং শেষে টানা ৪৮ ঘন্টার হারতালের ডাক দিলেন। হরতাল সফল করার জন্য জন্য বেশ কিছু নেতাকর্মীকে তাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে তার বাসভবনে এসে এসি ছেড়ে গা এলিয়ে দিল। সারাদিন অনেক ধকল গেছে। শরীর এখন বিশ্রাম চায়।



(২)

হরতালের ঘোষনা শুনে প্রধানমন্ত্রীও তাঁর দলের মাথাদের নিয়ে গোপন মিটিং ডাকলেন। মিটিঙের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়ে উনিও তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসলেন। আজকে তাঁর মেয়ে আসবে আমেরিকা থেকে। আগেই ঠিক করে রেখেছেন নিজের হাতে আজকে মেয়ের পছন্দের খাবার তৈরি করবেন। কতদিন পর মেয়েটা দেশে আসছে !



(৩)

ছাত্রনেতা তাহের কিছুটা উত্তেজিত। একের পর এক সিগেরেট ফুঁকছে আর ফোন দিয়ে তার লোকবলকে খবর দিচ্ছে। তার উত্তেজনার কারণ ওপরের মহল থেকে বলা হয়েছে এই কর্মসূচিতে তার কাজ দেখে তাকে দলে পদ দেয়া হবে। নতুন বিয়ে করেছে তাহের। বউ এর সাথে এখনো সেভাবে সময় কাটাতে না পারলেও বিয়ের পর তার দিন খুব ভালো যাচ্ছে। বউ ভাগ্যটা নেহায়েত খারাপ না তার। কালকে ভালোভাবে সবার নজর কাড়তে পারলেই তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার একটা শেপ চলে আসবে।



(৪)

পুলিশ অফিসার বোরহান উদ্দিন কিছুটা বিরক্ত। কালকে উনি প্রথম বাবা হতে চলেছেন। ডাক্তার বলেছেন দুপুর বারোটায় অপারশন হবে তার গর্ভবতী বউ এর। ভালোবাসার প্রথম ফসল দেখার জন্য যখন কিছুটা উত্তেজিত ও চিন্তিত তখনই তাকে ফোন করে জানানো হয় কালকে সকাল-সন্ধ্যা তার ডিউটি। এসময়ে বউ এর পাশে থাকতে পারবেন না ভাবতেই খারাপ লাগছে বোরহান সাহেবের।



(৫)

হরতালের দিন সকালে বেশ উৎফুল্ল দেখাচ্ছে তাহেরকে। নতুন বউ এর দেয়া হাল্কা সবুজ রঙের শার্টে তাকে লাগছেও রাজপুত্রের মত। সকালেই তার সব ছেলেপেলে জড় হয়েছে। সবাইকে একত্রিত করে যখন চায়ের টঙ এ সিগেরেট ফুঁকছিল তখনই দেখে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক পিচ্চি টোকাই 'পুলিশ আইছেরে'' বলে চিৎকার করে দিল ভোঁ দৌড়। পিচ্চিটা কিছুদূর যাওয়ার আগেই তার পায়ের কাছে দিনের প্রথম ককটেলটা বিষ্ফোরিত করে তাহেরের দলের একজন। ইতিমধ্যে পুলিশ রাবার বুলেট ছোঁড়া শুরু করে দিয়েছে। অবস্থা বেগতিক দেখে তাহের তার কোমড়ে গোঁজা রিভলবারটি বের করে পুলিশের দিকে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে এগিয়ে যায়।



(৬)

বোরহান উদ্দিনের স্ত্রীকে যখন ওটিতে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন অসহায়ের মত স্মামীকে খুঁজে বেড়াচ্ছিল সে। প্রথম মা হওয়ার ভয়, আশঙ্কায় তার বুক বারবার কেঁপে উঠছিল। এরকম অবস্থায় প্রীয় মানুষটাকে খুব বেশী পাশে পেতে ইচ্ছে করছিল তার।

আল্লাহর রহমতে কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই পৃথিবীর বুকে আসে বোরহান সাহেবের সন্তান। নবজাতক শিশু যখন সৃষ্টির বেদনায় চিৎকার করছে তখনো কেউ জানে না তার জন্মদাতা পিতা ঐ হাসপাতালেরই মর্গে লাশ হয়ে শুয়ে আছে।

পরিবারের সবাই যখন নতুন অতিথিকে নিয়ে ব্যাস্ত তখন হাসপাতালের নিচে একদল মানুষ একটা লাশ সামনে নিয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে যাচ্ছে। লাশটির গায়ের সবুজ শার্টে লেগে থাকা রক্ত ততক্ষনে শুকিয়ে কালচে রঙ ধারন করেছে...



(৭)

ঐদিন রাতে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিরোধীদলের চিফ হুইফ যখন সারাদিনে তার দলের কত কর্মী মারা গেছে তার হিসেব দিচ্ছে, যখন সরকারী দলের মুখপাত্র কীভাবে বিরোধীদল সারাদেশে নাশকতা সৃষ্টি করেছে তার চিত্র তুলে ধরছে, সুশীল নাগরিকরা যখন ব্লগে, ফেইসবুকে সরকারী-বিরোধীদলের সমালোচনা করছে, তখন বোরহান উদ্দিনের সন্তান মায়ের কোলে ঘুমাচ্ছে, তাহেরের বউ নবস্মামীর ফোন অফ পেয়েও বারবার চেষ্টা করে যাচ্ছে, ককটেল বিষ্ফোরনের শিকার ঐ বাচ্চার মায়ের মৃত সন্তানের লাশ বুকে জড়িয়ে ধরে কান্না আশেপাশের পরিবেশ ভারী করে তুলছে।



- হায়রে রাজনীতি !! ক্ষমতার লোভ বোঝ, কিন্তু স্বজনহারার কান্না বোঝ না!

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:০৩

ননদালীনাজ বলেছেন: চরম হইছে !!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.