![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কবিতা প্রথম প্রেম । শৈশবে সেই প্রেমের শুরু । বয়স বাড়ার সাথে কতবার প্রেমে পড়েছি হিসেব নেই । স্বদেশপ্রেম, নারীপ্রেম, ক্যামেরার প্রতি প্রেম, রেডিওর প্রতি প্রেম, সাংবাদিকতা প্রেম ... আমি আসলে প্রেমিক হতে চেয়েছি সব সময়। হতে চাই কবি...পাঠ্যবই আমাকে কখনো টানে নাই, তাই বাবা-মা'র বাধ্য ছেলে হতে পারিনি। এইতো আমি!
আমাদের প্যারিস ছবির হাটে চা পানের নিমন্ত্রণ পচিশে বৈশাখ সন্ধ্যায়। চা পান করতে করতে পিকাসোর সঙ্গে গোয়ের্নিকা নিয়ে আলাপ হবে। প্রেমিকারা কেউ সঙ্গে আসেননি, তাই চুপচাপ থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দালি। লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চিকে ফোন করেছেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। মোনালিসা রহস্য জানার ভাবনায় দু রাত ঘুমোতে পারেননি জুননু রাইন। একুশ শতকের বঙ্গবিপ্লব বিষয়ে নেরুদার সঙ্গে বিশেষ আলোচনা হবে। জীবনের নতুন মাছগুলোর সাঁতার বিশ্লেষণ করবেন সরকার আমিন। মেসো থেকে প্রেমিক হবার পথে টোকন ঠাকুরের ঘামসূত্রে আর কি যোগ হলো, তাও জানার আছে। ভাতের ভূগোল আর পুঁজিবাদের সংঘর্ষ নিয়ে কথা বলবেন জুয়েল। রবি বাবুর সম্মানে বারামখানা ছেড়ে সাঁইজি, দিরাই নদীর মায়া ছেড়ে শাহ আব্দুল করিম আর মৈমনসিংহ গীতিকার পাতা ছেড়ে মনসুর বয়াতি গান শোনাতে আসবেন। প্রলাপ বকার জ্বর নিয়ে হাফপ্যান্ট পরেই প্রেমিকাকে সাইকেলের পেছনে চড়িয়ে রওনা দিয়েছে এ পাগলসভার কনিষ্ঠতম সদস্য জারিফ। অঝোর বৃষ্টিতে সভা পণ্ড হবার শঙ্কায় বাঙলা একাডেমিতে ছুটছি আমিন ভাইয়ের কাছে। টিএসসি মোড় পেরিয়ে রবি ঠাকুরের সঙ্গে দেখা! রিক্সার চাকা পাংচার, মৈত্রেয়ী দেবীর হাত ধরে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজছেন।
:ও গুরু, সভা তো সন্ধ্যায়। এখনি যে বেরিয়েছেন?
:কোনোদিন রিক্সায় ঘুরিনি রে পাগলা। পুঁজিপতি-মধ্যবিত্তের বুকশেলফ আর সিডির কভারে দম বন্ধ হয়ে আসে। কতদিন মৈত্রেয়ী আসেনি আমার কাছে। আমি কি বুড়ো হয়ে গেছি, বল? সুযোগ পেয়ে বেরিয়ে পড়লুম আর কি!
:গুরু, আমার ফেইসবুক বন্ধু উপমার স্ট্যাটাস থেকে জেনেছি, গত পচিশে বৈশাখে ওর ঠোঁট থেকে একজন রবীন্দ্রনাথ জন্মেছিলেন।
:প্রেমীরা প্রতিদিন সহস্র রবীন্দ্রনাথকে জন্ম দেয়। না হলে আমি বাঁচতাম কি করে, বল? তোর প্রেম কেমন চলে হে?
:কাদম্বরী দেবী অন্ত:পুর ছেড়ে এখন সিনেপ্লেক্সে যায়। পথে বেরুলেই আমি তাই কাদম্বরীর মতো বৌদি খুঁজি। প্রেম চাই না, সে আমারে কবিতা দিক। প্রেমের জন্য আর কারো মুখাপেক্ষী নই, আমার প্রেমিকার নাম মেঘ। ওর নাম রেখেছিলেন আপনার গুরু কালিদাস। মন খারাপের দিন আমি ওকে বরষা বলে ডাকি।
:তুই আজ পাগলাটে।
:আমার পাগলামির কাছে আপনার ঋণ আছে গুরু। আজ পাগলাটে বলেই ঝরঝর মুখর বাদর নিয়ে এ পাড়া ঘুরে গেলো আমার প্রেমিকা মেঘ। এমন ঘনঘোর বরিষায় আপনার প্রেমিকার ঠোঁট আইসক্রিম হলো, আপনি শিখে গেলেন হুডতোলা রিক্সা ডেটিং। রবি ঠাকুর, আপনি আমার প্রেমিকার কাছে ঋণী থাকুন।
:বুঝলুম। শুধিতে হইবে ঋণ। কি কর্ম মোর?
:ওকাম্পোর অতিথি হতে চাই! একটা ডিনার জরুরী হয়ে গেছে। আমি আর জারিফ অতিথি হবো।
:তুই বড্ড বকিস হে ছোকরা! চললুম। সন্ধ্যায় দেখা হবে।
রবীন্দ্রনাথ চলে যেতেই বিকেলটা হলদে রঙের। মৈত্রেয়ী দেবী আজ হলুদ শাড়ি পরেছেন। আচ্ছা, ওনার কি হিমুর সঙ্গে বিয়ে হয়েছে? রবি ঠাকুরের প্রেমিকা আজো সেকেলে, বৈশাখের রঙ চেনেন না! সন্ধ্যায় দেখা হলে মেঘলার ফ্যাশন স্কুলে ভর্তি হবার পরামর্শ দেবো তাকে।
২৫শে বৈশাখ, ১৪২০ বাঙলা
©somewhere in net ltd.