নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বালিয়াটি জমিদার বাড়ি
বালিয়াটি জমিদার বাড়ি বা বালিয়াটি প্রাসাদ বা বালিয়াটি ১০ আনা (আনি) জমিদার বাড়িটি মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামে অবস্থিত।
আমি এই বাড়িটিতে অন্ততো চার বার গিয়েছি দেখতে বিভিন্ন সময়ে। প্রচুর ছবি তোলা আর বিভিন্ন সময়ে।
এই পোস্টে সম্ভবতো ২৫টি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। তাতেও সবটা পরিষ্কার ফুটিয়ে তোলা সম্ভব হয়নি।
এক পোস্টে এতো ছবি দেখে বিরক্তি আসলে আমি আগেই দুঃখ প্রকাশ করে নিচ্ছি।
বালিয়াটি জমিদার বাড়িটি উঁচু প্রাচীর ঘেরা প্রায় ১৬,৫৫৪ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে। প্রাচীরের সম্মুখ অংশে রয়েছে চারটি সিংহদুয়ার।
সামনের ভবনের একটি নাম ছিলো রং মহল। সেখানে বর্তমানে জাদুঘর তৈরি করা হয়েছে। ১৯৮৭ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বালিয়াটি প্রাসাদকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে। বর্তমানে এই জমিদার বাড়িটি এবং জাদুঘরটি বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ কর্তৃক সংরক্ষিত ও পরিচালিত হচ্ছে।
১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে লবণ ব্যবসায়ী গোবিন্দ রাম সাহা বালিয়াটি জমিদার পরিবারের গোড়াপত্তন করেন। ২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বালিয়াটির জমিদাররা এই এলাকা শাসন করেন।
গোবিন্দ রাম সাহা বালিয়াটি জমিদার পরিবারের গোড়াপত্তন করে সম্ভবতো আঠারো শতকের মধ্যভাগে জমিদার বাড়ির একটি ভবন নির্মাণ করেন। বর্তমানের সব কটি ভবন তিনি নির্মাণ করেননি। গোবিন্দ রাম সাহার কয়েকজন উত্তরাধিকার ভিন্ন ভিন্ন সময়ে জমিদার বাড়ির সাতটি ভবনের বাকি ভবনগুলি নির্মাণ করেন। সবগুলি ভবনের মোট কক্ষ সংখ্যা প্রায় ২০০ টি।
জমিদারি সময় কালে সামনের চারটি ভবন ব্যবহার করা হত ব্যবসায়িক কাজে। আর পিছনের ভবন গুলি ছিলো অন্দর মহল, সেখানে জমিদার বাড়ির লোকজনেরা বসবাস করতো।
পাশে প্রায় ভগ্নদশার একটি তিনতলা ভবন রয়েছে কাঠের কারুকাজ করা। পিছনের আরেকটি ভবনে জমিদার বাড়ির চাকর বাকর, গাড়ি রাখার গ্যারেজ, ঘোড়াশালা ছিল বলে মনে করা হয়। আমার যতদূর মনে পরে বাড়িটিতে আমি একাধিক কুয়া দেখেছি।
অন্দর মহলের পিছনেই জমিদার বাড়ির সদস্যদের ব্যবহার করার জন্য আছে বহুঘাটলার অতি সুন্দর একটি পুকুর।
অবশ্য বাড়ির সামনেও বিশাল একটি পুকুর রয়েছে যেটি ছিলো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত।
এই জমিদারদের আরো কিছু স্থাপনা মূল এই বাড়িটির আশে পাশেই রয়েছে। যেমন চার আনা জমিদার বাড়ি বা পশ্চিম বাড়ি, গোলাবাড়ি, উত্তর বাড়ি ইত্যাদি।
ছবি সূত্র : উইকিপিডিয়া
বালিয়াটির জমিদার নিত্যানন্দ রায় চৌধুরীর দুই ছেলে বৃন্দাবন চন্দ্র রায় চৌধুরী এবং জগন্নাথ রায় চৌধুরী বেশ বিখ্যাত লোক ছিলেন। জমিদার কিশোরীলাল রায় চৌধুরী এবং জমিদার রায় বাহাদুর হরেন্দ্র কুমার রায় চৌধুরী তৎকালীন শিক্ষাখাতে উন্নয়নের প্রচুর কাজ করেছিলেন।
জমিদার কিশোরীলাল রায় চৌধুরী ১৮৮৪ সালে তার পিতার নামানুসারে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠা করে ছিলেন। এছাড়াও তিনি ১৮৮৭ সালে ঢাকায় বাংলা বাজারে তার নিজ নামে কিশোরীলাল জুবিলী হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ঢাকাতে নাট্য চর্চার জন্য মালঞ্চ নামে একটি রঙ্গমঞ্চ গড়ে তোলেন। ১৯২৩ সালের দিকে বালিয়াটিতে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় তৈরিই করেন।
অন্যদিকে জমিদার রায়বাহাদুর হরেন্দ্র কুমার রায় চৌধুরী তার পিতা জমিদার ঈশ্বর চন্দ্র রায় চৌধুরীর নামানুসারে বালিয়াটিতে প্রতিষ্ঠা করেন ঈশ্বর চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়।
বালিয়াটির জমিদার হীরালাল রায় চৌধুরী বালিয়াটির পাশে কাউন্নারা গ্রামে একটি বাগানবাড়ি নির্মাণ করেন। সেখানে দিঘির মাঝখানে একটি প্রমোদ ভবন বা হাওয়াখানা গড়ে তোলেন।
বালিয়াটি জমিদার বাড়ি পরিদর্শনের সময় সময়সূচি :
গ্রীষ্মকালে (এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর) : সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত।
শীতকালে (অক্টোবর থেকে মার্চ) : সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
সাপ্তাহিক বন্ধ :
প্রতি রবিবার পূর্ণ দিবস ও সোমবার অর্ধ দিবস এবং সকল সরকারি ছুটির দিনে পূর্ণ দিবস বন্ধ থাকে বালিয়াটি জমিদার বাড়ি।
বিরতি :
প্রতি শুক্রবার দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিট থেকে ২ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত জুম্মার নামাযের জন্য বন্ধ থাকে।
শুক্রবার বাদে অন্যান্য দিন দুপুর ১টা থেকে ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত বন্ধ থাকে।
প্রবেশমূল্য :
জমিদার বাড়িতে প্রবেশের জন্য টিকেটের মূল্য জনপ্রতি দেশি দর্শনার্থী ২০ টাকা, সার্কভুক্ত দর্শনার্থী ১০০ টাকা এবং বিদেশি দর্শনার্থী ২০০ টাকা।
তথ্য সূত্র ও বর্ননা : উইকিপিডিয়া, অন্তর্জাল।
অবস্থান : বালিয়াটি, সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ, বাংলাদেশ।
GPS coordinates : 23°59'40.9"N 90°02'32.5"E
গুগল ম্যাপ : বালিয়াটি জমাদার বাড়ি
ছবি তোলার তারিখ : ২৫শে নভেম্বর ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ।
=================================================================
আরো দেখুন -
মরুভূমির জলদস্যুর ভ্রমণ বিলাস
জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০১ : বালিয়াপাড়া জমিদার বাড়ি
জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০২ : বীরেন্দ্র রায় চৌধুরী বাড়ি
জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৩ : জ্যোতি বসুর পৈতৃক বাড়ি
জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৪ : আমিনপুর ঠাকুর বাড়ি
জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৫ : বড় সর্দার বাড়ি
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০১
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০২
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৩
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৪
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৫
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৬
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৭
০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৩৬
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১:১৩
কামাল১৮ বলেছেন: জমিদাররা কি কাজ করে এতো টাকা আয় করতো।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৮:৫২
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- প্রায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শুরুটা হতো ব্যবসা দিয়ে। পরে খাজনা।
৩| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১:৩৬
সামরিন হক বলেছেন: পুরনো স্থাপত্য দেখতে ভালো লাগে আমার ।আর বাংলাদেশের ঐতিহ্য হলে তো কথাই নেই। খুব সুন্দর স্থাপত্য। ছবির মাধ্যমে তুলে ধরার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৮:৫৫
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- আপনার ভালো লাগার বিষয়টি জানতে পেরে আনন্দিত হলাম। আমির নিজেরও ইতিহাস-ঐতিহ্য ঘুরে ঘুরে দেখতে ভালো লাগে। প্রায় প্রতি মাসের শেষ শুক্রবার বেরিয়ে পরে সেগুলির খোঁজে।
৪| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১:৪১
সামরিন হক বলেছেন: শুধু সিংহ সাহেবের চেহারাটা অদ্ভুত লাগছে।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৮:৫৫
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- আমিও একমত।
৫| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৩:৩৮
মারুফ তারেক বলেছেন: খুব গোছানো হয়েছে, বেশ সুন্দর
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৮:৫৬
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
৬| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ ভোর ৫:২০
জনারণ্যে একজন বলেছেন: অনেকদিন পর আপনার পোস্ট দেখে ভালো লাগলো, জলদস্যু।
প্রতিটা ছবি বেশ সুন্দর হয়েছে।
সিংহ বেচারার অসহায় মুখ দেখে একটু মায়া লাগলো। গর্জন করছে নাকি কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগে অসহায় আর্তনাদ করছে বোঝা মুশকিল।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:০০
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- অনেকদিন ধরে একটু একটু করে পোষ্টটি তৈরি করেছি।
- ছবি সব দেয়া যায় নাই। অন্ততো আর তিনবার পোস্ট করলে এই দিনের তোলা ছবি শেষ হবে। আরো ৩-৪ বারের ছবি বাদ।
- সিংহের চোখ দেখলে আমার কাছে ট্যরা মনে হচ্ছে।
৭| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৮:৪৭
শেরজা তপন বলেছেন: বিশাল জমিদার বাড়ি!! গরিব মানুষের পয়সায় এনারাই মজা করে গেছেন
ছবিগুলো চমৎকার হয়েছে।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:০১
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- অনেকটাই সঠিক বলেছেন আপনি।
৮| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৫৮
গেঁয়ো ভূত বলেছেন: অনেকদিন পর আপনাকে ব্লগে পেয়ে সত্যিই খুব ভাল লাগছে। ছবিগুলো বেশ চমৎকার আর জমিদারদের বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনাও দারুন সুন্দর হয়েছে। আমি ওখানে বেশ কয়েকবার গিয়েছি, ক্ষয়িঞ্চু স্থাপনা গুলোর দিকে তাকিয়ে আমার মানসপটে ভেসে উঠতো আহা একসময় এই বাড়ি গুলো ঘিরেই রচিত হয়েছিল কত ঘটনা-দুর্ঘটনা আর ছিল কতই না শান শওকাত!! ক্ষমতার কত দাপট ছিল এই জমিদারদের!!
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:১৭
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- হে, মোটামুটি অকেন দিন পরে ব্লগে পোস্ট করলাম। বাড়ি নির্মাণ করতে গিয়ে অন্য অনেক দিকেই পিয়ে যেতে হয়েছে।
- অনেক দিন ধরেই একটু একটু করে এই পোস্টটি তৈরি করেছি।
- এমন জমিদার বাড়ি দেখলে আমার মনটা উদাস হয়ে পরে। আবার এমন একটা বাড়ির লোভও হয় খুব।
- মন্তব্য আর পোস্টে প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
৯| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:০২
মনিরা সুলতানা বলেছেন: বাহ ! চমৎকার সব ছবি !
গুগলের দেয়া ছবিটা অনেক কিছু বুঝতে সুবিধা করেছে আমার কাছে।
ধন্যবাদ ভাই।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:২৫
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- মন্তব্য আর পোস্টে প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ জানাই আপনাকেও।
১০| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৫৮
বাকপ্রবাস বলেছেন: এমন পুকুর দেখলে সাঁতার কাটতে না পারার দুঃখবোধ হয়
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৫০
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- আমিতো সাঁতাড়ই জানি না!! তবে পুকুর, নদী, সাগর, জল আমার খুব পছন্দ।
১১| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:২৯
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
বাঘের বয়স হয়েছে, তাই দেখতে ভালো দেখাচ্ছিলো না।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৫১
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- ট্যাগড়া বাঘ!!
১২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর। উপভোগ্য।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৫১
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
১৩| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:২৭
এইযেদুনিয়া বলেছেন: এই জমিদারবাড়ির কথা অনেক শুনেছি, এখনো যাওয়া হয় নি। ইচ্ছেও তৈরি হচ্ছে না। হয়তো। বেশি শুনে ফেলেছি বলেই, হাহাহা।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৩
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- শুধু জমিদার বাড়ি দেখতে যাবেন কেনো? এর আশপাশে দেখার আরো অনেক কিছু আছে। প্রায় সারাদিন কাটিয়ে দিতে পারবেন সেগুলি দেখে।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:২৬
বিজন রয় বলেছেন: দারুন, দারুন, দারুন!!!
জমিদারের জমিদারি দেখলাম।