![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অপেক্ষা ( একটি প্রেমের গল্প)
#রফিকুল ইসলাম জসিম
আমার জীবনে একজন মানুষ ভালোবাসার সাত রং ছড়িয়ে দিয়েছিলো । তার নাম শানাম।
তখন আমি নবম শ্রেনীতে পড়েছিল। শানাম পড়তো অষ্টম শ্রেনীতে ।
প্রথম যৌবনে প্রথম ভালো লাগার নাম ছিল সে। আমরা দুই জন ও একই স্যারে কাছে এক সঙ্গে প্রতিদিন সকালে টিউশনি পড়ছিলাম।
আমি খুবই সাধারণ একজন মানুষ। কিন্তু শানামের স্পর্শে আমার জীবনের প্রতিটি মূহর্ত বর্নিল হয়ে উঠেছিলো। তার চেহারা, কথা বলার ধরন আর চোখ দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম।
প্রতিদিন টিওশনিতে পেছনে বেঞ্চে বসে। তখন সে সামনে বেঞ্চে বসে। আমি এক দৃষ্টিতে মুগ্ধ হয়ে তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। ব্যাপাটা শানাম খেয়াল করেছিলো। আমার মনের ভিতরটা সে এক মুহূর্তে পড়ে ফেলছিল। যখন খেয়াল ফিরলো তখন। খুব দ্বিধায় পড়লাম।
এরপর-একদিন স্কুলের পুকুর ঘাটে বসে ছিলাম। তখন টিফিন পিড়িয়ড চলছিল। শানাম আর তার বান্ধবী শ্রুটি আসলো পুকুর ঘাটে। শানাম আমাকে হঠাৎ দেখে এড়িয়ে গেলো।
শানামের বান্ধবী শ্রুটি আমাকে বললো, শানাম তোমাকে ভালেবাসে। সে মুখে তোমাকে সামনাসামনি বলতে লজ্জা করে ওর। আমার মন তখন আনন্দে মাতিয়ে উঠলো।
পরদিন টিউশনিতে আমি খুব সকালে গেলাম। শানাম তার ছোট ভাই সঙ্গে করে আসলো। তখন প্রাইমারী স্কুলে ছোট ভাইটা রেখে টিউশনি রুমে কাছাকাছি চলে আসলো। পাছে কেউ ছিলো না। শুধু আমরা দুজন। আমি শানামকে আমার মনের কথাটা জানালাম। সেও সঙ্গে সঙ্গে সম্মতি দিল। তখন সূর্য মাত্র জেগে উঠলো সেই সূর্যের আলোকে সাক্ষী রেখে দুজন দুজনকে ভালোবাসার বন্ধন হলাম।
এরপর টানা ২/৩ বছর সম্পর্ক ছিলাম।
২০১২ সালে আমি যখন এস এস সি পাস করে কলেজ ভর্তি হলাম। তখন শানাম দশম শ্রেনীতে পড়াশুনা করেন। কিন্তুু প্রতিদিনের মতো দেখা না হলে প্রায় মাঝেমাঝে দুজনে দেখা হয়।
কয়েক মাস পর একদিন আমার এক মামাতো বোনের বাড়ীতে এক অনুষ্ঠানে
গিয়েছিলাম। তাদের পাশের গ্রামে শানামের বাড়ী। সেই দিন প্রায় অনুষ্ঠানের শেষের দিকে দূরে কোথায় জ্বলে উঠা আগুনের ধোঁয়া দেখতে পেলাম। সেই দিকে প্রায় মানুষগুলো ছুটে যাচ্ছিলো। আমি ও দৌড়ে দেখি শানামের বাড়ীতে আগুন লেগেছে।
আমি সহ প্রায় আশ-পাছে আগুন নিভাতে চেষ্টা করলো, শেষ পযন্ত
ফায়ার সার্বিস এসে আগুন বন্ধ করলো। কিন্তু শানমের ঘর আগুনে পুড়িয়ে ছারখার হলো।
শানাম তাদের বংশ বা গোষ্ঠী সব ভারতে। বাংলাদেশে তাদের আপনজন বলতে কেউ নেই। শানাম বাবা ভারত থেকে এসে ভিটা কিনে বাড়ী বানাচ্ছিল।
সেই ঘটনার পর শানাম আমার সঙ্গে শেষ দেখা হলো। শানাম আমাকে কেঁদে কেঁদে জানালো, তাদের পরিবার বাংলাদেশ ছেড়ে ভারত চলে যাওয়ার কথা। সেদিন দুজন খুব কেঁদে ছিলাম। তখন শানাম আমাকে সান্তনা দিল, একদিন সে ফিরে আসবে।
প্রতিদিন আমি আশাহত হই। একদিন ঠিক আমার শানাম ফিরে এসে বুকে জড়িয়ে ধরবে। এই মনগড়া স্বপ্ন।
শানাম আজ ভারত চলে গেছে, তবুও রয়েছে আমার মন জুড়ে।
আমার জীবনে প্রদীপ নিভু নিভু। হঠাৎ ঝটকা বাতাশ এসে আমার এই কুটিরের প্রদীপটি নিভিয়ে গেলো।
অমিত -লাবণ্যর মতো আজ আমাদের দুজনার পথ দুটি ভারত বনাম বাংলাদেশ হচ্ছে।
©somewhere in net ltd.