নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কবি, লেখক, চিত্রকর

ব্রাত্য রাইসু

কবি, লেখক, চিত্রকর

ব্রাত্য রাইসু › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোজীনা মুস্তারীন টুশির একটা ছবি

২৮ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১২:২৬

রোজীনা মুস্তারীন টুশির (৮/৪/১৯৭৮-২৭/৪/২০০২) সঙ্গে আমার পরিচয় হইছিল বিশিষ্ট আবৃত্তিকার রূপা চক্রবর্তীর বাসায়। ১৯৯৩ সালে। সেই সময় আমার এক বন্ধু তার স্বামীরে তালাক দেওনের তরে দেশে আসছিল। স্বামীটির কোনো কারণে ধারণা হইছে আমার বন্ধু হয়তো আমার কথা শুনবে। সেই ভরসায় তিনি ওই সময়ে কিছুদিন আমার কাউন্সিলিং গ্রহণ করেন। কাজের কাজ হয় নাই। তালাকক্রিয়া সম্পন্ন হইছিল। পরে বন্ধুর পরিত্যক্ত স্বামী এমেরিকা চইলা গেছিলেন। এখন আর যোগাযোগ নাই আমার লগে। বন্ধু অনেক বছর পর পর দেশে আসলে দেখা হয়।



ওই ঘনঘটার টাইমে একদিন বন্ধুটির লগে রূপা চক্রর বাসায় গিয়া দেখি সুন্দর লাগতেছে এই রকম এক মেয়ে ড্রয়িংরুমে একটা দোলনায় বইসা আছে। তারে ইশারায় ডাকলাম আমি। টুশি ওইখানে আসছিল আবৃত্তি শিখবে বইলা। নাম জিগ্যাশ করলাম। পরে ফোন নম্বর চাইতেই দিয়া দিল। দিয়া দোলনায় গিয়া বসতেই চাইর পাশের কয়েকটা মেয়ে কী জানি বলল। কিছুক্ষণ পরে টুশি আইসা বলে ফোন নম্বর যে সে দিছে এইটা ভুলে দিছে। এখন যাতে আমি নাম্বার ফিরত দিয়া দেই। টুশিরে আমি নাম্বার ফিরত দিছিলাম কিনা মনে নাই। বোধহয় ফোন করছিলাম না।



চাইর পাঁচ দিন পরে রূপা চক্রর বাসায়ই দেখা হইতে টুশি কইল তার মা সাহিত্য চর্চা করেন। আমি তখন বাংলাবাজার পত্রিকায়। নাসরীন জাহানের বাধ্য হিসাবে চাকরি করি, সাহিত্য পাতার সেবা করি। আমি বললাম তাইলে ওনার লগে আমি দেখা করি। চক্রগো বাসা থিকা ওইদিন শিক্ষালাভের পরে টুশি আমারে নিয়া গেল কাছেই এলিফ্যান্ট রোডে। ভোজ্যতেলের পাশে একটা বিল্ডিঙের পাচ বা ছয় তালার উপরে। ওইখানে টুশির মায়ের সঙ্গে আলাপ হইল। কোনো একটা সাহিত্য বিষয়ক পাঠ চলতেছিল ওইখানে। সেইটা এখন মনে নাই। পরে মাঝে মাঝে টুশির লগে দেখা সাক্ষাত হইত নানা কালচারাল ভেনুতে। আমরা জুয়েল আইচের একটা ইন্টারভিউ-ও নিছিলাম।



আমি সেই আমলে দুপুর বেলায় অন্যের বাসায় খাইতাম প্রায়ই। টুশিদের বাসায়ও যাইতাম। ওরা তখন থাকত মোহাম্মদপুরে তাজমহল রোডে। পরে বাইর হইলো ওরা নাসরীন জাহানের এক রকমের আত্মীয়। ওই সময়, ১৯৯৪ সালে, টুশির একটা ফটোগ্রাফ দেইখা আমার পছন্দ হইছিল। টুশি সেইটা আমারে দিয়া দেয়। ও মারা যাওয়ার পরে অনেক খুজছি ছবিটা। পাই নাই। কিছুদিন আগে হঠাত পাইলাম।



আইজকা প্রথম আলো পত্রিকায় টুশির মা রিফাত আরা শাহানা-র একটা লেখা টুশি নামের মেয়েটি পইড়া টুশির কথা মনে পড়লো। ভাবলাম ছবিটা আপলোড করি।



ছবি : রোজীনা মুস্তারীন টুশি ১৯৯৪।

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১২:৫৭

আঈজুদ্দিন চৌধুরী বলেছেন: ব্রাত্যদা উনার মারা যাওয়ার কারনটা জানতে চাই

২| ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১২:৫৭

মেঘ বলেছেন: সেই কবে, সাতানব্বইতে ভোরের কাগজে তখন আরেক টুসি ছিলো ব্রাত্যদা, সুবর্ণা সেঁজুতি তার সাথে গিয়ে আমার টুশির সাথে পরিচয়। আমার গাল টিপে বলেছিলো, মেয়েটা তো খুব সুইট। আপনার গল্প বহুত শুনছি আমার দুই বান্ধবী হাসি টুসির কাছে। হাসি তো এখন অস্ট্রেলিয়ায়, জানেন তো! টুশিকে আমার খুব মনে পড়ে, নওরোজের কাছে গল্প শুনে রোজিনা-টুশিকে আমার বেশি চেনা। শান্তি।টুশির আতমার

৩| ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১:০০

মেঘ বলেছেন: টুশি বাসার ছাদ থেকে পা ফসকে পড়ে মারা যায়। স্রেফ দুর্ঘটনা।

৪| ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১:০৫

আঈজুদ্দিন চৌধুরী বলেছেন: মেঘ আমার ভাই ও দুর্ঘটনা মারা গেচে। বাবা আর মা যে কি কস্ট পেয়েচিল ! টুশির বাবা মার জন্য কষ্ট অনুভব করি

৫| ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১:১২

ব্রাত্য রাইসু বলেছেন: পাঁচ তলার উপরের ছাদ থিকা পইড়া মারা গেছিল। ছাদের রেলিং-এ বইসা চা খাইতে গিয়া ব্যালেন্স হারাইয়া পইড়া গেছিল সকাল বেলায়, আমি এইরকমই জানি। একটা পত্রিকা এই ঘটনারে আত্মহত্যা কইতে চাইছিল অবশ্য। টুশি সদাপ্রসন্ন মেয়ে আছিল বিধায় পাবলিকে নিউজটা খায় নাই। কেন পড়ছিল কে জানে!

৬| ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১:১৪

ব্রাত্য রাইসু বলেছেন: হাসি অস্ট্রেলিয়ায় জানি। কিন্তু হাসির সঙ্গে আমার কখনো পরিচয় হয় নাই।

৭| ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১:১৬

আঈজুদ্দিন চৌধুরী বলেছেন: ব্রাত্যদা আঠারো বছরের সদাপ্রসন্ন মেয়েটির দুঃখে কষ্ট পাই

৮| ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১:১৯

আঈজুদ্দিন চৌধুরী বলেছেন: ব্রাত্যদা আমার ভাইয়ের (৮/১৫/১৯৭৮-১০/২০/২০০২) কি অদ্ভুত মিল

৯| ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১:২৩

ব্রাত্য রাইসু বলেছেন: আপনার ভাইয়ের কী হইছিল?

১০| ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১:২৬

আঈজুদ্দিন চৌধুরী বলেছেন: ট্রাকে গাড়িতে মারসিল সকালে ইউনইভাসিটিতে যাওয়ার সময়। লোকজনে আমাদের কইসে আত্মহত্যা। ইচ্চা কইরা ট্রাকে লাগাইসে

১১| ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১:৩০

ব্রাত্য রাইসু বলেছেন: ১৮ না, টুশি মারা গেছিল ২৪ বছর বয়সে।

১২| ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১:৩৫

আঈজুদ্দিন চৌধুরী বলেছেন: ভুল হইয়া গেচে আনকে কাচা।

১৩| ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৭ সকাল ১১:৩৮

কালপুরুষ বলেছেন: যাদের জন্মসংখ্যা ৮ বা যারা ৮ সংখ্যার জাতক/জাতিকা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে তাদের মৃত্যু হয় অস্বাভাবিক বা দুর্ঘটনা সম্পর্কিত। আল্লাহ্ তার আত্মার উপর শান্তি বর্ষণ করুন।

১৪| ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৭ সকাল ১১:৪৬

কালপুরুষ বলেছেন: কাকতালীয় ভাবে টুশীর জন্মসংখ্যা ৮ এবং মৃত্যু দিনের যৌগিক সংখ্যাও ৮ (২৭.০৪.২০০২ অর্থাৎ ২+৭+০+৪+২+০+০+২ = ১৭ = ১+৭ = ৮)।

এই মুহূর্তে প্রিন্সেস ডায়না ও শেখ মুজিবের নাম মনে পড়লো যারা ৮ সংখ্যার জাতক।

১৫| ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৭ দুপুর ১২:১৩

চানাচুর বলেছেন: আমার জন্ম ৮ই জানুয়ারী ১৯৯০। আমি এভাবে মারা যাব কালপুরুষ ভাই? আপনার কি জানা আছে?

১৬| ২৯ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১১:৩২

মাহবুব সুমন বলেছেন: টুশির সাথে আমার পরিচয় হয়েছিলো রূপাদির বাসায় , এলিফ্যান্ট রোডে।

১৭| ২৯ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১১:৩৩

উৎস বলেছেন: রোজিনা মুস্তারিন না রেজিনা মুস্তারিন, ছোটবেলায় একস্কুলে পড়তাম। সাংবাদিক মহলে জনপ্রিয়তার একটা কারন কি চেহারা?

১৮| ৩০ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১২:১৭

মেঘ বলেছেন: আমার জন্ম ৮ই মার্চ। আহা মরতে চাই তাড়াতাড়ি, ভালো লাগে না এই বেঁচে থাকা।

১৯| ৩০ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১২:২১

হাসিব বলেছেন: আচ্ছা, মরেন তাহলে । ঠিকানাটা দিয়ে মরবেন । কুলখানি বা চেহলাম একটাতে যাবার ইচ্ছা ।

২০| ০২ রা মে, ২০০৭ বিকাল ৫:৪২

সুমেরু বলেছেন: মেঘ ফোটোক দিয়ে তারপর মরেন, আম্মিও আপলোডামু।

২১| ০৮ ই মে, ২০০৭ রাত ১:৫৮

পদ্মা মেঘনা যমুনা বলেছেন: ত্রিভুজের ব্লগে রাইসু নামটা দেখে কোন রাইসু জানার জন্য 'রাইসু' লিখা সার্চ দিলাম গুগলে। চলে আইলাম এই ব্লগে। কি তামশা। জবর মজা পাইলাম।

২২| ০৮ ই মে, ২০০৭ রাত ২:০০

পদ্মা মেঘনা যমুনা বলেছেন: সরি বস। লেখাটা পড়ি নাই প্রথমে। মনটা খারাপ হয়া গেল।

২৩| ২০ শে মে, ২০০৭ সকাল ৭:৪০

লুনা রুশদী বলেছেন: রাইসু, লিঙ্ক থেকে টুসির মা'র লেখাটা পড়তে চাইলাম। দেখা গেল না। অাপনের কাছে পিডিএফ থাকলে দিয়েন।

২৪| ২১ শে মে, ২০০৭ রাত ১২:৩১

ব্রাত্য রাইসু বলেছেন: লুনা, টুশির মায়ের লেখাটা এই খানে দিয়া দিলাম :
....
স্ন র ণ
টুশি নামের মেয়েটি
রিফাত আরা শাহানা
২০০২ সালের ২৭ এপ্রিল টুশির মৃত্যু হয়। ১৯৭৮ সালের ৮ এপ্রিল তার জন্ন। মিষ্টি, দুষ্টু, কৃষ্ণচুড়া মেয়েটি কৃষ্ণচুড়া ফুলের আবেশে তাকিয়েই হারিয়ে গেল পৃথিবী থেকে। আমি তখন চট্টগ্রামে। বাবা মৃত্যুশয্যায়। অক্সিজেন, স্যালাইন এবং শেষশয্যার মানুষটির যাবতীয় কার্যক্রম।
২৬ এপ্রিল বাবার জন্য নাইট ডিউটি ছিল রোশনার। ভোরে চট্টগ্রামে বাবার বাসা হালিশহর থেকে গোসল সেরে ক্লিনিকে পৌঁছায়। রোশনা আমাকে বলল, ছোট ভাইয়ার ছোটবেলার বন্ধু কামাল ভাই বুটের ডাল আর চাপাটি পাঠিয়েছে। খাও। বললাম, বাসা থেকে (হালিশহর মায়ের বাসা) খেয়ে এসেছি। তুমি খাও। তুমি তো এখনো নাশতা করোনি। রোশনা আদর করে আমাকে মুখে তুলে খাওয়াল। আর আমিও বললাম−হ্যাঁ, খুব মজা হয়েছে। চেয়ে দেখিনি যে রোশনার মুখটা কেমন চুপচাপ। আসলে আমার জন্য ২৭ এপ্রিল কী ভয়ঙ্কর একটা বাস্তব সত্য অপেক্ষা করছে। আমি কিছুই জানি না।
রোশনা বলল, আপা, একবার ঢাকায় যাবে? চলো, ঘুরে আসি!
আমি সঙ্গে সঙ্গে বললাম, তোমার বাচ্চা ছোট, তুমি যাও ঘুরে এসো। আমি থাকি।
আচ্ছা! রোশনা আর কোনো কথা বলল না। কী বলবে, কেমন করে বলবে বুঝে উঠতে পারছিল না।
তখন দেখি, ছোট খালা মানে চট্টগ্রাম অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার আনোয়ারা বেগম (নিগার) এসে হাজির।
রোশনা আর ছোট খালা ক্লিনিকের বাইরে কথা বলছে। আমরা আব্বার দুই রুমের ক্লিনিকে। অপর রুমে আব্বা ঘুমুচ্ছে। আব্বাকে নাকে পাইপ দিয়ে খাওয়ানো হয়। আমি একবার উঁকি দিয়ে বাবার খাট দেখলাম। এ রকম মুমূর্ষু রোগীকে ফেলে কি ঢাকায় যাওয়া যায়!
রোশনা আমার কাছে এল। বলল, আপা যাবে? চলো আমরা দুজন যাব, আবার কালই চলে আসব।
হঠাৎ করে বুকটা ঢাকার জন্য মোচড় দিয়ে উঠল। রোশনা বলল, টুশি হঠাৎ করে মাথা ঘুরে পড়ে গেছে।
কী! এতক্ষণে আমার নিঃশ্বাস বন্ধ প্রায়।
রোশনা বলল−না, না তেমন কিছু নয়! ও এখন ভালো আছে!
আমরা দুজন আব্বাকে এক রকম অসুস্থ রেখেই ২৭ এপ্রিল হালিশহর এলাম। ছোট ভাইয়ার বন্ধুরা গাড়ি দিল। এয়ারপোর্টে ফসিভাই, স্বপন ভাই সবাই আমাদের বিমানে তুলে দিল। এক ঘণ্টা দেরি করল বিমান ছাড়তে।
আবার ঢাকা! এয়ারপোর্ট। আমার স্বামী আসেনি। তবে অফিসের পাজেরোটা পাঠিয়েছে। রোশনার হাতে মোবাইল। আমি কেমন চুপচাপ। প্লেনেও দুই বোন পাশাপাশি এসেছি। দুঃসংবাদের পর দুঃসংবাদ। একদিকে আব্বাকে রেখে এসেছি। তারপর আবার এদিকে টুশিও হঠাৎ ‘ফেইন্ট’ হয়ে গেছে!
আচ্ছন্নতা আমায় ঘিরে থাকল। গাড়ি চলছে। রোশনার দুলাভাই বারবার ফোন করছে, তোমরা কোথায়! রোশনা মোবাইলে বলে চলেছে, এই তো এখানে−এখন মহাখালী...। এখন ফার্মগেট...গাড়ি এগিয়ে যাচ্ছে। আমার কথা বলতে ইচ্ছে করছে না। গাড়ি পরিবাগের গেট দিয়ে ঢুকছে! ওয়াপদা অফিসার্স কলোনি। যে বাড়িটায় আমরা দীর্ঘ দশ বছর কাটিয়েছি। এবার আমাদের বাসার সামনে গাড়ি। আমি সিঁড়ির নিচ দিয়ে তাকালাম, ওখানে এত মানুষ! ওই যে আমার স্বামী।
এবার আমি চিৎকার দিয়ে উঠি, কী হয়েছে? এখানে এত মানুষ কেন। রোশনা বলো।
আমার স্বামী এগিয়ে এল। পরম মমতায় আমাকে ধরে সিঁড়ি দিয়ে উঠছে। আমার তখন মাথায় কোনো কিছু কাজ করছে না। দোতলায় এলাম। বোরখা খুললাম। আমার স্বামী আমাকে ধরে বসে আছে। কী হয়েছে!
ধীরে খুব ধীরে জানাল, তোমার টুশি না পড়ে গেছিল। আর নেই!
আমি বললাম, ওকে তো সুস্থ রেখে গেলাম, কী হয়েছে?
মাথায় কিছু কাজ করছিল না! কিন্তু আমি চিৎকার দিলাম না! মৃতের বাড়িতে কত দিন গেছি। স্বজনদের সান্ত্বনা দিয়ে বলেছি, তোমরা কেঁদো না। দোয়া করো। মৃত আত্মা কষ্ট পায়। আজ এ কী ভয়ানক বাস্তবতা আমার সামনে। আমি সত্যিই আর চিৎকার দিলাম না। মনে হচ্ছিল চিৎকার দিয়ে কাঁদলে মনে হয় খুব শান্তি লাগত। কিন্তু আমি কাঁদলাম না। নিঃশব্দে চোখের পানি ঝরে যাচ্ছিল। আসলে তখন আমার মাথায় বুদ্ধি কাজ করছিল না। নির্বাক ফ্যাল ফ্যাল চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না।
আর একটু পরেই টুশির শরীর ধুয়ে ধবধবে কাপড়ে মুড়ে আমাদের সামনে। আমার স্বামী এসে আমাকে টুশির পাশে বসাল, দোয়া পড়ো। দেখো, তোমার টুশি। আমি বললাম−না, দেখব না।
চোখ তুললাম, চেয়ে দেখলাম নিথর প্রাণহীন দেহ। এ দেহ তো আমি চিনি না। আমি এক সেকেন্ড তাকালাম। বাঁ দিকে চেয়ে দেখি আসাদুজ্জামান নুর, মুখ ঢেকে কাঁদছেন।
আমি কী বলছি, জানি না। কী দোয়া পড়ছি, জানি না। ওই মুহুর্ত সে কী কষ্ট... দুঃসহ! অথচ আমি নির্বাক!
দেখলাম কবরস্থানে যাওয়ার পথে মানুষ, মানুষ আর মানুষ, সবাই কি টুশিকে এত ভালোবাসতো!
প্রথম আলো অফিসের সামনে এসে দাঁড়াল টুশির ট্রাক−ওরা ফুল দিলো, আরও কত কত...
কবরস্থান!
চেয়ে চেয়ে দেখছি সুর্য ডুবছে একটু একটু করে। আর ওরা সবাই শুইয়ে দিচ্ছে শেষবারের মতো। আর কি কথা বলার আছে। ডানে বামে সবদিকে মানুষ আর মানুষ। টুশিকে এত মানুষ ভালোবাসে।
আমার আর কোনো দুঃখ নেই। এত ভালোবাসায় যে শয়ন করে, তার তো কোনো দুঃখ থাকতে পারে না।
পরদিন খবর এল আমার বাবা আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ আবদুর রউফও ইন্তেকাল করেছেন।
আমরা এখনো বেঁচে আছি। আমি, ওর বাবা, বোন, ছোট মিশুক।

রিফাত আরা শাহানা: রোজীনা মুস্তারীন টুশির মা।
সম্পাদকীয়/উপসম্পাদকীয়, প্রথম আলো, ২৭/৪/৭


২৫| ২১ শে মে, ২০০৭ রাত ১:৪৮

লুনা রুশদী বলেছেন: মন খারাপ হইল পড়ার পরে। টুশির কথা অাপনি বলছিলেন বোধহয় অামারে। ওকি পত্রিকা অফিসে কাজ করতো ?

২৬| ১৭ ই জুন, ২০০৭ রাত ১০:১৩

ঝরা পাতা বলেছেন: এটা সেই টুশি! মতিউর রহমানের মতো হওয়ার স্বপ্ন ছিলো উনার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.