নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\'আমি জীবনের মাঝে বেঁচে থাকা এক অদৃশ্য \'জীবাত্না\'। যে জীবনের মাঝে খুঁজে ফিরি জীবনের প্রাণ। নির্জীব জীবনের চেয়ে প্রাণময় মুত্যুতেই আমার উচ্ছাস!\'

রাজিয়া সুলতানা

জীবন মানেই এক অমীমাংসিত সমীকরণ

রাজিয়া সুলতানা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আহা জীবন! তুমিই জীবন! !

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:২৫


পৃথিবীটা বড় বিচিত্র। খুব পুরান কথা। এর যা কিছু আমরা খালি চোখে দেখি তার সবটুকু সবসময় সত্য হয় না। মাঝখানে কেবল পৃথিবীতে আসা যাওয়াটাই নিখাদ সত্য। এর মাঝখানে আমরা রং মেখে সং সাজি; ভালো হওয়ার ভান করি; অনেক সময় ইচ্ছে করে খারাপ সাজি; খারাপ হওয়া দেখাই; সাদাকে কালো করি, কালোকে সাদা; সত্য চেহারাটা ঢাকার জন্য মুখে মাখামাখি করি; ছোট্ট একখানা মুখে রংয়ে রংয়ে ক্যানভাস করে তুলি; সবকিছুই শুধু আসল চেহারাটাকে পরিবর্তন করে নতুন রূপ দেয়ার জন্য। যে এমনিতেই অনেক সুন্দর সে আরো সাজে; যার কিছুটা ঘাটতি আছে সে ঐটা পূরণ করতে সাজে; যে লম্বা সে একটু খাটো হইতে চায়, যে খানিকটা বেটে সে হাই হিল পড়ে লম্বা হইতে চায়।
সব কথার শেষ কথা হইতেছে কেউ কোনো কিছুতে সন্তুষ্ট নয়; পরিপূর্ণ সুখী নয়। আবার একই চরিত্রের বিপরীত রুপ হইতেছে আমাদের লোক দেখানো সুখ আহ্লাদ।

মনের মধ্যে এক ফোঁটা সুখ নাই, একজনরে আরেকজন ছিটেফোঁটা ও সহ্য করতে পারে না। কিন্তু দুইজনের গলা ধরাধরি ফটু; পিথ্থিবীতে আমার 'হাবিই' একমাত্র প্রাণী যে তার বউকে 'লাইলি মজনু' 'শিরি ফরহাদের' চাইতে ও বেশি ভালোবাসে। "আই লাভ ইউ হাব্বি! আমার জানু!" এইসব ডায়লগ দিয়ে মহাসুখী মানুষের ভান করে। অথচ ঘরের চেহারা এক্কেবারে ভিন্ন। ঐ ভিন্ন চেহারাটা লুকানোর জন্য কত্ত কত্ত অভিনয়! এইসব দিয়ে মহাসুখী মানুষের ভান । এইসব দেখলে মনে হয় পৃথিবীর তাবৎ পরিবারে কত্ত কত্ত সুখ! সুখ যেন উপচাইয়া উপচাইয়া পড়তেছে। আহা! পৃথিবীটা যদি এতই সুখের হইতো! সত্যিই যদি হইত! !
আসল কথা হচ্ছে আমরা অধিকাংশই সুখের ভান করি। আমরা সবাই কোনো না কোনোভাবে বর্ণচোরা। আমরা প্রায় সবাই যা সত্য, যা বাস্তব তাকে পরিবর্তিত করে দেখাতে পছন্দ করি। আবার কেউ কেউ খালি স্বপ্ন দেখতে দেখতেই জীবন পার করে দিই। যখন সংসারে আর্থিক টানাপোড়ন থাকে, তখন অপেক্ষা করি একটু স্বচ্ছলতার; ভাবি আর্থিক টানাপোড়ন টা শেষ হইলেই বুঝি সংসারের সকল অশান্তি দূর হবে। যে সংসারে আর্থিক কোনো টানাপোড়ন নেই, সে সংসারে সমস্যা থাকে অন্যরকম। শ্বাশুরি মা আমাকে একদম পছন্দ করে না। ওকে নিয়ে আলাদা হয়ে যাইতে পারলেই আমাদের সংসারে সুখ চুইয়ে চুইয়ে পড়বে। অপেক্ষায় থাকি সেই দিনের। যখন টাকা পয়সা, শ্বাশুরি মাতা, শ্বশুর মশাই কোথাও কোনো সমস্যা নেই, তখন সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় আত্মীয় স্বজন; সবার জন্য ও করতে করতে জান শেষ; অথচ আমার জন্য আর আমার বাপের বাড়ির জন্য কিছু করতে বললেই ওর মাথা খারাপ হয়ে যায়। সে ও অপেক্ষা করে একটা পরিবর্তনের; একটা নতুন দিনের। এসব কোনো সমস্যা নেই যেখানে, সেখানে ও সমস্যার অভাব নেই। অনেক সময় স্ট্যাটাস সমস্যা বড় হয়ে দাঁড়ায়। আত্মীয় স্বজন কিংবা বরের কলিগ, পাশের বাড়ির ভাবি ওদের স্ট্যাটাস মনে বড় জ্বালাতন দেয়। সেই পর্যন্ত না পৌঁছানো পর্যন্ত নিজের ও শান্তি নাই, পরিবারে ও শান্তি নাই, অনেক আদরের হাব্বি টার ও শান্তি নাই।
এইভাবে পরিবারে একদিন আর্থিক সচ্ছলতা আসে, পারিবারিক জটিলতা দূর হয়, স্ট্যাটাস সমস্যা দূর হয়, কিন্তু শান্তি আসে না। নিজের জ্বালানো আগুনে জ্বলতে থাকি দিন রাত। মনের সমস্ত জ্বালাতন নিয়ে সুখের ভান করতে করতে সুখটাকেই আর অনুভব করতে পারি না।
আবার এমন ও অনেকে আছি যাদের সত্যিকার অর্থেই কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু সমস্যা নেই বলে সমস্যা তৈরি করি সময় কাটানোর জন্য। এই ভাবে সমস্যা তৈরি করতে করতে নিজের জীবনকে যেমন বিষিয়ে তুলি, পাশের মানুষটাকে ও শান্তি দিই না। আবার অনেকে আছি প্রত্যাশা কিংবা যোগ্যতার চেয়ে বেশি পেতে পেতে কৃতজ্ঞতাবোধই নষ্ট হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত জীবনে শান্তি আর হয় না, জীবন সঙ্গীটাকে ও অশান্তির আগুনে জ্বালাতে থাকি।
কিন্তু ঐ যে লোক দেখানো সুখের ভান চলতেই থাকে। "আমার হাব্বি/জানের জান/কইলজ্জার আধ্ধান। তোমারে ছাড়া জীবন আমার খানখান।" চলতেই থাকে মিথ্যে কাব্য গাঁথা। এভাবেই বিচিত্র পৃথিবীতে মিথ্যে কাব্য রচনা করতে করতে জীবন প্রদীপে তেল দিতে থাকি।

আহা জীবন! তুমিই জীবন !!

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০৯

ইন্দ্রনীল উচ্ছ্বাস বলেছেন: খুব ভালো লিখেছেন । :)

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:০১

রাজিয়া সুলতানা বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। তবে খুব ভালো লিখিনি। এটা হচ্ছে বস্তা পচা টাইপ লেখা। তবুও অপ্রকাশিত সত্যের প্রকাশ ঘটাতেই এই বস্তাপচা টাইপ লেখা লিখতে হলো। #:-S

২| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৪৬

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: হা হা হা ভাল বলেছেন।

ভান ধরে কি আর সব লোকানো যায়?
সুখি মানুষেরা অন্যের সুখেও সুখি হন।

হতাশাগ্রস্থরা অন্যের সুখে আরো জ্বলে পুড়ে মরে কিন্তু নিজেকে ভাল রাখার, সুখি রাখার চেষ্টা তারা করেনা।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:০৪

রাজিয়া সুলতানা বলেছেন: হুম, ভান ধরে সব লুকানো যায়না। তবুও আমরা লুকানোর ভান করি। অন্যের সুখে সুখি হওয়ার জন্য নিজেও নিখাদ সুখী হতে হয়। সেই সুখী মানুষ ক'টি পাওয়া যাবে আশেপাশে বলা মুশকিল। :(

৩| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৩৩

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: পৃথিবীটা বড় বিচিত্র। খুব পুরান কথা। এর যা কিছু আমরা খালি চোখে দেখি তার সবটুকু সবসময় সত্য হয় না। মাঝখানে কেবল পৃথিবীতে আসা যাওয়াটাই নিখাদ সত্য। এর মাঝখানে আমরা রং মেখে সং সাজি; ভালো হওয়ার ভান করি; অনেক সময় ইচ্ছে করে খারাপ সাজি; খারাপ হওয়া দেখাই; সাদাকে কালো করি, কালোকে সাদা; সত্য চেহারাটা ঢাকার জন্য মুখে মাখামাখি করি; ছোট্ট একখানা মুখে রংয়ে রংয়ে ক্যানভাস করে তুলি; সবকিছুই শুধু আসল চেহারাটাকে পরিবর্তন করে নতুন রূপ দেয়ার জন্য। যে এমনিতেই অনেক সুন্দর সে আরো সাজে; যার কিছুটা ঘাটতি আছে সে ঐটা পূরণ করতে সাজে; যে লম্বা সে একটু খাটো হইতে চায়, যে খানিকটা বেটে সে হাই হিল পড়ে লম্বা হইতে চায়।

কিন্তু ঐ যে লোক দেখানো সুখের ভান চলতেই থাকে।
"আমার হাব্বি/জানের জান/কইলজ্জার আধ্ধান।
তোমারে ছাড়া জীবন আমার খানখান।"
চলতেই থাকে মিথ্যে কাব্য গাঁথা। এভাবেই বিচিত্র পৃথিবীতে মিথ্যে কাব্য রচনা করতে করতে জীবন প্রদীপে তেল দিতে থাকি।


এই কথাগুলো অনেক সত্য! আগেও কতবার শুনেছি। আপনার লেখার স্টাইলে কথাগুলো বেশি রকম ভাল লাগল।

আমি আর মন্তব্য কী করবো - আপনিই তো পোষ্টে সব লিখে দিলেন। আপনার কথাই তাই মন্তব্যে দিয়ে দিলাম।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:০৭

রাজিয়া সুলতানা বলেছেন: হুম, এইজন্যই বলেছি 'পুরোন কথা'। মূল লেখাই যখন মন্তব্য হয়ে যায়, তখন মন্তব্যের কিছু থাকে না। !:#P ধন্যবাদ।

৪| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৮

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


কিছু কিছু ক্ষেত্রে অভিনয় করাটা জরুরী হয়ে দাঁড়ায়। অনেকেই আছে আবার সুখে থেকে নিরন্তর দুঃখের অভিনয় করে যায়। তবে দুঃখের মাঝে থেকে সুখের অভিনয় করে যাওয়াটা কষ্টের। তবু বলতেই হয় ভাল আছি।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৬

রাজিয়া সুলতানা বলেছেন: অভিনয় আবার জরুরী হয় ক্যামনে? অামরাই জরুরী করে তুলি। সুখে থেকে দু:খের অভিনয় ও করে মানুষ? :( এজন্যই তো পৃথিবী বড় বিচিত্র। :``>> :)
ধন্যবাদ কান্ডারি অথর্ব চিন্তাশীল মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।

৫| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:২৩

গেম চেঞ্জার বলেছেন: আপু,
সুখ ও দুঃখ পরস্পর সমান্তরালে অবস্থান করে চলে আর ব্যাপারটা আপেক্ষিক। এবং বিচ্ছিন্ন প্রবাহে থাকে।

যেমন, আপনার প্রবল জ্বর। প্রবল ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ার পরমুহুর্তে আপনি একটা অনুভূতি পাবেন যেটা সুস্থাবস্থায় পাওয়া সম্ভব না। এটা আপনার জন্য সুখকর অনুভুতি।
আবার ধরুন, একটি অশান্তিময় ফ্যামিলিতে সারাক্ষণই ঝগড়া লেগে আছে, এটা যদি দুঃখ বলে অভিহিত করেন তবে ঐ ফ্যামিলির এমনও সময় কিন্তু যায় যখন তাঁদের সবাই মিলে হৈ হুল্লোড় করে আনন্দঘন সময় কাটানোয়।
একজন প্রেমিক ও একজন প্রেমিকা যখন স্বামী/স্ত্রী হিসেবে বসবাস শুরু করে দেয় তখন হয়তো ভুলবোঝাবুঝির কারণে দ্বন্ধের সুত্রপাত হয়, তিলে তিলে উভয়ে/একজন মরতে থাকে।
এই ব্যাপারটা নিয়ে অবশ্য সামগ্রিক পটবিবেচনায় দুঃখি-ই বলা চলে। তবে জীবন থেমে থাকে না, সে ঠিকই নিজের পথ বের করে নেয়। তবে ঠিকই উনার/উনাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেক সময় যায় যেটা ভাল অনুভূতি নিয়ে কাটে।

শুভেচ্ছা রইল..... বেশি বাগাড়ম্বরের জন্য দুঃখিত।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২০

রাজিয়া সুলতানা বলেছেন: "সুখ ও দুঃখ পরস্পর সমান্তরালে অবস্থান করে চলে আর ব্যাপারটা আপেক্ষিক। এবং বিচ্ছিন্ন প্রবাহে থাকে।" একদম জীবনধর্মী কথা! সহমত।
আর হ্যাঁ, আড়ম্বর থাকলেই তো বাগাড়ম্বরের বিষয় আসে। অনেক সময় এটা অনেকের সাথে মানিয়ে যায়। 8-| দু:খ প্রকাশের কিছু নেই। ভালো থাকুন। :``>> :|

৬| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩০

প্রামানিক বলেছেন: বাস্তবতা নিয়ে ভালই লিখেছেন। ধন্যবাদ

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩৫

রাজিয়া সুলতানা বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামাণিক ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য। এটা তো আসলে ওভাবে লেখা নয়, বগবগানি; যেটা খুব সহজ। ভালো থাকুন।

৭| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৫৮

রুদ্র জাহেদ বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন আপুনি। আপনার এই সূক্ষ্মানুভূতির লেখা পড়ে যা বলতাম তাও মনে হয় আপনি বলে দিয়েছেন লেখাতে।
এসব ভাবতে ভাবতে জীবনের ভাবনারা বস্তব জীবন এমনটাই...সুখ-দুঃখের সমাহারই জীবন।
আহ!জীবন।সুন্দর জীবন!বীভৎস জীবন!
তবুও আমাদের নিরন্তর ভালো থাকা হোক...

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০৩

রাজিয়া সুলতানা বলেছেন: হুম,তবুও আমাদের নিরন্তর ভালো থাকা হোক...। অনেক ধন্যবাদ ভালো লাগা মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন রুদ্র জাহেদ

৮| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫০

হাসান মাহবুব বলেছেন: তেতো সত্য।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২৪

রাজিয়া সুলতানা বলেছেন: বুঝতে পেরেছেন। ;) ;) ;)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.