নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
কেউ খারাপ ব্যবহার করলে তার সাথে ঠিক ততোটুকু খারাপ ব্যবহার করাই এক ধরণের ভালো ব্যবহার। যারা সমাজে প্রতারক, ভন্ড, মিথ্যাবাদী, লোভী, মোনাফেক, বেঈমান, দূর্নীতিবাজ তারাই সবচেয়ে ভালো আছে। তাদের লোকেরা সালাম দেয়, সম্মান করে, বড় চেয়ার ছেড়ে দেয় বসতে। তারা সমাজের নেতা। অসাধু সংখ্যাধিক্যে আপনি হারিয়ে যাবেন।
কেউ খারাপ ব্যবহার করলে বা অন্যায় সুযোগ নিতে চাইলে প্রথমত শান্ত থাকতে হবে এবং ঠান্ডা মাথায় কৌশল ভাবতে হবে। আর এ পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে তা এড়ানো যায়। সবসময় মনে রাখতে হবে যে, ‘রেগে গেলাম তো হেরে গেলাম’। কারণ যুগে যুগে দেশে দেশে যে ব্যক্তি বা জাতি রেগে গেছে তারাই পরাজিত হয়েছে। যারা ঠান্ডা মাথায় কাজ করেছে তারাই জয়ী হয়েছে।
প্রতিদিন যদি দিনের কথা, কাজ ও আচরণগুলো নিয়ে একটু চিন্তা করেন, নিজেই নিজেকে বলতে পারেন-কেন এটা করেছেন; এটা না করে বা এভাবে না করে আর কী কী ভাবে করতে পারতেন, দেখবেন আপনার ভুলের পরিমাণ কমে আসছে। আপনি অনেক সংযত, সহনশীল এবং প্রজ্ঞাপূর্ণ আচরণ করতে পারছেন। নিজেকে নিয়ে তখন আপনি তৃপ্ত হতে পারবেন।
জার্মান দার্শনিক নীটশে বলেছিলেন, সত্যিকারের যোদ্ধা সে-ই যে জানে কখন অস্ত্র সংবরণ করতে হয়। অর্থাৎ অস্ত্র থাকলেই অস্ত্র ব্যবহার করা যায়। কিন্তু অস্ত্র ব্যবহার করাটা সত্যিকারের যোদ্ধার পরিচয় নয়। অস্ত্র কখন সামলে রাখতে হবে সেটা যে জানে, সে-ই হচ্ছে সত্যিকারের যোদ্ধা। অতএব আপনার শক্তি রয়েছে। সেই শক্তিকে সংহত করা, নিয়ন্ত্রণ করতে পারাটাই হচ্ছে আপনার মহত্ত্ব।
ধরুন, একটা টিনের ঘর। তাতে একটা ছিদ্র আছে। ছিদ্র দিয়ে বাইরের আলো আসছে। ছিদ্র থেকে আপনি যত দূরে থাকবেন, বাইরের আলো তত কম পাবেন। কিন্তু আপনি যদি ঐ ছিদ্রটার সাথে চোখ লাগাতে পারেন, তাহলে বাইরের পৃথিবীটাকে অনেক বেশি দেখতে পাবেন। যে ছিদ্র দিয়ে আলো ঢুকছে, যে ছিদ্র দিয়ে আপনি বাইরের পৃথিবীকে দেখতে পারতেন, রাগ এবং ক্ষোভ এ ছিদ্র থেকে আপনাকে দূরে সরিয়ে দেয়। আর যখন আপনি প্রশান্ত হন, আত্মনিমগ্ন হন তখন ঐ ছিদ্রের কাছে যেতে থাকেন।
যখনই রেগে যাবেন, ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে তার প্রকাশ ঘটাতে যাবেন, এমন একটা ব্যবস্থা করুন যাতে ঐ রাগের দৃশ্যকে ক্যামেরাবন্দি করা যায়। আজকাল মোবাইলে ক্যামেরা বা ভিডিও করার ব্যবস্থা থাকায় এটা সহজ একটা সুযোগ। পরে যখন শান্ত হবেন, তখন ঐ ছবি বা দৃশ্যগুলো দেখুন। দেখবেন আপনার ধীর-স্থির শান্ত চেহারার চেয়ে ঐ চেহারা কত আলাদা। ক্রোধে উন্মত্ত একটা দানবের মতো এমন হিংস্র এবং কুৎসিত চেহারা দেখে আপনি নিজেই ভীষণ লজ্জা পাবেন। তখন নিজেই দেখবেন যে, প্রতিজ্ঞা করে ফেলেছেন, ভবিষ্যতে আর কখনো রেগে গিয়ে ঐ চেহারার পুনরাবৃত্তি করবো না। প্রয়োজনে বার বার ঐ রাগান্বিত কুৎসিত চেহারা দেখুন। রাগ-ক্রোধমুক্ত হওয়ার এটা একটা কার্যকর পদ্ধতি।
যে অপমান বোধ করে, তার আসলে কোনো আত্মসম্মানবোধ নেই। আরেকজন গালি দিলেই আপনি অপমানিত হলেন না। গালি দিয়েছে সে, মুখ খারাপ করেছে সে। এটা তার সমস্যা। আপনার নয়। একটা কুকুর এসে ঘেউ ঘেউ করলে আপনি কি অপমানিত হন? তাহলে আরেকজন চিল্লাচিল্লি করলে আপনি কেন অপমানিত হবেন? মানুষ বাঘকে পরাজিত করলো কীভাবে? বুদ্ধি দিয়ে, ব্রেনটাকে প্রয়োগ করে। রাগ এই ব্রেনকে কাজে লাগাবার ক্ষেত্রেই অন্তরায় সৃষ্টি করে। অতএব চারপাশের নেতিবাচক প্রভাব আপনাকে জয় করতে হবে ঠান্ডা মাথায় ইতিবাচক কাজ করে।
রাগ স্টমাক এবং পরিপাকতন্ত্রের জন্যেও ক্ষতিকর এবং ক্রমান্বয়ে তা আলসারের রূপ নিতে পারে।
২| ২৮ শে মে, ২০১৬ রাত ১০:৫৪
সোজোন বাদিয়া বলেছেন: আপনার লেখাটা খুবই ভাল লেগেছে, লাইকও দিয়েছি। তারপরেও একটা কথা বলতে হয়, পৃথিবীর কোনো জিনিসই একেবারে ফেলনা নয়। কথাটি রাগের বেলাতেও প্রযোজ্য। একেবারেই যদি রাগ না থাকে (অবশ্যই নিয়ন্ত্রনহীন রাগ নয়) তবে, অন্যায়কে প্রতিরোধ করা, অন্যায়কারীর মুখোমুখি হবার শক্তি পাওয়া যায় না। খেয়াল করবেন, আপনি যখন 'ঠাণ্ডা মাথায়' কোনো নিপীড়কের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিচ্ছেন তখনও কিন্তু আপনার মনের ভিতরে রাগ-ক্ষোভ কাজ করতে থাকে। নাহলে, আপনি অতি সহজেই আরও অনেক সাধারন এবং স্বাভাবিক কাজ, যথা তৃণভোজন, প্রজনন, ইত্যাদিতেই হারিয়ে যাবেন। অ্যারিস্টটলের কথায় বললে, আমাদের বুঝতে হবে ঠিক কেন, কোথায়, কখন, কার প্রতি, কী পরিমানে রাগতে হবে।
ভাল থাকুন।
২৯ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী ঠিক বলেছেন।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে মে, ২০১৬ রাত ৯:২৯
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: তাত্ত্বিক ভাবে খুবই সত্য।
কিন্তু বাস্তবে প্রয়োগে বড়ই কষ্টকর আর জটিলও বটে
ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনাকারীরাই বারবার বিজয়ী হয় এটা সত্য। কিন্তু শত হাজার অনাচার আর কষ্টে তা কতটুকু ঠান্ডা রাখা যায়??
+++++++++