নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিনোদনের দরকার আছে

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:১৮



আজ মেয়েটির জন্মদিন। সে বিরাট আদরের কন্যা। তার বাবার কোটি কোটি টাকা।
জন্মদিন উপলক্ষ্যে সে তার সমস্ত বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় স্বজন দাওয়াত করেছে বাসায়। খাবার আনিয়েছি বড় রেস্টুরেন্ট থেকে। বিশাল এক কেক আনা হয়েছে। কিন্তু কেক কাটা হচ্ছে না। কারন মেয়েটির বাবা এখনও বাসায় এসে পৌঁছায়নি। গেস্টরা সব অস্থির হয়ে আছে। যাই হোক, মেয়েটির বাবা এলো। মেয়েটি বলল, বাবা তুমি এত দেরী করলে? দেখো তাকিয়ে সবাই অপেক্ষা করে আছে। বাবা বললেন, আরে... গাড়ি থেকে কারা যেন আমার ব্রিফকেস নিয়ে গেছে। ব্রিফকেস ভর্তি ছিল টাকা। তাই থানায় গিয়েছিলাম জিডি করতে। থানা থেকে আসতে আসতে দেরী হয়ে গেল। স্যরি।

বাবা মেয়েকে তাড়া দিলেন, আর দেরী করা যাবে না।
চলো কেক কাটি। কেক কাটার মুহুর্তে কাজের ছেলে এসে বলল, আপনাকে একজন ডাকে। কেক না কেটে বাবা বললেন, কে এসেছে তাকে এখানে নিয়ে এসো। দেখা গেল একজন দরিদ্র লোক এসেছে। তার স্বাস্থ্য বেশ ভালো। কথাও বলে খুব সুন্দর করে। মোটা মোচ আছে। শার্টের দু''টা বোতাম খোলা। মেয়েটির বাবা বললেন, তুমি কে? কি চাই ভাই? মোচওয়ালা লোকটি বলল, সাহেব আমি একজন ঠেলাগাড়ির ড্রাইভার। আপনার টাকা ভর্তি ব্রিফকেস আমি উদ্বার করেছি গুন্ডাদের হাত থেকে। এই নিন স্যার। মেয়েটির বাবা মুগ্ধ হয়ে গেলেন এমন সৎ লোক দেখে। তিনি ব্রিফকেসের অর্ধেক টাকা দিতে চাইলেন ঠেলাওয়ালাকে। কিন্তু ঠেলাওয়ালা কিছুতেই টাকা নিবে না। তখন ভদ্রলোক একটা ভিজিটিং কার্ড দিয়ে বললেন, যে কোনো দরকারে তুমি আমার কাছে আসতে পার। তোমার মতো সৎ মানুষ দেখে আমি মুগ্ধ!

ঠেলাগাড়ী চালক সারাদিন ঠেলা চালিয়ে বাসায় গেল।
বাসায় তার অনেক গুলো ভাই বোন এবং বাবা মা। ঠেলা গাড়ির উপার্জন দিয়েই এই এতগুলো লোকজনের সংসার চলে। ভাই বোন সবাই লেখাপড়া করে। সব খরচ ঠেলাগাড়ি চালিয়ে ইনকাম করে বড় ভাই। ছোট ভাই এসে বলল, ভাইয়া আমার পরীক্ষার ফিস লাগবে- ছয় হাজার টাকা। মাত্র দুইদিন সময়। ঠেলাগাড়ি চালক বড় ভাই বললেন, ছোট ভাইকে তুই কোনো চিন্তা করিস না। আমি টাকার ব্যবস্থা করে ফেলব। তুই মন দিয়ে পড়। মা এসে বলল, তোর বাবার অষুধ শেষ। ওষুধ লাগবে। ঠেলাগাড়ি চালক বলল, চিন্তা করো না মা আগামীকাল ওষুধ নিয়ে আসবো। বাবার ওষুধ আর ছোট ভাইয়ের পরীক্ষায় ফিসের চিন্তায় সারারাত ঘুমাতে পারলো না বড় ভাই। সকালে নাস্তা না করেই ঠেলাগাড়ি নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেল বড় ভাই। তার চোখে মুখে রাজ্যের চিন্তা আর হতাশা। ছয় হাজার টাকা সে কোথায় পাবে?

ছোট ভাইয়ের পরীক্ষার ফিস কিভাবে যোগার করবে বড় ভাই?
ঠেলাগাড়িওয়ালা আবার প্রেম করে। প্রেমিকার সাথে দেখা করতে গেল পার্কে। সেখানে সে তার প্রেমিকাকে বেশি সময় দিতে পারলো না। বলল, ঠেলা চালাতে হবে। পরীক্ষার ফিস আর বাবার ওষুধ যোগার করতে হবে। প্রেমিকা বেশি সময় না দিয়ে, রাস্তায় বের হয়েই দুপুরের কড়া রোদে চিন্তা করতে করতে বড় ভাই ঠেলাগাড়ি নিয়ে একসিডেন্ট করে ফেলল। রাস্তার লোকজন তাকে ধরে হাসপাতালে নিল। আঘাত তেমন গুরুতর না। তবে ডাক্তার বললেন, আগামী এক বছর ভারী মালামাল টানা যাবে না। এই কথা শুনেই ঠেলাওয়ালা কাঁদতে কাঁদতে বলল, না ডাক্তার না। আমার ঠেলা চালাতেই হবে। বাবার ওষুধ, ছোট ভাইয়ের পরীক্ষার ফিস। বড় ভাই খুব কান্না করলো খুব। যাই হোক, এভাবেই কাহিনি এগিয়ে যেতে থাকে। একসময় ভাইরা সব পাশ করে যায়। বড় চাকরি পায়। এদিকে অসুস্থতার জন্য ঠেলাগাড়ি চালানো বাদ দিয়ে বড় ভাই একটা অফিসের পিয়নের চাকরি পায়।

(দুপুরে ভাত খাওয়ার পর কি মনে করে টিভি ছাড়লাম। আজকাল একেবারেই টিভি দেখা হয় না। রিমোট টিপতে টিপতে দেখি এক চ্যানেলে বাংলা সিনেমা দেখাচ্ছে। নায়ক জসীম। নায়িকা রোজিনা। পুরো সিনেমাতে দুঃখ আর কষ্ট। জসীমের কষ্টে আপনার চোখে পানিও চলে আসতে পারে। সে খুব কান্না করে। নিজের জীবন উৎসর্গ করে সে তার ভাই বোনদের ঠিকই লেখাপড়া শেখায়। বাবার চিকিৎসা করায়। শেষমেষ তার ভাই বোন তাকে ত্যাগ করে। এদিকে তার নায়িকা রোজিনাও তাকে ভুল বুঝে চলে যায়। কিন্তু end of the day মানে ছবির শেষে সুন্দর মিল হয়। ভাইয়েরা ফিরে আসে, রোজিনা ফিরে আসে। সে এক দেখার মতো দৃশ্য। তখনও জসীম খুব কাঁদে। জসীম যতই কাঁদে, আমার ততই হাসি পায়। ভরপুর বিনোদন।)

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:২৯

হাবিব বলেছেন: ছোটবেলায় শুক্রবারে জসীমের ছবি মানেই ঘরভর্তি মানুষ। শুক্রবার এলেই ঈদ ঈদ মনে হতো। এখন টিভি দেখারই সময় হয়না।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:৫৪

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: ভাই এসব সিনেমার নাম শুনলে ,রিভিউ পড়লে আজকালকের পোলাপান এটাকে লেম বলে গালি দেয়।অথচ এসব সিনেমা থেকে আছে অনেক কিছু শেখার।আমার কাছে খুব ভালো লাগলো রিভিউটা।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ২:১৪

প্রামানিক বলেছেন: জসীমের অভিনয় আজো ভুলতে পারি না। ধন্যবাদ জসীমকে মনে করিয়ে দেয়ার জন্য।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো থাকুন।

৪| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ভোর ৪:৩৬

রোকসানা লেইস বলেছেন: ভাবলাম তুমি গল্প লিখেছো সিনেমার কাহিনির মতন। শেষে এসে আমারও খুব হাসি পেলো

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো থাকুন।

৫| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৫৪

Subdeb ghosh বলেছেন: বাংলা সিনেমায় নায়ক জসীম সবচেয়ে বেশি লটারি জিতেছে।

ভালো লিখেছেন,
শুভকামনা সতত।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৬| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অসাধারণ রি‌ভিউ!

৭| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: ইয়েস!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.