নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের গল্প- ১১

২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ৯:৪৭



আমি রমিজ উদ্দিন।
অনেক কষ্টে লেখাপড়া শিখেছি। ছোটবেলা থেকেই খেয়ে না খেয়ে বড় হয়েছি আমরা চার ভাই বোন। বাপ শালা আরেকটা বিয়ে করে আলাদা সংসার পেতেছে। বছরের পর বছর আমাদের কোনো খোজ খবর নেয় না। আমার মা সীমাহীন কষ্ট করে আমাদের লেখাপড়া শিখিয়েছেন। আমাদের সাথে থাকতো আমার নানা নানী। মোট সাত জনের সংসার। অনেক খরচ। আমাদের লেখাপড়া প্লাস আমাদের সাতজন মানুষের খাবার সংগ্রহ করতে আমার মায়ের সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করতে হয়েছে। মা অসুস্থ শরীর নিয়ে প্রচুর খেটেছেন। মায়ের কষ্ট দেখেছি আর গোপনে কেঁদেছি আমি। এখন আমার মা আরামে আছেন। তাকে রানী করে রেখেছি। মাকে কাজ করতে দেই না। তিন জন কাজের লোক রেখেছি বাসায়।

কেরানীগঞ্জের দুই রুমের একটা ছোট্র বাসায় আমরা ভাড়া থাকতাম।
আমার এক বোন পালিয়ে বিয়ে করে ফেলল এক ড্রাইভারকে। অন্যদিকে ছোট ভাইটা একটা গার্মেন্টসের মেয়েকে বিয়ে করে ফেলল। বিয়ের পর তারা আমাদের সংসারে এসে উঠলো। খাওয়ার লোক গেলো আরও বেড়ে। ভয়াবহ অবস্থা। কি যে কষ্ট গিয়েছে আমাদের! সংসারে আমিই বড় ছেলে। আমার উপরেই আমার মায়ের অনেক ভরসা। আমি পড়ালেখা শেষ করে একটা চাকরী পেয়ে গেলাম। বেতন খুব অল্প। মাত্র ষোল হাজার টাকা। যদিও বর্তমানে আমি আশি হাজার টাকার উপরে বেতন পাই। উপরি কামাইও অনেক আমার। আমি আমার বুদ্ধিমত্তা দিয়ে আমার পরিবারের সকল সদস্যকে উন্নত জীবন দিয়েছি। এখন পরিবারের প্রতিটা সদস্য বেশ আছে। কোনো কিছুর অভাব নেই।

একসময় সকালে আমি ছাতু দিয়ে নাস্তা করতাম।
ছাতু মানে চাল ভেজে পাঠায় বেটে ফাঁকি করা হতো। সেটা অল্প চিনি আর পানি মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেতাম। এটাই ছিল আমার সকালের নাস্তা। অথচ আজ আমি প্রতিদিন সকালে তিন চার পদের জুস, মাখন, রুটি, অনেক রকমের ফল ইত্যাদি দিয়ে নাস্তা করি পরিবারের সবাইকে নিয়ে। আজকাল তো কমোডে খবরের কাগজ নিয়ে না বসলে আমার পটি হয় না। আগে পটি করতে হলেও লাইনে দাড়াতে হতো। কেরানীগঞ্জ থেকে এখন আমরা থাকি ধানমন্ডির বিশাল বড় এক ফ্লাটে। আমার মা বোন, ভাই আর নানা নানী বেশ ভালো আছে। গতমাসে নানীকে ইন্ডিয়া নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে আনলাম। আমি পরিশ্রম করে আর আমার বুদ্ধি দিয়ে সবাইকে ভালো রেখেছি। অফিসে আমার চলার পথ মোটেও মসৃণ ছিল না। বেশ কিছু কর্মচারীকে আমি সিস্টেম করে চাকরী থেকে তাড়িয়েছি। আসলে যারা আমার চলার পথের কাঁটা তাদের আমি রাখি না। হে হে।

গ্রামের বাড়িতে এক খন্ড জায়গা ছিল আমাদের।
পাঁচতালা ফাউন্ডেশন দিয়ে তিনতলা বাড়ি করেছি মনের মতোন করে। পানির মতোন টাকা খরচ করেছি। এই টাকা আমি আমার বুদ্ধি দিয়ে ইনকাম করেছি। মাত্র ষোল হাজার টাকা বেতনে চাকরীতে ঢুকে এখন পাই আশি হাজার টাকা। উপরি ইনকামও মন্দ নয়। বেশি টাকা ইনকাম করার জন্য আমাকে সীমাহীন পরিশ্রম করতে হয়েছে। রাতে বাসায় ফিরতে হয়েছে এগারো-বারোটায়। কেউ আমাকে টাকা এমনি এমনি দেয়নি। এই তো তিন মাস আগে পুরো পরিবারের সবাইকে নিয়ে থাইল্যান্ড থেকে ঘুরে এলাম। এবার ঈদের ছুটিতে মালোশিয়া যাবার ইচ্ছা আছে। পরিবারকে স্বচ্ছল করতে গিয়ে আমাকে অসৎ হতে হয়েছে। আমার খুব বুদ্ধি। কেউ আমার চালাকি এবং উদ্দ্যেশ বুঝতে পারেনি আজ পর্যন্ত। আমি তিলে তিলে আমার স্বপ্ন পুরা করতে পেরেছি। অথচ পুরো অফিস জানে আমি একজন সৎ লোক। সৎ হলে বাড়ি করতে পারতাম না। ব্যাংকে কারি কারি টাকা জমাতে পারতাম না। পরিবারকে খুশি রাখতে পারতাম না।

একসময় আমাকে লোকাল বাসে করে চলাচল করতে হতো।
এখন আমি উবার ছাড়া চলাচল করতে পারি না। অবশ্য এখন গাড়ি কেনার ক্ষমতাও আমার আছে। কিন্তু গাড়ি কিনলে অফিসের অনেকের চোখ লেগে যাবে। এমনিতেই অনেকে গোপনে নানান রকম ফিসফাস করে। কিছু কিছু তো আমার কানে আসে। যে আমার জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় তাকে সরিয়ে দেই। আসলেই অল্প সময়ে এবং অল্প বয়সে আমি অনেক টাকা করে ফেলেছি। মাঝে মাঝে আমি মদ খাই। মদ খেয়ে সাহিত্য করতে বসি। বাংলা সাহিত্যে আমি জায়গা চাই। প্রয়োজনে টাকার বিনিময়ে সাহিত্য দখল করবো। টাকা থাকলে যা খুশি তাই করা যায়। এই আমি'ই টাকার জোরে কত বদলে গেলাম। অতীতের কথা ভাবলে খুব কষ্ট হয়। তাই অতীতের ঘরে তালা মেরেছি। এখন আমিই আমার বাপকে পর্যন্ত নিয়মিত টাকা বিকাশ করে পাঠাই। আমি চাকরী করি এক শিল্পপতির আন্ডারে। শালার সীমাহীন টাকা। সিস্টেম করে আমি তার কাছ থেকে অনেক টাকা বাগিয়ে নিই। শালা বুঝে না। শালাও সিস্টেম করে সীমাহীন টাকা করেছে।

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ১০:২২

আশরাফ আনন্দ বলেছেন: কিছু কিছু সময় কোন বোধ কাজ করে না। আপনাকে দোষও দিতে পারছিনা আবার বাহবাও না। কিন্তু ধন্যবাদ।

২৬ শে মে, ২০১৯ সকাল ৭:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: হুম।

২| ২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:৫৫

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: শালাও সিস্টেম করে সীমাহীন টাকা করেছে।
........................................................................
ভাই সিস্টেম হলো একটি ভালো কাজের চালিকা শক্তি,
তাকে এমন হাল করলেন ? হা হা হা

২৬ শে মে, ২০১৯ সকাল ৭:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: এটা অন্য সিস্টেম।

৩| ২৬ শে মে, ২০১৯ রাত ১:৪৪

মুক্তা নীল বলেছেন:
আমি ভেবেছিলাম সিনেমার কাহিনী, এখনতো দেখি গল্প।
আজকের ছবিটা সুন্দর।

২৬ শে মে, ২০১৯ সকাল ৭:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ২৬ শে মে, ২০১৯ রাত ১:৪৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


বাংলাদেশের সিষ্টেমে মানুষ ভালো থাকার কথা নয়।

২৬ শে মে, ২০১৯ সকাল ৭:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: তাহলে কি মানুষের দোষ না, সিস্টেমের দোষ?

৫| ২৬ শে মে, ২০১৯ রাত ১:৫৫

জাহিদ অনিক বলেছেন: সত্য লিখেছেন, এমনই হয়।
সাহিত্যিকভাবে জীবন সুন্দর নয়। জীবন এমনই---

২৬ শে মে, ২০১৯ সকাল ৭:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ কবি।

৬| ২৬ শে মে, ২০১৯ রাত ৩:৪৬

মেঘ প্রিয় বালক বলেছেন: কি বলবো বলেন,বর্তমান সমাজের চলিত ব্যবস্হাটাই এমন হয়ে গেছে। তবে আপনি যাই করেন না কেন?? সময়ের স্রোত তখন আপনার বিপরীতে ছিলো,আর এখন অনূকুলে।

২৬ শে মে, ২০১৯ সকাল ৭:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী।

৭| ২৬ শে মে, ২০১৯ ভোর ৫:১৮

বাকপ্রবাস বলেছেন: সিস্টেমে আসার সিস্টেমটা শেখা দরকার, ঘানি টেনে পোশায় না

২৬ শে মে, ২০১৯ সকাল ৭:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: হে হে

৮| ২৬ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: রমিজ মিয়া তো টাকা ইনকাম কিভাবে করল?

২৬ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৪:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: সিস্টেম।

৯| ২৬ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৯

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: টাকা ইনকামের উপায় টা বলে দিন। আমার ও খুব টাকার দরকার।

১০| ২৬ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৪:১১

রাজীব নুর বলেছেন: উপায় কেউ শিখিয়ে দিবে না।
এটা নিজের প্রয়োজনে আপনি নিজেই শিখে যাবেন।

১১| ২৬ শে মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৪১

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: প্রয়োজন আইন মানেনা।
এদেশে এখন সৎ লোকের চেয়ে 'সিস্টেম' করে চলা লোকের জয়জয়কার।

২৬ শে মে, ২০১৯ রাত ৯:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: সত্য কথা বলেছেন।

১২| ২৬ শে মে, ২০১৯ রাত ৮:৪৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: বাংলাদেশে এখনো যারা নিজেদেরকে সৎ বলে দাবি করেন তারা আসলে সুযোগের অভাবে সৎ। সুযোগ পেলে দেখা যাবে কার কত ঈমানের জোর আছে। ইমানের পরীক্ষা হয় সংকট কালে।

২৬ শে মে, ২০১৯ রাত ৯:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: ইয়েস।
একদম ঠিক বলেছেন।
আমি নিজেও আপনার মন্তব্যের মধ্যে পড়ি।

১৩| ২৭ শে মে, ২০১৯ রাত ১২:২৫

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: ছোট বেলায় অনেক ছাতু খেয়েছি শখ করে :D

আপনি একজনকে সিস্টেম করে টাকা ইনকাম করলেন, সেও সিস্টেম করে টাকা ইনকাম করেছে আবার আপনার থেকে কেউ এসে সিস্টেম করে টাকা কামাবে, চলতেই থাকবে চক্র...

২৭ শে মে, ২০১৯ সকাল ৭:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: এই চক্র চলবেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.