নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
আমি একটি ব্যাংকে চাকরী করি।
আমার বাবা মা নেই। চাচার কাছ থেকেই অনেক কষ্টে লেখাপড়া শেষ করেছি। চাচা-চাচী আমাকে কখনও ভালোবাসেন নি। প্রচুর কাজ করতে হয়েছে আমার। অথচ আমার’ই বয়সী তাদের তিনটি ছেলে মেয়ে খেলা করেছে। তখন হয়তো আমি উঠান ঝাড়ু দিয়েছি, বাজারে গিয়েছি অথবা কাপড় ধুচ্ছি। শুধু মাত্র নিজের তীব্র ইচ্ছার কারনেই লেখাপড়া শেষ করতে পেরেছি। একটা ভালো চাকরী পেয়েছি। এখন আমি শহরে থাকি। চাচা চাচীকে নিয়মিত টাকা পাঠাই। যতদিন তারা বেঁচে আছেন- আমি টাকা পাঠাবো। আল্লাহর রহমতে এখন আমি বেশ ভালো আছি। ব্যাংকে আমার প্রতিমাসে টাকা জমছে। আমি একটা মেসে থাকি। এক কথায় বলা যায়, সীমাহীন আনন্দময় একটা জীবন। প্রতিদিন অফিস করি। ছুটির দিনে একা একাই বেড়াতে যাই। বই পড়ি, গান শুনি।
অফিসে আমার সামনের টেবিলে রিমি নামে একটা মেয়ে বসে।
চমৎকার হাসি খুশি প্রানবন্ত মেয়ে। প্রতিদিন খুব সুন্দর করে সেজেগুজে অফিসে আসে। মেয়েটা হয়তো আমাকে পছন্দ করে। মাঝে মাঝে রাতে ফোন দেয়। একদিন মেয়েটা আমাকে জোর করে বেড়াতে নিয়ে গেল। আমরা সারাটা দিন খুব ঘুরে বেড়ালাম। নৌকায় উঠলাম। রিমি টিফিন কেরিয়ারে করে নিজের হাতে রান্না করে খাবার নিয়ে এসেছে। দুপুরে খুব মজা করে খেলাম। সন্ধ্যায় আচমকা রিমি বলল, সে আমাকে খুব ভালোবাসে। আমি খুব অবাক হলাম। এখন আমি ভালোবাসাবাসির ঝামেলায় যাবো না। আগে নিজের লাইফটা গুছাবো। ফ্লাট কিনবো, গাড়ি কিনব। ব্যাংকে অনেক টাকা জমাবো তারপর বিয়ে। কিন্তু এই কথা আমি রিমিকে বলতে পারলাম না। সব কথা সব সময় বলা যায় না।
একদিন অফিস ছুটি শেষে রিমি বলল, আজ সে আমার মেসে যাবে। যাবেই।
আমি কোথায় থাকি দেখবে। আমি খুব লজ্জার মধ্যে পড়লাম। একটা ছোট্র ফ্ল্যাটে আমরা চারজন গাদাগাদি করে থাকি। আমি বললাম, রিমি পরে যেও, অন্য কোনো দিন। রিমি বলল, নো নেভার। আজ’ই যাবো। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় রিমিকে নিয়ে আমার ফ্লাটে আসলাম। আমার রুমমেটরা খুব অবাক হলো। প্রতিটা ছেলে খুব ভালো। ওরা সবাই ছাত্র, শুধু মাত্র আমি’ই চাকরীজীবি। আমি আর রিমি আমার রুমে বসলাম। রুম বন্ধ করতেই রিমি আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। ঠোটে ঠোট রেখে গভীরভাবে চুমু দিলো। জীবনে প্রথম কোনো নারী আমার ঠোটে ঠোঁট রাখলো। অন্যরকম একটা ভালো লাগায় পুরো শরীর যেন কেমন করে উঠলো। একসময় দু’জনেই সমস্ত জামা কাপড় ফ্লোরে ছুড়ে ফেললাম। আমি নিজেকে আটকে রাখতে পারিনি। দু’জনেরই পুরো শরীর জেগে উঠেছিল। আমার কোনো দোষ নেই। আমি জোর করিনি। আর এরকম চিন্তাও ছিল না আমার মনে।
শরীরের স্বাদ একবার পেয়ে গেলে, বার বার সেই স্বাদ পেতে মন চায়।
না পেলে অস্থির অস্থির লাগে। কোনো কিছু ভালো লাগে না। কাজে মন বসে না। আমি বার বার সুযোগ খুঁজি কিভাবে রিমিকে কাছে পাবো। একদিন রিমিকে বলেই ফেললাম, রিমি আমি তোমাকে একান্ত গোপনে কাছে পেতে চাই। রিমি বলল, আমার কোনো সমস্যা নেই। তুমি জায়গা দাও। তোমার ঐ মেসে যেতে পারবো না। রুমে থাকে তোমার রুমমেটরা- আমার খুব লজ্জা করে। অন্য কোথাও চলো। এরপর আমি গোপনে গোপনে একটা এক রুমের বাসা খুঁজতে থাকি। আমার ভাগ্য ভালো একটা বাসা পেয়ে গেলাম। আঠারো তলা বাড়ি। বাড়িতে এখনও কোনো ভাড়াটিয়া উঠেনি। ইলেকট্রিক লাইন এখনও দেওয়া হয়নি। গ্যাস লাইনও দেওয়া হয়নি। পানির লাইনও দেওয়া হয়নি। তবে এক মাসের মধ্যে পুরো বাড়ির কাজ সম্পূর্ন করা হবে।
আমাকে এই বাড়ির সন্ধান দেয় রফিক নামের একজন।
তার মামা আঠারো তালার ফ্ল্যাট্টি কিনে। পুরো ফ্ল্যাট সাজানো গুছানো। রফিক আমাকে তিন মাসের জন্য ফ্ল্যাটটি অল্প টাকায় ভাড়া দিয়েছে। রফিক এক বিশেষ কাজে খুলনা যাবে। তাই সে ফ্ল্যাটের চাবি আমার হাতে দিয়ে গেল। আমি দুই মাসের ভাড়া রফিককে দিয়ে দিলাম। এই আঠারো তালা ফ্লাটে আমি আর রিমি আনন্দময় সময় পার করবো। একদিন রাতে হুট করে আমি আমার ব্যাগ গুছিয়ে নতুন ফ্ল্যাটে চলে আসি। বাড়ির নম্বর ১৩২০। বাড়িতে প্রবেশ করে দেখি বুড়ো দাড়োয়ান ঘুমাচ্ছে। বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়নি। লিফট বন্ধ। আমি আস্তে ধীরে অন্ধকার মাড়িয়ে ১৮ তলায় এসে উঠলাম। চাবি দিয়ে দরজা খুলে রুমে ঢুকলাম। মোবাইলের টর্চ জ্বেলে পুরো রুম ঘুরে ঘুরে দেখলাম। নতুন খাট, এসি, বাথরুম ঝকমক করছে। রাতে এখানে ঘুমিয়ে পড়লাম। রিমিকে ফোন করা হলো না। মোবাইলে চার্জ নেই। ঘুমের আগে রিমিকে নিয়ে কি কি করবো সব ভেবে রাখলাম।
বেশ ভালো ঘুম হলো।
পানি নেই। তাই ফ্রেশ না হয়েই বের হলাম। দরজায় তালায় চাবি লাগালাম। রুম লক করবো। তখন মনে পড়লো মোবাইলটা রেখে আসছি। আবার ঘরের ভিতর ঢুকলাম মোবাইল নিতে। মোবাইল নিয়ে ফিরে এসে দেখি ঘরের দরজা লক হয়ে গেছে। আমি ভিতরে আটকে গেছি। চাবি বাইরে তালার সাথে ঝুলছে। খুব চেষ্টা করলাম ভিতর থেকে তালা খুলতে। দরজায় অনবরত লাথথি দিলাম। ধাক্কা দিলাম। কিছুতেই তালা খোলা বা ভাঙ্গা সম্ভব হলো না। পুরো বিল্ডিং এ আমি একা। নিচে দাড়োয়ান। এখন থেকে চিৎকার দিলেও কেউ শুনবে না। তারপর বেলকনিতে গিয়ে খুব চিৎকার চেচামেচি করলাম। বারান্দার গ্রীল ধরে ধাক্কাধাক্কি করলাম। আমার চিৎকার কারো কানে গেলো না। গ্রীলের শব্দ কারো কাছে গিয়ে পোঁছাল না। কিভাবে বাঁচবো আমি? আমার কাছে এক বক্স দেয়াশলাই ছাড়া কিছুই নাই।
দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা। সন্ধ্যা থেকে রাত।
প্রচন্ড ক্ষুধা পেয়েছে। ঘরে কোনো খাবার নেই। এমন কি পানি পর্যন্ত নেই। তৃষ্ণায় বুক ফেটে যাচ্ছে। একাএকা অনেকক্ষন কান্না করলাম। কাঁদতে কাঁদতে মা, মাগো বলে মাটিতে গড়াগড়ি দিলাম। পুরো ঘর অন্ধকার। বেলকনিতে গেলে আসে পাশের আলো দেখা যায়। কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। মাথা কাজ করছে না। রাগের মাথায় মোবাইলটা আছাড় দিয়ে ভেঙ্গে ফেললাম। চার্জ নেই। ঘরে একটা টিভি ছিল, সেটাও আছাড় দিয়ে ভাঙ্গলাম। আমি ছোটবেলা থেকেই তেলাপোকা আর ইঁদুর খুব ভয় পাই। এই ফ্ল্যাটের রান্না ঘরে ইঁদুর তেলাপোকা দু’টাই আছে। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। ক্ষুধায় জীবন শেষ। মনে মনে প্রভুকে বলি- কি পাপ আমি করেছিলাম! বারান্দায় নিজের গায়ের গেঞ্জিটা খুলে আগুন জ্বালিয়ে দিলাম। যদি বাইরে থেকে কেউ আগুন দেখতে পায়। কিন্তু না, কিছুই হলো না। আগুন ধরে কিছুক্ষন পর নিভে গেলো।
ছয় দিন আমি এই বাড়ির আঠারো তালার ফ্ল্যাটে বন্দী।
আমার শরীর নিস্তেজ হয়ে গেছে। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে এত চেচামেচি করেছি যে, এখন আর আমার গলা দিয়ে কোনো শব্দ বের হয় না। শরীরে কোনো শক্তি নেই। পুরো ঘর তছনছ করে ফেলেছি। ঘরের সমস্ত জিনিসত্র দরজায় উড়িয়ে মেরেছি। টিভি, মাইক্রোওভেন, বালতি, টি টেবিল ইত্যাদি সব কিছু। তবু দরজার তালা একটু নড়াতে পারিনি। আমার ভাগ্য ভালো একদিন হুট করে খুব বৃষ্টি হলো- বেলকনিতে গিয়ে বৃষ্টির পানি ডিব্বা-ডাব্বা যা পেলাম সব কিছুতে পানি জমিয়ে রাখলাম। ইচ্ছে মতোন বৃষ্টির পানি খেলাম। মন প্রান সব জুড়িয়ে গেলো। বৃষ্টির পানি পুরো শরীরে মাখলাম। ওই দিন বিকেলে, রান্না ঘরে যে ইদুরটা থাকে সেটাকে মেরে ফেললাম। তারপর পুড়িয়ে খেলাম। পরের দিন তিনটা তেলাপোকা ধরে খেয়ে ফেললাম। কেউ আসার আগ পর্যন্ত আমাকে বেঁচে থাকতে তো হবে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফী চ্যানেলে দেখেছি একলোক ইঁদুর ধরে পুড়িয়ে খায়। নানান রকম জীবন্ত পোকা খায়। অবশ্য ক্ষুধার তাড়নায় খেয়েছি আর বমি করেছি।
(দ্বিতীয় পর্ব আগামীকাল)
৩০ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:১৮
রাজীব নুর বলেছেন: কিন্তু এটা তো অনেক আগের লেখা।
যেদিন লিখে ছিলাম সেদিন রোজা ছিল না।
২| ৩০ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:৩৯
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আঠারো তলার ফ্ল্যাটে ইঁদুর কি করে উঠবে এটাই তো আমার বোধগম্য হলো না।উত্তর পূর্ব ভারতে মূলত নাগাল্যান্ড, মিজোরাও পোকামাকড় ধরে খায় বা ওখানে মুদির দোকানেও বিক্রি হয়।
আগামীকাল পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ।
শুভকামনা প্রিয় ছোট ভাইকে।
৩১ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:২২
রাজীব নুর বলেছেন: দাদা আঠারো তালা নয় ইঁদুর ৩০ তালায়ও উঠতে পারে। ইঁদুর তেলাপোকা ভয়াবহ জিনিস।
৩| ৩১ শে মে, ২০১৯ রাত ১২:০৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
দরজা ভেংগে ফেললেই হয়; প্লট দুর্ব হয়ে গেছে ঘরে দরজা থাকায়।
৩১ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:২৪
রাজীব নুর বলেছেন: কঠিন দরজা। লোহার দরজা। কিছুতেই ভেঙ্গে ফেলা সম্ভব হয়নি।
৪| ৩১ শে মে, ২০১৯ রাত ১২:৩৬
ভুয়া মফিজ বলেছেন: এইটা রাজকুমার রাও অভিনীত হিন্দি মুভির স্ক্রিপ্ট!
মুভিটার ডিটেইলস view this link
আর মুভিটা দেখতে চাইলেview this link
৩১ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: ইয়েস।
আপনি ঠিক বলেছেন।
৫| ৩১ শে মে, ২০১৯ রাত ২:৩৫
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
গল্পের প্লট দুর্বল।
বিভিন্ন দরজার চাবি টুওয়ে খোলার ব্যাবস্থা থাকলেও
যত ধরনের তালাই হোক ভেতর থেকে নব ঘুরিয়ে খোলার ব্যাবস্থা থাকে।
৩১ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: হতে পারে।
৬| ৩১ শে মে, ২০১৯ ভোর ৫:৩৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আপনার চাচা সনেট কবি মহোদয়কে দেখি না কেন আজকাল?
উনাকে আমার সালাম বলবেন।
উনাকে রাগিয়ে দিতে আমার খুব ভালো লাগে।
বিশেষ করে হুরপরী জাতীয় পোস্টে।
৩১ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: মনে হয় উনি ব্লগের সমস্যার কারনে আসতে পারছেন না।
তাছাড়া আমি ব্লগের কোনো ব্লগারকে চিনি না, জানি না। কখনও কারো সাথে দেখাও হয়নি।
৭| ৩১ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:৫২
হাবিব বলেছেন: পড়লাম ভালো লাগলো, মুভিটা দেখছি এখন
৩১ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:৫৬
রাজীব নুর বলেছেন: দেখুন। ভালো লাগবে।
৮| ৩১ শে মে, ২০১৯ সকাল ১১:৪৫
নীলপরি বলেছেন: দরজাটা বাইরে থেকে কেউ লক করেছে লিখলে হোতো কি ? মুভিটা পারলে দেখবো ।
আপনি প্রচুর লিখতে পারেন । এটা খুবই ভালো গুণ ।
শুভকামনা
৩১ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: লিখতে ভাল লাগে।
৯| ০১ লা জুন, ২০১৯ বিকাল ৪:০৮
জাহিদ অনিক বলেছেন: আরে ! এই সিনেমাতা আমি দেখেছি
০১ লা জুন, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫২
রাজীব নুর বলেছেন: মুভিটা কেমন? সেই রকম না?
১০| ০৩ রা জুন, ২০১৯ রাত ৩:১৬
জাহিদ অনিক বলেছেন: লেখক বলেছেন: মুভিটা কেমন? সেই রকম না? হ্যাঁ সেই রকম।
দুই একটা মুভি সাজেস্ট করেন।
০৩ রা জুন, ২০১৯ বিকাল ৩:১১
রাজীব নুর বলেছেন: এই তো বিপদে ফেললেন।
মুভির নাম তো আমার মনে থাকে না। এমনকি কাহিনিও মনে থাকে না। মনে না থাকার কারনে এক মুভি ২/৩ বার করে দেখা হয়ে যায়।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:১০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: রোজা রমজানের দিনে এই ধরনের গল্প! সনেট কবি দেখলে খুব মাইন্ড করবেন।